নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
ছবিঃ সংগৃহীত
কিছুদিন আগে জানা গেল মেয়েটি মা হতে চলেছে। শীঘ্রই মা-বাবা হতে যাওয়া এই যুগল মহা খুশি। আজ এলো আমার সাথে সেই আনন্দ ভাগ করে নিতে।
যদিও ভীষণ ব্যস্ততায় খুব একটা খোঁজ নেয়া হয় না ওদের। তবে এদের বিষয়ে আমার আগ্রহটা একটু বেশিই। তার কারণ বলতে গেলে একটু পিছনে ফিরে যেতে হয়।
বছর দুই আগের কথা একদিন খুব সকালে আমার এক আত্মীয় তার স্ত্রী এবং
সতের/আঠার বয়সের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে আমার বাসায় এসে উপস্থিত। মেয়ের মা-বাবার মুখে স্পষ্ট উৎকণ্ঠার ছাপ। মেয়েটার মুখটাও বিমর্ষ। বোঝাই যাচ্ছে, তাঁদের উপর দিয়ে একটা মানসিক ঝড় বয়ে যাচ্ছে। যাতে তাঁরা সকলেই বেশ বিপর্যস্ত।
সকালের নাস্তা দেয়া হল, কেউই মুখে তুললেন না। সবার আগে তাঁদের সমাধান চাই।
প্রথমেই মা-বাবার সাথে বসলাম। তাঁরা যে বর্ণনা দিলেন তাতে বোঝা গেল মেয়েটা একটা ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। ছেলেটা ভাল কিন্ত অল্প বয়স এবং যে কাজ করে তাতে সেই ছেলের সাথে তাঁরা মেয়ের বিয়ে দিতে চান না। কিন্তু মেয়েকে কিছুতেই রাজি করাতে পারছেন না।
এমতাবস্থায় তাঁরা আমার শরণাপন্ন হয়েছেন এই বিশ্বাসে যে, মেয়েটা আমার কথা শুনবে বা আমি তাকে বোঝাতে সক্ষম হব।
কেউ কি কখনো কারো কথায় তার ভালবাসাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে? এটা তাঁদের শত চেষ্টাতেও বোঝানো গেল না।
অগত্যা খানিক ভেবে আমি সময়ের আশ্রয় নিলাম। জানতে চাইলাম ও যাকে ভালবাসে সেই ছেলেটা যদি প্রতিষ্ঠিত হয়ে পারিবারিক ভাবে ওকে বিয়ে করতে চায় তাহলে তাঁরা মেয়েকে তার সাথে বিয়ে দিতে রাজি কিনা। উত্তরে তাঁরা বেশ খানিকটা দ্বিধান্বিত ভাবেই সম্মতি প্রকাশ করলেন।
বললাম টিন এজের ভালবাসা যদি প্রাপ্ত বয়সেও নিরবধি চলতে থাকে আর যদি ঐ সময়ের মধ্যে ছেলেটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠতে পারে তাহলে তার সাথে বিয়ে দেয়া যেতেই পারে।
আমরা এই ছেলে মেয়ের সামনে পাঁচ বছরের একটা টাইম ফ্রেম বেধে দিতে পারি। আপনারা তাঁদের বলতে পারেন। তোমাদের সম্পর্ক আমরা মেনে নেব এক শর্তে। আর তা হল আগামী পাঁচ বছর দুজন বাইরে নিভৃতে কোথাও দেখা করতে পারবে না। জরুরী প্রয়োজনে, মেয়ের বাসায় সকলের সামনেই তাঁরা কথা বলতে পারে। দেখা সাক্ষাত করতে পারে। কিন্তু আড়ালে আবডালে নয়। আর এই পাঁচ বছরে ছেলেটা চেষ্টা করবে প্রতিষ্ঠিত হতে। এর মধ্যে আমরা আমাদের মেয়েকে তার অমতে অন্য কোথাও বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব না।
এতে একদিকে যেমন তারাও ভরসা পাবে, হতাশাগ্রস্ত হবে না । অন্যদিকে এটা যদি কেবল মোহ হয়ে থাকে আস্তে আস্তে কেটে যাবে। কিছুদিন পরে মেয়ের মন পরিবর্তিত হলে আপনারা তার বিয়ের চেষ্টা করবেন। তবে জোর করে চাপিয়ে দেবেন না।
আমার পরামর্শ তাঁরা সাগ্রহে গ্রহণ করলেন, তবে শর্ত দিলেন। আমাকেই মেয়ের সাথে বসে কথাগুলো বলতে হবে এবং মধ্যস্থতা করতে হবে। তাঁদের অনুরোধ উপেক্ষা করা গেল না। মেয়েকে তার মা-বাবার সম্মুখেই সবতা বুঝিয়ে বললাম। মেয়েটা আমার কথায় আস্থা খুঁজে পেল তবে এবার সেও এক শর্ত জুড়ে দিল। তার শর্ত হল এই কথাগুলোই তার ভালোবাসার মানুষটিকে তারই সামনে বলতে হবে।
