নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নহীন বালক তামিম।।\nইসলামিক, রোমান্টিক, গোয়েন্দা, রহস্য এবং সায়েন্স ফিকশন লিখার চেষ্টায় আছি।।।

স্বপ্নহীন বালক তামিম

স্বপ্নহীন বালক তামিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্নময় ভালোবাসা ৩ (অমৃত ভালোবাসা)

০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:০০

নীলা- এই তুমি আমার জন্য আর কত করবা?
আবির- কি করেছি?
নীলা- কি করেছো মানে? প্রতি মাসে আমার কলেজের বেতন দাও, হাত খরচের জন্য টাকা দাও। আবার বল কি করেছি!
আবির- যতদিন সামর্থ্য থাকবে ততদিন করবো।
নীলা- আচ্ছা বাবু তুমি আমাকে এত ভালবাসো কেন? তুমিতো আমার চেয়েও ভাল মেয়ে পাবে।
আবির- পাওয়ার দরকার নেই। আমার কাছে তুমিই বেষ্ট। আর আমি তোমাকে আমার চাইতেও বেশি ভালবাসি।
নীলা- আমিও তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি।কথা দাও আবির তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না।
আবির- গেলে অনেক আগেই চলে যেতাম। তবুও কথা দিলাম।

এতক্ষন কলেজ ক্যাম্পাসে বসে কথাগুলো বলছিল আবির ও নীলা। আবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ১ম বর্ষে আর নীলা সিটি কলেজে ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। আজ থেকে তিন বছর আগে তাদের সম্পর্ক হয়। এমনিতে তাদের পরিচয় হয়েছিল ২০০৯ সালে ক্লাস এইটে। তারা একই স্কুলে পড়ত বিধায় তারা দুজন দুজনকে চিনত। নীলা ভীষণ সুন্দরী মেয়ে ছিল। ক্লাসের অনেক ছেলেই তাকে প্রপোজ করেছিল কিন্তু নীলা সোজা না করে দেয়। তারমধ্যে আবির একটু ভিন্ন টাইপের ছিল। সে নীলাকে শুধু রুপের জন্য ভালবাসেনি নীলার মধ্যে কিছু অন্যান্য গুণ ছিল।অপ্রয়োজনে ক্লাসের কোন ছেলের সাথে কথা বলত না ক্লাস থেকে বের হত না। পড়াশোনায়ও সে খুব মেধাবী ছিল সবসময় সে ফার্ষ্ট হত নীলা সাথে আবিরের পাল্লা হত কারণ পরীক্ষায় আবির দ্বিতীয় হত। আবির অনেক চেষ্টা করেও নীলাকে হারাতে পারেনি। কিন্তু ক্লাস টেন এ উঠার পর আবির ফার্ষ্ট হয়ে যায় এবং নীলা দ্বিতীয় হয়। ক্লাস টেন এ উঠার কিছুদিন পর আবির নীলাকে প্রপোজ করে দেয়। নীলাও না করতে পারেনি কারণ আবির খুব ভাল ছেলে ছিল আর আবিরের সাথে তার ভাল বোঝাপড়াও ছিল তাই কয়েকদিন পরই সে আবিরের প্রপোজ একসেপ্ট করে। একই সাথে তারা এসএসসি পরীক্ষা দেয়। দুজনেই গোল্ডেন এ প্লাস পায়। একই সাথে এসএসসি দেওয়ার পরেও আবির এখন নীলার সিনিয়র। কারণ এসএসসি পাশ করার পর আবির কলেজে ভর্তি হলেও নীলা আর্থিক সমস্যার কারণে ভর্তি হতে পারেনি। কারণ নীলার বাবা অসুস্থ তাই ঠিক মত কাজ করতে পারেনা। তাই তার বাবা তার পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে বলেছিল এবং বিয়েও দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আবির গিয়ে নীলার বাবা মাকে বলে নীলার পড়ার খরচ সে চালাবে এবং নীলার পড়াশোনা শেষ হলে সে নীলাকে বিয়ে করবে। নীলার বাবা মা প্রথমে কিছুটা দ্বিমত করলেও পরে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আবিরের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। আবিরের মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। তার