নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টিসেলিম

টিসেলিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিলাই পালন বিদ্যা

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬

অবশেষে একটা বিড়ালের

বাচ্চা পাওয়া গেল।

বিড়ালটা টাকা দিয়ে কিনতে হবে

সেটা একটা আনন্দের বিষয়।

কিনতে গেলে একটা বিড়ালের

বাচ্চার বাজার দর, £350-£500 এর

মধ্যে। এতো দাম

দিয়ে একটা বিড়ালের

বাচ্চা কেনার মত মনের জোর

আমার এখনো হয়নি। অত দাম

দিয়ে বিড়ালের বাচ্চা কেনার

বদলে আমি বরং একটা গরু কিনব।

বাসায় রেখে গরু পালার

ব্যাবস্থা নেই। আপাতত তাই

বিড়ালের শখ বাদ দিয়েছিলাম।

বিড়ালহীন জীবন খুব খারাপ

কাটছিল না।

গত সপ্তাহে জোনাথন ফোন

করে বলল, তোমার কি বিড়ালের

শখ এখনো আছে?

আমি বললাম, নিশ্চয়ই আছে।

তবে £500 খরচ করে বিড়াল কেনার

মত আর্থিক অবস্থা নাই।

-তাহলে তোমার শখ পুরন করার

একটা ব্যাবস্থা হয়ে গেছে।

বিনা পয়সায়।

-রিয়েলী?

-হুম। আমার গার্ল ফ্রেন্ডের এক

বান্ধবীর কলিগের বিড়াল

৬টা বাচ্চা দিয়েছে।

সে এতো গুলি বিড়াল

পালতে পারবে না। তাই লোকজন

খুঁজছে। কেউ যদি নিতে চায়।

জোনাথন আমাকে বিড়ালের

বাচ্চার ছবি পাঠাল। সেই

ছবি দেখে আমরা সবাই

বিড়ালের বাচ্চার

প্রেমে পড়ে গেলাম।

কি যে অসম্ভব সুন্দর

দেখতে পুচকি বাচ্চাটা। তার

বয়েস এখন ১০ সপ্তাহ।

-টাকা দেয়া লাগবে?

-না না। এমনি। ফ্রি। শী ওয়ান্টস

দ্যা কীটেন টু হ্যাভ আ গুড হোম।

দ্যাটস অল। তুমি এক কাজ কর, এই

কয়দিন কিভাবে বিড়ালের

বাচ্চার যত্ন নেয়া হয়

সেটা নিয়ে একটু পড়াশুনা কর।

বিড়ালের মালিক বিড়াল

দেয়ার আগে তোমাদের

ইন্টার্ভিউ করবে। তোমাদের

বাসাও ভিজিট করবে।

শী ওয়ান্টস টু বি সিউর ইফ ইয়ুর

হাউজ ইজ সেফ এন্ড সুইটেবল ফর আ

কিটেন।

আমি তো তব্দা খেয়ে গেলাম।

বলে কি! বিড়ালের

বাচ্চা পালা যে এতো কমপ্লিক

এটা নিয়ে পড়াশুনা করতে হয়,

তার জন্য সেইফ এন্ড সুইটেবল

বাড়ি থাকতে হয়, বিড়াল নেয়ার

আগে ইন্টার্ভিউ দিতে হয়, এইসব

তো ভাবিনি! ছোট বেলায়

আমাদের একটা বিড়াল ছিল।

সে তো এঁটো ভাত, মাছের

কাঁটা এই গুলিই খেত। এক একদিন এক

একজনের বিছানায় ঘুমাত।

মাঝে মাঝে গাছের

পাতা খেত। নানু বলত

বিড়ালেরা অসুখ হলে গাছের

পাতা খায়। আমাদের বিড়াল অসুখ

হলে গাছের পাতা খেত। গাছের

পাতা খেয়ে সে সুস্থ হয়ে যেত।

কোন যত্ন বা মেডিক্যেল হেল্প

ছাড়াই সে বছর বছর বাচ্চা দিত।

বাচ্চা গুলো কয়দিন মিউ মিউ

করে সবাইকে জ্বালিয়ে একদিন

কোথাও চলে যেত।

কিন্তু এইটা হল বিলাতী বিড়াল।

তার ধরন ধারণই আলাদা!

বিলাতী বিড়াল বলে কথা!

