নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা-কলেজের ছাত্রদের দাবি অযৌক্তিক নয়

২১ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৪৭



ঢাকা-কলেজের ছাত্রদের দাবি অযৌক্তিক নয়
সাইয়িদ রফিকুল হক

কয়েকদিন আগে ঢাকা-কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকার নিউমার্কেট ও এর আশেপাশের সকল দোকানদারদের এক প্রবল ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছে প্রায় শতাধিক ছাত্র। আর নাহিদ নামক একজন পথচারি (বিশ্বস্তসূত্রমতে, সে কুরিয়ার-সার্ভিসের একজন ডেলিভারিম্যান ছিল) নিহত হয়েছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তার করুণ মৃত্যু হয়েছে। এই সংঘর্ষ যে থেমে গেছে তা নয়―এটি এখনও চলমান। প্রকাশ্যে, বিচ্ছিন্নভাবে এখনও সংঘর্ষ না-চললেও আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সমানতালে চলছে।

ঘটনার সূত্রপাত:
নিউমার্কেটের অভ্যন্তরের দুই দোকানের কর্মচারীদের মধ্যে প্রথমে সংঘর্ষসৃষ্টি হয়। তারপর এটি শুরু হয় ঢাকা-কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ: সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় ঘটনার সূত্রপাত। নিউমার্কেটের দুটি ফাস্টফুডের দোকান ওয়েলকাম ও ক্যাপিটালের কর্মচারীদের মধ্যে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় ওয়েলকাম দোকানের কর্মচারী বাপ্পীর নেতৃত্বে ছুরি-চাপাতি নিয়ে ঢাকা-কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর চালায় দোকানের কর্মচারীরা। এই ঘটনার খবর ঢাকা-কলেজের ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা-কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তা প্রতিরোধে এগিয়ে আসে।

দোকানদারদের সন্ত্রাস:
১. দোকানদাররা ঢাকা-কলেজের দুই ছাত্রকে ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত করেছে।
২. দোকানদাররা একজন নিরীহ পথচারিকে হত্যা করেছে।
৩. দোকানদাররা রোগী-বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স ভাংচুর করেছে।
৪. দোকানদাররা ঢাকা-কলেজের ছাত্রাবাসে হামলা করেছে।
৫. দোকানদাররা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে। এতে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা ও টিভি-চ্যানেলের কমপক্ষে ৩০জন সাংবাদিক তথা মিডিয়াকর্মী আহত হয়েছে।
৬. দোকানদারদের এই সন্ত্রাসে একজন দোকান-কর্মচারী মোরসালিনও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিল। পরে সে ঢাকা মেডিকেলে মারা গিয়েছে।

এই ঘটনায় ছাত্ররা যে নিশ্চুপ ছিল তা নয়―তারাও আত্মরক্ষার্থে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দোষ দোকানদারদের। তারা সবসময় ছাত্রদের ওপর এভাবে মারমুখো হয়ে ওঠে। এবারই প্রথম ঢাকার নিউমার্কেট ও তার আশেপাশের দোকানদার নামক গলাকাটা, অশ্লীলভাষার প্রয়োগকারী ও ক্রেতাসাধারণদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে উঠেছে। তাই, ঢাকা-কলেজের ছাত্রদের সমর্থনে ঢাকা-বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ইডেন কলেজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিছিল হয়েছে। তারা অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে ছাত্রদের এই আন্দোলনে।
এককথায় বলতে গেলে ঢাকার নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনি চক ও অন্যান্য মার্কেটের দোকানদার ও ফুটপাতের হকাররা ভয়ানক খারাপ। আসলেই নিউমার্কেট ও তার আশেপাশের দোকানদার ও ফুটপাতের হকাররা ভয়ংকর বেআদব হয়ে উঠেছে। তাদের ব্যবহার এত জঘন্য যে তা ভাষায় প্রকাশ করাটাও লজ্জার বিষয়।
তারা সাধারণ ক্রেতাদের সঙ্গে সবসময় দুর্ব্যবহার করে থাকে। নারী-ক্রেতাদের দেখলে অশ্লীল কথাবার্তা, মন্তব্য ও আকারইঙ্গিত করে। মেয়েদের সম্পর্কে আজেবাজে মন্তব্য করতে তাদের মুখে কখনো আটকায় না।

দোকানদার ও হকারদের অশ্লীলতার সামান্য নমুনা:

আসেন আপা শুই!
জোড়ায়-জোড়ায় শুই!!
দশ টাকায় শুই!!!
(এখানে, শুই বলতে সুঁই বুঝতে হবে। তারা মেয়েদের দেখলে এভাবে অশ্লীলতা ছড়িয়ে দেয়।)


ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংবাদ সম্মেলনে ১০দফা দাবি:

১. এই ন্যাক্করজনক হামলার উস্কানিদাতা, ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের তদন্ত সাপেক্ষে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. আহত সকল শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সকল দায়ভার নিউমার্কেট-ব্যবসায়ী-সমিতি ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে নিতে হবে।
৩. হকারদের হামলায় নিহত পথচারি নাহিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪. রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৫. দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ডিসি, এডিসি ও নিউমার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে, এবং পুলিশ-প্রশাসনকে কলেজ-প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
৬. প্রতিটি মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে।
৭. প্রতিটি মার্কেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করতে হবে।
৮. ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
৯. ক্রেতা-হয়রানি, নারীদের যৌন-হয়রানি বন্ধে একটি বিশেষ মনিটরিং-সেল গঠন করে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
১০. চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মাকের্ট ঢাকা-কলেজের সম্পদ―লিজ বাতিল করে ফিরিয়ে দিতে হবে।
এই দাবি অনতিবিলম্বে কার্যকর করা না-হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