বাবা ছোটখাট একটা ব্যাবসা করে। নীলার ব্যাপারে তার বাবা মা ও জানে কিন্তু আবির তার বাবার উপর কোন প্রেসার দিতে চায় না তাই সে ২টা টিউশনি নেয়। এই টিউশনির টাকা গুলো দিয়ে নীলার পড়াশুনার খরচ চালায়। আবির নীলার অনেক টেক কেয়ার করে তাই সে চট্টগ্রাম ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পরও সেখানে ভর্তি না হয়ে সিটি কলেজে অনার্সে ভর্তি হতে চেয়েছিল কিন্তু নীলা বলে যে আবির যদি ভার্সিটিতে ভর্তি না হয় তাহলে সেও পড়াশোনা করবেনা। কারণ নীলা জানত আবির ছোট বেলা থেকে চট্টগ্রাম ভার্সিটিতে পড়ার প্রচন্ড শখ। নীলার এই জোরাজুরিতে আবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হয়। আবিরের টেক কেয়ারিং টা নীলার খুব ভাল লাগত। আবির নীলার সিনিয়র হওয়াতে নীলাকে প্রাইভেট পড়তে হত না। নীলাকে সব পড়া আবির বুঝিয়ে দেয়। সপ্তাহে একদিন নীলা ও আবির ঘুরতে যায়। মাঝে মাঝে নীলা চিন্তা করে একটা ছেলে একটা মেয়েকে কিভাবে এতটা ভালবাসে। আবিরকে পেয়ে সে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মেয়ে ভাবে। দেখতে দেখতে নীলার এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়। সে পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পায় একটা বিষয়ের জন্য গোল্ডেন এ প্লাস পায় নি। তারপর সেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয় মেরিট লিষ্টে অনেক পিছিয়ে থাকে কিন্তু আবিরের সাথে কিছু সিনিয়র ভাইদের ভাল সম্পর্ক থাকায় মোটামুটি সবার সহযোগীতায় কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই নীলাকে ভর্তি করিয়ে দেয়। নীলা ভর্তি হওয়ার পর থেকে দুজনেই একসাথে ভার্সিটিতে যাওয়া আসা করে। এর মধ্যে নীলার সাথে একই ক্লাসে ভর্তি হয় তন্ময় নামের একটা বখাটে ছেলে।সে কোটিপতি বাবার ছেলে। ক্লাসের খারাপ ছেলেরা তার সাথে যোগ দেয়।একদিন সে নীলা কে প্রপোজ করে বসল কিন্তু নীলা সোজা নাকচ করে দিল এবং বলল যে তার বয়ফ্রেন্ড আছে এবং তার সাথে বিয়েও ঠিক করা আছে। কয়েকদিন পর তন্ময় আবার একই কথা বলল এবার নীলা ওকে চরম অপমান করল। নীলা একথা আবিরকে জানিয়েছিল। আবির বলল তন্ময় যদি আবার এরকম করে তাহলে সে দেখবে। কিছুদিন পর দেশে লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগীতা শুরু হল। প্রতিযোগীতার জন্য সারাদেশে যখন সুন্দরী বাছাই চলছে তখন সুন্দরী বাছাইয়ের জন্য ভার্সিটিতে একটা দল গেল। সে দলের একজন সদস্য ছিল তন্ময়। নীলার আবার ছোট বেলা থেকে মডেল হওয়ার খুব ইচ্ছে কিন্তু তন্ময়কে দেখে সে অডিশনে যোগ দিলোনা আর আবিরও এটা মেনে নিবেনা। তাই সে অডিশনে গেলোনা। কিন্তু নীলার কিছু বান্ধবী ছিল ধনী বাবার মেয়ে। তারা নীলাকে বলল তুই এরকম চান্স দ্বিতীয় বার পাবিনা। এটা তোর ভাগ্য গড়ে দিতে পারে।তুই হয়তো দেশের নামকরা একজন হয়ে যেতে পারিস। আর এসব ব্যাপারে পরিবার আপনজনেরা আপত্তি করেই। কিন্তু যখন তুই ভিআইপি পার্সন হবি তখন দেখবি ঠিকই সবাই তোকে নিয়ে গর্ব করবে।
নীলা এসব কথা শুনে ঠিক করল যে সে আবিরকে অডিশন নেওয়ার কথা বলবে। তার পরদিন বিকেলে ক্যাম্পাসে মাঠে এক কোনায় বসে দুজন কথা বলছিল।

