নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তপন চাকমা

তপন চাকমা › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিরুনি অভিযান পাহাড়ের সমস্যা সমাধানের পথ নয়

২১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:০০

পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাটি একটি রাজনৈতিক সমস্যা।রাজনৈতিক সমস্যা যেহেতু, সেহেতু এই সমস্যার সমাধান একমাত্র রাজনৈতিক উপায়ে সম্ভব।

পাহাড়ে ঝরছে তাঁজা প্রাণ!গত ১৮ই মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো তিন পার্বত্য জেলায় (খাগড়াছড়ি,বান্দরবান,রাঙ্গামাটি) ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।নির্বাচনি দায়িত্ব শেষ করে জিপগাড়ি দিয়ে ফেরার পথে বাঘাইছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকায় দুর্বৃত্তদের ব্রাশফায়ারে ঝরে গেল ৭ জন নির্বাচনী কর্মকর্তার তাঁজা প্রাণ।তারপরের দিন ১৯ই মার্চ নির্বাচন সম্পন্ন করে বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া থেকে বিলাইছড়ি সদরে ফেরার পথে ‘তিনকোনিয়া’ নামক এলাকায় মাইনাস হলো আরেকটি প্রাণ।তিনি ছিলেন বিলাইছড়ি উপজেলা আ:লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা।এভাবেই ক্রমান্বয়ে ঝরছে পার্বত্য চট্টগ্রামে হাজার হাজার প্রাণ।বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমানেও পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের চরম আতংকের মধ্য দিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় হাটতে হচ্ছে লাল রক্তে রঞ্জিত পাহাড়ের পিচ্ছিল পথে!!!
পাহাড়ের এই অরাজক পরিবেশ পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রনের নামে! সমাধান,স্থায়ী শান্তির নামে! পাহাড়ের নিরাপত্তাহীনতার আতংকে থাকা জুম্ম আদিবাসীদের উপর কঠোরপন্থায় অব্যাহত রাখা হয়েছে সেনা শাসন নামের দাবানল।কখনো চালানো হচ্ছে সেনাবাহিনী কতৃক চিরুনি অভিযানের নামে নিরীহ জুম্ম আদিবাসীদের উপর হয়রানি মূলক সেনা তৎপরতা এবং সাঁড়াশি অভিযানের নামে নিরীহ ছাত্র যুবকদের বিনা কারণে গ্রেফতার, ধরপাকর!!!
আবার পাহাড়ের রক্ত ঝরা এই খুনোখুনির দায় রাষ্ট্র অনেকাংশে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দল কিংবা সংগঠনগুলোর উপর দায়বার চাপিয়ে দেয়।
পাহাড়ে আঞ্চলিক দলগুলো কেন ভ্রাতৃত্বসংঘাত ও খুনোখুনির অনুকূলে অবস্থিত?
বাংলাদেশ নামের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের একটি বৃহৎ অংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম।পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩ ভাষাভাষি ১৪ টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর বসবাস, যাদের রয়েছে স্বাতন্ত্র্য ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ও কৃষ্টি।স্বাধীন বাংলাদেশে সেসব আদিবাসীরা সাংবিধানিকভাবে অস্বীকৃত!তাদের নেই কোন সাংবিধানিক অধিকার!নেই কোন গণতন্ত্রের অধিকার!নেই কোন স্বাতন্ত্র্য অস্তিত্ব নিয়ে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার।১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তথসময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ সরকারের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের পক্ষে “পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি”র মধ্য “পার্বত্য চুক্তি” স্বাক্ষরিত হলেও আজ অবদি ২২টি বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও হয়নি “পার্বত্য চুক্তি”র পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন।”পার্বত্য চুক্তি” নামের এই চুক্তিটি ছিলো পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের একমাত্র স্থায়ী শান্তি,অধিকার,স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক,যে কারণে এই চুক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের একমাত্র প্রাণের দাবি।
“পার্বত্য চুক্তি” দীর্ঘ ২২টি বছরেও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় জুম্ম জনগণের মনে জন্ম নিয়েছে হতাশার কালো মেঘ।”পার্বত্য চুক্তি” স্বাক্ষর করা ‘ভূল কিংবা ঠিক’ এ নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে তর্ক বিতর্ক!সৃষ্টি হচ্ছে দলগত বিভেদ।ফলে জন্ম হচ্ছে পাহাড়ের বুকে ভ্রাতৃত্ব সংঘাতের।চুক্তির পক্ষে বিপক্ষে চলছে মারামারি খুনোখুনি।ভাই চালাচ্ছে ভাইয়ের বুকে গুলি।ছেলের হাতে মা হচ্ছে স্বামীহারা!স্বামীর হাতে মা হচ্ছে সন্তানহারা।
রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক অধিকার বঞ্চিত পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থিতিশীল পরিবেশ পরিস্থিতির কারণ কেবল উক্ত আলোচনায় সীমাবদ্ধ নয়।আরো এর মূল কারণ হিসেবে রয়েছে পাহাড়ে চলমান অবৈধ সেনা শাসন!সেটেলার বাঙালীদের অন্যায় অত্যাচার এবং রাষ্ট্রের বিমাতা সূলভ আচরন ইত্যাদি পার্বত্য চুক্তি পরিপন্থী কার্যক্রম পার্বত্য চট্টগ্রামের অশান্ত পরিবেশের মূল কারণ।
পাহাড়ে ভ্রাতৃত্বসংঘাত ও খুনোখুনি নামের রক্তের হোলি বন্ধ করা কিংবা সমাধানের চাবিকাঠি কার হাতে?
পাহাড়ে চলমান ভ্রাতৃত্ব সংঘাত ও খুনোখুনির নামের রক্তের হোলি বন্ধ করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের অশান্ত পরিবেশকে শান্ত করার একমাত্র চাবিকাঠি সরকারের হাতে।কয়েকটি জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধান করার একমাত্র উপায় আঞ্চলিক দলগুলোকে একত্রিত করা:এরূপ ধারনা।কিন্তু আঞ্চলিক দলগুলোর একত্রিত হওয়ার পিছনে নিহিত নেই জুম্ম আদিবাসীদের স্থায়ী শান্তির বাস্তবিক রূপ।পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল পরাধীন জুম্মজনগণের প্রাণের দাবি “পার্বত্য চুক্তি” পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করার মধ্য দিয়েই নিরসন হতে পারে পাহাড়ে চলমান রক্তের হোলি খেলা।সুতরাং বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানের মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হতে পারে একমাত্র আদিবাসীদের প্রাণের দাবি “পার্বত্য চুক্তির” পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা।সুতরাং পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে অতিসত্বর “পার্বত্য চুক্তি” বাস্তবায়ন করে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অধিকার স্বাধীকার নিশ্চিৎ করা হোক।এর চাবিকাঠি অবশ্যই সরকারের হাতে।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:০০

