নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিনহাজ আহমদ শোভন; সাধারন একটা ছেলে, যার চোখে মাঝে মাঝে সাধারন কিছু ব্যাপার অসাধারণ ঠেকে, আবার অসাধারণ কিছুকে খুবই সাধারন। তুচ্ছ ব্যাপারে কথা বলি। সৃষ্টিকর্তা বোধহয় আলস্য নামক গুনটা আমার মাঝে একটু বেশি মাত্রায় দিয়েছিলেন। :)

শোভনের শোভন

আমি একজন আশাবাদী বলছি, [email protected]

শোভনের শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোকা - ছোটগল্প

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৩২

মিজান সাহেবের ব্যস্ততা আরো বেড়ে গেছে। তিনি দেশের বরেণ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন হলেও তার এবারের ছুটোছুটি কোন ব্যবসায়ীক প্রোজেক্টে নয় বরং সম্পুর্ণ ভিন্ন এক কারনে।


জীবনটা তো তিনি অবশ্য টাকার পিছনে ছুটেই পার করে দিয়েছেন, নিজের ব্যবসাগুলোকে এমনভাবে দাঁড় করিয়েছেন তিনি যে লাভের হারটাও ক্রমেই বাড়ছে। এমন একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়ায় এমনিতেই তিনি একজন ঈর্ষনীয় ব্যক্তিত্ব। তাই স্বাভাবিকভাবেই তার এখন চাইলে টাকার পিছনে দৌড়াদৌড়ি না করলেও চলে। স্ত্রী এর সাথে তো ডিভোর্স অনেক দিন আগেই হয়েছে, একমাত্র বখে যাওয়া ছেলেটি ছাড়া পরিবারেও আর কেও নেই। ওই রকম পারিবারিক ঝামেলাও নেই, স্ত্রী থাকতে স্ত্রীর সাথে ঝগড়াঝাঁটি হতো, এখন তো সেই ঝামেলাও নেই, আর ব্যবসার লাভ দিয়ে নিজে আর ছেলে দুইজনই আমৃত্যু আয়েশকরে কাটিয়ে দিতে পারবেন। তাই মন:সংযোগটা ঠিক আগের মত ব্যবসায় নেই। আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে তিনি আসলে ইচ্ছা করলেও মন:সংযোগটা করতে পারছেন না।


তার বর্তমান অবস্থা এই যে তাকে প্রায়ই সারা বাংলাদেশের বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক, মোটিভেশনাল স্পিকারদের কাছে ছুটোছুটি করতে হয় এমন এক প্রশ্নের জবাব খুঁজতে যা অতীতজীবনে তার কল্পনায়ও আসে নি, আর বাস্তবভাবনাতো দূরে থাকুক।


কেন যেন, যতই সময় যাচ্ছে, পৃথিবীটাকে দিন দিন অর্থহীন মনে হচ্ছে তার কাছে। অনিদ্রা হচ্ছে। ঔষুধেও আর এখন সহজে কাজ হয় না। প্রথমে ভেবেছিলেন সাধারন কোন রোগ হয়ত, ডাক্তারের কাছে গিয়ে কিছু টাকা ঢাললেই ঝামেলা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু শেষে দেখা গেলো শুধু ডাক্তার কেনো, পীর, ফকির, দরবেশের কাছে গিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। তাও এখন ও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কেনো যেনো ইছুতেই কিছু হচ্ছে না। ক্রমশ যেনো নিজেকে হারিয়ফেলছেন! সুখ খুঁজে পাচ্ছেন না কিছুতেই!!



এমনই এক বিকেলের ঘটনা, নামকরা এক ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হচ্ছিলেন মিজান সাহেব। বিল্ডিংয়ের সামনেই তার দামি কালো জিপগাড়িটি পার্ক করা।

ড্রাইভারের জঝামেলায় তিনি যান না, উনি নিজেই ড্রাইভ করেন। গাড়ির ড্রাইভিং সিটে উঠে বসতে যাবেন তিনি, ঠিক সেই মুহূর্তেই, একটা পাঁচ সাত বছরের লিকলিকে কালো ছেলে "সার একটা ফুল লইয়া যান, পাচ টেকা দাম" তার হাতটা ধরে অনুরোধ করে বসল।

ছেলেটির নোংরা পোষাক আর অভদ্র ব্যবহারে মিজান সাহেবের সহজাত পশুত্ব যেনো জেগে উঠল হঠাৎ।

কিছু বুঝে উঠার আগেই ছেলেটিকে সশব্দে একটা চড় মেরে গাড়িতে উঠে বসলেন তিনি বিরবির করে বলতে বলতে, ' এসব আবর্জনাগুলো কোথা থেকে যে আসে!'


গাড়িটি নিয়ে বেরিয়ে গেলেন সুখ চিন্তাগ্রস্ত মিজান সাহেব। সূক্ষবুদ্ধির জন্য ব্যবসায়ী মহলে তার বেশ সুনাম আছে। তার সফল ব্যবসাও সেকথারই বাহক।

কিন্তু হায়! কেনো যেনো তিনি একবারের জন্যও মাথায় আনতে পারলেন না যে বাচ্চাটাকে চড় মারার মুহূর্তেই যে প্রতিদিনের মত সুখের পথ থেকে আরো এক ধাপ পিছিয়ে এসেছেন তিনি।


শোভন

২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ তে লিখা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৩৩

টুনটুনি০৪ বলেছেন: গল্পটি ভালো লাগল।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:১৭

শোভনের শোভন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে!
- ও, আপনি আমার সামুতে যেকোন লেখার প্রথম মন্তব্যকারী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.