নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্পকে জাদু বানানোর প্রচেষ্টায় আছি। যে জাদুর মোহনীয়তায় মানুষ মুগ্ধ হবে, বুঁদ হয়ে ঘুম হারাবে, রাত কাটাবে নির্ঘুম।

তাহসিনুল ইসলাম

অরূপকথার জাদুকর আমি!!

তাহসিনুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

নদী ও নারী (গল্প)

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১২

চৈত্রের দুপুর। জাহিদ নৌকায় হাঁক ছাড়ে। দু’ হাতের তালুকে চোঙা বানিয়ে সে যাত্রী ডাকে সুনিপুণ কৌশলে। নদীর তরঙ্গে সে ডাক ছড়িয়ে পড়ে চারিদিক। বৃদ্ধ ভুলু মাঝি জাহিদের যাত্রী ডাকার ভঙ্গী দেখে হাসে। মুহূর্তেই নৌকা পূর্ণ হয়ে যায় যাত্রীতে। জাহিদ নৌকা ছাড়ে। নদীর স্রোত কেটে কেটে নৌকা চলতে থাকে। ভুলু মাঝি এদিকে পাড়ে বসে ঝিমায়। জাহিদ প্রথম খেপ ফেলে দ্রুতই ফিরে আসে। দ্বিতীয় খেপের জন্য আবার ডাক হাঁকে আগের মতো। এভাবে প্রতিদিন দুপুরে সে দু’ ঘণ্টা নৌকা চালায়। বৃদ্ধ ভুলু মাঝি প্রথম প্রথম জাহিদের হাতে নৌকা দিতে সাহস পেতো না। জাহিদের নানার ভয়ে। অতি প্রভাবশালী মানুষ। জাহিদের কাঁচা বয়স। তেরো কিংবা চৌদ্দ। এতো কম বয়সে নদীর বিচিত্র চরিত্র সে বুঝবে কিভাবে? কিছু একটা অঘটন ঘটলে জাহিদের নানা তো তাকে কেটেই ফেলবেন। কিন্তু জাহিদের দুরন্তপনার কাছে তাকে হার মানতে হয়। জাহিদ জোর করে নৌকা নিয়ে নেয়-- সে নাছোড়বান্দা। জাহিদের নৌকা চালার দক্ষতা বৃদ্ধ ভুলু মাঝির চোখে অবশ্য খুব দ্রুতই ধরা পড়ে। জাহিদ তাকে মুগ্ধ করে দিন দিন। নদীকে কতো সহজেই না ছেলেটা বশ করে ফেললো অথচ জীবনের কতো দীর্ঘ সময় ধরে নদীর সাথে তার সখ্য কিন্তু তারপরও নদীকে এখনো তার অচেনা মনে হয়। নদীর রঙ সে এখনো ধরতে পারে না পুরোপুরি। নদীকে তার নারীর মতো মতো মনে হয়-- রহস্যময়। নদী ও নারী কখনো একরঙা হয় না। নদী ও নারী উভয়ই রঙ পাল্টায়। উভয়রই ভাঁজে ভাঁজে ধাঁধাঁ থাকে। জীবনের পঞ্চান্ন বছর কেটে গেলো এখনো নদী ও নারী উভয়ই তাকে বিভ্রান্ত করে।

