![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথম অধ্যায়-
ট্রি ট্রি ট্রি ট্রিং ট্রিং ট্রিং ট্রিং ট্রিং , হাতঘড়ির মৃদু শব্দেই জেগে উঠে ত্রাশিয়ান । রেডিয়াম কাটার দিকে তাকিয়ে উঠে পড়ে সে, সময় বাকি নেই বেশী । অবশ্য টেনশন করারও কিছু নেই । সব সেট করাই আছে , ওকে শুধু প্লাগ অ্যান্ড প্লে করতে হবে । ছোট্ট কালো চৌক গ্লাসটা হাতে সেট করে নায়েলিকে জাগাতে উদ্যত হয়।
নীল রঙের চোখ বুজানো নিয়ন আলোয় ত্রাশিয়ানের আবছা অবয়ব । ধাতস্ত হতে কিছুটা সময় নিল নায়েলি । দরজার উপরে জ্বলজ্বল করছে ২৩ এপ্রিল ৩৭২১ , একটানা ১১ বছর পর হাইবারনেশনে থেকে জেগে উঠেছে সে । নিশ্চই নতুন এসাইনমেন্টে নিয়োগ পেয়েছে , আশায় চোখ জ্বলজ্বল করে উঠে তার । আবারো নিজেকে পারফেক্ট মানুষ হিসেবে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে হাইবারনেশন টিউব থেকে ত্রাশিয়ানের বাড়ানো হাত ধরে উঠে পড়লো নায়েলি ।
মাত্র গতকাল ট্রেটন -ইউ জি এর ৭০০ বছর পূর্তি পালন করেছে পৃথিবীবাসি । পৃথিবীতে এখন দেশ নামের কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই , সবাই অসকর্পে নিবন্ধিত এবং ট্রেটন আলট্রা জেনারেশন এর অধিবাসী । শহরগুলোর নাম এখন প্রকাশ পায় সংখ্যায় । নিরেট লোহায় তৈরি বিশ ফুট প্রশস্থ আর একশ ফুট উঁচু দেয়ালে ঘেরা ট্রেটনের রাজধানী ‘টি-৮৭৮’- কনট্রোল করে পুরো পৃথিবী । সাধারন মানুষদের এখানে প্রবেশ সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ । সীমারেখার বাইরের ৫ মাইলের ভেতর জীবন্ত যে কোন কিছু ছাই করে দিতে প্রতি ৩ ফুট অন্তর দেয়ালে বসানো আছে শক্তশালি সেন্সরসমৃদ্ধ লেজার গান ।
মাত্র আট জন মানুষ কনট্রোল করছে পুরো ট্রেটন । এই সুপার পাওয়ার একদিনে আসেনি । তৎকালীন সাতটি দেশের প্রধানদের দূরদর্শিতা আর ধূর্ততা আজ তাদের বংশধরদের হাতে তুলে দিয়েছে অসামান্য ট্রেটন। আমূল পরিবর্তন এসেছে পৃথিবীর চেইন অফ কমান্ড অ্যান্ড লিভিং এ । সবাই এখন ব্যাস্ত নিজের কাজে । মাসের প্রথম সপ্তাহের প্রথম দিন প্রতিটি পরিবারের জন্য বরাদ্দ কন্টেইনার পূর্ণ করে রেখে দিতে হয় লিভিং প্লেস এর সামনে রেড মার্ক করা জায়গায় । পরদিন ভোরের আগেই প্রতিটি এলাকার জন্য নির্ধারিত বিশাল এস- ৮৭৮ আকাশযান সংগ্রহ করে নেয় সেগুলো । আর তার পরদিন নতুন কন্টেইনারে একই স্থানে পৌঁছে যায় প্রতিটি পরিবারের জন্য নির্ধারিত পোশাক , খাবার, অন্যান্য সকল জিনিস এবং কাজের রসদ । সব মিলিয়ে এই তিন দিন লিভিং প্লেস এর বাইরে বের হওয়া ট্রেটনবাসিদের জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ।
এদিকে টি-৮৭৮ এ শেষ টার্গেটের খোঁজ পেয়ে মনিটরের দিকে ঝুকে ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন ট্রেটনের অপারেশন হেড ডঃ আব্রাহাম। বিভিন্ন অপশন চেপে চেপে অ্যাকটিভেট করছেন নিজের মোক্ষম অস্ত্রগুলোকে । আভাস পেয়ে আগেই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থেকে ডেকে পাঠিয়েছেন তার তৈরি মানুষদের মাঝে সেরা দুই ত্রাশিয়ান আর নায়েলিকে ।
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
"অস্তিত্বের ডাক" - দ্বিতীয় অধ্যায়
১৩ নভেম্বর ২৬৭১ , ‘নাহ সব ঠিক আছে , কোন প্রমাণ নেই’ মিউনিখে অসকর্পের হেড অফিসে নিজের ল্যাবোরেটরিতে শেষবারের মতো চোখ বুলিয়ে আশ্বস্ত হলেন ডঃআব্রাহাম । বুক পকেটে কলমের মতো ছোট্ট একটি টিউব , আর হাতে ডকুমেন্ট ভর্তি ব্রিফকেস নিয়ে রওনা হলেন লিফটের দিকে । নিচে পার্কিং এ অপেক্ষায় আছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দূত , গন্তব্য মস্কো,রাশিয়া ।