নীলা- আবির…
আবির- হুমম।
নীলা- একটা কথা বলব।
আবির- হুমম বলো।
নীলা- বললে রাগ করবানা তো?
আবির- আচ্ছা বলতো কি হয়েছে?
নীলা- কিছুনা। বাবু তুমি তো জানো আমার ছোটবেলা থেকে মডেল হওয়ার খুব ইচ্ছে।
আবির- তোহ!
নীলা- না মানে আমি লাক্স এর ওখানে অডিশন দিই..
আবির- ইম্পসিবল। তুমি এটা ভাবলে কি করে? তুমি জানো যে আমি এগুলো পছন্দ করিনা তারপরেও!
নীলা- প্লীজ বাবু। শুধু একবার অনুমতি দাও। প্লীজ…..
আবির- অসম্ভব। এটা আমি কখনোই হতে দিব না। ওখানে যারা যায় তারা আর ভালো থাকেনা। সো আমি এটা মেনে নিতে পারব না।
নীলা- আমি কিছু হই এটা তুমি চাওনা।
আবির- এটা তুমি বলতে পারলা? এটাই আমার প্রাপ্য ছিল।
.
এটা বলেই আবির সেখান থেকে উঠে চলে যায়। নীলার খারাপ লাগে। সেই মুহুর্তে নীলার বান্ধবীরা এসে বলে কিরে আবির কি বলেছে? তখন নীলা বলল আবির মানা করছে। তার বান্ধবীরা বলল আরে প্রথম প্রথম এরকম করবে। পরে দেখবি যখধ তুই কিছু একটা হতে পারবি তখন সব ঠিক হয়ে যাবে। তার বান্ধবীদের এসব কথায় নীলা অডিশনে গেল। অডিশনে সে প্রথম রাউন্ডের টিকিট পেল। প্রথম রাউন্ড শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে আবির তাকে একটা পার্কে নিয়ে গিয়ে অনেক বুঝালো কিন্তু সে বুঝলো না। তার একটাই জবাব সে প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করবে। আবির মনে কষ্ট পেলেও সে প্রায় সব সময় নীলার আশেপাশে থাকত যাতে ঔর কোন ক্ষতি না হয়। এখন নীলা খুব ব্যস্ত সে প্রথম দ্বিতীয় রাউন্ডে চান্স পাইছে। এবার ঢাকা যেতে হবে। তাই খুব ব্যস্ত সে। সেদিনের পর থেকে আবিরের সাথে কথাও হয়নি।। আজ নীলা ঢাকা যাচ্ছে । গাড়ীতে উঠার আগে আবির তাকে ডাক দিল।
.
আবির- নীলা এখনো সময় আছে। প্লীজ ফিরে এসো।
নীলা- আর কিছু বলার আছে?
আবির- না।
নীলা- তাহলে আমি আসি। এটা বলেই নীলা বাসে উঠে পড়ল।
.
নীলার এরকম আচরণ আবির কখনোই আশা করেনি। সেদিন রাতে আবির অনেক কান্না করল। ঐদিকে নীলা দ্বিতীয় রাউন্ড পার হল। তখনই ঘটল এক ঘটনা। সেখানে ঐদিন একটা পার্টি দিয়েছিল পার্টিতে সব প্রতিযোগী আর কিছু দেশী বিদেশী মেহমান আসল। সবাই ড্রিংকস করতে লাগল। নীলা জীবনে ড্রিংকস ধরেও দেখেনি। কিন্তু অন্যান্য প্রতিযোগী ও তার বান্ধবীদের জোরাজুরিতে নীলাও ড্রিংকস করল। ড্রিংকস শেষে ঘটে গেল একটি নরপিশাচিয় ঘটনা। ওখানের বড় বড় কর্মীদের একজন কেড়ে নিল তার সতীত্ব। পরদিন নীলা নিজেকে একটি কক্ষে আবিস্কার করল। যেখানে পার্টি হয়েছিল রুমটা সেখানেই ছিল। কিছুক্ষণ পর নীলার মোবাইল টা বেজে উঠল।
.
একটা পুরুষ কন্ঠ- কন্ঠটি- নীলা বলছেন?
