নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খোট্টার মা, খোট্টি!

দ্যা গার্ল ইন ব্লু গ্লাসেস

আমি কাঠখোট্টা অসামাজিক একটা মানুষ। কথা বলার মতো বিরক্তিকর কাজ দ্বিতীয়টা নেই, তাই লেখালেখি বেছে নিয়েছি। বর্তমানে পড়াশোনা করছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগে।

দ্যা গার্ল ইন ব্লু গ্লাসেস › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুপারহিরো রিলেটিভসঃ বগুড়ায় ধর্ষিত কিশোরী ও মার উপর নির্যাতন ও কিছু কথা

৩১ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:২০


বাংলাদেশে বেশীরভাগ ফ্যামিলিতেই একজন না একজন মামা/চাচা/খালা থাকেন, যারা অত্যন্ত ক্ষমতাধর। তাদের সাথে ফ্যামিলির সম্পর্ক 'অমুক চাচার ছেলের বউয়ের ছোট ভাইয়ের বউয়ের ছেলের' মতো ডিসট্যান্ট হলেও, আমরা বাংলাদেশীরা "ভালবাসার টানে কাছে আনে" এই মন্ত্রে বিশ্বাসী কিনা, তাই আমরা দূর- দূরান্তের আত্মীয়তাকেও প্রয়োজনে এক্সপ্লোয়েট করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করিনা। এদেশে "নিরাপদে এবং সুস্থ-সবলভাবে" বেচে থাকতে হইলে আপনার একখান মামা/চাচা লাগবেই লাগবে, এছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
একটা "ছোট্ট" সমস্যা হইসে, পুটুশ করে তমুক আত্মীয়কে ফোন করে দেয়া হল, ব্যস, কয়েক মিনিটের মধ্যে সমস্যা সমাধান। ট্র্যাফিক সার্জেন্ট রাস্তার রঙ সাইড দিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার লাইসেন্সবিহীন প্রাডো গাড়ি আটকিয়েছে? ঘুষেও কাজ হচ্ছেনা? নো প্রবলেম, অমুক চাচারে ফোন দিয়া ফোনডা সার্জেন্টের কানে ধরায় দিলেন, দুই সেকেন্ডে আপনার গাড়ি খালাস।

মোট কথা, দুনিয়ার এহেন কোনো সমস্যা নাই, যার সমাধান আমাদের এইসব মামা/চাচা/খালারা দিতে পারেন না।

কাজেই এইসব মামা/চাচা/খালারা অনেকটা সুপারহিরোদের মতই। কাঁধের সাথে তাদের শুধু সুপারহিরোর রঙ্গিন স্কন্ধাবরণখানা ঝুলতে থাকেনা আর প্যান্টের উপরে অন্তর্বাস তারা সহসা পড়েন না, এই যা পার্থক্য!

আপ্যারেন্টলি, বগুড়ার তুফান ভাইয়েরও এইরকম একখান সুপারহিরো আত্মীয় রয়েছে। তবে ভাইজানের "ভাগ্য" অতিব সুপ্রসন্ন কিনা, তাকে দূরের কোনো চাচার ছেলের বউয়ের মেয়ের জামাইকে ধরা লাগেনাই। তেনার বউয়ের আপন বড় বোনই পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর, মারহাবা!
পুলিশের দেয়া তথ্য বলে, তুফান ভাই এসএসসি পাশ করা কিশোরীটিকে বিবাহ করতে চাচ্ছিলেন। ঘরে অলরেডি একটা বউ আছে, সো হোয়াট? প্রয়োজনে বউরে তালাক দিয়ে হলেও কিশোরীকে বিয়ে করতে নাকি তার আপত্তি ছিলনা। কাজেই মেয়েটিকে ভালো কলেজে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে ১৭ জুলাই ও পরে কয়েকবার ধর্ষণ করেন তুফান ও তার চ্যালাগণ।