পড়াশুনা তো করতেই হবে। মালিক

আবার আমাদের ইন্টার্ভিউ

নেবে বিড়াল দেবার আগে।

ইন্টার্ভিউতে ধরা খেলে ফ্রি বিড়াল

পাওয়া যাবে না।

আমরা বাসার সবাই মিলে এখন

কিভাবে বিড়ালের বাচ্চার যত্ন

নিতে হয় সেটার উপর

পড়াশুনা করছি। যতই পড়ছি ততই

নার্ভাস হয়ে যাচ্ছি। বিড়ালের

বাচ্চার বাসায় আসার

প্রিপারেশন নেয়াই

তো মনে হচ্ছে একটা বিশাল

ব্যাপার। তার জন্য

আলাদা করে একটা রুম ঠিক

করা হচ্ছে। এই রুমের নাম

হবে “সেইফ রুম”।

বিড়ালকে এনে প্রথমে এই

রুমে রাখতে হবে।

যেখানে আগে থেকেই তার

বিছানা (পিংক), তার

খাবারের বাটী (পিংক), তার

পানির বাটী (পিংক), তার হাগু

মুতু করার লিটার (পিংক), তার

খেলনা, এক্টিভিটী সেন্টার

এইগুলি সব ঠিক

করে রাখা হয়েছে। এই রুমে প্রথম ১

সপ্তাহ মাত্র দুইজন মানুষ

ঢুকতে পারবে। দুইজনের

বেশী মানুষ দেখলে বিড়াল ভয়

পাবে। ভয় পেলে বিড়াল

ট্রমাটাইজড হয়ে যাবে। বিড়াল

যতক্ষণ

না নিজে এগিয়ে এসে কোলে উঠবে

ইচ্ছের

বিরুদ্ধে বিড়ালকে ধরলে তার

বিড়াল স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ

করা হবে। বিড়াল স্বাধীনতায়

হস্তক্ষেপ

করে বিড়ালকে ট্রমাটাইজড

করে দিলে সে সারাজীবন এই

ট্রমা মনে নিয়ে ঘুরবে।

ট্রমাটাইজড বিড়াল ভাল বন্ধু

হতে পারে না।

তার খাবার হতে হবে মীট বেজড

প্রোটিন। মানে হল, সে আসলেও

বাঘের মামা। মাংস ছাড়া অন্য

যে কোন খাবার বিড়ালের

স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। ভাত

খাওয়ালে বিড়ালে ডায়েবেট

হয়। তখন তাকে দুই বেলা ইনসুলিন

ইনজেকশন দিতে হয়।

একটা বিড়ালকে দিনে দুইবার

ইনসুলিন ইনজেকশন দেয়ার

ভাবনাটা ভয়াবহ। আমি বরং মিট

বেজড খাবারই দিব। সবজি বা অন্য

কোন সিরিয়াল বেজড খাবারও

দেয়া যাবে না। সিরিয়াল আর

সবজী বেইজড খার দিলে তার

কিডনিতে সমস্যা হবে। তখন

তাকে পশু ডাক্তারের

কাছে নিয়ে ক্যাথেটারাইজড

করতে হবে। আল্লাহ মাফ কর!

আমি বরং সব রকম সবজী আর

সিরিয়াল জাতীয় খাবার তার

কাছ থেকে দূরেই রাখব! তার

আসে পাশে সিগারেট

খেলে তার

অ্যাজমা হতে পারে। এই বাসায়

কেউ সিগারেট খায়না।

বাঁচা গেল!

তার জন্য অলরেডি ডাক্তারের

এপয়েন্টমেন্ট করা হয়েছে।

বাসায় আসার দুই একদিনের

মধ্যে তাকে ডাক্তারের

কাছে নিতে হবে। প্রয়োজনীয়

টিকা দিতে হবে, থোরো চেক

আপ করতে হবে। ডিওয়ারম

করতে হবে। ডি ফ্লিস করতে হবে।

তাকে ৪ মাস বয়েসে ডাক্তারের

কাছে নিয়ে লাইগেশনের মত

একটা অপারেশন

করাতে হবে যাতে সে আনপ্লান্ড

ভাবে বাচ্চা না দিয়ে বসে! সব

মিলিয়ে তার পিছনে যে খরচ

হচ্ছে, আমি ভাবলাম, এই

টাকা খরচ

করে তো একটা মানুষের বাচ্চাই

পালা যেত। বিড়াল পালার

কি দরকার! তবে মানুষের

বাচ্চারা বড়

হলে যে পালে তাকে ছেড়ে চল

বিড়ালের বাচ্চারা মৃত্যুর আগ

পর্যন্ত সাথেই থাকে।

অভিজ্ঞতা: রিটার্ন অফ শী

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০৫

আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: কত্ত বড় ফিরিস্তি............ :-&

তবে মজা লাগলো............. :D

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০৯

টিসেলিম বলেছেন: ধন্যবাদ .। বাস্তব জীবনেও লেগে যান বিলাই পালনে :-P

২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০৬

কামরাজ বলেছেন: খুব ভালো লেগেছে

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১০

টিসেলিম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, শুভেচ্ছা

৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:২১

ভিটামিন সি বলেছেন: আমি বিলাই পালি না। বিলাই মারি।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:০৩

টিসেলিম বলেছেন: কই বিলাই মারেন? বাসর ঘরে? :3

৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৫:২১

সাদা আকাশ বলেছেন: বিলাই পালুম :D
তয় ট্রমা দিয়াই পালুম B-))
দেশি নিয়মের উপরে আর কুনু নিয়ম নাই ;)

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯

টিসেলিম বলেছেন: হে হে আকাশ ভাই দেখি আমার দুই নাম্বার ব্লগে :-P বিড়ালের কিছু হইলে আপনার নামে কেস করুম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.