নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যে শহরে আমি নেই আমি থাকবোনা,সেই শহরে তোমাকে ছুয়ে দেবে বিষাক্ত রোদ্দুর,ছায়াহীন মেঘ,বারুদে ঝাঝালো বাতাস,ন্যাপথলিনের উগ্রতা।
সকালবেলা বহুবারের মত আবারো কসমস সিরিজ দেখছিলাম। কার্ল স্যাগান লোকটা আমাকে মন্ত্রমুগ্ধের মত টানেন।
আর এই ছবিটা বারবার দেখি। ছবিটা তোলা হয়েছিল ১৯৯০ সালের ১৪ ই এপ্রিল। মহাকাশযান ভয়েজার যখন সৌরজগৎ ছেড়ে যাচ্ছিল তখন কার্ল স্যাগানের অনুরোধে নাসার ন্যারো এংগেল ক্যামেরা দিয়ে পৃথিবী থেকে ৪০ এস্ট্রোনম্যিক্যাল ইউনিট বা ৬ বিলিয়ন কিলোমিটার বা ৩.৭ বিলিয়ন মাইল দুর থেকে এক পিক্সেলের সমান এই ছবি তোলেন। উনি অসাধারণ বক্তা ছিলেন। আর বিলিয়ন শব্দের প্রতি খুব যত্নবান ছিলেন। ছবিতে দেখা যায় আমরা আলোর মধ্যে ভাসমান এক কনায় বসবাস করে চলেছি।
অথচ আমাদের কত অহংকার কত গর্ব। আমরা নটা পাঁচটা অফিস করে ঘুমাতে যাই উদরপূর্তি করে। আমরা জানিনা। জানার চেষ্টা করিনা যে আমরা কেউ না। শুধু আলোর মধ্যে ঝুলে থাকা কোন ধুলিকনার তুচ্ছ কোন এলিমেন্ট!
ভয়েজার থেকে সূর্যালোকে প্লাবিত ছোট্ট ধূসর একটা বিন্দুর মতো দেখা যাচ্ছিলো পৃথিবীকে। এটাকে সেগান তাঁর ভাষায় বর্ণনা করেন-
“এটাই পৃথিবী, আমাদের বসত, আমরা এটাই। এখানেই ওরা সবাই, যাদের আমরা ভালোবেসেছি, যতজনকে আমরা চিনি। যাদের যাদের কথা আমরা শুনেছি, তাদের সবাই এখানেই তাদের জীবন কাটিয়েছে। আমাদের সারা জীবনের যত দুঃখ কষ্ট, হাজার হাজার ধর্ম, আদর্শ আর অর্থনৈতিক মতবাদ, যত শিকারী আর লুন্ঠনকারী, যত সাহসী-ভীরু, সভ্যতার নির্মাতা-ধ্বংসকারী, যত রাজা আর প্রজা, যত প্রেমিক-প্রেমিকা, যত বাবা মা, স্বপ্নে বিভোর শিশু, আবিষ্কারক, পরিব্রাজক, যত নীতিবান শিক্ষক, দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, যত “সুপারস্টার”, যত জাঁহাবাজ নেতা, মানব ইতিহাসের সকল সাধু আর পাপী, সবাই তাদের জীবন কাটিয়েছে আলোয় ভেসে থাকা ধূলোর ঐ ছোট্টো কণাটিতে”।
এক অসীম অন্ধকার ছেয়ে আছে চারিদিকে। যেদিকেই যান না কেন, বিস্তৃতি চলবে নিরন্তর! গভীরতাটা উপলব্ধি করলে তাজ্জব বনে যেতে হয়। এই অন্ধকারের কোনো মৃত্যু নেই। যেখানে আলো আছে, সেখানে সে নিশ্চিতভাবেই বিশুদ্ধ, ঝলমলে, এবং আগ্রাসী! কিন্তু আলোর উপস্থিতি তো বলতে গেলে তেমন নেইই। আর পাশাপাশি, অন্ধকারও যে বিশুদ্ধ, ঝলমলে, এবং আগ্রাসী! আরো জরুরি ব্যাপারটা হচ্ছে, সেই অন্ধকারে বলতে গেলে তেমন কিছুই নেই, শুধু এখানে ওখানে আলোর আশেপাশে কয়েকটা ছোটো টুকরোর মত জিনিস ছাড়া। আর বাকি পুরো পাত্রটা, শূন্য!
চিত্রটা বেশ অদ্ভুতরকম ভয়ংকর! বেশ পরিচিত চিত্র যদিও – আমাদের ব্রহ্মাণ্ডেরই চিত্র!
এমনকি এই যে নক্ষত্রগুলো, যেগুলো গুণতে গেলে অসংখ্য মনে হয় – এগুলো আসলে বালি বা ধুলোর কণার মত। এমনকি তার চেয়েও তুচ্ছ। মহাশূন্যের বিশালতার সাথে তুলনা করলে এগুলো কিছুই না! নেহাৎ কিছুই না! আমাদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই সমবেদনাযুক্ত এক ধরনের আতংক চলে আসে যখন আমরা প্যাসকেলের Pensees খুলে বসি আর পড়ি – ‘আমরা দুই জগতের মধ্যেকার ব্যাপক নীরবতা’!”
আমরা অনিকেত প্রান্তরেখার কিছু কীট!
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: তেলাপোকা রোমেন ,
বাকি পুরো পাত্রটা, শূন্য!
আসলে কিন্তু শূন্য নয় মোটেও । পার্টিকল ফিজিক্স এর ভাষায় এই শূন্যস্থান জুড়ে আছে ৭৪% ডার্ক এনার্জি । কারন মহাবিশ্ব তৈরী ম্যাটার আর এনার্জি দিয়ে । ম্যাটারের ভেতরে ২২% আছে ডার্ক ম্যাটার আর ৪% আছে এ্যাটম যার ভেতরে ৩.৬%ই হলো ইন্টারগ্যালাক্টিক গ্যাস ।
আসলেই যেমনটা বলেছেন, মহাবিশ্ব তেমনটাই অদ্ভুতরকম ভয়ংকর ।