জাহিদ প্রথম খেপ ফেলে এসে খেপের টাকা বৃদ্ধ ভুলু মাঝির হাতে তুলে দেয়। এক টাকাও সে কোনদিন নেয় না। নৌকা চালায় সে মনের আনন্দে। নানা বাড়ির এই নদী ও নৌকা তাকে নেশার মতো টানে। সে দ্বিতীয় খেপের প্রস্তুতি নেয়। দ্বিতীয় খেপে জাহিদ আর নৌকা চালাতে পারে না। জাহিদের ছোট মামা শরিফ এসে তাকে টেনে নিয়ে যায় বাড়িতে। জাহিদকে তার এই ছোট মামা একটু বেশি ভালোবাসে। নানার ক্রোধ থেকে সবসময় সে জাহিদকে বাঁচায়-- যদিও জাহিদের ওপর তার নানার ক্রোধ সাধারণত নির্ভেজাল হয় না। মেকি ক্রোধ। তার নানাও তাকে অনেক ভালোবাসেন। নানাকে সে মাঝে মাঝে নিজের লেখা গান আর কবিতা শোনায়। নানা খুশি হয়ে তাকে আইস্ক্রিম খাওয়ার টাকা দেন। নানা বাড়িতে জাহিদের কৈশোর দিনগুলো এভাবে বেশ চমৎকার কাটে দস্যিপনায়।

শরিফ জাহিদকে সাথে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে নিঃশব্দে। জাহিদের নানা ঘরের বাইরে বসে আছেন চেয়ারে। জাহিদের অপেক্ষায়। তিনিই শরিফকে পাঠিয়েছিলেন নদীতে। শরিফের সাথে জাহিদকে দেখে তিনি গলা ছাড়লেন। বললেন, শরিফ এই শালা বদ বান্দর নাতিটাকে মনে হয় আর রাখা যাবে না। দিন রাত মাঠ ঘাট নদী নালা চষে বেড়াচ্ছে। কখন যে কি করে বসে তার ঠিক নাই। ওর মা তো তখন আমাকে রিমান্ডে নেবে। ওকে কালকেই রেখে আসবি। শরিফ কাল পরশু তরশু করতে করতে জাহিদকে আর নিয়ে যায় না।

জাহিদের দুপুরটা নদীতে কাটলেও বিকেলটা কাটে মোড়ল বাড়ির কন্যা মিনার সাথে। মোড়ল বাড়ির ভাঙাচোরা নৌকাগুলো রঙ ও মেরামতের জন্য বাড়ি থেকে অদূরে একটা জমিনে রাখা থাকে উল্টো করে। সেই নৌকার ছায়ায় বসে জাহিদ ও মিনা ঘর-সংসার খেলা খেলে। মিনা মাটি কেটে চুলা বানায়। সেই চুলায় রান্না হয় বালুর ভাত আর ঘাসপাতার সবজি। রান্না শেষে সেগুলো কাঁঠালপাতার প্লেটে খাওয়া হয়। মিনা বেশ ভালোই রান্না করে। মিনার সাথে ঘর-সংসার খেলা খেলতে খেলতে জাহিদের কৈশোর মন ভেসে যায় অজানা স্বপ্নের দেশে। সেখানে সে মিনাকে নিয়ে নদীর জলে ভেসে বেড়ায়। নানার আইস্ক্রিমের টাকা বাঁচিয়ে মাঝে মাঝে সে মিনার জন্য চকলেট কিনে আনে। মিনাও তার মায়ের হাতের তৈরি নাড়ু পিঠা এটা সেটা লুকিয়ে নিয়ে আসে জাহিদের জন্য। কখনো কখনো সেগুলো আবার মাটির কড়াইয়ে রান্না হয় তারপর জাহিদের পেটে যায়। এভাবে তাদের দু’ জনের সুখের ঘর-সংসার চলে প্রায় প্রতি বিকেলে। মাঝে মাঝে হয়তো মিনা কোনদিন আসতে পারে না। মিনা যেদিন আসে না সেদিন জাহিদ নৌকার ছায়ায় ঘাসের বুকে শুয়ে পাশের পাড়ার সালাম চৌধুরীর কিশোরী মেয়ে ময়নার কাছে চলে যায় কল্পনায়। ময়নাকে সে একদিন নৌকায় নদী পার করে দিয়েছিলো। ময়নার সাথে সেদিন সে কোন কথা বলতে পারে নি। ময়নার সাথে সেদিন তার বাবা মা ছিলো। ময়না মায়ের আঁচল ঘেঁষে নৌকার মাঝখানে বসে ছিলো ঘাপটি মেরে। জাহিদ সেদিন গলা ছেড়ে গান গেয়েছিলো। ময়নার মনে আঁচর কাটার জন্য। আঁচর একটু কেটেছিলো। ময়না মাঝে মাঝে আড়চোখে চেয়েছিলো ওর দিকে। কি অদ্ভুত মায়াবী চোখ। চোখ বন্ধ করলেই জাহিদ সেই মায়াবী চোখ দুটি দেখতে পায়। ময়না তার বাবা মাকে ফাঁকি দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে দু’ বার হেসেও ছিলো। কি মধুর হাসি। এমন মধুর ভঙ্গিতে কাউকে সে হাসতে দেখেনি আগে। মিনার হাসিও এতোটা মধুময় নয়। ময়নার হাসি এখনো তার হৃদয়ে লেগে আছে। সেদিনের পর সে বেশ কিছুদিন ময়নাদের বাড়ির আশপাশে ঘুরঘুর করেছে কিন্তু ময়নার দেখা মেলেনি। দু’ একবার বাড়িতেও ঢুকার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি। সালাম চৌধুরীর তিনটি পোষা কুকুর আছে। এই কুকুর তিনটির কারনেই সে পেরে উঠেনি।

