নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তারেক০০০

আমি একজন ইসলাম ধর্মের অনুগত ছাত্র।তাই আমি সত্যের বিজয় চাই,সেটা ধর্মীয়,রাজনৈতিক সব দিক দিয়ে।

তারেক০০০ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তথাকথিত আহলে হাদীসের আসল রূপ - পর্ব ০১

০৭ ই মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৭

মুসলমনাদের অবস্থা এখন বড়ই খারাপ। কোথাও তারা নিরাপদ নয়। না দেশে, না বিদেশে। না মুসলিম রাষ্ট্রে, না বিধর্মী রাষ্ট্রে। গোটা পৃথিবীতে ইসলামের শত্রুরা মুসলমানদের ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মুসলমান দেখলেই “সন্ত্রাসী” উপাধী দিয়ে হেনস্থা করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্মকে সন্ত্রাসী ধর্ম, অসাম্প্রদায়িক ধর্ম আখ্যা দেওয়ার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে উপর্যুপরিভাবে। মুসলমানদের ইসলামী শিক্ষালয়কে সন্ত্রাসীকেন্দ্র আখ্যা দেবার হিন কর্মকান্ডে লিপ্ত।



ঠিক এমনি সময় মুসলমানরা আজ শতধা বিভক্ত। মুসলমনদের মাঝে ধর্মীয় কোন্দলের সয়লাব।



অথচ এখন সবচেয়ে প্রয়োজন হল মুসলমানদের মাঝে একতা সৃষ্টি করা। ঐক্যমত্ব প্রতিষ্ঠিত করা। নবীজী সাঃ এর কালিমায়ে তায়্যিবার প্লাটফর্মে এক হওয়া আজ সময়ের আবশ্যকীয় দাবি।



তবে তার আগে জানতে হবে সত্য ধর্ম ও সত্য দল সম্পর্কে। ইসলাম নামধারী কিছু দল মুখে ইসলামের কথা বললেও তাদের মূল কাজ হল মানুষের মাঝে ধর্মীয় বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করা। আমাদের উপমহাদেশে ধর্মীয় কোন্দল সৃষ্টির নিমিত্তে যেই সকল কথিত ধর্মীয় ফিরক্বা উদ্ভাবন করেছে তাদের মাঝে অন্যতম হল গায়রে মুকাল্লিদ বা কথিত আহলে হাদিস দল।



নবীজী সাঃ এর বিশাল হাদিস ভান্ডারকে অস্বিকার করার জন্য কেবল বুখারী মুসলিম আর ক্ষেত্র বিশেষে কেবল সিহাহ সিত্তার হাদিস মানা। এই দাবির মাধ্যমে মুয়াত্তা মালিকের মত স্বীকৃত সহীহ হাদিসের কিতাবসহ অসংখ্য হাদিসের কিতাবের সহীহ হাদিসকে অস্বীকার করার এক ভয়ংকর খেলায় মেতে উঠেছে এই দলটি।



তাই আমাদের সবার উচিত এই দলটির উৎপত্তি সম্পর্কে জানা এবং তাদের কাছ থেকে সাবধান থাকা।



মুফতি রফিকুল ইসলাম আল-মাদানী



প্রায় দু’শত বছর ইংরেজদের গোলামীতে আবদ্ধ ছিল ভারত উপমহাদেশের সমস্ত মুসলমান। এ দেশের মুসলিম কৃষ্টি-কালচার ও ধর্মীয় ঐতিহ্যকে বিলুপ্ত করে তাদের শাসন-শোষণ স্থায়ী করার হীন প্রচেষ্টায় ইংরেজ বেনিয়ারা বহুমুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কেবল ১৮৫৭ ইংরেজীর আযাদী আন্দোলনে তারা ৫৫ হাজার মুসলমানকে শহীদ করে। ১৮৬৪ থেকে ১৮৬৭ পর্যন্ত ৩ বছরে হিংস্র হানাদাররা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে শহীদ করে ১৪ হাজার আলেমকে। আগুনে পুড়িয়ে ও গুলি করে শহীদ করে অসংখ্য আলেম-উলামা ও নিরীহ মুসলমানদেরকে। ইজ্জতহরণ ও অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয় অসংখ্য মুসলিম মা-বোন। কারাবরণ করেন হাজার-হাজার মুসলমান। কেবল দিল্লী শহরেই তারা জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে প্রায় দশ হাজার মাদ্রাসা।



গাইরে মুক্বাল্লিদদের গোড়ার কথা



ভারতবর্ষে গাইরে মুক্বাল্লিদদের উৎপত্তি



চলমান শতাব্দীর ঘোর জাহিলিয়্যাত ও ভয়াবহ ফিতনা সৃষ্টিকারী তথাকথিত “ আহলে হাদীস ” নামধারী, যারা মুকাল্লিদ তথা মাযহাব অবলম্বীদেরকে “ নবোদ্ভাসিত ” বা তাক্বলীদ নামক বিদয়া’তে লিপ্ত বলে অপবাদ দিয়ে আসছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, তাদের ন্যায় এমন অনেক ভ্রান্ত দলই রয়েছে, যারা নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ। আর যারা নিজেদের সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না, তারা অন্যদের সমালোচনা কিভাবে করতে পারে, তা আমার কেন, কারও বুঝে আসার কথা নয়। তাই এখানে সূচনালগ্নে গাইরে মুকাল্লিদ্দেরকে তাদের জন্মকাল এবং উৎপত্তিস্থল স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যাতে করে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, তাক্বলীদ করা বিদ্য়া’ত নাকি তাক্বলীদ্-বিমূখী হওয়া বিদ্য়া’ত।



১।



প্রসিদ্ধ গাইরে মুকাল্লিদ আলিম “ নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান ” তাঁর রচিত “ তরজমানে ওহ্হাবিয়্যাহ ” নামক গ্রন্থে লিখেনঃ



“ হিন্দুস্থানের মুসলমানদের অবস্থান হল, এ দেশে ইসলামের সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি সবাই হানাফী মায্হাবের উপরই প্রতিষ্ঠিত এবং আলিম, ফাজিল, ক্বাজী, মুফতী, বিচারক এ সকল সুমহান দায়িত্ববান ব্যক্তিবর্গ এ মাযহাব থেকেই হয়ে আসছে।”



