নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১।
মাঝে মাঝে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করে হিমি। অবশ্য এর যথেষ্ট কারন ও আছে ওর কাছে। রাহিলের মত একটা ছেলে কয়টা মেয়ের ভাগ্যে জোটে?
আজ অবশ্য রাহিল নাকি ব্যাস্ত। ওর বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গেছে। তাই দেখা হবে না, হবে না আজ ফোনে কথা বলা ও।
আজকের বিকেলটা ছাদের বড় পেয়ারা গাছের নিচে বসে এভাবেই কাটিয়ে দেয় হিমি, অন্য অনেক বিকেল- সন্ধ্যা- আর রাতের মতই। সুখের কল্পনাতেও তৃপ্তি আছে।
রাহিল ছেলেটা আগে এমন ভালো ছিলো না। হিমি শুনেছে অনেক মেয়ের সাথে নাকি সম্পর্কও ছিলো।
অনেকে আবার ওর আড়ালে বলে যে, হিমির সৌন্দর্যের টানে নাকি রাহিল হিমির সাথে প্রেম করছে। এমন প্রেম নাকি অনেক করেছে। কিন্তু এসব কথায় হিমির তাতে কিচ্ছু যায় আসে না, সে জানে যে, সে ভালোবাসে ছেলেটাকে। আর মানুষ তো কত কথাই বলবে, মানুষের কথায় কান দিলে চলবে কেন?
২।
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেছে আজ হিমি। গোসল করে ফ্রেশ হয়ে এখন আয়নার সামনে। সময় নিয়ে সাজছে আজ!
আজ সকাল ১০টার দিকে রাহিলের সাথে দেখা হওয়ার কথা টিএসসিতে। এখনো হাতে পুরো এক ঘন্টা বাকি। টিএসসি তে যেতে হিমির এই বাসা থেকে সময় ল্লাগে বড়জোড় ১০ মিনিট। কিন্তু এরই মধ্যে পুরো সাজগোজ করে প্রায় রেডি হয়ে বসে আছে ও। অনেক দিন পর রাহিলের সাথে সকাল সকাল বের হচ্ছে ও। রাহিলের বিভিন্ন ব্যাস্ততার কারনে তো বেচারা সময় ই দিতে পারে না ওকে। অবশ্য সেটা নিয়ে ওর দুঃখ নেই। মনের অনুভূতিটাই আসল। সময় দেওয়া না দেওয়া তো বড় কোন ইস্যু নয় সত্যিকারের ভালোবাসার সামনে।
৩।
“এই রিকশা, যাবে?”
- কই যাবেন আপা?
- টিএসসি।
- চলেন।
রিকশা নিল হিমি। এর মাঝে রাহিল একবার কল দিয়েছে। ও নাকি চলে এসেছে।
ধুর!!! রাহিলের জন্য যে চিঠি লিখেছিল সেটাতো ফেলেই চলে এলো বাসায়! নিজের ওপর রাগ হলো হিমির। এত প্রস্তুতির পর যদি এমন ভূল্ হয়! রাহিল আবার এদিকে চলেই এসেছে! এখন বাসায় গেলে তো আবার দেরি হয়ে যাবে!
আধুনিক ফোন এসএমএস এর যুগেও চিঠি এবং অন্যান্য কিছু ব্যাতিক্রমী জিনিসের প্রতি আলাদা একটা টান আছে হিমির।
যাক, আজ নাহয় চিঠি না ই দিলো, চিঠির আবেগঘন কথাগুলো ফোন বের করে এসএমএসের মাঝে লিখে ফেলার চেষ্টা করছে হিমি!
৪।
টিএসসি মোড়ে চায়ের দোকানের পাশে বসে ছিল রাহিল। অনেকগুলো মানুষ জড়ো হয়ে হৈচৈ করছে দেখে এগিয়ে গিয়ে ঘটনাটা বোঝার চেষ্টা করল রাহিল।
একটা রিক্সা নাকি এক্সিডেন্ট করেছে। একটা প্রাইভেট কার ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে। একটু ভিতরে উকি দিয়ে দেখল বাঁকা হয়ে ভেঙ্গে যাওয়া রিক্সাটার পাশে পড়ে আছে একটি মেয়ে। রক্তে মাখামাখি, চেহারা চেনা ই কষ্টসাধ্য। ভালো করে তাকিয়ে দেখল রাহিল… হ্যাঁ , এটা হিমির চেহারা!!! গুরুতর আহত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
কয়েকজন লোক হাকাহাকি করছে গাড়ি ডাকার জন্যে, ওকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওার চেষ্টা করছে।
৫।
রাত ১ টা। নিজের বিছানায় শুয়ে আছে রাহিল। আজকের পুরো ঘটনাটা একবার ভাবার চেষ্টা কছে ও। নিজের মাঝে এক ধরনের দোটানা অনুভব করছে রাহিল। আজ হিমির এক্সিডেন্টের সময় চাইলে ও একটু সাহায্যও করতে পারত, এভাবে ভিরের থেকে বের না হয়ে গিয়ে, অন্তত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত! যত যাই হোক, মেয়েটা ভালোই ছিল, আর রাহিলকে মনে হয় সত্যিই “ভালোবাসত”।
ধুর! কিসব ভাবছে এগুলো ও? নিজেকে তিরস্কার করে ও একবার! সাহায্য করতে হবে কেন? যেভাবে এক্সিডেন্ট করেছে মেয়েটা, তাতে তো মনে হয় খোঁড়া-পঙ্গু কিছু একটা হয়ে যাওয়ার কথা! আর যদি না ও হয়, মুখটা যেভাবে ছিলে গেছে, আগের মত সুন্দর দেখাবে ওকে? কখনোই না। তাহলে ও এগিয়ে যাবে কেন? বরং এই সময়টা নতুন কোন আইটেম পটানোয় মন দিলে কাজে আসবে!
ভেবে নিজের মুখের পৈশাচিক হাসিটা আরেকটু চওড়া করে রাহিল।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৪
শোভনের শোভন বলেছেন: ইচ্ছে করেই স্বার্থপর বানালাম চরিত্রটাকে। একটু খেলা করার জন্যে,।
আদতে এটা খানিকটা কল্পনা ই।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে!
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৮
ওমেরা বলেছেন: গল্প লিখার মজাই এখানে নিজের ইচ্ছামত চরিথ্রকে ভাল খারাপ বানানো যায় ।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫১
শোভনের শোভন বলেছেন: হা হা। হ্যাঁ ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৩৯
ওমেরা বলেছেন: মানুষ কত্ত স্বার্থপর !! ধন্যবাদ