![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১.
জনাব আহসানুল হক ইজিচেয়ারে বসে বসে একটি বই পড়ছিলেন। দিনের বেশিরভাগ সময়ই এখন তিনি বই পড়ে কাটান। উনি একজন অবসরপ্রাপ্ত কলেজ-অধ্যাপক। একটি সরকারী কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন। বছর পাঁচেক হলো তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন।
বইয়ের মধ্যে তিনি বুঁদ হয়ে ছিলেন। ঠিক এমন সময় তাঁর রুমে তাঁর একমাত্র নাতি আবরার ছুটে এল। ছুটে এসেই তাঁর বুকশেলফের আড়ালে সে লুকিয়ে পড়ে। এমনভাবে লুকোয়, যাতে করে বাইরে থেকে কেউ দেখতে না পায়। নাতির পায়ের শব্দে আহসান সাহেবের মনোযোগ ভেঙে যায়। তিনি জানেন তাঁর নাতি কেন এভাবে ছুটে এসেছে এবং লুকিয়েছে। তিনি এও জানেন যে এর পরে কী ঘটনা ঘটবে।
আহসান সাহেবের নাতি আবরারের বয়স ৩ কি ৪ হবে। স্কুলে ভর্তি হয়নি। তবে ভর্তি না হলে কী হবে, তার বাবা অর্থাৎ আহসান সাহেবের ছেলে আকরাম সাহেব তাকে ঘরে বসিয়েই দুনিয়ার যাবতীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের পাঠদান করছেন কয়েক মাস হলো। আহসান সাহেবের কাছে তার ছেলের এরূপ পাঠদান প্রক্রিয়া একেবারেই পছন্দ হয়নি। বাচ্চাদের কিছু শেখাতে চাইলে তাদের বয়স উপযোগী কিছু শেখানো উচিত। তারা বর্ণমালা চিনলেই যে তাদের ক্লাস ফোর-ফাইভের ‘সাধারণ জ্ঞান’ নামক এনসাইক্লোপিডিয়ার বই হাতে ধরিয়ে দিতে হবে, এর তো কোনো মানে হয় না। অথচ তাঁর ছেলে তা-ই করছে।
আহসান সাহেবের রুমে তাঁর ছেলে আকরাম ঢুকল। তার হাতে বেত, বিখ্যাত জালি বেত। একসময় এ বেত আহসান সাহেবের হাতেও শোভা পেত। তবে তিনি কখনও এর প্রয়োগ ঘটাননি।
আব্বা, হারামজাদাটা কই ?!
আহসান সাহেব চুপ করে থাকলেন। ছেলেকে খুব ভয় পান- এমন কারণে নয়। বরং তিনি ছেলের আচরণে এবং বচনে ক্ষুব্ধ, এই কারণে।
আব্বা, শুনছেন নাকি ? হারামজাদাটা কই ?!
আহসান সাহেব মুখ খুললেন।
জ্বি, কার কথা বলছ তুমি ?
ওই হারামজাদাটার কথা বলছি, বুঝতে পারছেন না ?
কোন হারামজাদা ? কীসের হারামজাদা ?
আবরারের কথা বলছি আর কী !
অও ! তাকে হারামজাদা বলছ ? সে হারামজাদা মানে তো তুমিই সেই ‘হারামি’ ব্যক্তি। তোমার বংশধরই তো সে।
আব্বা, এখন এসব নিয়ে কথা বলার কোনো মানে নেই। সে কোথায় আছে জানলে বলেন, আর না জানলে ‘জানি না’ বলে দেন। এত তর্কাতর্কির মানে কী ! আমাদের ভাইবোনদের কেউ তো এত তর্ক করে না। কেউ আপনার মত হইনি।
হ্যাঁ, আসলেই। অন্য কেউ হয়েছে কি হয়নি তা জানি না। তবে তুমি আমার মত হওনি। হলে তোমার ভয়ে আবরার আজ আমার রুমের বুকশেলফে লুকিয়ে যেত না। তোমার কোলেই সে বসে থাকত, তোমার কথাই সে শুনত।
বুঝতে পেরেছি, হারামজাদাটা বুকশেলফের আড়ালে। দাঁড়া, তোর একদিন কি আমার একদিন, মোট দুইদিন !