(তরজমানে ওহ্হাবিয়্যাহঃ পৃঃ নং-১০)



২।



“ মুযাহেরে হক্ব ” কিতাবের স্বনামধন্য লেখক মাওলানা “ কুতুব উদ্দীন ” তাঁর “ তুহ্ফাতুল আরব ওয়াল আযম ” গ্রন্থে গাইরে মুক্বাল্লিদ্দের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন, যার সার-সংক্ষেপ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ



“ সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ, মাওলানা ইসমাইল শহীদ ও মাওলানা আব্দুল হাই (রহঃ) পাঞ্জাবে আগমন করার পরপরই কতিপয় বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীর সমন্বয়ে চার মায্হাবের ইমামগণের তাক্বলীদ অস্বীকারকারী নতুন ফিরক্বাটির সূত্রপাত লক্ষ্য করা যায়, যারা হযরত সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহঃ) এর মুজাহিদ বাহিনীর বিদ্রোহী গ্রুপের সদস্য ছিল, এদের মূখপাত্র ছিল মৌলভী আব্দুল হক্ব বেনারসী (মৃত-১২৭৫হিঃ)। তার এ ধরণের অসংখ্য ভ্রান্ত কর্মকান্ডের কারণে সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ (রহঃ) ১২৪৬ হিজরীতে তাকে মুজাহিদ বাহিনী থেকে বহিষ্কার করেন। তখনই গোটা ভারতবর্ষের সকল ধর্মপ্রাণ জনগণ, বিশেষ করে সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহঃ) এর খলিফা ও মুরীদগণ হারামাইন শরীফাইনের তদানীন্তন উলামায়ে কিরাম ও মুফতীগণের নিকট এ ব্যাপারে ফত্ওয়া তলব করেন। ফলে সেখানকার তৎকালীন চার মায্হাবের সম্মানীত মুফতীগণ ও অন্যান্য উলামায়ে কেরাম সর্বসম্মতিক্রমে মৌঃ আব্দুল হক্ব ও তার অনুসারীদেরকে পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী ফিরক্বা বলে অভিহিত করেন এবং মৌঃ আব্দুল হক্বকে ক্বতল (হত্যা) করার নির্দেশ প্রদান করেন।



(এ ফতওয়া ১২৫৪ হিজরীতে তান্বীহুদ্দাল্লীন নামে প্রকাশ করা হয়, এখনো দেশের বিশিষ্ট লাইব্রেরীতে এর কপি সংরক্ষিত রয়েছে।)



মৌঃ আব্দুল হক্ব বেনারস পলায়ন করতঃ কোনভাবে আত্নরক্ষা পায়। সেখানে গিয়ে তার নবাবিষ্কৃত দলের প্রধান হয়ে সরলমনা জনসাধারণের মধ্যে তার বিষাক্ত মতবাদ ছড়াতে থাকে।”



(তুহ্ফাতুল আরব ওয়াল আযমঃ পৃঃ ১৬ খঃ ২, আল-নাজাতুল কামেলাঃ পৃঃ ২১৪, তান্বীহুদ্দাল্লীন, পৃঃ ৩১)



উপরোক্ত বিবরণ থেকে এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে, মৌঃ আব্দুল হক্ব বেনারসী কর্তৃক ১২৪৬ হিজরীতে ভারতবর্ষে গাইরে মুক্বাল্লিদ তথা লা-মায্হাবী নামক নতুন ফিরক্বাটির সূত্রপাত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে সে “ ওহ্হাবী ” হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সে নিজেকে “ মুহাম্মদী ” বলে প্রচার করতো। পরবর্তীতে “ ইংরেজের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম ” এ মর্মে ফত্ওয়া দিয়ে ইংরেজের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হয়। এবং এ সুযোগে সে সরকারী কাগজ-পত্র থেকে “ ওহ্হাবী ” নাম রহিত করে আহ্লে হাদীস নাম বরাদ্দ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, নবোদ্ভাসিত এ ফিরক্বাটিই আজ নিজেদের ব্যতীত অন্যান্য সবাইকে নবোদ্ভাসিত বা বিদ্য়া’তী বলে অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক নয় কি !



৩।



গাইরে মুক্বাল্লিদ আলিম মৌলভী মুহাম্মাদ শাহজাহানপুরী (মৃঃ ১৩৩৮ হিজরী) তার নিজের ফিরক্বা সম্বন্ধে বর্ণনা দিতে যেয়ে লিখেনঃ



“ সম্প্রতি হিন্দুস্তানে এমন একটি অপরিচিত মায্হাব পরিলক্ষিত হচ্ছে, যার সম্বন্ধে জনসাধারণ মোটেই অবগত নয়। অতীতে এ মতাদর্শের কোন লোক কোথাও ছিল কিনা তা সন্দেহজনক। উপরন্তু তাদের নামইতো মাত্র ইদানীং শুনা যাচ্ছে। তারা নিজেদেরকে “ মুহাম্মদী ” বলে দাবী করে। কিন্তু প্রতিপক্ষ তাদেরকে “ গাইরে মুক্বাল্লিদ ” বা “ ওহ্হাবী ” অথবা “ লা-মায্হাবী ” বলে আখ্যায়িত করে থাকে। ”



(আল-ইরশাদ ইলা সাবীলির রাশাদঃ পৃঃ ১৩, উল্লেখ্য, এ বইটি তাদের নিকট অত্যন্ত মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ।)



গাইরে মুক্বাল্লিদ্দের উৎপত্তির মূল রহস্য



হক্ব ও বাতিলের লীলাক্ষেত্র এ পৃথিবী। যেখানেই হক্ব সেখানেই বাতিল। তবে হক্বের মোকাবিলায় বাতিলের বিকাশ সর্বদায় রহস্যজনক হয়ে থাকে, যা হয়ত ধর্মীয় বা রাজনৈতিক উৎস অথবা জীবিকা নির্বাহের সহজ উপায়, কিংবা সরকারের গোলামী ইত্যাদি কোন না কোন কারণ এর অন্তরালে নিহীত থাকেই। “ আহলে হাদীস ” বা “ সালাফী ” নামের এ নতুন ফিরক্বাটির উৎপত্তির রহস্যও এর ব্যতিক্রম নয়।