শিক্ষার্থীদের এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করলে মার্কেটগুলো পরিচ্ছন্ন হবে। নিরাপদ হবে। ক্রেতাসাধারণ সহজে কেনাকাটা করতে পারবে। ভবিষ্যতে এধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়তো আর হবে না। তাই, এগুলোর দিকে দায়িত্বশীলদের এখনই মনোযোগ দেওয়া উচিত। ছাত্রদের সঙ্গে বসে এর একটা সুন্দর ও কার্যকরী সমাধান করা আশু প্রয়োজন।

ছবি: গুগল

তথ্যসূত্র:
১. দৈনিক জনকণ্ঠ;
২. দৈনিক ইত্তেফাক;
৩. একাত্তর টিভি ও অন্যান্য।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৩

জ্যাকেল বলেছেন: এত দাবি বাস্তবায়ন এই সুশাসনের দেশে প্রায় অসম্ভব। তাই দাবির কিছু অংশ আকাশ কুসুম মনে হইতেছে।

২২ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:০৯

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: আপনার কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু...
দশটি না হোক অন্তত প্রধান-প্রধান কয়েকটি পূরণ করলেও চলবে। পরে ধীরে ধীরে এগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে।
তবে সবার আগে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা থাকতে হবে।

আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর শুভেচ্ছা।

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৩

সোনাগাজী বলেছেন:



আপনার লেখাটা পড়ে দেখেন তো, সেখানে ঢাকা কলেজের ছেলেরা কিভাবে জড়িত হলো, সেটা কি পরিস্কার হয়েছে? ওয়েলকাম ও ক্যাপিটেলের বিবাদে ছাত্ররা কিভাবে জড়ালো?

২২ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:৩৫

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: আমি যেটুকু জেনেছি। তা-ই লিখেছি।
অনেক সংবাদ অবশ্য বিতর্কিত। এর পরও অনেক ঘটনা থাকতে পারে। সবটা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি।
দোকানদাররা ইতঃপূর্বে বহুবার উক্ত কলেজের ছাত্রদের ওপর চড়াও হয়েছে। সে-সময় অনেক ঘটনা ছিল। ঘটনার পিছনে ঘটনা ছিল।
কিন্তু এবার দোকানদারদের দোষ ষোলোআনা।

৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৩

সোনাগাজী বলেছেন:



ঢাকা কলেজের ছেলেরা চাঁদাবাজি করে?

২১ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৯:০৭

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: চাঁদাবাজি এখন অনেকেই করে। আগের সেই ছাত্রত্ব এখন আর নেই! তবে সবাই করে না।
আর এবার ঘটনাটাটা চাঁদাবাজির জন্য নয়।
আমি যা বুঝেছি, জেনেছি তাই বললাম।

৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:৫৮

সোনাগাজী বলেছেন:


পোষ্ট দেয়ার পর, পোষ্টে ফেরত আসতে হয়।

২১ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৯:০৪

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ফেরত এসেছি জনাব।
ইফতারির কারণে বিলম্ব হলো।
আপনি ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

৫| ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১০:১৮

সোনাগাজী বলেছেন:


১০০/১৫০ গ্রামের ১টা ইট ছুঁড়ে আপনি কতদুর অধবি নিতে পারবেন?

৬| ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১১:০৬

অধীতি বলেছেন: ঢাকা কলেজের ছাত্রদের খারাপ দিক আছে, কিন্তু এবার মনে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের দোষ প্রথম।

২২ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:০৮

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: কথা সত্য।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৭| ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১১:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপডেট কি?
কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে?

২২ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:২৫

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সংঘর্ষের মূলহোতা ও নিউমার্কেট এলাকার দোকান-মালিক-সমিতির দোকানদার মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও হবে।
শুভেচ্ছা রইলো ভাই। শুভকামনা।

৮| ২২ শে এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:২৮

নিমো বলেছেন: দুই কর্মচারীর সমস্যায় ভাড়াটে হয়ে কেন যেতে হল, ঢাকা কলেজের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের বা ছাত্রকে (যদি তারা সত্যিই যেয়ে থাকে)?

৯| ২২ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৪:০৭

ঢাবিয়ান বলেছেন: ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট বিভাগটায় আগে এক সময় দেশের সেরা মেধাবী ছাত্ররা ভর্তি হত।গুটিকয়েক ইন্টারমিডিয়েট এর মেধাবী ছাত্রদের দিয়ে ঢাকা কলেজকে বিচার করাটা ভুল। সেখানে বিএ/ বিকম, অনার্স ইত্যদি কোর্সও রয়েছে যেখানে সাধারন ছাত্ররা ভর্তি হয়। সেই আশি নব্বই দশকেও দেখেছি যে নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, হকার্স মার্কেটে এলাকার ত্রাস ছিল ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। ্সেই সময় থেকেই তাদের চাদাঁবাজির কথা শুনে এসেছি। এবারের ঘটনায় তাদের চাঁদাবাজি, ভাড়াটে গুন্ডামি খাটার চিত্র সামনে এসেছে। ইন্টারমিডিয়েট সেকশনের মেধাবী ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এসব সত্যকে লুকানো যাবে না।

২২ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৩০

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সত্য বেরিয়ে আসুক। সত্য যা-ই হোক না কেন।
সত্যপ্রকাশের জন্যইতো ছাত্ররা ১০দফা দাবি করেছে।
অপরাধী যেই হোক, তাদের বিচার হোক।
আর দোকানদারদের গুণ্ডামিও বন্ধ হোক।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.