নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

The only person u should try to be better than, is the person u were yesterday.

ত্রিভকাল

আমি গ্রামের একজন সহজ সরল প্রথমশ্রেণীর আবুল, যে কিনা ছিঁড়া লেপের তলায় শুয়ে কোটিপতি হবার স্বপ্ন দেখতে ভীষণ ভালোবাসে। কৃপণ, কাইষ্টা মানুষের নাকি অনেক টাকা পয়সা হয়, সে হিসাব অনুযায়ী আমি অক্সফোর্ড কোটিপতি হবো। নিজের টাকা নিজেই খাইয়ম .... ফেইসবুক লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/Sabbirahmed069 ওয়েবসাইট লিন্ক : http://bkadda.blogspot.com http://www.trivokal.com http://www.votku.com htttp://www.likilose.com http://trivokal.wordpress.com/ http://www.vokalab.com

ত্রিভকাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আকাংখা

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২

আমি কিছুদিন আগে হাস পাপিস থেকে একজোড়া স্যান্ডেল কিনেছি, দাম নিয়েছে মাত্র ৫৯৯০ টাকা। ২ ঘন্টা ধরে খুত খুত মনে ঘুরাঘুরি করে এই স্যান্ডেল জোড়াই পছন্দ হয়েছিল। আর হবেই বা না কেন, Hush Puppies বলে কথা!! বিল ক্লিনটনের মাই লাইফ অটোবায়োগ্রাফিতে পরেছিলাম বিল ক্লিন্টনের Hush Puppies এর জুতার প্রতি দূর্বলতার কথা। আর সেই একই ব্রান্ডের স্যান্ডেল এর প্রতি আমার যে কোন প্রকার দূর্বলতা থাকবে না তা বললে ভুল বলা হবে। আমার ধারণা সবারই থাকে... আমার বাবারও ছিল... এক জোড়া স্যান্ডেল এর প্রতি দূর্বলতা ...



আমার দাদি যখন মারা যায় ২০০৪ সালে আমরা তখন কুমিল্লায় থাকতাম। আর আমার দাদী ছিল চাদপুরে, আমাদের দেশের বাড়িতে। আমার তখন ২য় সাময়িক পরীক্ষা চলছিল। পরদিন ছিল ধর্ম পরীক্ষা। পরীক্ষা বাদ দিয়ে সেদিন রাতের বেলাতেই আমার মা আমাকে আর আমার বোনকে নিয়ে চাদপুরের উদেশ্যে রওনা হয়েছিল। আমরা আমাদের দাদীকে 'দিদা ' বলে ডাকতাম। বাসে বসে দিদার কথা খুব করে মনে করার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু তেমন কিছুই মনে পড়ছিল না। শুধুমাত্র ঈদের বন্ধের সময়ই বাড়িতে যাওয়া হত বলেই মনে হয় তার কোন স্মৃতি আমার মাথায় সেভাবে গেথে যায়নি, শুধুমাত্র একটা স্মৃতি ছাড়া ... সেই স্মৃতিটাই বার বার তাড়া দিচ্ছিল মাথার ভিতরে ... ঠিক যেমন আজ দিচ্ছে ...



আমাদের দিদা আমাকে আর আমার বোনকে পেলে আমার বাবার ছোটবেলার একটা ঘটনা প্রায়শই বলতেন আর ঘটনা একটা পর্যায়ে এস ঢুকরে কেঁদে উঠতেন। আমার বাবা তখন নাকি প্রাইমারীতে পড়তেন। খালি পায়ে স্কুলে হেটে যেয়ে ক্লাস করতেন, একজোড়া জুতা ছিল না বিধায়। একদিন বাজারে একজোড়া স্পঞ্জের স্যান্ডেল দেখে নাকি বাবার চোখজোড়া চক চক করে উঠেছিল। বাসায় আরো ৭ ভাইবোনের মধ্যে বড় আমার বাবা সেদিন অভাবের সংসার দেখে কাউকেই বলার সাহস পায়নি। একদিন সাহস করে আমার দিদার কাছে স্পঞ্জের স্যন্ডেলজোড়ার কথা বলতেই দিদা বলেছিলেন বাবার বড় চাচার কাছ থেকে চেয়ে দেখতে, তিনি হয়তো না করবে না। আমার বাবাও সংশয় নিয়ে বলেছিলেন তার চাচাকে। মুখ ফুটে বলা মাত্র উনার চাচা আমার বাবাকে বলেছিলেন, "বাপ ডাক, তাহলে কিনে দিব "। আমার প্রাইমারি পড়ুয়া বাবা কিছুই না বলে খালি পায়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আবার ছুটে গিয়েছিলেন আমার দিদার কাছে। যেয়ে কিছুই না বলে বসে ছিলেন মুখ গোমড়া করে। দিদা কারণ জিজ্ঞাসা করতেই খুলে বলেছিলেন চাচার কথা। দিদা চাচার দুষ্টামি ধরতে পেরেই বাবাকে বলেছিলেন আমার চাচার দুষ্টামীর কথা, আর সাথে অনুমতিও দিয়েছিলেন যা বলতে বলেছিলেন তা বলার জন্য।

আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমার দিদা ঠিক এই পর্যন্ত এসেই কেঁদে দিতেন বাচ্চাদের মতো .. তারপর সেই কান্নামিশ্রিত কণ্ঠে বলতেন আমার বাবার একজোড়া শখের স্পঞ্জের স্যান্ডেল পাওয়ার বাকি অংশটুকু ...



আমার বাবা সেদিন স্পঞ্জের স্যান্ডেল জোড়া ঠিকই বাসায় নিয়ে এসেছিলেন। তবে তা পায়ে দিয়ে না ... কাগজে মুড়ে বগলের তলায় শক্ত করে রেখে... যাতে নষ্ট না হয়ে যায়।



আমার বাবা একসময় সফল ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু আজ পর্যন্ত ৬০০০ টাকার স্যান্ডেল পড়েননি। আমি আজ পড়লাম। হয়তোবা যেদিন আমার বাবার মৃত্যু হবে সেদিনও পড়বো এই স্যান্ডেলগুলো। তারপরও হয়তোবা আমার বাবার মতো কখনোই হতে পারবো না...

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩

মাক্স বলেছেন: ওয়ান্স আপ অন এ টাইম :| :|

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৬

ত্রিভকাল বলেছেন: ম্যাক্স ভাই, আমাদের ছেলেমেয়েও হয়তো একদিন আমাদের কথা তার বন্ধুদের বলবে.. তখন আমরা হব, 'once upon a time '। সময় জিনিসটাই অদ্ভুত।

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

সত্যচারী বলেছেন: খুব আবেগ দিয়ে লিখেছেন। ভালো লাগলো

+

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭

ত্রিভকাল বলেছেন: সত্যচারী, :-। আমার বাসার লোকজন বলে আমার ভিতরে আবেগ জিনিসটা নাই। তাদেরকে মাঝে মাঝে নিজের ভিতরের যন্ত্রপাতি গুলো চামড়া কেটে দেখাতে ইচ্ছে করে ... বলতে ইচ্ছে করে আমিও কান্না করি তোমাদের জন্য, কিন্তু কখনোই কাউকে দেখাই না....

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৭

টানিম বলেছেন: মাত্র ৫৯৯০ টাকা !!!!!!!!!!!!!!!

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭

ত্রিভকাল বলেছেন: টানিম ভাই, হাস পাপিসের শো রুমে এর থেকে দামি আর কোন স্যান্ডেল ছিল না। থাকলে হয়তো কিনার কথা ভেবে দেখতাম।

৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৭

প্রিয়তমেষূ বলেছেন: খুব সুন্দর আবেগী বর্ননা।

ভালো লাগলো।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

ত্রিভকাল বলেছেন: প্রিয়তমেষূ, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মন দিয়ে পড়ার জন্য।

৫| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৮

েমঘবালকিস বলেছেন: Ami class 7 e thakte ekbar classe slipper pore giyechilam karon amr onno kono sandel chilo na..sir eta dekhe amake 50ta cheler samne onek lojja dilen..jodio primary school e odikansho somoye sandel charai jetam. 2011 e gulshan er huss puppies er showroom theke 1jora sandel kinchilam 2930tk diye.

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

ত্রিভকাল বলেছেন: েমঘবালকিস. হাস. পাপিসের জিনিস কিন্তু আসলেই ভালো হয়। আমি ২০০৮ এ একজোড়া কাউবয় সু কিনেছিলাম হাস পাপিস থেকে। রাফ এন্ড টাফ ইউজ করার পরও জুতাজোড়া আজও নতুনের মতো দেখায়। ৫৫০০ নিয়েছিল। দারুণ এবং আমার পচ্ছন্দের জিনিসগুলোর মধ্যে অতি প্রিয় একটা শু।

৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৫

তৌহিদুল হক রনি বলেছেন: ভাইয়া, আপনি আবেগ দিয়ে অত্যন্ত সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

ত্রিভকাল বলেছেন: তৌহিদুল হক রনি, ধন্যবাদ ভাইয়া। কিন্তু আমি তো আপনার প্রোফাইল পিক দেখে ব্যাপক ভয় পাইলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.