১।



এ মর্মে তাদের দলেরই অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও পরিচালক নবাব ছিদ্দীক্ব হাসান খানের কয়েকটি উক্তি আমাদের বক্তব্যের পক্ষে সাক্ষ্য বহন করে, যেমন তার রচিত গ্রন্থ “ তরজমানে ওহ্হাবিয়্যায় ” তিনি লিখেনঃ



“ আমাদের নতুন মায্হাবে আযাদী (অর্থাৎ তাক্বলীদ না করা) বৃটিশ সরকারী আইনেরই চাহিদা মোতাবেক। ”



(তরজমানে ওহ্হাবিয়্যায়ঃ পৃঃ ২/৩)



২।



আহলে হাদীস দলের একাংশের নাম “ গুরাবা আহ্লে হাদীস ”। এ অংশের নেতা মুহাম্মাদ মুবারকের উক্তি হলঃ



“ গুরাবা আহলে হাদীসের ভিত্তি হযরত মুহাদ্দিসীনদের সঙ্গে মতানৈক্য করার জন্যেই রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয় বরং সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ (রহঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করে ইংরেজদেরকে খুশী করাই ছিল এর বিশেষ উদ্দেশ্য। ”



(উলামায়ে আহ্নাফ আওর তাহরীকে মুজাহিদীনঃ পৃঃ ৪৮)



৩।



ভারতবর্ষে গাইরে মুক্বাল্লিদ্দের প্রধান মূখপাত্র মিঞা নযীর হুসাইনের অন্যতম শিষ্য অকীলে আহলে হাদীস্ মোলভী মুহাম্মদ হুসাইন বাটালভী লিখেনঃ



“ ঐ আহলে হাদীস দল বৃটিশ সরকারের কল্যাণপ্রত্যাশী, চুক্তি রক্ষাকারী ও অনুগত হওয়ার অত্যন্ত উজ্জ্বল ও বলিষ্ঠ প্রমাণ হলঃ তারা বৃটিশ সরকারের অধীনে থাকা, কোন ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনের থাকার চেয়েও উত্তম মনে করে।”



(আল-হায়াত বা’দা্ল মামাতঃ পৃঃ ৯৩)



৪।



তথাকথিত সেই মোলভী মুহাম্মাদ হুসাইন ইংরেজের বিরুদ্ধে জিহাদ করার বিপক্ষে “ আল-ইক্বতিছাদ-ফী মাসাইলিল জিহাদ ” নামক গ্রন্থ রচনা করে, যাতে সে জিহাদ “ মান্ছুখ ” বা রহিত বলে ঘোষণা করে। এর ফলশ্রুতিতে সে ইংরেজের বিশ্বস্ত ও ভাড়াটে গোলামে গণ্য হয়। আর লাভ করে টাকা-পয়সার বিরাট অংক।



(হিন্দুস্থান কী পহলী ইসলামী তাহরীকঃ পৃঃ ২১২, আহলে হাদীস আওর ইংরেজঃ পৃঃ ৮৭)



৫।



তাইতো তারই বিশিষ্ট শিষ্য মৌলভী আলতাফ হুসাইন লিখেনঃ



“ হিন্দুস্তানে ইংরেজী গভার্মেন্ট আমরা মুসলমানদের জন্য খোদার রহমত। ”

(আল-হায়াত বা’দাল মামাতঃ পৃঃ ৯৩)



সম্মানিত পাঠক সমাজ! ইংরেজ আমলে ইসলাম ও মুসলমান্দের দুরবস্থার করুণ কাহিনী বলার অপেক্ষা রাখে না, যেদিন সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ সরকার এদেশের হাজার হাজার আলিম-উলামা ও মহামনীষীদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল, আর দ্বীপান্তরের কঠিন বন্দিশালায় নিক্ষেপ করেছিল লক্ষ লক্ষ তৌহিদী জনতাকে। আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছিল ইয্যতহারা মা-বোনদের গগন-বিদারী আর্তনাদে। জ্বালিয়ে দিয়েছিল হাজার হাজার মসজিদ-মাদ্রাসা আর ভস্মীভূত করেছিল লক্ষ কোটি কুরআন-কিতাব, তখনই হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দীসে দেহলভী (রহঃ) কর্তৃক দৃপ্তকন্ঠে ঘোষিত হল জিহাদের ফত্ওয়া, এ ফাত্ওয়ার বলে উলামায়ে কিরাম ও সমগ্র তৌহিদী জনতা ঝাপিয়ে পড়েন আযাদী আন্দোলনের জিহাদে। শহীদ হন হাজার হাজার বীর মুজাহিদ। আর ঠিক এমনি এক করুণ মুহূর্তে “ আহলে হাদীস ” নামধারী দলটি সেই ইংরেজ সরকারকে “ খোদার রহমত ” বলে আখ্যায়িত করে, আর তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ হারাম বলে ফাত্ওয়া দিয়ে হালুয়া-রুটির সুব্যবস্থা করে। তারা কি মুসলমান ? তারা কী চায়? কী তাদের উদ্দেশ্য? কোথায় তাদের গন্তব্য?



