নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ পাহাড়ে প্রথম গণহত্যা দিবস
আজ ২৫ মার্চ।পাহাড়ের প্রথম গণহত্যা দিবস।১৯৮০ সালের আজকের এই দিনে কাউখালী থানার সেনা কর্মকর্তা কলমপতি ইউনিয়নভুক্ত নোয়াপাড়া বৌদ্ধ মন্দিরটির আসন্ন কিছু উৎসব উপলক্ষে মেরামতের বিষয়টি আলোচনার জন্য স্থানীয় গ্রামবাসীদের প্রাঙ্গনে সমবেত হতে নির্দেশ দেন।যখন গ্রামবাসীরা সমবেত হয় তখন সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য সমবেত জনতার উপর গুলি চালানো আরাম্ভ করে। এতে আনুমানিক ৩০০ উপজাতি নিহত এবং আরো অনেকে নিহত হয়।এরপর সেনাবাহিনীর সদস্য এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধভাবে প্রবেশ করা নতুন বসতিকারী সেটেলার বাঙালীরা একযোগে কলমপতি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের ওপর নৃসংশ আক্রমন চালায়! বাড়িঘর লুন্ঠন করে! জ্বালিয়ে দেয় এবং ইউনিয়নের মোট ৯টি বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংস করে দেয়।সেদিন সেনাবাহিনীর লেলিয়ে দেয়া সেটেলার বাঙালীরা ২০ জন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে মারধোর করে! ৩০ জন আদিবাসী মেয়েকে অপহরন করার মধ্য দিয়ে ধর্ষণ করে এবং এই ৩০ জনের মধ্য অনেক আদিবাসী নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে।
সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া শিশুর ক্ষুধার্থ পরিষ্কার কান্নার শব্দ পোঁছাতে পারে তার মায়ের কানে।তার মা যে নেই! সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালীর যৌথ আক্রমনে স্নেহের কোমল শিশুটিকে ফেলে চলে যেতে হয়েছে অকালে মাকে।সেদিন মা হয়েছিলো স্বামীহারা! বাবা হয়েছিলো স্ত্রীহারা! সন্তান হয়েছিলো পিতৃহারা/মাতৃহারা। মা-বাবা হয়েছিলো সন্তানহারা! বোন হয়েছিলো ভাইহারা! ভাই হয়েছিলো বোনহারা। সেদিন কলমপতির নিরীহ আদিবাসী জুম্মদের খুব সহজেই পরিষ্কার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছিলো সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালীরা।
এটিই ছিলো পার্বত্য চট্টগ্রামের সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালী কতৃক আদিবাসী জুম্মদের উপর সংঘটিত প্রথম গণহত্যা, যা জুম্মজাতির ইতিহাসে অবিস্মরনীয়।
তবে বলাবাহুুল্য, সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালী কতৃক আদিবাসী জুম্মদের উপর সংঘটিত গণহত্যা কেবল সেই ১৯৮০ সালের ২৫ই মার্চ কলমপতি গণহত্যার মধ্য সীমাবদ্ধ থাকেনি।কলমপতি গণহত্যার পর ক্রমানুসারে আরো অনেক গণহত্যা চালিয়েছিলো সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালীরা।ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান করে অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার প্রয়াসে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অকালে প্রাণ হারিয়েছিলো অনেক জুম্ম আদিবাসী।
১৯৮০ সালের পরে ১৯৮১ সালের ২৫শে জুন মাটিরাঙ্গা এবং বেলছড়ি এলাকায় সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালীরা আবারো আক্রমন করে একযোগে।নির্বিচারে হত্যা করে অনেক জুম্ম আদিবাসী নারী পুরুষকে।এরপর গণহত্যা ঘটে ১৯৮৪ সালের ৩১ মে হতে ৭ জুন পর্যন্ত ভূষনছড়া এবং ছোটহরিনা মৌজায়।তারপরের ঘটনা ঘটে ১৯৮৬ সালের ১ মে তারিখে পানছড়ি এবং মাটিরাঙ্গায়।একই মাসের ১৮ তারিখে রামবাবু ডেবা পাড়ায় এবং ঐ একই সালের ১৯ ডিসেম্বর চংড়াছড়ি এবং মেরুং মৌজায়।সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালী কতৃক জুম্মদের উপর ক্রমাগতভাবে সংঘটিত হয়েছিলো এভাবেই অগনিত গণহত্যা, যা আজ অবদি তার প্রভাব পার্বত্য চট্টগ্রামে বিস্তরভাবে ব্যাপক।
গণহত্যাগুলো যা হয়েছিলো, সব ছিলো বিচার বহিঃর্ভূত।বিচারহীনতা জুম্মদের আশা আকাঙ্খা সবকিছুই মিছিয়ে দিয়েছে মাটির সাথে। ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত হওয়া “পার্বত্য চুক্তি” পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ার ফলে হতাশা আরো বেড়ে গিয়েছে চরমভাবে জুম্ম আদিবাসীদের মানসিকতায়।রাষ্ট্রীয় দামাল ছেলে সেনাবাহিনী কতৃক এবং সেটেলার বাঙালী কতৃক বর্তমানেও জুম্ম আদিবাসীদের উপর নির্যাতন নিপীড়নের বিন্দুমাত্র কমতি নেই।
২৫ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:০৭
তপন চাকমা বলেছেন: দেশ এখন চরম স্বার্থবাদে বিস্তর ক্ষতিগ্রস্ত
২| ২৫ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
২৫ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:০৭
তপন চাকমা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১৩
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আদিবাসীদের কথা বাদ দেন, আজ আমাদের এই অবস্থা কেন?