নীলা- জ্বী
কন্ঠটি- যা ঘটেছে। তা প্রকাশ করে কোন ফায়দা হবেনা। আপনি প্রতিযোগীতায় আছেন। সো চুপ চাপ আমাদের সাথেই থাকুন বলে লাইন টা কেটে দিল।
.
নীলা মনে মনে ভাবল আবির আমাকে অনেক বুঝিয়েছিল কিন্তু আমি শুনিনি। এখন আমি কি করব। আবিরের কাছে কোনমুখে যাব। সেদিনই নীলা বাড়িতে চলে এল। বাড়িতে আসার পর সে ভাল করে কারো সাথে কথা বললো না। এদিকে আবিরের মনটা খুব খারাপ কারন নীলা আসলে দেখা না করুক অন্তত একটা কলও করতে পারত কিন্তু করেনি। হঠাত্‍ তার মোবাইলে একটা কল এল। কল রিসিভ করে একসেকেন্ডও দেরী করল না সোজা দৌড়ে হাসপাতালে গিয়ে পৌছল। পৌছানোর পরে নীলার মা আবিরের হাতে একটা চিঠি দিল। চিঠিটা পড়ে আবির কাঁদতে লাগল। চিঠিতে লিখা ছিল
“আবির আমি তোমার কথা মানিনি তাই আমার এই অবস্থা। আমি আর তোমার যোগ্য নই তাই চলে যাচ্ছি। পারলে আমাকে মাফ করে দিও।”
.
দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার ফলে নীলা চরম বাঁচা বেচে গেছে। ঞ্জান ফেরার পর নীলা দেখল আবির তার হাত ধরে বসে আছে। নীলা হাত টা ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিল কিন্তু আবির তার মুখটাকে ঘুরিয়ে বলল আমাকে ছেড়ে কোথায় যাচ্ছো? আমি তোমাকে ভালবেসেছি তোমার দেহ কে নয়। তোমার মনকে ভালবেসেছি রুপ কে নয়। তুমি আমাকে ছেড়ে কোথায়ও যেতে পারবানা। নীলা কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু আবির তার মুখ হাত ধরল। নীলাকে আবির জড়িয়ে ধরে বলল আবিরের বুকে নীলা বেচে থাকবে ততদিন, যতদিন আবির বেচে থাকবে। তখন নীলার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝড়তে লাগল কিন্তু এটা দুঃখের অশ্রু নয় আনন্দের অশ্রু।
¤¤¤সমাপ্ত¤¤¤

শিক্ষণীয়ঃ ইসলামের দৃষ্টিতে যেটা নিষেধ আপনারা নারীরা সেটাই করছেন। যার ফলে নারীদের আজ এ অবস্থা। নারীদের সম্মান কমে যাওয়ার জন্য নারীরাই দায়ী। কারণ আপনি যখন এসব শো তে আপনার বডি ফিগারটা শো করেন তখন দর্শকরাও অনেক কুমন্তব্য করে। আপনি যতই সতী হোন না কেন দর্শকরা ঐ পোশাকে আপনার নামে কু মন্তব্য করবেই। কেউ আপনার সামনে এসে আপনার
দিকে তাকিয়ে থাকলে আপনি তাকে বদমাইশ
লুইচ্ছা বলে অভিহিত করবেন। আর শো তে আপনার বডি ফিগারটা কোটি কোটি মানুষ দেখছে তোহ তাদের কি বলবেন? মনে রাখবেন শো করা অবস্থায়
আপনাকে কোটি কোটি মানুষ দেখছে। সুতরাং সময় থাকতে নিজেকে বদলে ফেলুন। পর্দা করুন।
[বিঃ দ্রঃ সব নারী এক নয়। সো কোন প্রকার বাজে মন্তব্য করবেন না।]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.