![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্তর্হিত সংস্রাব
বৃষ্টির স্রোত নেমেছে।
এক ছাতার নিচে কেবল মাথা গুঁজে রাখা, দু'জনেই প্রায় ভিজে গেছে। তবু ছাতা ধরে বৃষ্টিতে বসে থাকা; বৃষ্টির রঙ দেখা- সাদা,নীল,লাল, কখনো বা কালো। এই রঙের পুরোটা জুড়ে যে ভালোবাসা নেই তা তো নিশ্চিৎ। তবু কেন যেন একটু বেশি প্রকাশের প্রতিযোগিতা নেই। কখনো কখনো নিস্তব্ধ পরিবেশে নিস্পলক চোখ দু'জোড়া শুধু কথা বলে। ভালোবাসার দৃষ্টিতেও তো আলাদা রঙ থাকে-লাল,নীল,সবুজ কিংবা কালো। কারো কারো বেলায় তো পুরোটাই কালো; যদিও সবুজের আবরনে সেই কালো অচিরেই যান্ত্রিক রূপ পায়। কারো কারো দৃষ্টিতে তো সবুজ,কালো ছাপিয়ে নীল আভা প্রকাশ পায়। এই আভা ভয়ঙ্কর; এর আড়ালে এক রূপ, বাহিরে অন্য এক!
অন্তনী আর রিশাত- প্রায় তিন বছর হতে চললো। সম্পর্কটা সস্তা প্রেমের নাকি ভালোবাসার তা আজও বুঝা গেল না। সম্পর্কের আগে খুব বেশি দিনের পরিচয় না, বড় জোর সাতাশ দিন।
রিশাত সর্বদাই প্রানোচ্ছল,অদ্ভূত,উন্মাদ-সবই।
আর অন্তনী প্রেমিকা,শান্ত,মাধুরীময়ী,তবে উন্মাদিনী সে নয়।
হারানো রাজ্যের প্রতি রাজার যেমন আকর্ষন থাকে,মায়া থাকে_সাতাশ দিনের সেই প্রথম থেকেই নিজের প্রতি তেমন আকর্ষন জাগিয়ে তুলেছে রিশাত। এই যে জাগানোটা-এটা দৈব,প্রকৃত,স্বাভাবিক।
ক্রমেই তিন দিন,তারপর নয়-এভাবেই চোখে চোখে সময় চুরির খেলা চলতো, প্রতি রাতে রূপকথা হত, দু'জন বাঁচবে বলে ভোর হত।পাশে না থেকেও কেউ যেন খুব কাছের; ভালোবাসে কিনা জানে না, তবে তাঁকে যেন বেঁচে থাকতে খুব দরকার।
টেলিফোনের যুগে লাল-নীল খামগুলোই যেন এক একটা উপাখ্যান। চিরকুটের এলোমেলো ভাষা আর কাঁচা হাতের কবিতায় ভালোবাসা দেখতে পায় অন্তনী। রিশাত এর ভালোবাসা মুক্ত হলেও উন্মাদনার আখড়া। চোখে ঝলক লাগে অন্তনীর। পরমূহুর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে ভাবে-সে অন্য কারো প্রেমিকা। প্রথম প্রেমের কালো অধ্যায়ের তিক্ততায় অন্তনী রিক্ত, বারে বারে অবেলার বর্ষনে এবার সে ক্লান্ত! শীতের সকালে মিষ্টি রোদে প্রথমে শ্রান্তের বিশ্রাম হয়, পরে হয় প্রদাহ।
নিষ্প্রান গর্ভে তলিয়ে যাওয়ার সময় খড়কুটাও যেন অনেক বড় আশ্রয়,বেঁচে ফিরলে তা হয় পুনঃজন্ম।সাতাশ দিনের মাথায় রিশাত এর কাছে হল অন্তনীর পুনঃজন্ম।
রিশাত এর কাছে উন্মাদনার ভালো নামই ভালোবাসা। ভালোবাসা-বাসির ফাঁকে রিশাত ডুবে গেল তাঁর চোখের নেশায়,হাসির মায়ায়। কনশিয়াস মাইন্ড ছুটি নিয়েছে আর দিশেহারা হয়েছে সাবকনশিয়াস।
তবে রিশাত ভালোবাসায় স্বার্থপর,জেদী,স্বৈরাচারী; সে যা চায় তার পুরোটা চায়, কণা-বিন্দুও অন্য কারো না।
অন্তনীর চাওয়া-পাওয়াগুলো জানা যায় নি।
-বৃষ্টি থেমে গেছে, ভিজিয়ে গেছে মন। সাতাশ দিনের কোন এক দিনে অন্তনীর বলা কথাগুলো মনে পড়লো রিশাত এর_
'সেদিন আমরা খুব ভিজেছিলাম। খোলা রাস্তায় দু'জনে হাত ধরে হাঁটছিলাম। রিকশায় করে এখানে-সেখানে-ওখানে এলোমেলো ঘুরছিলাম; আর হ্যাঁ হুড কিন্তু তোলা ছিল না। হাত ধরে দু'জনে চোখ বন্ধ করে উর্ধ্বাকাশে তাকিয়ে ছিলাম,আমি যখনই চোখ খুলতাম তখন এক আকাশ থেকে চোখ নামালে আমার আকাশ দেখতে পেতাম। তোমাকে বলেছিলাম না ওর নাম আকাশ ?'
খোদার উপরে কোন নির্বাক দর্শক নেই-এই ছিল রিশাত এর শেষ কথা।
বাস্তবে রূপকথা হয় না।
শুনেছি অন্তনী এখন ভালোই আছে।
ছেলেটা সিজোফ্রেনিক ছিল। ঠিকানা বদল হয়েছে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৫
তারুবীর বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর।