| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গভীর রাত। মাহিমা চৌধুরী শুয়ে আছেন। তার চোখে অমিতের ছবি ভাসছে। অমিত হসিছে, কথা বলছে, হাত নাড়াচ্ছে, হতাশ হচ্ছে, ভেঙ্গে পড়ছে। আমি উদাসীন। আসলে মেয়েরা যেভাবে ছেলেদের চায় সেরকম ছেলে হতে পারিনি। তাতে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। একাকী চলতেও ভালো লাগে আমার।
বারবার তিনি অমিতের কথাটা স্মরণ করছিলেন। অমিতের কথা ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমিয়ে গেলেন। কোনো এক গহীন বনের মধ্যে অমিত ও তিনি হাঁটছেন। অমিতকে চুম্বন করছেন। ঘুম ভেঙ্গে গেল। স্বপ্নও ভাঙ্গল। এই আমি কী স্বপ্ন দেখছি! মাথায় এসব চিন্তা ঘুরছে কেন? বিছানা থেকে উঠে পানি খেলেন।
আবার শুয়ে গেলেন। ঘুমানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু ঘুম আর এল না। চেহারায় একটা বন্য আভা ভেসে উঠল। মনে করছিলেন তার বিয়ের দিনের কথা। কত ধূমধাম, গান বাজনা, কত মানুষ, কত হাসিমাখা মুখ, মধুময় রাত, বিয়ের পর স্বামীর সাথে ঘুরে বেড়ানো, আর অনেককিছু।
অমিত বাসে চড়ে আছে। বিকেলবেলা। সে আজকে নতুন একটা পোডাক্টশন হাউজে দেখা করতে এসেছে। ইনটারকম প্রোডাকশান হাউজ। এখানে আসতে তাকে কত স্ট্রং লবিং করতে হয়েছে সেটা শুধু সে-ই জানে। জগতটা চলছে লবিংয়ের ওপর।
মহাপরিচালক ছবির কাহিনী পড়ছেন। ছবির কাহিনী পছন্দ হচ্ছে না তা চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
একটা বিরক্তি নিয়ে বললেন, না। আরো ভালো কাহিনী ুলিখতে হবে। একটা ঘটনার মধ্যে চরম নাটকীয়তা থাকতে হবে। তোমার ছবি দর্শক দুই-আড়াই ঘন্টা দেখবে। এমনি এমনি দেখবে? দর্শক ধরে রাখতে হবে। তুমি যে স্ক্রিপ্ট লিখেছ এটা দর্শক ধরে রাখার মতো স্ক্রিপ্ট না। ফিল্ম স্ক্রিপ্টে দুই দিক হতে চরিত্র তৈরি করতে হবে। ভালো চরিত্র তৈরি করতে হবে আর অন্যদিকে মন্দ চরিত্র। তারপর স্রষ্টার খেলার মতো ভালো-মন্দ নিয়ে খেলতে হয়। স্ক্রিপ্ট এভাবে তৈরি করতে হয়। লেখার হাত আছে। আরো অনুশীলন করতে হবে। শট ডিভিশনগুলো আরো লজিক্যাল হতে হবে। কোথায় কাট করতে হবে বুঝতে হবে। সেটা যদি না বুঝলে ভালো ছবি করা সম্ভব নয়।
স্যার, একটু দয়া করে...
আরে বাবা, এটা দয়া করার বিষয় নয়। যোগ্যতা দিয়ে সবকিছু ছিনিয়ে নিতে হবে। তুমি ভালো ছবি করলে এটা আমাদের লাভ। তোমার যোগ্যতাকে অস্বীকার করে আমাদের কোনো লাভ নেই। আরো পড়াশুনা করে ভালো কাহিনী তৈরি করো। ছবির জন্য কাহিনী লেখা খুবই ভালো কাজ। ভালো কাহিনীর প্রয়োজন আছে।
অমিত মন খারাপ করে চলে আসছিল। ব্যস্ততম রাস্তায় উদাসীনভাবে হাঁটছিল।
দূরের একটা জুয়েলারীর দোকানে মাহিমা চৌধুরীকে দেখল। খুব মনোযোগ সহকারে একটা জুয়েল হাতে নিয়ে লক্ষ করছে। অমিত আস্তে আস্তে এগিয়ে গেল। মাহিমা চৌধুরীর পাশে গিয়ে দাঁড়াল।
মাহিমা চৌধুরী তাকে খেয়াল করেননি। পাশে নিরবে দাঁড়িয়ে রইল অমিত।
হঠাৎ অমিতকে দেখে হালকা হেসে উঠলেন।
তুমি?
অমিত নিরবে চেয়েই রইল।
মন খারাপ কেন? কোথায় গিয়েছিলে?
প্রোডাক্টশন হাউজে।
তারা তোমাকে আশা দিতে পারেনি। তাই মন খারাপ?
কিছুটা।
কোনো কাজ আছে তোমার?
না। কোনো কাজ নেই।
তাহলে আমার সাথে চলো। আরো মার্কেট করতে হবে।
শাড়ির দোকানে এসে বিভিন্ন শাড়ি পছন্দ করছেন মাহিমা চৌধুরী। অনেকক্ষণ পর
একটা শাড়ি পছন্দ করেন।
এটা তোমার ভালো লাগছে?
হ্যাঁ। ভালো লাগছে।
অমিতের পছন্দ করা শাড়িটা নিল। চলো এখন ফেরা যাক।
©somewhere in net ltd.