ময়নাকে জাহিদের ঠিক বন্দিনী সুফিয়ার মতো মনে হয়। নৌকার আড়ালে শুয়ে কল্পনায় দস্যু বাহরাম সেজে সে ময়নাকে মুক্ত করতে বের হয়। পরের দিন বিকেলে মিনাকে দস্যু বাহরামের কথা বলতে গিয়ে জাহিদ ময়নার কথা বলে ফেলে। ময়নাকে মুক্ত করার কথা। মিনা ময়নার কথা শুনে ক্ষেপে যায়। জাহিদ তাকে নানাভাবে বুঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু মিনা কিছুতেই শোনে না। সে ঘর-সংসার ভেঙে দেয়। জাহিদ রেগে গিয়ে মিনার গায়ে দুম করে একটা কিল বসায়। মিনা কাঁদতে কাঁদতে তার মোড়ল বাবার কাছে এসে বিচার দেয়। সন্ধ্যা বেলা মোড়লের ছোট ভাই জাহিদের নানার বাড়িতে এসে হাজির। সে জাহিদের নানার সামনেই জাহিদকে ডেকে বললো, কিরে তুই মিনাকে মেরছিস? চল ভাইজান তোর বিচার করবে। জাহিদের নানা শুনে তো অবাক। তিনি শরিফকে ডেকে বললেন, শরিফ যা তো দেখে আয়। কার এতো বড় সাহস? কি বিচার করে দেখ। এই শালা বজ্জাত নাতি মান সম্মান সব ডুবাবে। শরিফ জাহিদকে সাথে করে মোড়লের বাড়িতে এলো। মোড়ল বারান্দায় বসে আছে মোড়ায়। তাকে ঘিরে আরও কয়েকজন বসে আছে। মোড়ল জাহিদকে দেখে বললো, এই টাউনিয়া তুই মিনাকে মেরেছিস? জাহিদ বললো, না আমি মারিনি তো। কে বললো? মিনাকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন? মোড়ল মিনাকে ডাকলো। মিনা বারান্দায় বের হতেই জাহিদের চোখে চোখ পড়লো তার। মোড়ল বললো, কিরে এ তোকে মারছে না? মিনা বললো, না মারে নি। জাহিদের ছোট মামা এবার ক্ষেপে গেলো। মোড়লকে কড়া কিছু কথা শুনিয়ে সে জাহিদকে নিয়ে বেরিয়ে এলো। মোড়ল কিছু বলার সাহস পেলো না। সে মিনাকে সবার সামনে পেটালো ধুপধাপ করে। মিনা দাঁড়িয়ে থাকলো নিশ্চল। একবিন্দু পরিমান কাঁদলো না। মিনার এই নির্বিকার মূর্তি উপস্থিত যারা দেখলো তারা বুঝতে পারলো যে নারীরা রঙ পালটিয়ে শুধু কুরূপা হয় না বরং কখনো কখনো অপরূপা হয়ে ওঠে।




মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:২১

শঙ্কর দেবনাথ বলেছেন: সুন্দর হয়েছে।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০৩

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।

২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: প্রথমদিকে বেশ ভালো লাগছিলো পড়তে। সমাপ্তিটা আশানরূপ হয় নি।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৪

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, হাসান মাহবুব ভাই।
গল্পটা আরও একটু অন্যরকম করা যেতো অবশ্য ।
ভালো থাকবেন।

৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৭

আজিজার বলেছেন: সমাপ্তিটা আশানরূপ হয় নি।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১১

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য।
ভালো থাকবেন।

৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: গল্প ভালো লাগলো।
+++
শুরুটা আমার পাঠক মনে যে প্রত্যাশার জন্ম দিয়েছিল গল্পের পরিসমাপ্তি তা পূরণ করতে অাংশিক ব্যার্থ।
ভালো থাকবেন।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৪

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, দিশেহারা রাজপুত্র।
ভালো থাকবেন।

৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১৭

নেক্সাস বলেছেন: আখ্যান ভাগের শুরুটা চমৎকার। তবে জাহিদ নৌকায় হাঁক ছাড়ে এি লাইনটা না হলে সমস্য নেই।

যদিও জাহিদের ওপর তার নানার ক্রোধ সাধারণত নির্ভেজাল হয় না। মেকি ক্রোধ। তার নানাও তাকে অনেক ভালোবাসেন। এখানে ক্লিয়ার করেন নির্ভেজাল হয়না নাকি হয়।

শুরুর পর্বের পরে এসে বর্ণনা সাদামাটা হয়ে গিয়েছে। মনে হয়েছে ভাবনা কে মুক্তি দিয়ে চটজলদি শেষ করার তাগিদ পেয়েছেন।


সুন্দর গল্প। শুভকামনা

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০২

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।
শুভকামনা রইলো।

৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৩

নীল আতঙ্ক বলেছেন: ভালই তো লাগলো।
দোষত্রুটি ধরার যোগ্যতা এখনো হয়নি।
তাই ভালো লাগা পর্যন্তই থাক।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৭

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, নীল আতঙ্ক।
ভালো থাকবেন।
শুভকামনা রইলো।

৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪০

প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর গল্পের কাহিনী। ভাল লাগল। ধন্যবাদ

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৪

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: শুভেচ্ছা। ভালো থাকবেন।

৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১০

তুষার কাব্য বলেছেন: ভালো লাগল গল্প।
শুভকামনা ...

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৬

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, তুষার কাব্য ।
ভালো থাকবেন।

৯| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০০

কলমের কালি শেষ বলেছেন: পড়ে ভালো লেগেছে কিন্তু হঠাৎ করে শেষ হয়ে গেল ।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০০

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, কলমের কালি শেষ।
ছোটগল্প তো হঠাৎ করেই শেষ করে দিতেই বলেছেন লম্বা দাঁড়িওয়ালা কবি মহাশয় :)
ভালো থাকবেন।

১০| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভাল লাগলো
লেখায় +++++

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০০

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ অশেষ।
ভালো থাকবেন।
শুভকামনা রইলো।

১১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:১১

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
একরৈখিক ঘটনার বর্ণনা না রেখে সাথে আবেগ ও পার্শ্ব দৃ্শ্যায়ন রূপকীয় বর্ণনা যোগ করতে পারেন ৷ বয়সের সাথে সামঞ্জস্য করে আবেগ বিস্তৃতি ঘটাতেও পারেন ৷

শুভকামনা কথাশিল্পী ৷

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৯

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.