রাজীব নুর বলেছেন: চিরুনি অভিযান দিয়েও কোনো লাভ হবে না। ফলাফল শূন্য।

২১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:৫১

তপন চাকমা বলেছেন: Right

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:০৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে, তাহলে মানুষ কেন মরে ব্রাশ ফায়ারে?

২২ শে মার্চ, ২০১৯ ভোর ৬:৫৩

তপন চাকমা বলেছেন: রাষ্ট্রের চরম ব্যার্থটা,দাদা!!!

৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:৪১

আরোগ্য বলেছেন: কবে যে দেশে শান্তি আসবে?

২২ শে মার্চ, ২০১৯ ভোর ৬:৫৫

তপন চাকমা বলেছেন: দেশে যতদিন গণতন্ত্রকে পদধূলিত করা হবে, মানবতাকে বাদ দিয়ে দানবতাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে, ততদিন দেশে শান্তির আশা করা অনর্থক।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১:৩৮

আকতার আর হোসাইন বলেছেন: আল্লাহ আমাদের দেশের মঙ্গল করুন। আমিন।

৫| ২২ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


শতকরা কি পরিমাণ পাহাড়ী মানুষ পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আলাদা দেশ করতে চায়?

২২ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৩

তপন চাকমা বলেছেন: আমাদের বা পাহাড়ীদের আলাদা দেশ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার কোন বিশেষত্ব নেই।আলাদা দেশ গড়া বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে "পার্বত্য চুক্তি" পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করে বেঁচে নূন্যতম মৌলিক অধিকার দিয়ে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করা।

৬| ২২ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:৪৮

প্রিয় অপ্রিয় বলেছেন: প্রথমত, আপনার নিকট প্রশ্ন, আপনারা যদি আদিবাসী হয়ে থাকেন তাহলে বাকি ৯৯.৫ ভাগ মানুষ অভিবাসী না উপজাতি? পাহাড়ের ভিন্ন ভিন্ন নৃগোষ্ঠী সকলেই উপজাতি। তারা অধিকাংশ মিয়ানমার এর নৃগোষ্ঠী। তথাপি তাদের এদেশে বসবাস বহুদিন। অবশ্যই তারা এখন এদেশের অংশ।তারা বাংলাদেশী। সেটা কেউ অস্বীকার করছে না। সেনাবাহিনী সমাধান না এটা ঠিক কিন্তু বিপথগামী এদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন? একই রাষ্ট্রে আপনাদের জন্য আলাদা কেন আইন রাখতে হবে? অনেকেই তো অনেক ভালো করছে? আমার মনে হয় যাদের চেষ্টা থাকে তারা ঠিকই পারছে। আলাদা কোনো অনুগ্রহ দরকার পড়ে না।

২৩ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৮:১৭

তপন চাকমা বলেছেন: একদেশে দুই আইন বেমানান, অবশ্যই।তবে অপ্রিয় হলেও সত্য যে রাষ্ট্র দুই আইন ঠিকই প্রয়োগ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সমতলের ক্ষেত্রে।

এই যে একের পর এক পাহাড়ে নৃসংশ ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে এসব কিছুর দায়বার সরকারকেই নিতে হবে।কারণ ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত হওয়া পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলেও এসব হতো না।আজ ২২টি বছরেও পার্ত্য চুক্তির মৌলিক ধারা গুলো পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে আজকের এই অরাজকতা কিংবা নৃসংশতা!!!! পাহাড়ের মানুষেরা আলাদা কোন দেশ চাই না।তারা শান্তি চাই।"পার্বত্য চুক্তি" পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে তারা তাদের মত করে নাগরিক,সাংবিধানিক,গণতান্ত্রিক, অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক এবং মৌলিক অধিকার নিয়ে স্বাধিনভাবে বেঁচে থাকার পথ খূঁজে পাবে।

"পার্বত্য চুক্তি"র জন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কারও পেয়েছিলেন।কিন্তু দুঃখের বিষয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই শান্তি পুরস্কারের মর্যাদাটুকু রাখেন নি এবং রাখতে ব্যার্থ হয়েছে।চুক্তি বাস্তবায়ন না করা অবশ্যই এটা পাহাড়ের ব্যার্থটা নয়, সরকারের ব্যার্থটা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.