শর্ত মেনে নিয়ে ছেলেটাকে নিয়ে আরেক বার আমার কাছে আসতে বলে সেদিনের মত তাঁদের বিদায় দিলাম।
কদিন পরে মেয়েটা ঠিকই সেই ছেলেকে নিয়ে উপস্থিত। তাকেও সব দিক বুঝিয়ে মেয়েটার মা বাবার দেয়া শর্তে রাজি করানো গেল।
এরপরে প্রায় বছর কেটে গেছে আমার সে সব মনেও নেই। হঠাতই একদিন সেই মা-বাবা তার মেয়েকে নিয়ে হাজীর। এবার তাঁরা সবাই বেশ উচ্ছ্বসিত। জানতে চাইলাম এত উচ্ছ্বাস কেন? উত্তরে জানাল মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে আমাকে নিমন্ত্রণ করতে এসেছে।
একটু কৌশলে জানতে চাইলাম ছেলেটি কে? তাঁরা ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে যে উত্তর দিল তার অর্থ হল। সেই ছেলের সাথে সম্পর্ক চুকে গেছে মেয়েটা বুঝতে পেরেছে ওটা ছিল আসলে একটা মোহ মাত্র। কাজেই সে এখন মা বাবার পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করবে। অবস্য তাঁরা একই সাথে এও বললেন। যদি মেয়ের কোন পছন্দ থাকত তাঁরা সেটাও বিবেচনা করত।
এবার আমি সরাসরি মেয়েকে প্রশ্ন করলাম, তুমি রাজি তো? মেয়েটা স্বলাজ ভঙ্গিতে তার সম্মতি জানাল।
আমাকে বিয়ের কার্ড দিয়ে তাঁরা হাসিমুখে বিদায় নিলো। তার কদিন বাদেই বিয়ে হল।
আজ এতদিন বাদে ওরা আবার এলো আমার কাছে। তাঁদের অনাগত সন্তানের জন্য দোয়া নিতে। ওদের দেখে ভাল লাগল। ভাবলাম আমরা চাইলেই এভাবে অনেক সমস্যার সহজ সমাধান করতে পারি। আমাদের সদয় কৈশোর পেরুনো সন্তানেরা মোহগ্রস্ত হয়ে কত কিইনা করে বসে। আমরা যদি ওদের নিয়ে একটু আন্তরিকভাবে বসি। একটু আস্থার জায়গা তৈরি করে নেই তাহলে কত সমস্যারই না সহজ সমাধান করে ফেলতে পারি।
পূনশ্চঃ এটা একটা সত্য ঘটনা। এখানে এক বর্ণ অতিরঞ্জিত নেই। কেবল পরিচয়টা গোপন করা হল। ঘটনাটি পাঠকের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্য হল। এই ধরনের সমস্যায় পরলে যাতে আমরা ঠাণ্ডা মাথায় এর সমাধান করতে পারি, সেই ম্যাসেজটি পৌঁছে দেয়া।
আমরা আজকাল প্রায়শই শুনতে পাই প্রেমিক যুগলের আত্মহত্যার কথা। মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার কথা। এ সবের অন্যতম প্রধান কারন পরিবারের প্রতি অনাস্থা আর হতাশা। যদি তাঁদের একটু ভিন্নভাবে বোঝান যেত কিংবা কৌশলে তাঁদের আত্ম জিজ্ঞাসার সুযোগ করে দেয়া যেত তাহলে এমন অনেক দুর্ঘটনা থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারতাম।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৮
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপনাকেও। ভাল থাকুন নিরন্তর।
২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৮
সনেট কবি বলেছেন: ভাল বলেছেন।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৫
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: কবি অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থকুন নিরন্তর।
৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪
সাাজ্জাাদ বলেছেন: আপনার এই লেখাটা আমি ২ বার মনোযোগ দিয়ে পড়লাম।
পড়ার পর থেকেই শুধু ব্যাপারটা মাথাই ঘুরছে।
কি সুন্দর সহজ ও যৌক্তিক সমাধান।
সবাই যদি এভাবে ভাবত সমাজ কতো সুন্দর হত।
আপনাকে আপ্রিসিয়েট করছি।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৬
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: সাজ্জাদ আপনার মন্তব্য অনুপ্রাণিত করার মত। বিষয়টা কিন্তু আসলেই ভীষণ সহজ। আমরা খামোখাই সব কিছু জটিল করে তুলি। প্নেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। অনেক ভাল থাকুন।
৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭
ওমেরা বলেছেন: টিন এজের আবেগ খুব বেশীদিন থাকে না
তাই আপনার দেখানো পথ ছারা এখন আর অন্য কোন উপায় নেই। আমার আত্বীয় স্বজনদের ভিতর ও দেখেছি এটা করতে।
তবে সমস্য হয় শর্তের ব্যাপারে কারন শর্তটা সবাই রক্ষা করতে পারে না বরং দেখা যায় আগে যেটুকু আড়ালে করত সেটা প্রকাশ্যেই শুরু করে কারন গার্জিয়ানদের অনুমতি তো আছেই।
ধন্যবাদ আপনাকে ।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: শর্ত দিয়ে কিছু হয় না। সব অসুখ এক ঔষধেও সারে না। জরুরী হল তাঁদের সাথে বসা। বোঝানো এবং বুঝতে চেষ্টা করা। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৩
বিজন রয় বলেছেন: সন্তানের গায়ে হাত তোলা ভাল নয় কখনো।
আমাদের কিছু কিছু অবিভাবক বা শিক্ষক এটা মানেননা।
খুব খারাপ।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৪
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ঠিক তাই, এটা একেবারেই অনুচিত। বিজন ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন ,
একটি অনুকরনীয় উপদেশ ।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৭
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আহমেদ জী এস অশেষ ধন্যবাদ ভাই, ভাল থাকবেন ।
৭| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৮
ঢাকার লোক বলেছেন: বেশ সুন্দর করে একটা একটা বিশাল সমস্যার সমাধান তুলে ধরেছেন, জরুরী হল তাঁদের সাথে বসা। বোঝানো এবং বুঝতে চেষ্টা করা ! সব সমস্যার সমাধান হয়তো একই ভাবে বা এতো সহজে হবে না, তবে একটা পথ বের হয়ে আসবে !
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: একদমই তাই। আপনি লেখার উদ্দেশ্যটাই তুলে ধরেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৮| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২০
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: মহান ধর্ম মতে ৭ বছর হলেই বেতানো শুরু
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অ-ধর্ম মতে!
৯| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: বহু আগে রবীন্দ্রনাথ বলে গেছেন কিভাবে শিক্ষা দিতে হবে।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৬
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: কত গুনি জন কতবারই না একই কথা বলেছেন, কে শোনে কার কথা!
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯
আমি ৎৎৎ বলেছেন: অনেক, অনেক, অনেক, অনেক, ভাল লাগল।
ভাল থাকবেন।