![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার নোয়াখালী প্রেম (বৃহত্তর নোয়াখালী)!
চট্টগ্রাম অঞ্চলে নোয়াখালী বিরক্তি একটি অন্যতম আলোচিত বিষয়। কারো কিছু একটা পছন্দ না হলেই তাকে জিজ্ঞেস করা হয় বাড়ী নোয়াখালী কিনা? চট্টগ্রাম এর লোকজন চায়ের কাপে ডুবিয়ে পরটা চিবুলেও তা নোয়াখালীর কাজ বলেই বিবেচিত হয় কিংবা কারো বাড়ীতে দাওয়াত খাওয়া মাত্র চলে গেলে তাও নোয়াখালী কর্ম বলেই বিবেচিত হয়। দুইজনের মাঝখানে তৃতীয় কেউ কথা বলে উঠলে সেটিও নোয়াখালীর লোকের স্বভাব বলে ধরে নেওয়া হয়। এইরকম ত্রুটিবিচ্যুতি যা প্রায় সব অঞ্চলে বিরাজমান তার জন্য কোন একটি বিশেষ অঞ্চলের লোকের স্বভাব বলে চালিয়ে দেওয়া আমার নিকট অতীব নিন্দনীয় কাজ বলে মনে হয়, অধিকন্তু এটি ‘নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা’ এই প্রবাদের কথা মনে করিয়ে দেয়।
নোয়াখালী শব্দটার সাথে আমার পরিচয় সেই প্রথম শ্রেণী হতেই। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজিলার ভেওলা নামক গ্রামে আমার জন্ম হলেও দেড় দুই বছর বয়স হতে এস,এস,সি পর্যন্ত সাগরপাড়েই আমার বেড়ে উঠা। অতঃপর চট্টগ্রামে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পার করে শিক্ষকতা। এই দীর্ঘ জীবনে আমি শুধু নোয়াখালীর লোকজনের ভালো সাহচর্য পাইনি, পেয়েছি অনেক সহযোগিতা ও ভালোবাসা।
প্রাইমারী পর্যায়ে যে বন্ধুটির সাথে খেলাধুলায় মসগুল থাকতাম বা যে বন্ধুটি তার খেলার সাথী হিসাবে সবসময় আমাকে বেছে নিত তার বাড়ী ছিল নোয়াখালী। বাসার কোন পিঠা কিংবা মজার খাবার খাওয়াতে পারলেই সে যেন পরম শান্তি অনুভব করত। আমাদের জায়গাটার পিছনে একটা শিউলি ফুল গাছ ছিল, যার ফুল তুলতে আমরা খুব ভোরেই জেগে উঠতাম আর দেখতাম বন্দুটি আমার জন্য অপেক্ষা করছে এক সাথে ফুল তুলবে বলে। ছোট বেলায় দেখেছি নোয়াখালীর মানুষগুলোর অতিথিপরায়ণতা, বাড়ী হতে পিঠা নিয়ে এসে তা প্রতিবেশীদের সবার সাথে শেয়ার করে খেতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ছাত্র তখন দেখলাম আমার সব চাইতে কাছের মানুষ হিসাবে যারা আবির্ভূত হল তাদের সত্তর শতাংশই নোয়াখালীর মানুষ। যে শিক্ষকগণ খুব কাছ হতে আমাকে তাদের অভিভাবকত্ব দিয়ে পড়াশুনায় উৎসাহ দিয়েছিলেন তাদের অধিকাংশের বাড়ী নোয়াখালী কিংবা তার আশেপাশেই ছিল। যে কয়জন বন্ধুর সাথে বই, খাতা, নোট নিঃস্বার্থভাবে শেয়ার করতে পারতাম তার মধ্যেও একাধিক জন ছিল নোয়াখালীর। হলে ছাত্র সংগঠনগুলোর হানাহানিতে যখন বই, খাতা, নোট সব রেখে বাসায় চলে আসি তখন যে বন্ধুর বই, খাতা, নোট অনায়াসে ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছিলাম তার বাড়ীও ছিল নোয়াখালিতে। যোগ্যদের মাঝে যোগ্যতম হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ রাজনীতির কবলে পড়ে যখন আমার শিক্ষক হওয়া বাধাগ্রস্থ তখন যে শিক্ষকগণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের মধ্যে একাধিকজন নোয়াখালি অঞ্চলের শিক্ষক। আমার নামে সন্তানের নাম রাখবে তাই নোয়াখালি অঞ্চলের এক বন্ধুর মামা আমাকে তাদের বাড়ীতে নিয়ে গেলেন, দুই দিন ধরে মজার মজার সব খাবার খাওয়ালেন তারপর সন্তানের নাম রাখলেন আমারি নামে। এই মামা আমাকে এতটাই পছন্দ করতেন যে তার সন্তানের নাম আমাকে দিয়েই আমার নামটিই রাখলেন। আরো অনেক অনেক ঘঠনা বলা যায় এই অঞ্চলের ভালো মানুষগুলোর ব্যাপারে।
