![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
✎ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে 'জাস্ট ফ্রেন্ড' নামে 'হাতাহাতি' প্রথা চলছে। বুঝতে পারলেন না? আচ্ছা বিস্তারিত বলছি, মেয়েদের ভদ্রতা, লজ্জাবোধ নিয়ে যখন পোস্ট করতাম তখন অনেকে ইনবক্সে নক করে বলেছে "আচ্ছা, হাত ধরা কি খারাপ কাজ? আমরা তো ‘জাস্টফ্রেন্ড’ হিসেবেই হাত ধরি"
✎ চলুন একটু অতীতে যায়... গত ৩৫ বছর আগে ছেলে-মেয়ে যেখানে ক্লাস রুমে কথা বলতে লজ্জা পেত, একসাথে হাঁটতে লজ্জা পেতো, গত ২০ বছর আগে প্রেমিক-প্রেমিকার হাতে হাত রাখতে সংকোচ বোধ করতো, আজ সেখানে আজ ক্লাস মেটের নাম করে, ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’ বলে ছেলে-মেয়েরা একে অপরের গায়ে হাত দিচ্ছে, টাচ করছে, গাল টেনে দিচ্ছে এর নাম হল আধুনিকতা। এর বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে আপনি হবেন রুচীহীন, হীন মন্য, ক্ষ্যাত।
✎ এই 'জাস্ট ফ্রেন্ড'হওয়ার উদ্দেশ্য একটাই-হাতাহাতি করার বৈধতা পাওয়া। অর্থাৎ একটা মেয়ের গায়ে ইচ্ছা হলেই আপনি হাত দিতে পারবেন না, তার প্রেমিক হলে পারবেন, আজকাল তো শুধু হাত না কেউ কেউ অনেক কিছুই করে, যায় হোক সেটাও তো মাত্র একজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’ হলে আপনি আপনার ক্লাসের প্রায় সব মেয়ের গায়ে যখন তখন বিভিন্ন উছিলায় হাত দিতে পারবেন। একটা উদাহরণ দিই, ধরুন লুচু ছেলেটি ক্লাসের একটি মেয়ের গায়ে হাত দিতে চাইলো, মেয়েটা দেখতে অনেক সুন্দরী, কিন্তু তার সাথে হুট করেই প্রেম প্রেম করা যাবেনা, তাহলে কি উপায় তাকে টাচ করার?
-হেই কি নাম তোমার?
-মেয়েটি নাম বলবে.
-আমরা একি ক্লাসে পড়ি অথচ কখনো কথা হয়নি, আচ্ছা আমরা কি বন্ধু হতে পারিনা আমি ***।
কথাটি বলে ছেলেটি হাত বাড়ায়, এভাবে 'জাস্ট ফ্রেন্ড' হবার উছিলায় প্রথমে মেয়েটির সাথে হ্যান্ডশেক করলো। হাত টাচ হয়ে গেল। তারপর মেয়েটির হাতের ঘড়ি কিংবা ব্রেসলেট দেখার উসিলায় হাত ধরে বলবে,
" বাহ! তোমার এটাতো অনেক সুন্দর! কোথা থেকে কিনেছো?" এভাবে নানা কৌশলে হাত ধরেই কয়েকমিনিট সেই জিনিসটি নিয়ে নানা কথা বলবে। কেউ বাঁধা দিবে না, এমনকি মেয়েটিও না, কারণ তারা এখন তো ‘জাস্ট ফ্রেন্ড’ আর হয়তো মেয়েটিও মজা পাচ্ছে, প্রথমবার কারো স্পর্শ পেয়ে।
✎ এই হাত ধরাধরি তো আমরা যখন হাই স্কুলে পড়ি তখন ছিল আর এখন যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এর পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ‘হাগ (HUG)’ দেয়া।
হাগ মানে কোলাকোলি যা আমরা সবাই জানি। কিন্তু ব্যাপারটা সীমাবদ্ধ থাকতো যদি না ছেলে-ছেলে, মেয়ে-মেয়ে (জাস্ট ফ্রেন্ড) কোলাকোলি করত। কিন্তু এখন, ছেলে-মেয়ে হচ্ছে অর্থাৎ চার জন ছেলে ও পাঁচ জন মেয়ে 'জাস্ট ফ্রেন্ড' এক সাথে হলে ছেলে-মেয়ে হাগ করে আর সম লিঙ্গের মধ্যে 'খুব বেশি হলে' হ্যান্ডশেক এর ঘটনা ঘটে! অর্থাৎ এখানে পুরোটা জুড়ে রয়েছে শারীরিক আকর্ষণ। আমাদের দেশের ফ্রেন্ডশিপ নাটক সিনেমা গুলো ছেলেমেয়েদের এসব ব্যাপারে উৎসাহিত করছে। নাটকগুলোতে দেখা যায়, ফেয়ারওয়েলের সময় কিংবা অনেকদিন পর দেখা হলে নায়ক-নায়িকা দুজনে আবেগপ্লুত হয়ে একেঅপরকে টাইট হাগ করছে। এগুলো কি বৈধ?