আহসান সাহেব ছোট নিঃশ্বাস ফেললেন। উচিত কথা বলতে গিয়ে তিনি নিজের নাতিকেই বিপদে ফেলে দিয়েছেন। কথা ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হলে তিনি ফিরিয়ে নিতেন, কিন্তু তা সম্ভব নয়।
আবরারের কান টেনে নিয়ে তার বাবা তাকে নিজের রুমে ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর জালি বেতের সেই নির্মম শব্দ শোনা গেল। আর এরপর শোনা গেল তার আদরের নাতির আকাশ ফাটানো আর্তনাদ।
তাকে কীজন্যে মারা হচ্ছে, তা আর আহসান সাহেবের জানতে ইচ্ছে করে না। হয়ত যোগ-বিয়োগ অঙ্কে ভুল করেছে, কিংবা কোনো ইংরেজি শব্দের বানানে ভুল করেছে, অথবা মানবদেহের সর্বমোট হাড়ের সংখ্যা বলতে ভুল করেছে কিংবা বলতে পারেনি।
২.
আকরাম সাহেব নিজের রুমে বসে টিভি দেখছেন। বেশিরভাগ সময়ে তিনি সংবাদের চ্যানেলগুলোতেই আটকে থাকেন। আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেলগুলোই তাঁর প্রিয়, দেশীয় চ্যানেলগুলোতে তাঁর যাওয়াই হয় না। দেশীয় চ্যানেলগুলোতে নিরপেক্ষতা বলে কিছু নেই, সবই একটি পক্ষের হয়েই যাবতীয় সংবাদ প্রচার করে। তাছাড়া তিনি বিরোধী দলকে সমর্থন করেন। তাই স্বভাবতই দেশের নিউজ চ্যানেলগুলো তাঁকে তৃপ্ত করতে পারবে না।
আকরাম সাহেবের স্ত্রী তাঁর হাতে চায়ের কাপ ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
‘আব্বা তোমাকে ডাকছেন। যাও দেখা করে এসো।’
‘আব্বাকে বলে দাও এখন আমি খবর দেখছি।’
‘আমার মাধ্যমে না বলে কথাটা নিজে গিয়েই বলে আসো না !’
আকরাম সাহেব নিজের স্ত্রীর দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকালেন। সেই দৃষ্টি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে তাঁর স্ত্রী হাতে রিমোট নিয়ে টিভি বন্ধ করে দিলেন।
‘সংবাদ দেখে এত জ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই। তার চেয়ে একজন জ্ঞানী লোকের ডাক শুনে তিনি কী বলতে চান তা শুনে আসো। উনি তোমার অপেক্ষাতেই বসে আছেন।’
অনিচ্ছা সত্ত্বেও আকরাম সাহেব উঠে পড়লেন।
৩.
-‘আব্বা, ভেতরে আসবো ?’
আহসান সাহেব ‘নবীদের কাহিনী’ নামক একটি বই পড়ছিলেন। ছেলের অনুমতিবাক্যে তাঁর মনোযোগ ভাঙল বলে মনে হল।
‘হ্যাঁ, আসো, বসো।’
ছেলে সামনে এসে বসল। বাবার সামনে সকালবেলায় তিনি যে রূপে ছিলেন, সেটির সাথে এই মুহূর্তের রূপ ঠিক মিলছে না। চুপচাপ বাবার সামনের চেয়ারে দৃষ্টি নিচু করে তিনি বসে আছেন। হয়ত তিনি বুঝতে পারছেন যে তাঁর বাবা এখন তাঁকে কী ধরণের কথা বলবেন। সকালবেলায় তাঁর কৃত অপরাধের জবাবদিহি চাইতে পারেন, অথবা হাতের বই থেকে কিছু নীতিবাক্যও শোনাতে পারেন।
‘আকরাম, তোমার বয়স কত হলো?’
আকরাম সাহেব বোধহয় কথাটি ঠিক বুঝতে পারেননি।
‘জ্বি আব্বা , কী বললেন ?’
‘বললাম যে তোমার বয়স কত হয়েছে?’
‘জ্বি? আআআ… সামনের এপ্রিলে ৩৬ হবে।’
’৩৬, মাশাআল্লাহ ! তুমি তো অনেক বড় হয়ে গেছ ! মনে হয় সেদিনই তোমাকে হাফ প্যান্ট পরে দৌড়োতে দেখতাম। হাহ হাহ হাহ।’
এ ধরণের কথায় সাধারণত সমর্থন দিতে হাসতে হয়। কিন্তু আকরাম সাহেব বললেন,
‘এটা বলার জন্যেই কি আমাকে ডেকেছেন ?’
‘কেন, তুমি কি জরুরী কোনো কাজ করছিলে ?’
টেলিভিশনে সংবাদ দেখা গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা কোনো ‘জরুরী কাজ’-এর তালিকায় পড়ে না। তাই আকরাম সাহেব চুপ করে থাকলেন।
‘আকরাম, তোমার হাঁটুতে ব্যথা আছে ?’
‘না তো !’
‘আচ্ছা, চোখে কম দেখ ?’
‘কই না !’
‘অও। হাড়ের সন্ধিতে মানে গিরায় গিরায় ব্যথা-ট্যথা হয় ?’
‘নাহ !’
‘সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠতে পার ?’
‘ কী যা-তা বলছেন ! হাঁটুতে ব্যথা না থাকলে সিঁড়ি ভাঙতে পারব না কেন ?’
‘তাও অবশ্য ঠিক। কিন্তু এসব সমস্যা তো আমার আছে।’
‘তা তো থাকতেই পারে। আপনি বুড়ো হয়েছেন না !’
‘হ্যাঁ , তা তো হয়েছিই।’
‘বুড়োদের এসব হবে, তা-ই তো স্বাভাবিক, আব্বা।’
‘আচ্ছা, এসব সমস্যা যদি তোমার বয়েসী কারও অথবা ২০-২৫-৩০ বছর বয়েসী কারও থেকে থাকে, তাহলে সেটা কী স্বাভাবিক ?’
‘অবশ্যই না।’
‘কেন?’
‘কারণ একেকটা বয়সে মানুষ একেক রকম অবস্থায় থাকে। শিশুরা থাকে চঞ্চল, কিশোরেরা থাকে কিছুটা উচ্ছৃঙ্খল, যুবকেরা থাকে দায়িত্বসচেতন, মধ্যবয়স্করা থাকে সাংসারিক নানান ঝামেলায় জর্জরিত, এবং বুড়োরা বা ভদ্র ভাষায় বললে প্রবীণেরা থাকে শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত। প্রবীণদের রোগবালাই যুবকদের মধ্যে দেখা দিলে তা তো আসলেই মহাঝামেলার কারণ।’
‘বাহ, ভালোই তো জান এসব ব্যাপারে।’
‘বইপত্র থেকে জেনেছি। আমি খুব পড়াশুনা করি।’
‘আচ্ছা, কেউ কী মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থাতে পড়াশুনা করতে পারে ?’
‘আব্বা, আপনি ভালো করেই জানেন যে তা কখনোই সম্ভব নয়।’
‘তা জানি। আচ্ছা, প্রবীণদের বা বুড়োদের কোনো প্রকার রোগবালাই থাকলে তা অন্যদের চোখে স্বাভাবিক। কিন্তু যুবকদের এসব রোগবালাই থাকলে তা অস্বাভাবিক কেন?’
‘কারণটা আপনাকে একটু আগেই তো বলেছি আব্বা। নির্দিষ্ট বয়সের নির্দিষ্ট অবস্থাই এর কারণ। বুড়ো বয়সে শরীরের কলকব্জাগুলো নষ্ট হতে থাকে, তাই এসব দেখা দেয়। কিন্তু কারো যৌবনে যদি শরীরের কোনো অংশ নষ্ট হয়ে যায়, তবে তাদের জন্যে তা তো আসলেই দুর্ভাগ্যজনক। আর তাদের দেখে আমরা করুণা ছাড়া তো আর কিছুই করতে পারি না।’
‘আমার ধারণা ছিল তুমি বোকা। কিন্তু এখন দেখছি তুমি অনেক কিছুই জান। কিন্তু এতকিছু জান, এটি দেখার পরেও তুমি আমার নিকট বোকাই থেকে গেলে।’
‘কেন, বোকা থেকে গেলাম কেন?’
