নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বিনির্মাণে যাঁরা দিয়েছেন নিজেদের সর্বোচ্চ ত্যাগ, আমরা তো কেবল তাদের পথের যাত্রী।

সৈয়দ তাজুল ইসলাম

সমাজের সন্তান

সৈয়দ তাজুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাষার মাসে যে কথাগুলো আমায় নাড়ে!

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:১১



তখন আমি ছটফট করতাম। মাতৃভাষায় কথা বলার জন্য আকুল হয়ে থাকতাম। অথচ আমার চতুঃপার্শ্ব ছিল বাঙালিতে ভরপুর। পুরো প্রকৃতি জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো বাঙালি মায়ের আঁচলের সুঘ্রাণ। তবু যেন মনে হত এ আমি অন্য জগতে আছি। অফিস–বাসা সর্বত্র আমায় কথা বলতে হত এই ভাষায়। প্রমিত ভাষায়। এখন আমি যে ভাষায় আপনাদের সামনে লিখে চলেছি সে ভাষায়। ভাড়াটিয়া এক ভাষায়।

মাঝেমধ্যে আমি আমার মায়ের সাথে কথা বলতাম। মাটির সাথে। তখন আমার আশপাশে থাকা লোকগুলোকে আমার দিকে কৌতুহল ভরা দৃষ্টির তীর নিক্ষেপ করতে দেখতাম। আমি আঁচ করতে পারতাম ওদের এমন কৌতুহলের কারণ। কিন্তু আমার মা, আমার মাটি যে এদের ভাষা বুঝে না। মায়ের সাথে সে ভাষাতেই কথা বলতে হয়। যে ভাষায় কাঁদতে কাঁদতে আমার জন্মের সাথে নিয়ে আসা রক্ত মুছে দিয়েছিল আমার মা। রক্ত মাখা কপাল-দেহে চুম্বন করেছিল যে মাটির ভাষায়। সেই ভাষা কখনো ভুলতে পারবো না। যেমন পারবো না দেহ থেকে মাটি বের করে মাটির উপর হাঁটতে।

আমি আমার আশপাশের সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম। যা ফুটে উঠতো ওদের সাথে ওদের ভাষায় কথা বলার ভঙ্গিমায়। কিন্তু আমি ধীরেধীরে হেরে গেলাম। আমার মাটির প্রতি ওদের প্রেম জাগিয়ে তুলতে পারলাম না। হাসিঠাট্টার যোগান হয়েই থাকলাম। হ্যা, আমি ওদের কৌতুহল দূর করতে পারলাম না। উল্টো নিজেকে ওদের কৌতুহলী দৃষ্টি থেকে আড়ালে নিয়ে মায়ের সাথে কথা বলতাম। মায়ের ভাষায়। মাতৃভাষায়।

মাতৃভাষার এমন টানাপোড়েনের দিনে আমি আমার বাবাকে হারাই। আমার সংকীর্ণ পৃথিবী আরো সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। এই সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে গিয়ে আমি রাজধানীর চাকরি ফেলে আসতে বাধ্য হই। আপনারা নিশ্চিত এসবের জন্য আমাকে দায়ী করে বলবেন, এইসব কিছুর জন্য আমার সংকীর্ণ মানসিকতা দায়ী।

ভাষার মাসে অকৃত্রিম পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করছি সকল শহীদ-গাজী ভাষাসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা ও পাষণ্ড পাকিস্তানের হাতে ধর্ষিতা আমার মায়েদেরকে। ব্লগারদের নিকট অনুরোধ থাকবে, ইতালির মিলানে যদি কোন মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান করে থাকেন তবে যেন দয়া করে আমায় ([email protected]) ইনফর্ম করা হয়। সবাইকে ভাষার মাসের পবিত্রতম শুভেচ্ছা।


ভিডিও দেখা না গেলে এখানে ক্লিক করুন!

এই ভিডিও-ও যদি দেখা না যায় তবে এখানে ক্লিক করুন।

০১-০২-২০২২
আলেজান্দ্রিয়া, মিলান।

ছবিঃ গুগল
ভিডিওঃ ইউটিউব

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:০২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভাষা সৈনিকদের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা

সরি উপরের মন্তব্যটা মুছে দেবেন আশা করি

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:১৯

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন:

ভাষা শহিদেরা আমাদের নিকট যে শিক্ষাটি রেখে গেছেন তা আমরা ভুলে গেছি। মাতৃভাষার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠতে পারি না আপু৷আমার অঞ্চলের ভাষাই শুধু মাত্রিভাষা নয়। এটা অনুধাবন করতে আমরা ব্যার্থ।

আপনাকে ভাষার মাসের শুভেচ্ছা।

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩০

জটিল ভাই বলেছেন:
শহীদের রক্ত,
বৃথা যেতে দেবো না!!!