চলুন দেখি ইসলাম কি বলে,
✎ আল্লাহ্ তায়ালা সর্বপ্রথম আমাদের আদিপিতা হযরত আদম (আঃ)কে সৃষ্টি করলেন। তখন সমস্ত সৃষ্টিকুলে তিনি ছাড়া আর কোন মানুষ ছিলনা। আদম আঃ যখন একাকী অনুভব করতে লাগলেন, তখন আল্লাহ্ তায়ালা উনার সহধর্মিণী হিসেবে মা হাওয়া আঃ কে সৃষ্টি করলেন। আদম (আঃ) ভালোবাসায় আকৃষ্ট হয়ে যখন মা হাওয়া (আঃ) কে ছুঁতে গেলেন তখন আল্লাহ্ উনাকে বারণ করলেন এই বলে মোহরানা আদায় করা ব্যতিত ছোঁয়া অবৈধ। অতঃপর আল্লাহ্র আদেশে উনি দরূদ শরীফ পাঠ করে মোহরানা আদায় করে নেন।
✎ মানবজাতি সৃষ্টির পূর্ব থেকেই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি একে অপরের বিশেষ আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায়, আর এটাই স্বাভাবিক। উপরের ঘটনার আলোকে বলা যায় বিয়ের আগ পর্যন্ত ছেলে-মেয়ের সকল প্রকার মেলামেশা হারাম। কিন্তু আমাদের বর্তমান যুগে যেভাবে একে অপরের প্রতি লোলুপ আকর্ষণ প্রকাশ করা হচ্ছে সেগুলো কি বৈধ? এই যে আপু আপনাকে বলছি,
আজ যে ছেলেটির সাথে আপনি জাস্ট ফ্রেন্ড হয়ে হাগ করলেন, আপনি কি জানেন ছেলেটির ভেতর একটা কামনা সৃষ্টি হয়েছে, (সব ছেলেরা খারাপ নয়, কিন্তু ওভাবে হাগ দিলে সব ছেলের ভেতরেই একটু করেই কামনা সৃষ্টি হয়) এই কামনা থেকে কেউ কেউ ফ্যান্টাসিতে গিয়ে আপনাকে ভেবে মাস্টারবেট করে, তারপর কোন একসময় কুপ্রস্তাবও দিয়ে বসে, হয়তো তারপর একদিন দেখা করার কথা বলে আপনার সাথে জোর করলো......আর বাকিটা ইতিহাস, আপনি হয়ে গেলেন নিউজ পেপারের হেডলাইন, সমাজের চোখে খারাপ মেয়ে, তারপর আপনাকে নিয়ে ইভেন্ট হবে, সমাবেশ হবে, একসময় সব থেমে যাবে। লুচু ছেলেগুলা এভাবেই জাস্টফ্রেন্ড হয়ে আপনার থেকে চান্স নিচ্ছে যা হয়তো আপনিও টের পাননি কখনো।
এখন নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি তার জাস্ট ফ্রেন্ড নাকি কামনার নিষিদ্ধ গলির রাতপরী?
বন্ধুত্ব একটা পবিত্র সম্পর্ক। ছেলে-মেয়ে বন্ধু হতেই পারে, কিন্তু নোংরামি করা কি উচিত? আধুনিকতার নামে আমরা যেন বন্ধুত্বের মত পবিত্র সম্পর্কটাকে নষ্ট না করি, ছেলে-মেয়ে বন্ধু হয়, আড্ডা দিই, মজা করি কিন্তু লিমিট যেন ক্রস না করি। মনে রাখবেন যে সম্পর্কে পবিত্রতা আছে সেটি সর্বদা স্থায়ী হয়।
লিখা: Nahid Hossain Nhd (তাশহান)
©somewhere in net ltd.