এদিকে ট্রেটনে নিজেদের লিভিং প্লেস থেকে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে জিরান আর তার সঙ্গিনী ইরিনা । কারণ আজ মধ্যরাত থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ট্রেটনে চলবে অ্যানুয়াল পিউরিফিকেশন ডে । নিজেদের জন্য বরাদ্দকৃত কন্টেইনার পূর্ণ করতে ব্যার্থ হওয়ায় তাদের দুইজনের নামের পাশে পয়েন্ট টেবিলে রেড মার্কিং করা, তাই পালানো ছাড়া অন্য কোন বিকল্প পথ নেই তাদের সামনে। পয়েন্ট তালিকায় মাইনাসে থাকা অধিবাসীদের খুজে হত্যা করতে আছে এস-৮৭৮ এর সাইবর্গ দল , সেই সাথে যদি কোন অধিবাসী টেবিলে রেড মার্কিং এ থাকা কাউকে জীবিত বা মৃত উপস্থাপন করতে পারে তার জন্য বরাদ্দ এক বছরের জোগান মেটাবার মতো পয়েন্ট । এ বছরের মৃত্যুর হোলিখেলার রাতে টার্গেট করা হয়েছে ১৭৩ জনকে । কারণ একটাই ট্রেটনে নিজের কাজে এরা সবাই ব্যার্থ । সাতশত বছরের এই খেলা আজ আরও একবারের মতো শুরু হতে বাকি মাত্র কয়েক ঘণ্টা ।
‘আরারাত পার্ক হায়াত মস্কো’ তীব্র তুষারপাত, আর প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাসে জানালার বাইরে কিছুই দৃশ্যমান নয় , কফির মগটা হাতে তুলে নিয়ে সাদার গহীনে একটানা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে হোটেলের ছাব্বিশ তলায় নিজের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন রাশভারী চেহারার রবার্ট নেগ্রেদো, কারেন্ট প্রেসিডেন্ট অফ আমেরিকা । এমনিতে চোখে চাতুর্য ও বিশাল ব্যাক্তিত্বের অধিকারী হলেও আজ রবার্টের চেহারায় চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। সম্ভবত আজ শুধু তার জীবনের নয় বরং পুরো পৃথিবীর সময়কালের সেরা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন তারা । রবার্ট আর আরও সাত দেশের প্রেসিডেন্ট কিছুক্ষণের মাঝেই একত্রিত হবেন হোটেলের টপ ফ্লোরের সিকিউরড হল রুমে । সেখানে ডঃ আব্রাহাম উপস্থাপন করবেন তাদের মহা পরিকল্পনার সর্বশেষ ধাপ।
একটি মাত্র বিপ , নিজেদের হাতে লাগানো মডিউলের চৌকো স্ক্রিনে ভেসে উঠেছে ম্যাসেজের আইকন । হতবাক হয়ে যায় জিরান ও ইরিনা । সবসময় এই মডিউলে কমান্ড পেয়ে এসেছে তাই মেসেজে অভ্যস্ত নয় তারা । ওপেন করতেই দেখতে পেলো মেসেজে মাত্র চারটি শব্দ লিখা , ওয়ার এগেইনস্ট ট্রেটন- ফলো ।সাথে ম্যাপ , ইন্ডিকেট করছে ডব্লিউ এ এইচ নামাঙ্কিত একদম পুবের দিকের বিশাল বনভূমির একটি এরিয়া । উই আর হিউম্যান সংক্ষেপে ডব্লিউ এ এইচ এর ব্যাপারে কিছুটা জানা আছে জিরানের । ট্রেটনের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই যুদ্ধ করে আসছে ডব্লিউ এ এইচ । যতদূর জানে জিরান ওই দলের একটি বাদে সবকটি গ্রুপই ট্রেটনের বিশাল বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়েছে , বাকি একটি দলের উনত্রিশ জন সদস্য আছে আত্মগোপনে । এর আগেও এ গ্রুপটি অ্যানুয়াল পিউরিফিকেশন ডে তে বেশ কয়েকজন রেড মার্কড অধিবাসীকে বাঁচাতে সমর্থ হয়েছে । জিরানের চোখে একচিলতে আশার দ্যুতি খেলে গেলো। (চলবে...)_
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৩
ত্রাশিয়ান বলেছেন: চলবে
২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৬
নির্ঝর এস, ইমরান বলেছেন: ভাল লাগল!
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৩
ত্রাশিয়ান বলেছেন:
৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৪
কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভালো লাগলো । চলুক...
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৮
ত্রাশিয়ান বলেছেন: চলবে .।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪১
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো। চলুক ++++++
অনেক শুভকামনা