উপরোক্ত তথ্যাবলী থেকে একথা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ সরকার ভারতবর্ষে মুসলমানদেরকে দ্বিধা বিভক্ত করতঃ তাদের আধিপত্য মজবুত ও বিস্তার করার মানসে যে সমস্ত হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল, এরই ফলশ্রুতিতে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল কাদিয়ানী, বেরলভী ও তথাকথিত “ আহলে হাদীস ” তথা “ লা-মায্হাবী ” দল সে দিনের ঐ বৃটিশ জালিম তল্পীবাহকদেরই উত্তরাধিকারী ও দোসর।



ভারতবর্ষে গাইরে মুক্বাল্লিদ্দের প্রথম প্রবক্তা



১।



উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, গাইরে মুক্বাল্লিদ্ নামক নতুন দলের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মৌলভী আব্দুল হক্ব ইবনে ফজলুল্লাহ (মৃতঃ ১২৭৬ হিজরী)। যিনি তার নতুন মিশনের আস্তানা বেনারসে ক্বায়েম করেন।



২।



তবে নবাব ছিদ্দিক্ব হাসান খান ও মৌলভী মুহাম্মদ শাহজাহানপুরী প্রমুখের ভাষ্যমতে এ দলটিকে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত সংগঠন এবং সংঘবদ্ধ ও আত্ননিবেদিত মিশন হিসেবে রূপ দেন “ শাইখুল কুল ফিল কুল বা ‘ একচ্ছত্র মহান ব্যক্তিত্ব ’ মাওলানা সাইয়্যেদ নযীর হুসাইন দেহ্লভী ” । তিনি তার রচনা-বক্তৃতা ও অক্লান্ত মেহনতের মাধ্যমে নবজন্মা গাইরে মুক্বাল্লিদ্ মিশনটিকে জনসাধারণের মাঝে পরিচিত করে তুলেন।



( আল-ইরশাদ-ইলা সাবিলির রাশাদঃ পৃ-১৩; আল-কালামুল মুফিদঃ পৃ-১৪৩ )



বিঃদ্রঃ



মাওঃ নযীর হুসাইনকে অনেকেই হযরত মাওঃ শাহ ইসহাক হানাফী (রহঃ) এর অসংখ্য শিষ্যের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করে থাকেন। তবে শাহ সাহেবের অন্যতম শিষ্য ক্বারী আব্দুর রহমান তা প্রত্যাখান করে বলেন যে, শাহ সাহেবের নিকটে সে কিছুই পড়েনি। মাত্র লোক দেখানো ও জনসমর্থন আদায়ের জন্য এবং সরলমনা জনসাধারণকে ধোঁকা দেয়ার লক্ষ্যে তাঁর কাছে দু এক কথা জিজ্ঞাসা করতো। হযরত শাহ সাহেব তো হানাফী, মুত্তাকী ছিলেন আর নজীর আহমাদ তো ছিল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের দুশমন-গাইরে মুক্বাল্লিদ, শাহ সাহেবের নাম বিক্রি করে সে দ্বীন-ধর্ম ধ্বংস করতো।



( রাসাইলে আহলে হাদীসঃ পৃ-৩০; কাশফুল হিজাবঃ পৃ-১৩ )



(চলবে ইনশাল্লাহ)

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৬/-১

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১০:০০

মুনাজির বলেছেন: কুরআন ও হাদিসে ফিরে আসুন, সব ঠিক হয়ে যাবে।

১০ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:০৯

তারেক০০০ বলেছেন: বিষয়বস্তুর সাথে সম্পৃক্ত মতামত প্রদান করুন।

২| ০৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৩৪

নীলরাজ বলেছেন: ami onek din thaka ader utpotti kuchlam Thank you ,prio ta nilam

১০ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:০৯

তারেক০০০ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৩| ০৭ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৩৯

পিওর গাধা বলেছেন: কুরআন হাদিসের কি প্রয়োজন? আবু হানিফা (রাঃ) কি বলেছেন সেইটা থাকলেই চলবে।

১০ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:১১

তারেক০০০ বলেছেন: বিষয়বস্তুর সাথে অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য করবেনু না। মন্তব্য করলে শুধুমাত্র পোস্টের সাথে সম্পৃক্ত তথা আহলে হাদীস এবং উপরের দলীল গুলো নিয়ে মন্তব্য করবেন। ধন্যবাদ।

৪| ০৮ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১২:৩০

বোকা বন্ধু বলেছেন: কুরআন ও হাদিসে ফিরে আসুন, সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা দলে দলে বিভক্ত হতে চাই না। আমরা মুসলিম। ভাই আপনি কি ? মুসলিম ? নাকি হানাফি ?

১০ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:১২

তারেক০০০ বলেছেন: বিষয়বস্তুর সাথে অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য করবেনু না। মন্তব্য করলে শুধুমাত্র পোস্টের সাথে সম্পৃক্ত তথা আহলে হাদীস এবং উপরের দলীল গুলো নিয়ে মন্তব্য করবেন। ধন্যবাদ।

৫| ০৮ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১০:৫৪

আবদুস সবুর খান বলেছেন: পিওর গাধা (!) আপনি বলেছেন,
কুরআন হাদিসের কি প্রয়োজন? আবু হানিফা (রাঃ) কি বলেছেন সেইটা থাকলেই চলবে।

আবু হানিফা ( রা:) !!!!????!??!!!?!?!?!?!?!?!
আপনার জ্ঞান দেখে আমি হতবাক !!!!!!!!!!!


আপনার কি ধারনা আবু হানিফা রহ. কুরআন ও হাদীস জানতেন না
বা কুরআন ও হাদীস বাদ দিয়ে বাইবেল ও গীতা থেকে মাসআলা বের করেছে !!!!!

1. ইমাম বোখারীর অন্যতম উস্তাদ মক্কী বিন ইব্রাহীম (রহ.) (মৃতু- 215 হিঃ) যার সনদে ইমাম বুখারী (রহ.) অধিকাংশ ‘সুলাসিয়্যাত হাদীস’ বর্ণনা করেছেন। এই মক্কী বিন ইব্রাহীম (রহ.) ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর ছাত্র। তিনি ইমাম আবু হানীফা (রহ.) সম্পর্কে বলেন,
“আবু হানীফা তাঁর সময়কালের শ্রেষ্ঠ আলেম ছিলেন” - মানাক্বেবে ইমাম আজম রহ. 1/95

আবার হাফিয মযযী (রহ.) বলেন: মক্কী বিন ইব্রাহীম ইমাম আবু হানীফা (রহ.) সম্পর্কে বলেন,
“তিনি তাঁর কালের সবচে’ বড় আলিম ছিলেন” – তাহ্যীবুত তাহযীব-এর টিকা- 10ম খন্ড, 452পৃ.