১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১০
তানভীর আরিফ বলেছেন: ধন্যবাদ লিখাটি পড়ার জন্য।
২| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১২
অরণ্য পাটওয়ারী বলেছেন: ১০০% আন্তরিক এবং অতিথিপরায়ন । আমার পরিবারই তার প্রমানরূপ।
জয়তু নোয়াখালি.....।
১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৯
তানভীর আরিফ বলেছেন: ধন্যবাদ পরিবারের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৪১
ভিটামিন সি বলেছেন: ন খাইল্ল্যা।
বিএনসিসি।
আমি যখন সিনহা টেক্সটাইলে (কাঁচপুর ব্রিজের সাথে) জব করতাম, তখন কি এক কাজে যেন এডমিন এর হল রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি আমি যার কাছে এসেছি তিনি এক বিশাল কর্মযজ্ঞ নিয়ে বসেছেন। ওইদিন টেক্সটাইলে কিছু শ্রমিক নিয়োগ হবে। আমাকে দেখেই মফিজ সাহেব প্রথমে চা অফার করলেন। তো নতুন সবেমাত্র পাশ করেই জয়েন করেছি এখানে, সিনিয়রদের অফার ফেলি কি করে, যদিও চায়ের কাপে আমার তেমন আগ্রহ নেই। তাও দুইজনে একসাথে চা খেলাম আর এরই ফাকে তিনি আমার হাতে কিছু বায়োডাটা ধরিয়ে দিলেন সাথে চেয়্যারম্যানের নাগরিকত্বের সনদ। আমাকে বললেন, ভাই আমাকে একটু হেল্প করেন। আমার সহকারী আজকে ছুটিতে। আমি বললাম, বলুন কি করতে হবে। তিনি কাগজগুলো থেকে বিএনসিসি আর লোকাল খুজে বের করতে বললেন আর সেগুলি আলাদা করতে বললেন। আমি তো বিএনসিসি বুঝি না। তারপর তিনি বোঝালেন বরিশার, নখালি, কুমিল্লা আর চট্রগ্রাম এর গুলি বের করুন। আর নারায়নগঞ্জের গুলিও সাথে। আমি বললাম এগুলি বের করে কি করবেন?
তিনি বললেন এই ৫ জেলার লোক নিয়োগ করা যাবে না। এরা খুবই খাটাশ টাইপের। তারপর উনার কথামতো তাই করলাম।
১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১৭
তানভীর আরিফ বলেছেন: মফিজ সাহেব জেনে শুনে সেই কাজটিই করলেন যার বিরুদ্ধে আমার এই লিখাটি। মফিজ সাহেবের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা ছাড়া এক্ষুনি আমার আর কিছু করার নেই। তিনি এই সব অঞ্চলের সকল মানুষকে এক পাল্লায় মেপে নিজেকে সবার চাইতে অধম হিসাবেই প্রকাশ করলেন।
৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৫
সাদা রং- বলেছেন: মফিজ নামরে লোকগুলো মফিজই হয়।
১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:২৭
তানভীর আরিফ বলেছেন: উল্লিখিত মফিজের ঘঠনা সেটাই প্রমাণ করে।
৫| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৮
