নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিনহাজ আহমদ শোভন; সাধারন একটা ছেলে, যার চোখে মাঝে মাঝে সাধারন কিছু ব্যাপার অসাধারণ ঠেকে, আবার অসাধারণ কিছুকে খুবই সাধারন। তুচ্ছ ব্যাপারে কথা বলি। সৃষ্টিকর্তা বোধহয় আলস্য নামক গুনটা আমার মাঝে একটু বেশি মাত্রায় দিয়েছিলেন। :)

শোভনের শোভন

আমি একজন আশাবাদী বলছি, [email protected]

শোভনের শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নোটটা ছেঁড়া ছিল- ছোটগল্প

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৫

- তোর কাছে যে আঠাটা ছিল, ওটা দে তো একটু।
- টেবিলে তালা লাগানো আছে, পরে নিস।
- দে না এখন। কাজ আছে।
মাঝ বরাবর প্রায় পুরোটা ছেঁড়া নোটকে মেরামত করার জন্য অনেকক্ষণ ধরে কসরত করে যাচ্ছে রাতুল। পাঁচশ টাকার বড় একটা নোট। একদম নিখুঁতভাবে ঠিক ঠিক করে লাগাতে পারলেই কেল্লা ফতে।

দিনকাল খুব খারাপ যাচ্ছে রাতুলের। বেশ বিছু টাকা দেনা আছে, আজ দুপুরের মেসের খাবারটাও ছিল
একদম স্বাদহীন কুখাদ্য, আজ সকাল সকাল মিতুর সাথে ঝগড়া করেছে। মরার ওপর খাঁড়ার ঘাঁ হিসেবে তো কাল
বাড়ি থেকে পাঠানো এক হাজার টাকার মাঝে পাঁচশ টাকার একটা নোট পকেটের কোন এক ভাঁজে পড়ে
গেছে ছিঁড়ে।

কাল যখন বাড়ি থেকে পাঠানো টাকা নিয়ে আসে তখন সাবধানে কেন পকেটে রাখল না ভাবতে ভাবতে
নিজেকে কতবার যে গালি দিয়েছে তার ঠিক নেই। আর মেসে আসার সময় পুরোটা রাস্তা জুড়ে মনে উৎকণ্ঠা ছিল, ঠিকমত জোড়া লাগাতে পারবে তো? দেখে সহজে কেও বুঝতে পারবে না তো যে নোটটা ছেঁড়া ছিল?


নাহ, এখন দেখতে মোটামুটি ঠিকঠাক লাগছে নোটটাকে, নিজের অনেকক্ষণের কৃতকর্মের উপর সন্তুষ্টির
দৃষ্টিতে তাকাল রাতুল।

হঠাৎ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আঁতকে ওঠল ও, কলেজের সময় কখন হয়ে এলো, খেয়ালই ছিলো না ওর!
রুমেও কেও নেই। অড়িঘড়ি করে প্রস্তুত হয়ে কলেজের দিকে ছুটল রাতুল।

টিফিন টাইম।

- অনিমেষ, শুন তো এদিকে।
- “বল। ” বলে এগিয়ে এলো অনিমেষ।
- “দোস্ত, ছেঁড়া নোট কোথায় যেন পরিবর্তন করে নেওয়া যায়? ” জিজ্ঞেস করল রাতুল।
- গুলিস্তানের দিকে মনে হয় গেলে পেতে পারিস আবার অনেক ব্যাংকেও করা যায় সম্ভবত।
- পাঁচশ টাকার নোটে কত টাকা দিবে বলতে পারবি?
- “নাহ।” বলে নিরুৎসাহিত অনিমেষ হয়ে চলে গেল অন্যদিকে।
- “ও।”

মেসে ফিরে নোটটা হাতে নিয়ে ওটার দিকে তাকালো রাতুল। আঠাটা শুকিয়ে বেশ ভালো রকম নিখুঁত হয়েছে। পরের মাসের মেসের ভাড়ার তো দেরি নেই, অনেকগুলো টাকার সাথে মিশিয়ে দিলে মেসের ম্যানেজার হয়ত টেরই পাবে না; ভেবে নিজেই পুলকিত হয় রাতুল। হিসেব করতে থাকে, যদি নোটটা চালাতে পারে তাহলে ওর কাছে কত টাকা আছে, আর যদি নোটটাকে বাদ দেয় তাহলে কত টাকা আছ মোট ওর কাছে।