(এখানে একটি কথা বিশেষভাবে স্মরণ রাখতে হবে, প্রাচীন আলিমগণ ‘ইলম’ বলতে ‘ইলমে হাদীস’ই বুঝাতেন। তাই ইমাম আবু হানীফা (রহ.) কে বড় আলিম বলার অর্থ- ‘হাদীস শাস্ত্রের বড় আলিম’ এতে কোন সন্দেহ নেই।)

2. ইমাম আবু দাউদ বলেন,
নিঃসন্দেহে আবু হানীফা ছিলেন একজন শেষ্ঠ ইমাম।- তাহজীব 1/445

3. জরহে তাদিলের (সনদ পর্যালোচনা শাস্ত্র) অন্যতম ইমাম ইয়াহ্‌ইয়া ইবনে মুঈন (মৃতু- 233হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা ছিলেন হাদীস শাস্ত্রের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি”- তাহবীবুত্তাহজীব 5/630

4. আলী ইবনে মাদানী (মৃতু- 234 হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা হাদীস শাস্ত্রে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। তার মধ্যে কোন দোষক্রুটি ছিল না। - জামঈ বয়ানিল ইল্ম 2/1083

5. প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস হাফিজ ইয়াহ্ইয়া বিন হারুন (মৃতু- 206 হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা ছিলেন সমকালীন শ্রেষ্ঠতম জ্ঞানী ও সত্যবাদী” –আহবারে আবু হানীফা 36

6. আল্লামা হাফিয ইবনে হাজার আসক্বালানী রহ. বলেন-
“ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মুত্যু সংবাদ শুনে ফিক্বাহ ও হাদীস শাস্ত্রের সুপ্রসিদ্ধ ইমাম, শাফঈ মাযহাবের প্রধানতম সংকলক হযরত ইবনে জরীহ রহ. গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছিলেন,
“আহ! ইলমের কি এক অফুরন্ত খনি আজ আমাদের হাতছাড়া হলো”। -
তাহযীবুত্তাহযীব খন্ড ১, পৃ: ৪৫০)

6. : একবার হযরত ইয়াহয়া ইবনে মুঈনকে প্রশ্ন করা হলো- হাদীসশাস্ত্রে আবু হানীফা রহ. কি আস্থাভাজন ব্যক্তি? সম্ভবতঃ প্রচ্ছন্ন সংশয় আঁচ করতে পেরে দৃপ্তকন্ঠে তিনি উত্তর দিলেন- হ্যা, অবশ্যই তিনি আস্থাভাজন! অবশ্যই তিনি আস্থাভাজন! (মানাকিবুল ইমামমুল আ’যামি লিলমাওয়াফিক- খন্ড:1, পৃষ্ঠা 192)

৬| ০৮ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১০:৫৮

আবদুস সবুর খান বলেছেন: বোকা বন্ধু আপনি বলেছেন,
কুরআন ও হাদিসে ফিরে আসুন, সব ঠিক হয়ে যাবে।

আলহামদুলিল্লাহ। এতদিন সব ঠিক ছিল। কিন্তু বর্তমানে কিছু আহলে হাদীস (!!!) ভাই মুজতাহিদ হয়ে গেছেন। তাই সমস্যার সৃষ্টি...............

আপনি বলেছেন,
আমরা দলে দলে বিভক্ত হতে চাই না। আমরা মুসলিম। ভাই আপনি কি ?
মুসলিম ? নাকি হানাফি ?

কিছু বাদ গেছে জনাব... নাকি আহলে হাদীস? নাকি সালাফী? নাকি মুহাম্মদী? নাকি ওয়াহাবী?

সাহাবায়ে কিরামের মাঝে এ ব্যাপারে ঐক্যমত্ব ছিল যে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা. সবচে’ উত্তম ছিলেন। এজন্য কাউকে আবু বকরী বলা হয়না। তারপর হযরত ওমর রা. এর ব্যাপারেও কোন মতভেদ ছিলনা। এজন্য কাউকে ওমরী বলা হয়না। হযরত উসমান রা. এবং হযরত আলী রা. এর ব...্যাপারে কিছু ইখতিলাফ ছিল।

জমহুর সাহাবীরা হযরত উসমান রা. কে হযরত আলী রা. থেকে উত্তম বলতেন। স্বাতন্ত্রতার জন্য হযরত উসমানকে উত্তম বলাকারীদের উসমানী বলা হয়। আর আলী রা. কে উত্তম বলাকারীদের আলিয়ী বলা হয়।
কিছু তাবেয়ীকে উসমানী এবং আলিয়ী বলার বর্ণনা বুখারী শরীফের ১ নং খন্ডের ৪৩৩ নং পৃষ্টায় আছে।

কুরআনে পাকের ক্বিরাতের মাঝে যখন ইখতিলাফ হয় তখন স্বাতন্ত্রতার জন্য ক্বারী আসেম রহ. এর ক্বিরাত এবং ইমাম হামযাহ রাহ. এর ক্বিরাত রাখা হল। এটাকে কেউতো এই উদ্দেশ্য নেয়নি যে, এটা আল্লাহর কুরআন নয়, বরং ক্বারী আসেমের বানানো! হাদিসের মাঝে মতভেদ হলে বলা হয় এটা আবু দাউদের হাদিস আর এটা বুখারীর হাদিস। এই কথার উপরও কেউ কুফরীর নিসবত করেনাতো!

ঠিক এমনি হাল ফিক্বহী বিষয়ে মতভেদের সময় ‘হানাফী” আর “শাফেয়ী” বলাটা। আমরা ঈসায়ীদের বিপরীতে নিজেকে মুসলমান বলি। আহলে বিদআতি খারেজী মুতাজিলীদের বিপরীতে নিজেদের আহলে সুন্নাত বলি। আর শাফেয়ীদের বিপরীতে নিজেদের হানাফী বলি।

যেমন আমরা ভারতীদের বিপরীতে নিজেদের পাকিস্তানী বলি। (আমরা বলি বাংলাদেশী-অনুবাদক) জাতিভেদের বিপরীতে বলি আমরা পাঞ্জাবী, লাহোরীদের বিপরীতে এসে বলি ওকারওয়ী। ওকারওয়ী পাঞ্জাবী, পাকিস্তানিকে মেনে বলা হয়। ছেড়ে নয়। বেচারা প্রফেসর সাহেবের এই অবস্থা হল যে, “নাকি” শব্দের ব্যবহারও সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানেননা। এই শব্দটি একই প্রকারের ক্ষেত্রে আসে। যেমন আজ শনিবার নাকি রবিবার? আজ নভেম্বর নাকি ডিসেম্বর? সুতরাং প্রশ্ন হবে-“তুমি মুহাম্মদী না ঈসায়ী? তুমি হানাফী না শাফেয়ী?” কিন্তু একথা বলা ভুল এবং হাস্যকর যে, “তুমি পাকিস্তানী না পাঞ্জাবী? আজ নভেম্বর না শনিবার? তুমি হানাফী না মুহাম্মদী?”