নেক্সাস বলেছেন: আপনাকে স্যালুট এবং আপনার বিশাল হৃদয়ের বন্দনা করি। এতদঞ্চলে সভ্যতার সূচনা থেকে এদেশের অভ্যুদয় এবং এদেশের শিল্প, সাহিত্য, ভাষা ও সংগ্রামে নোয়াখালীর মানুষের নিঃসার্থ অবদান, নোয়াখালির প্রকৃত স্বরূপ এবং অন্য জেলার মানুষের নোয়াখালি ম্যানিয়ার কারণ নিয়ে একটা লিখা লিখেছিলাম। পরে পোষ্ট দেওয়া হয়নি ভূল বশত ডিলেট হয়ে যাওয়ার কারণে।
যাই হোক শুধু বলব উপরের ভিটামিন সি ভাইয়েরও এমন ম্যানিয়া আছে। অন্যদের কথা যেটাই হোক শিক্ষিত, আধুনিক মানুষেরা যখন ৫৫ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট দেশে জেলা ভিবক্তি করেন তখন সত্যি অবাক হই।
আর মফিজ সাহেবদের ব্যাপারে বলব এটা হচ্ছে জেলাসি। মফিজ সাহেবরা এই চার অঞ্চলের মানুষের কর্মদক্ষতা, পরিশ্রম ও সাহসিকতার সাথে পেরে উঠতে পারেন না বলেই আত্ম স্বান্তনা হিসেবে এসব খোড়া বিশ্বাস কে বহন করে জীবন যাপন করেন।
যাই হোক ছোট্ট বাংলাদেশের প্রতি জেলা নান্দনিক তার নিজস্ব কালচার ও কৃষ্টিতে। ভালো মন্দে মিলিয়ে প্রতিটি অঞ্চল।
আপনার কাছে কৃতজ্ঞতা
১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫৪
তানভীর আরিফ বলেছেন: আপনার মন্তব্যে প্রচণ্ড রকমের দেশ প্রেম পরিলক্ষিত হয়েছে। এই রকম ৬৮,০০০ নেতা দরকার আমার দেশের ৬৮,০০০ গ্রামের জন্য যারা দেশকে আঞ্চলিকতা দুষ্টে বিদ্ধ করবে না। সম উন্নয়ন ছড়িয়ে দিবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। স্যলুট ব্রাদার।
৬| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৪৫
জাভেদ৫০ বলেছেন: ভাল খারাপ সব জায়গায় আচে। তবে কোন জায়গায় খারাপ লোক বেশী হলে, পুরা এলাকার নাম তথা সব মানুশের নাম খারাপ হইয়া যায়। উত্তর অন্সলের মানুষ দক্ষিন অঞ্চলের মানুষদের দেখতে পারে না, কারন বাংলাদেশের দখিন অঞ্চলের মানুষ ধনী। সব এলাকার মানুশদের একটা আলাদা বেশিস্ট আছে। তবে নোয়াখালীদের মানুশের মধ্যে একতাবোধ আচে, যার কারনে কম ক্কেত্রে ওরা প্যাচগি খেলে বেশী। নোয়াখালীর মানুশ নিজেদের লোক ছাড়া অন্য কাঊকে সাইড দেয় না। তারা কোন জায়গায় সুইচ হয়ে ডুকে আর কুড়াল হইয়া বের হয়। সাথ সংশ্লিষ্ট ব্যাপার আসলে তখন ওদের চেহারা প্লাটে যায়।
আর লেখককে বলব, আপনি মনে হ্য় অতি মাত্রায় নোয়াখালী প্রীতি । চায়ের কাপে পরটা চুবিয়ে খাওয়া এটা খারাপ কিছু না। এটা খুব মজার।
১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১২
তানভীর আরিফ বলেছেন: জাভেদ ভাই, আমি তো আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। এখানে অতি মাত্রা বা নিচু মাত্রা প্রকাশ করার চেষ্টা করি নি। আপনার অভিজ্ঞতা আমার মত নাও হতে পারে। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৭| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২২
বশর সিদ্দিকী বলেছেন: নোয়াখলি খ্রাফ...........নোয়াখাইল্যা লোক খ্রাফ.................
খ্রাফ....
খ্রাফ....
খ্রাফ....
খ্রাফ...
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯
এম ই জাভেদ বলেছেন: নোয়াখালীর মানুষের মন অনেক বেশি উদার। এরা যথেষ্ট আন্তরিক এবং অতিথিপরায়ন। আপনার সাথে শতভাগ সহ মত।
জয়তু নোয়াখাইল্লা.....।