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৪

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: পোস্ট না পড়া মন্তব্য আমি আশা করি না।

শহীদের রক্ত বেঁচে থাকুক আমাদের মধ্যে।

৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৮

সোবুজ বলেছেন: বাংলা আমাদের মায়ের ভাষা।সুন্দর লিখেছেন দেহে কোন মাটি নাই।মাটির দেহ কথার কথা।

৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:২৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভাষা শহীদদের কয়েকজনের পরিবার এখনো অস্বচ্ছল । ফেনীর আবদুল সালামের পরিবার তাদেরই একটা। অথচ ভাষার মাস আসলে নেতারা বড় বড় কথা বলে এরপর আর খোজ থাকে না

৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৫০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: বিদেশ বিভূঁইয়ে থেকে বাংলায় কথা বলার হাহাকার আপনার আরও বেশী হবার কথা।

৬| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৫৩

জটিল ভাই বলেছেন:
আমি আমার আশপাশের সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম। যা ফুটে উঠতো ওদের সাথে ওদের ভাষায় কথা বলার ভঙ্গিমায়। কিন্তু আমি ধীরেধীরে হেরে গেলাম।

উল্লেখিত অংশের ভিত্তিতেই বলেছিলাম, "শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না!" রক্ত ঝরেছে শুধুই বাংলা ভাষা তথা মাতৃভাষার জন্য যেটা প্রমিত বা ইংরেজি মেশানো ভাষার জন্যে নয়। কিন্তু সেই মাতৃভাষার প্রতি কটাক্ষ শহীদের রক্তের প্রতি তামাশা। এই হেরে যাওয়া শহীদের রক্তের হার। কিন্তু শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে এর হার মানা যায় না! এ রক্ত বৃৃথা যেতে দেওয়া যায় না। মূলত এটাই বুঝাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ব্যর্থ হলাম বলে অশ্রুসজল নয়নে ক্ষমাপ্রার্থী :'(

৭| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৩২

তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: প্রমিত ভাষাকে ভাড়াটে বলছেন কেন ? আপনার আঞ্চলিক ভাষা অনেকে না বুঝলে আপনার সাথে যোগাযোগে সমস্যা হবে ,একে সংকীর্ণতা বলা যায় না বরং সার্বজনীন প্রমিত ভাষার সৃষ্টি এখান থেকেই ।

আমার জন্ম বগুড়ায় বড় হয়েছি এখানে , আম্মু খুলনার মেয়ে ,এখনো সেই ভাষাতেই কথা বলেন । আমার মধ্যে খুলনার আঞ্চলিক টান একদমই নেই । বরং "হামরা বোগড়ার ছোল " এতেই বেশি চালু আমি । তবে আমার মাতৃভাষা কোনটা ?

আপনার মাতৃভাষা এবং বাংলাদেশের সকল আঞ্চলিক ভাষাই আমাদের সবার মাতৃভাষা ।

৮| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১:১১

আহমেদ জী এস বলেছেন: সৈয়দ তাজুল ইসলাম,




বিদেশের মাটিতে গেলে সব মানুষেরই খুব বেশি করে মনে পড়ে ফেলে আসা দেশের মাটি আর মায়ের ভাষাকে।
এসবের কথা ভেবে ভেবে মায়ের ভাষার জন্যে আপনার আকুতি, তাকে কাছে না পাবার অতৃপ্তি পোস্টের লাইনে লাইনে। এ হলো
নিজেকে হারানোর ব্যথা! মা ও মাটিকে ভালোবাসার এমন ক্রন্দন প্রবাসীদের হাড়ে-মাংসে। সে কারনেই সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন - ইনহাস্ত ওয়াতানম!

প্রবাসে ভালো থাকুন.... নিরাপদে থাকুন।

৯| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৩৪

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: সালাম সালাম হাজার সালাম সকল শহীদ স্মরণে...................


++++++

১০| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমার বাড়ি যাইও ভোমর,
বসতে দেব পিঁড়ে,
জলপান যে করতে দেব
শালি ধানের চিঁড়ে।
--------জসীম উদ্‌দীন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.