৭| ০৮ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১০:৫৮

আবদুস সবুর খান বলেছেন: জাযাকাল্লাহ খাইর.........

চালিয়ে যান ইনশাআল্লাহ। সাথে আছি................

১০ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:১৪

তারেক০০০ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ০৮ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:০৯

বোকা বন্ধু বলেছেন: @ আবদুস সবুর খান, ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আমার মন্তব্যটি অস্পূর্ণ ছিল।

ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) একজন বড়মাপের আলেম ছিল এত মনে হয় না কারও সন্দেহ আছে । শুধু উনি কেন , ৪ ঈমাম এর কারও ব্যাপারেই মনে হয় না কোন সন্দেহ আছে যে উনারা নিজ নিজ যুগের অন্যতম আলেম ছিলেন।

আমাকে আপনি কোন দলে ফেলবেন জানি না। কিন্তু কয়েকটা প্রশ্ন ছিল।
যদি এমন হয় যে কোন ঈমাম তার কাছে প্রাপ্ত হাদিস সমূহের আলোকে মাসাআলা দিয়েছেন, কিন্তু হাদিস গ্রন্থ গুলো সংগৃহিত হওয়ার পরে জানা গেল যে এই মাসাআলার বিরূদ্ধে আল্লাহ্‌র রাসূল এর সহিহ হাদিস পাওয়া গেল। তাহলে আমাদের কোনটা অনুসরণ করা উচিত ?

আমার মন্তব্যটি আসলে এই প্রশ্ন থেকেই । যারা আল্লাহ্‌র রাসূলের অনুসরণ করে তারা নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসূলের হাদিস গ্রহন করবে , তাই না ?
যদি তা না হয় , তাহলে ত আমি আল্লাহ্‌র রাসূলের অনুসরণ কারী হলাম কি ? ঈমাম রা যাকে অনুসরণ কারী ছিলেন , তাদের অনুসরণ কারী হলাম কি ? নাকি শুধু ও ঈমামের অনুসরণকারীই হলাম ?

ঈমামদের অধিকাংশ মাসাআলাই হাদিস অনুযায়ী । সেগুলো অনুসরন করতে মনে হয় না কারও আপত্তি আছে । ব্যক্তিগত ভাবে আমি ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর ভক্ত।

আপনি একজন জ্ঞানীলোক। আপনার সুচিন্তিত মতামত আমাদের মত যুবকের জন্য পাথেয় । তাই আপনার মতামত আশা করছি।




একটা উদাহরণ দেই আপনার সুবিধার্থে (আপনি জ্ঞানী লোক, তাই আশা করি আমি কি বলতে চাচ্ছি বুঝতে পারছেন )

রফ’উল ইয়াদাইন সম্পর্কে হানাফী মাযহাবের শ্রেষ্ঠ আলিমগণের অভিমতঃ

১। মোল্লা আলী ক্বারি হানাফী (র) বলেনঃ
সালাতে রুকুতে যাওয়ার সময় ও রুকু থেকে উঠার সময় দু’ হাত না তোলা সম্পর্কে যেসব হাদীস বর্ণীত হয়েছে সেগুলো সবই বাতিল হাদীস। তন্মধ্যে একটিও সহীহ নয়। (দেখুন, মাওযু’আতে কাবীর পৃষ্ঠা ১১০)

২। হানাফী মুহাদ্দিস আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী হানাফী (র) বলেনঃ
রুকুতে যাওয়ার পূর্বে রফউল ইয়াদাইন করার ব্যাপারে ইমাম আবূ হানিফা সম্পর্কে লিখেছেনঃ ইমাম আবূ হানিফা সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, তা ত্যাগ করলে গুনাহ হবে। (দেখুন, উমদাতুল ক্বারি, ৫/২৭২)

৩। শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী হানাফী (র) বলেনঃ
যে মুসল্লী রফ’উল ইয়াদাইন করে ঐ মুসল্লী আমার কাছে অধিক প্রিয় সেই মুসল্লির চাইতে যে রফ’উল ইয়াদাইন করে না। কারণ রফ’উল ইয়াদাইন করার হাদীসগুলো সংখ্যায় বেশি এবং অধিকতর মজবুত। (দেখুন, হুজ্জাতুলিল্লাহ বালিগাহ ২/১০)

৪। আল্লামা আব্দুল হাই লাখনৌভী হানাফী (র) বলেনঃ
নাবী এর সূত্রে রফ’উল ইয়াদাইন করার প্রমান বেশি এবং প্রাধানযোগ্য। আর এটা মানসূখ বা নাকোচ হবার দাবী যা তাহাভী, ইবনুল হুমাম ও আইনী প্রমূখ আমাদের দলের মনীষীদের পক্ষ থেকে প্রচারিত হয়েছে, তা এমনই প্রমানহীন যে তদদ্বারা রোগী নিরোগ হয় না এবং পিপাসার্তোও তৃপ্ত হয়না। (দেখুন, আত-তা’লীকুল মুমাজ্জাদ, পৃষ্ঠা ৯)

৫। শায়খ আব্দুল ক্বাদির জিলানী (র) বলেনঃ
সালাত শুরু করার সময়, রুকুতে যাওয়ার সময় এবং রুকু হতে উঠার সময় রফ’উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত। (দেখুন, গুনিয়াতুত ত্বালিবীন, পৃষ্ঠা ১০)