একটা গোসলের সাবান, কয়েক পিস মিনিপ্যাক শ্যাম্পু, আরেকটা দই চাইল রাতুল মেসের নিচের দোকান থেকে।
- “পাঁচশ টাকার ভাংতি হবে না মামা?” দোকানদারকে প্রশ্ন রাতুলের।
- “হ্যা,দাও।” , বুকটা দুরুদুরু করছে; যদি দোকানদার বুঝে ফেলে!
নোটটা নিয়ে ভালোমত খেয়াল না করেই বাকি টাকা ফেরত দিল রাতুলকে।
সহজভাবেই টাকাটা নিলো রাতুল, কিন্তু মনের অবস্থা সহজ না, অতি উৎফুল্ল যাকে বলে।

দিনটা আজকে অনেক ভালো ছিল, ভীষণ আত্মতৃপ্তির সাথে একটু আগে কেনা দইটা খেতে খেতে মেসের দিকে এগুচ্ছে রাতুল। ফোনটা বের করে মিতুকে কল দেওয়ার জন্যে। সকালে রাগারাগি করা ঠিক হয় নি, ঝগড়াটা মিটিয়ে ফেলা দরকার। দিনটা সত্যিই ভালো ছিল।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৩৮

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: শুরুতে ছোট পোষ্ট করা ভাল

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪১

শোভনের শোভন বলেছেন: সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
আসলে নিয়ন্ত্রন করে লিখিনি, যতটুকু চলে এসেছে, করে দিয়েছি আর কি।
আপনার অভিজ্ঞ উপদেশ পরবর্তীবার কাজে লাগাব।
ধন্যবাদ আপনাকে । :)

২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৪

ওমেরা বলেছেন: আমাদের এখানে দুই টুকরা টাকা দোকানে নেয় কোন সমস্যা হয় না ।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৮

শোভনের শোভন বলেছেন: "আমাদের এখানে"
আপনাদের কোথায়?
মানে বলতে চাচ্ছি, আপনি দেশের বাইরে থাকেন?

৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৭

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমাদের এখানে দুই টুকরা টাকা দোকানে নেয় কোন সমস্যা হয় না । আহা এট যদি আমাদের এখানে হতো তবে কত বিপদ যে উদ্ধার হতো।

৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫০

ওমেরা বলেছেন: জী আমি সুইডেন থাকি ।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫৩

শোভনের শোভন বলেছেন: অহ!
বাংলাদেশে পদ্ধতিটা থাকলে সত্যিই অনেক রাতুল বেঁচে যেত!

৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



ঠিক আছে, টাকার সমস্যা শেষ; কিন্তু আপনি আরেকটা লেজ বের করেছিলেন, মিতু; ঐ সমস্যা কিভাবে কি করবেন? গল্পের হাত-পা টেনে লম্বা করেন।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:২১

শোভনের শোভন বলেছেন: টানাটানি আজ থাকুক না।
টাকার ঝামেলা শেষ তো সব ঝামেলা শেষ হবে।
ধৈর্য্য ধরে এতটা পড়া ও মন্তব্য করার জন্যে ধন্যবাদ ভাই।

৬| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:০৮

কালীদাস বলেছেন: বাংলাদেশে ছেড়া টাকা নিয়ে বড়ই যন্ত্রণা করে সবাই। অথচ টাকা ছেড়ার প্রথম ধাপটা ভাল মতই শুরু করে ব্যাংকগুলোই। যেভাবে হাতুড়ি দিয়ে টাকার বান্ডিলগুলো ফুটো করে পাটের দড়ি দিয়ে বাধে, টাকার হাতপা থাকলে উঠে দৌড় দিত :(

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:০৫

শোভনের শোভন বলেছেন: হ্যা। :(


"২. ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৪

ওমেরা বলেছেন: আমাদের এখানে দুই টুকরা টাকা দোকানে নেয় কোন সমস্যা হয় না ।"

ইস! যদি আমাদের এখানে এই পদ্ধতি থাকত!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.