‘বুড়ো বয়সে আসার আগেই কেউ যদি হাঁপানী, ডায়াবেটিস, ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে, তাহলে তাদেরকে তোমরা দুর্ভাগা বল; তাদের জন্যে তোমরা করুণা ছাড়া আর কিছুই করতে পার না।’
‘হ্যাঁ, তো ?’
‘কিন্তু একটি নির্দিষ্ট বয়সে যাওয়ার আগে যখন কাউকে শেখানো হয় যে ’দুই দু’গুণে চার’, কিংবা ‘মানুষের হাড়ের সংখ্যা ২০৬টি’, কিংবা ‘জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা হলেন এই লোক’, তখন মনে হয় তোমার কোনো করুণা হয় না বা তাকে দুর্ভাগা বলে মনে হয় না।’
আকরাম সাহেব কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন,
‘আব্বা, আপনি এই কথাগুলো সরাসরি বলে ফেললেই পারতেন। এত ত্যানা প্যাঁচানোর তো কোনো মানে হয় না।’
‘কথাগুলো বলার আগে কিন্তু আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে তুমি কি কোনো জরুরী কাজ করছিলে কি না। তুমি চুপ ছিলে, তাই ভাবলাম তুমি ব্যস্ত নও। তাছাড়া, তোমার মত ব্যক্তিত্বের মানুষের সাথে কথা বলতে হলে এভাবেই বলা উচিত বলে আমি মনে করি।’
‘সরাসরি বললে আমি কি শুনতাম না।’
‘সেটা আমি জানি না। তবে আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে যা বুঝেছি, তা হল সরাসরি তোমাকে বললে তুমি শুনতে না। এর আগে তোমাকে প্রায় ৫-৬ বার এভাবে ডাকা হয়েছিল। তুমি এসেছিলেও। আমি তখন অভিযোগগুলো সরাসরি করেছিলামও। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। কারণ, তুমি মনে কর তুমি যা করছ তাই সঠিক। অন্যেরা তোমার ব্যাপারে কিছুই বলতে পারে না। শুনেছি, বৌমা তোমাকে এসব নিয়ে কিছু বললে নাকি তাকে তুমি ঝামটা মেরে থামিয়ে দাও। আমি তো আশঙ্কা করছি যে, তোমার বাবা না হলে হয়ত তুমি আমাকেও ঝামটা মেরে থামিয়ে দিতে।’
আকরাম সাহেব চুপ করে রইলেন। তিনি রেগে যাচ্ছেন না, বরং সম্ভবত এই প্রথমবারের মত অন্য কারো কথা তাঁকে ভাবিয়ে তুলছে।
‘আমার এসব কথার উপসংহার কী হবে, তা তুমি আঁচ করে ফেলেছ ইতিমধ্যেই। তাই কথা বাড়াচ্ছি না। তোমাকে আমি একথা বলব না যে, যাও তোমার স্ত্রী-সন্তানের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নাও। তুমি তা কখনোই হয়ত করবে না। কারণ তুমি কারো নিকট ছোট হতে চাও না। এর চেয়ে বরং আমি একথা বলব যে, তুমি তাদের সাথে ভবিষ্যতে এমন আচরণ ও ব্যবহার করবে, যাতে করে তারা নিজেনিজেই তোমাকে ক্ষমা করে দেয়। তুমি হয়ত ভাবছ, ৩-৪ বছরের বাচ্চা আবার এসব কী বুঝে। কিন্তু একটা কথা ভুলে যেও না যে সে বাচ্চা হলেও কিন্তু সে মানুষ। তারও একটা মন আছে। সেই ছোট্ট মনে সে পছন্দের মানুষদের একে একে জায়গা করে দিচ্ছে। তুমি তার বাবা, সেই ছোট্ট মনে তোমার জায়গা এখনও হয়নি। সেই ছোট্ট জায়গায় নিজের জায়গা করে ফেল সময় উত্তীর্ণের আগেই। এমনভাবে নিজেকে তুলে ধর, যেন তোমাকে দেখে সে ভয়ে পালিয়ে না গিয়ে তোমার কোলেই যেন সে ছুটে আসে।’