৬। দ্বিতীয় আবু হানিফা নামে খ্যাত আল্লামা ইবনু নুজাইম (র) বলেনঃ
রুকুতে যাওয়ার সময় ও রুকু হতে মাথা উঠানোর সময় রফ’উল ইয়াদাইন করলে সালাত বরবাদ হবার কথা যা মাকহুল নাসাফী ইমাম আবূ হানিফা থেকে বর্ণনা করা করেছেন তা বিরল বর্ণনা, যা রিওয়াত ও দিরায়াত পরিপন্থী অর্থাৎ বর্ণনা সূত্রতঃ ও জ্ঞানগতঃ ঠিক নয়। (দেখুন, বাহরু রায়িক ১/৩১৫, যাহরাতু রিয়াযুল আবরার, পৃষ্ঠা ৮৯)

৯| ০৮ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:২০

বোকা বন্ধু বলেছেন: @ আবদুস সবুর খান ভাই, দোয়া করবেন যেন আমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত ভাবে ধারণ করতে পারি। সবাই মিলে একই শাহাদায় শরিক হতে পারি। আপনার জন্য আমাদের ঈমামদের নসিহত পেশ করলাম। আল্লাহ, আমাদের সবাই কে সঠিক ইলম দান করূন । আমিন


১- ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর নসিহত :

(ক) ‘যখন ছহীহ হাদীছ পাবে, জেনো সেটাই আমার মাযহাব’।(হাশিয়াহ ইবনে আবেদীন ১/৬৩।)
(খ) ‘আমরা কোথা থেকে গ্রহণ করেছি, তা না জেনে আমাদের কথা গ্রহণ করা কারো জন্য বৈধ নয়’।(ঐ ৬/২৯৩।)
(গ) ‘যে ব্যক্তি আমার দলীল জানে না, আমার কথা দ্বারা ফৎওয়া প্রদান করা তার জন্য হারাম’।(ড. অছিউল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আব্বাস, আত-তাক্বলীদ ওয়া হুকমুহু ফী যুইল কিতাব ওয়াস-সুন্নাহ, পৃঃ ২০।)
(ঘ) ‘নিশ্চয়ই আমরা মানুষ। আমরা আজকে যা বলি, আগামীকাল তা থেকে ফিরে আসি’।(ঐ।)
(ঙ) ‘তোমার জন্য আফসোস হে ইয়াকুব (আবু ইউসুফ)! তুমি আমার থেকে যা শোন তাই লিখে নিও না। কারণ আমি আজ যে মত প্রদান করি, কাল তা প্রত্যাখ্যান করি এবং কাল যে মত প্রদান করি, পরশু তা প্রত্যাখ্যান করি’।(ঐ।)
(চ) ‘আমি যদি আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও রাসূলুললাহ (ছাঃ)-এর কথার (হাদীছ) বিরোধী কোন কথা বলে থাকি, তাহ’লে আমার কথাকে ছুঁড়ে ফেলে দিও’।(ছালেহ ফুল্লানী, ইক্বাযু হিমাম, পৃঃ ৫০।)

২- ইমাম মালেক (রহঃ)-এর নসিহত :

(ক) ‘আমি একজন মানুষ মাত্র। আমি ভুল করি, আবার ঠিকও করি। অতএব আমার সিদ্ধান্তগুলো তোমরা যাচাই কর। যেগুলো কুরআন ও সুন্নাহর অনুকূলে হবে সেগুলো গ্রহণ কর। আর যেগুলো কুরআন ও সুন্নাহর প্রতিকূলে হবে তা প্রত্যাখ্যান কর’।(ইমাম ইবনু হাযম, আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম, ৬/১৪৯।)
(খ) ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পরে এমন কোন ব্যক্তি নেই, যার সকল কথাই গ্রহণীয় বা বর্জনীয়, একমাত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ব্যতীত’।(ঐ ৬/১৪৫।)

৩- ইমাম শাফেঈ (রহঃ)-এর নসিহত :

(ক) ‘যদি তোমরা আমার বইয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাহ বিরোধী কিছু পাও, তাহ’লে রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী বল এবং আমার কথাকে প্রত্যাখ্যান কর’। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা রাসূল (ছাঃ)-এর কথারই অনুসরণ কর এবং অন্য কারো কথার দিকে দৃকপাত কর না’।(ইমাম নববী, আল-মাজমূ, ১/৬৩।)
(খ) ‘আমি যেসব কথা বলেছি, তা যদি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছহীহ হাদীছের বিপরীত হয়, তবে রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছই অগ্রগণ্য। অতএব তোমরা আমার তাক্বলীদ কর না’।(ইবনু আবী হাতেম, পৃঃ ৯৩, সনদ ছহীহ।)
(গ) ‘রাসূলুললাহ (ছাঃ)-এর প্রত্যেকটি হাদীছই আমার কথা, যদিও আমার নিকট থেকে তোমরা তা না শুনে থাক’।(ঐ।)

৪- ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর নসিহত :

(ক) ‘তুমি আমার তাক্বলীদ কর না এবং তাক্বলীদ কর না মালেক, শাফেঈ, আওযাঈ ও ছাওরীর। বরং তাঁরা যে উৎস হ’তে গ্রহণ করেছেন, সেখান থেকে তোমরাও গ্রহণ কর’।(ইলামুল মুওয়াক্কি’ঈন, ২/৩০২।)
(খ) ‘যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর হাদীছকে প্রত্যাখ্যান করল, সে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেল’।(মুকাদ্দামাতু ছিফাতি ছালাতিন নাবী (ছাঃ), পৃঃ ৪৬-৫৩।)


"আপনি যদি পাপিষ্ঠদেরকে দেখতেন, যখন তাদেরকে তাদের পালনকর্তার সামনে দাঁড় করানো হবে, , তখন তারা পরস্পর কথা কাটাকাটি করবে। যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত, তারা অহংকারীদেরকে বলবে, তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মুমিন হতাম।

অহংকারীরা দুর্বলকে বলবে, তোমাদের কাছে হেদায়েত আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে বাধা দিয়েছিলাম? বরং তোমরাই তো ছিলে অপরাধী।