তুফান ভাইয়ের স্ত্রী আশা খাতুনের অবশ্যই দিলে অত্যন্ত আঘাত লেগে থাকবে। লাগারই কথা, পেয়ারের স্বামী বউরে ছেড়ে আরেক মেয়েরে বিবাহ করতে ব্যাকুল এবং সেই মেয়েকে ধর্ষণ করে ব্যপক একটা ঝামেলায় ফেলে দেয়ার কারণে কিংবা মনে করেন, রোজ রোজ অতিরিক্ত ভারতীয় বাংলা সিরিয়াল গিলে অভ্যস্ত হওয়ার কারণেও হতে পারে, রাগে-দুক্ষে আশা খাতুনের মাথায় হয়ত তাই প্রতিশোধের ভূত চেপেছিল।
কাজেই আশা তার সুপারহিরোইন বড়বোন মার্জিয়া এবং মা রুমী বেগম মিলে ধর্ষিতা অসহায় মেয়েটি এবং মেয়েটির মাকে হেনস্থা করবার জন্য মা-মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তুফানের ক্যাডার দিয়ে লাঠিপেটা করায়। এতোকিছুর পরেও নিশ্চয় আশা খাতুনের রাগ কমেনাই, তাই ধর্ষিতা মেয়েটি ও তার মার মাথা ন্যাড়া করে তাদের সর্বশেষ যে সম্ভ্রমটুকু ছিল, সেটুকুও ধূলিসাৎ করে দিয়ে তারপরই তারা ক্ষান্ত হলো!

ঘটনাটা আর পাঁচটা ধর্ষণের ঘটনা থেকে ভিন্ন কারণ, ধর্ষকের পাশাপাশি পরিবারের তিন তিন জন নারী সদস্যও এখানে অন্যায় করেছেন। নারী হয়ে নারীর সম্ভ্রমে আঘাত দেয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। অতীতেও বহু ঘটেছে, এখনো ঘটে চলেছে। কিছু প্রকাশ পায়, অনেককিছুই আড়ালে রয়ে যায়। কিন্তু নিজে একজন মেয়ে হয়ে কি করে আপনি আরেকটা মেয়ের সাথে এতো বড় অন্যায় করতে পারেন? দোষ তো আপনার স্বামীর, রক্ত যার পশুর মত দূষিত, কদর্যতা যার রন্ধ্রে রন্ধ্রে! সত্যিই যদি আপনি একজন "নারী" হতেন, রান্নাঘর থেকে রুটি বেলবার বেলুনটা নিয়ে এসে ওরকম জানোয়ার স্বামীর কয়েকটা হাড় গুড়িয়ে দিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করতে পারতেন!
আমার বোন বলছিলেন, তুফানের মত এরকম পশুদের সাথে সংসার ধর্ম নিশ্চয় সুস্থ বিবেকের নারীরা পারেনা। কাজেই এদের সহধর্মিণীরাও এদের মতই পাষণ্ড হয়। এদের মধ্যে বিবেক কিংবা ন্যায়-অন্যায় বোধ থাকবে, সেটা আশা করাই বোকামী।

সুপারহিরো রিলেটিভদের দৌরাত্মে দিনকেদিন জনসাধারণের জীবন তেজপাতা হয়ে যাচ্ছে। এরকম হাজারো অন্যায় প্রতিনিয়ত হচ্ছে। বিচারের প্রতীক্ষায় নীরবে চোখের জল ফেলতে ফেলতে একসময় চোখের জলও শুকিয়ে আসে, বিচার আর হয়না। বিচারের নামে হয় শুধু প্রহসন। প্রহসন দেখতে দেখতেও আমাদের চামড়া এতো পুরু হয়ে গিয়েছে যে এখন আর সহজে আমরা চমকাই না। এসকল হৃদয়বিদারক ঘটনাও এখন আমরা পত্রিকার পাতা উল্টিয়ে কিংবা মাউসের ক্লিকে স্ক্রল করে করে যাই। থেকে যায় শুধু অসংখ্য দীর্ঘশ্বাস।

দিনশেষে সুপারহিরো রিলেটিভদেরই জয় হয়। ভাল থাকুন, সুপারহিরোরা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:০৪

নিরাপদ দেশ চাই বলেছেন: মাদক যেহেতু এদের ব্যবসা পুলিশের কাছে এরা অতি আদরেই থাকবে। এই তিন মহিলার মাথা ন্যড়া করে ঘোলা ঢেলে সারা শহড় ঘুরিয়ে তারপর পুলিশে সোপর্দ করা উচিৎ ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.