আকরাম সাহেব কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থেকে উঠে পড়লেন। কোনো প্রকার ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি কিংবা নেতিবাচক অস্বীকৃতি- কিছুই জানালেন না তাঁর বাবাকে।
শেষ অংশ
‘ওয়ান অ্যাপেল প্লাস ওয়ান অ্যাপেল , ইজ টু-অ্যাপেল। টু’অ্যাপেল ফর ইউ।’
এরকম অদ্ভুত বাক্য কখনো আহসান সাহেব শুনেননি। শুনেই বুঝা যাচ্ছে এটি গণনা বিষয়ক কোনো কিছু। টেলিভিশনে এসবও দেখায় তাহলে আজকাল। তিনি শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখলেন শব্দটি তাঁর ছেলের রুম থেকে আসছে। স্ট্রেচার এগোতে এগোতে তিনি ছেলের রুমের দরজায় উঁকি দিয়ে দেখেন, তাদের টিভিতে বাচ্চাদের কিছু একটা দেখান হচ্ছে এবং টিভির সামনে আনন্দে লাফাচ্ছে তাঁর নাতি আবরার।
‘থ্রি পেন্সিল প্লাস টু পেন্সিল, ইজ ফাইভ-পেন্সিল। অল আর ফর ইউ।’
টিভির পর্দায় তিনটি পেন্সিল আর দু’টি পেন্সিলের ছবি ভেসে উঠতে উঠতে শব্দটি শোনা গেল। আশ্চর্য্যের ব্যাপার হল আবরারের পিতামাতা বিছানায় বসে ছেলের কর্মকাণ্ড দেখছেন। তাঁদের উভয়ের মুখেই হাসি। আবরারের যে বাবা তাঁর ছেলেকে কার্টুন দেখারই অবসর দিত না, সে কি না আজ তাকে নাচতে দেখেও হাসছে- দৃশ্যটা খুব অদ্ভুত লাগল আহসান সাহেবের।
-‘আবরার বাবা, বল তো টু প্লাস থ্রি কত?’ – আকরাম সাহেবের প্রশ্ন।
‘আব্বু, ফাইভ !’
‘ভেরি গুড ! এখন আমার হাতে একটা ‘ফাইভ’ দাও তো !’
আবরার তার বাবার হাতে তালি বাজাল।
আহসান সাহেবকে তাঁর ছেলে-বউমা-নাতি , কেউই খেয়াল করেনি। এবং সাথেসাথে তারা এও খেয়াল করেনি যে এ মধুময় দৃশ্য দেখে আহসান সাহেবের চোখের কোণে পানি এসে গিয়েছিল এবং তিনি তা মুছে ফেলেননি। তাই তা টপ করে তাদের রুমের দরজার সামনে গড়িয়ে পড়েছিল।
২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৮
বিজন রয় বলেছেন: পড়ে শেষ করতে পারলাম না। অাবার আসতে হবে।
৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৯
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: শেষ পর্যন্ত আহসান সাহেবের ছেলের চোখ খুলল তাহলে!
ভাল লিখেছেন। বাবা-মায়েরা সন্তানদের বন্ধু হয়ে উঠুক, আতঙ্কের কারণ নয়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৯
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেকেই বলে মাইরের উপ্রে ওষুধ নাই। কিন্তু অনেকেই ভুল জায়গায় সময়ে- অসময়ে, কারণে - অকারণে এই ভুল ওষুধ প্রয়োগ করে চলেছে। বাচ্চাদের মন বুঝে চলা এবং তাদের সময়ে সময়ে নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন হলেও একটু ধৈর্যের পরিচয় দিলে বাচ্চারাও অনেক কিছু বুঝে ফেলে। এই মারধোরের প্রক্রিয়াটা বরাবর অপছন্দ এবং এড়িয়ে এসেছি।
আপনার গল্পের মেসেজটা খুব ভালো লেগেছে।
হ্যাপি ব্লগিং