দুর্বলরা অহংকারীদেরকে বলবে, বরং তোমরাই তো দিবারাত্রি চক্রান্ত করে আমাদেরকে নির্দেশ দিতে যেন আমরা আল্লাহকে না মানি এবং তাঁর অংশীদার সাব্যস্ত করি তারা যখন শাস্তি দেখবে, তখন মনের অনুতাপ মনেই রাখবে। বস্তুতঃ আমি কাফেরদের গলায় বেড়ী পরাব। তারা সে প্রতিফলই পেয়ে থাকে যা তারা করত"। [সূরা সাবা ৩১-৩৩]

১০| ০৮ ই মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৮

বোকা বন্ধু বলেছেন: উপরের মন্তব্যে নিচের ৩ টি আয়াত ভুলে চলে আসছে। দুঃখিত

১১| ০৮ ই মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১০

নিমপাতা১২ বলেছেন: কোরআন ও হাদিসের মতবিরোধী সব গুলি ইসলামের জন্য ক্ষতিকর, আসুন আমরা দলমত ভুলে কোর আন ও হাদিস মোতাবেক জীবন গড়ি।

১২| ০৯ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১২:২২

বোকা বন্ধু বলেছেন: আল্লাহ্র রাসুল (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহিওয়াসাল্লাম)এর একটি হাদিসের শেষাংশঃ
"বনী ইসরাইলীরা ৭২ দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল আর আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। তাদের মধ্যে একটি দল ছাড়া সব দলই হবে জাহান্নামী ।সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেনঃ সেই একটি দল কারা হে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহিওয়াসাল্লাম)? তিনি বললেন , তারা হল সেই লোক যারা অনুসরণ করবে আমার ও আমার সাহাবীদের আদর্শ। "
[তিরমিযি]

১৩| ১০ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:২৯

অগ্রপথিক... বলেছেন: আল্লামা কুরতুবী রঃ তাফসীরে কুরতুবীতে লিখেন-

وقد مضى في "آل عمران" معنى قوله عليه السلام : "تفرقت بنو إسرائيل على اثنتين وسبعين فرقة وأن هذه الأمة ستفترق على ثلاث وسبعين" . الحديث. وقد قال بعض العلماء العارفين : هذه الفرقة التي زادت في فرق أمة محمد صلى الله عليه وسلم هم قوم يعادون العلماء ويبغضون الفقهاء ، ولم يكن ذلك قط في الأمم السالفة.( الجامع لأحكام القرآن
المؤلف : أبو عبد الله محمد بن أحمد بن أبي بكر بن فرح الأنصاري الخزرجي شمس الدين القرطبي (المتوفى : 671)

প্রথম উম্মতের মাঝে ইজতিহাদ ছিলনা। তাই ইজতিহাদের দুশমনও ছিলনা। এই উম্মতের মাঝে ইজতিহাদ আছে। তাই ইজতিহাদের দুশমনও আছে। আর এই উম্মতের অতিরিক্ত জাহান্নামী ফিরক্বা হল ইজতিহাদের দুশমন ফুক্বাহায়ে কিরামের দুশমন দল। {তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীর সূরাতুল আনআম}

প্রিয় পাঠক/পাঠিকারা! আপনারা নিশ্চয় জানেন ফুক্বাহায়ে কিরামে দুশমন বর্তমানে কারা? কারা ইমাম আবু হানীফা রহঃ ইমাম শাফেয়ী রহঃ ইমাম আহমাদ রহঃ ও ইমাম মালিক রহঃ এর বিরোধিতা করে? বাতিল ফিরক্বা গায়রে মুকাল্লিদ তথা কথিত আহলে হাদিস মূলত আহলে খবীস বা আহলে হদস গোষ্ঠি

১৪| ১০ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:৩৪

অগ্রপথিক... বলেছেন: বোকা বন্ধু ভাই, আপনি যা উল্লেখ করেছেন সে কথাগুলো মুজতাহিদদের জন্য সাধারণ মানুষদের জন্য নয়।

ইমাম তাইমিয়া (রহ) এর মতে- ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ) সাধারন লোকদেরকে ইসহাক, আবু উবাইদা, আবু সাওর ও আবু মুসয়াব প্রমুখ ইমামের তাকলীদ করার নির্দেশ দিতেন। পক্ষান্তরে ইমাম আবু দাউদ, উসমান বিন সাইদ ইরাহীম আর হারবী,আবু বাকার আল-আসরম, আবু যরয়া, আবু হাতিম সিজিস্তানী, ইমাম মুসলিম প্রমুখ ছাত্রদেরকে তাকলীদের ব্যাপারে নিষধ করে বলতেন- তোমাদের জন্য শরীয়তের উৎস আকড়ে ধরাই ওয়াজিব। ( ফাতোয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া)

তাকলীদের ব্যাপারে মুজতাহিদদের নিষেধাজ্ঞা ছিল তাদের বিশিষ্ট্য শিষ্যদের প্রতি। কারণ এ রূপ না বললে ছাত্ররা তাহকীক বন্ধ করে দিবে। বর্তমান সময়ের জন্য নয় কারণ হাদিস, তাফসীর, ফিকাহ ও ইজতিহাদের ক্ষেত্র তারা প্রত্যেকেই ছিলেন বিশাল ব্যাক্তিত্বসম্পন্ন ইমাম।
পক্ষান্তরে সাধারণ মানুষদের প্রতি তাদের কঠোর নির্দেশ ছিল নির্ভেজাল তাকলীদের। কতিপয় স্থুলদর্শী মুতাজিলী ছাড়া উম্মাহর নেতৃস্থানীয় সকলেই তাকলীদের অপ্রিহার্যতার পক্ষে মত প্রকাশ করে গেছেন।

মুজতাহিদ কর্তৃক মুজতাহিদদের তাকলীদ সম্পর্কে মতবিরোধ থাকলেও যারা মুজতাহিদ নন ,তাদের জন্য তাকলীদের অপরিহার্যতার ব্যাপারে সকল ইমাম জোরালোভাবে ঐক্যমত পোষণ করেছেন।

১৫| ১১ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১১:১৩

আবদুস সবুর খান বলেছেন: বোকা বন্ধু
আপনার কথাগুলোর জবাব এখানে দেয়া হয়েছে........

Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.