নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলা ইবুক পড়া এবং ফ্রি ইবুক ডাউনলোড নিয়ে কথা বলতে চাই।
আজকাল আমরা অনেক বই ইন্টারনেটের কল্যানে ঘরে বসেই পেয়ে যাই। গুগলে একটু সার্চ করলে মুহূর্তের মাঝে হাজির করা যাবে অনেক অনেক মূল্যবান বই। তো, পোস্টের প্রসঙগটা হচ্ছে এই ইবুক পড়াকে কেন্দ্র করে। পোস্টের বক্তব্য:
* বাংলা ইবুক পড়ার আদিকথা
* বাংলা ইবুকের বর্তমান অবস্থা ও পরিস্থিতি
* বাংলা ইবুকের উপযোগীতা
* বাংলা ইবুকের সম্ভাবনা
* বাংলা ইবুক পড়ার সমস্যা বা অসুবিধা
* ইবুক প্রশঙ্গে আমার দৃষ্টিভংগি
ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোকপাত করবে।
ইবুক (E-Book) বা ইলেক্ট্রনিক বই হচ্ছে সংগাগতভাবে, সাধারন কাগজে ছাপা বইয়ের ডিজিটাল সংস্করণ। সচরাচর ব্যবহার করা কাগজে ছাপা বইয়ের পরিবর্তে ডিজিটাল মিডিয়ায় তৈরি বই যা মোবাইল, ট্যাব বা কম্পিউটার এর মাধ্যমে পড়া হয় তাই হচ্ছে ইবুক।
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে ইবুক একটা বিপ্লবের মতই শুরু হয়। উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে প্রথাগত ছাপা বই প্রকাশনার পাশাপাশি ইবুকের প্রকাশনাও গুরুত্ব এবং সাংগঠনিক রূপ পেয়েছে। বইগুলোর ই-রূপান্তর তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির সমান্তরালে দূরদর্শী ভাবনার পরিচায়ক। অনেক ওয়েব সাইটে বাণিজ্যিক ভাবে ইবুক বিক্রি করা হয়। মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যে বলছি, ইবই বিক্রি করা সাইটগুলো বাংলাদেশ বা বাংলাভাষা ভিত্তিক নয় এবং বাংলাভাষার কোন বই সেখানে পাওয়া যায় না। অন্য কথায় আমাদের নিজেদের কোন ইবুক বিক্রিকারী প্রতিষ্ঠান নেই।
তার মানে এই না যে সব ইবুক বিদেশী ভাষার এবং বাংলা ভাষার ইবুক পাওয়া যায় না। বাংলা ভাষার ইবুক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ না পেলেও ব্যক্তিগতভাবে অনেকে বাংলা বইয়ের ই সংস্করন তৈরি করে ফেলেছেন।
এবং তা নিজেদের ওয়েবসাইটের মাধ্যম প্রকাশও করে ফেলেছেন। এবং সত্যিকার অর্থেই মানুষ তা পড়েছে ও। অনেক পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের ফোনে, কম্পিউটারে এসব ইবুক হয়তোবা পাওয়া যাবে।
এখন আসা যাক এইভাবে পড়া ইবুকের সুবিধা বা উপযোগীতা এবং সমস্যার দিকে।
প্রথমে ভালো কথাগুলো বলে নেওয়া যাক, তথ্যপ্রযুক্তি যত অগ্রসর হবে ইবুকের গ্রহনযোগ্যতা তত বাড়বে, কারণ, আলাদা করে বই বহন করতে হয় না, যেকোন অবস্থায় পড়া সম্ভব, এসব কারনে অবশ্যই এই ক্ষেত্র সম্ভাবনাময়। তবে বাংলা ইবুক পড়ায় এখন পর্যন্ত বড় নৈতিক বাঁধা হলো, এগুলো ফ্রি ডাউনলোডের রংচঙা বিজ্ঞাপনে ইন্টারনেটে ছাড়া হয় এবং আপলোডকারী ডাউনলোডের ক্ষেত্রে সামান্য কিছু টাকা হয়তোবা আয় করে থাকেন। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এর ফলে বইয়ের স্বত্বাধিকারির কাছে কোন সম্মানী যাচ্ছে না!
ধরা যাক আমি বাংলা ইবুক একটা ফ্রিতে ডাউনলোডে করে পড়ে নিলাম। এজন্য হয়তো আমি বাজারে গিয়ে বইটা কিনলাম না, কারন আই ইতিমধ্যে পড়ে নিয়েছি। এতে করে যা হলো, বাজারে বইয়ের বিক্রি কমে গেলো, লেখক সম্মানী পেলেন না, এধরণের একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলো। এই দিক বিবেচনা করে অনেকে বাংলা ইবুক পড়াকে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।
অবশ্যই এই ধরনের ঘটনা নৈতিকতা পরিপন্থী, কিন্তু ইবুক এর সম্ভাবনাকেও তো আর হেলা করা যায় না। তাই প্রকাশনা কর্তৃপক্ষের উচিৎ হবে অনলাইনে বইয়েএ ই সংস্করন প্রকাশে উদ্দ্যোগী হওয়া, ইবুক খাতের ধ্বংস কামনা না করে সেই খাতের সুসাংগঠনিক বিস্তার সাধন করা।
যাই হোক, আমরা আশাবাদী যে এই বিষয়ে প্রকাশক এবং উপযুক্ত কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। এখন যবনিকাপাতে আসা যাক, নৈতিকতার কথা চিন্তা করে কি আমরা ইবুক গুলো পড়া বন্ধ রাখবো? এব্যাপারে আমার অভিমত হলো, আমাদের নিজেকে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন, ই-বই সুবিধাজনকভাবে ব্যবহার করে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারি তাহলে আমরা সেই সুযোগ গ্রহন করব। অবশ্যই আমরা চাইব ব্যাপারটা একটা সুষমরূপ পাক, উপরোক্ত নেতিবাচক দিকগুলো হ্রাস পাক, কিন্তু আমরা আমাদের অবস্থান থেকে প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই ইবুক ব্যবহার করব।
ধন্যবাদ সবাইকে!!
৩ জানুয়ারী, ২০১৭ তে লিখা।
©somewhere in net ltd.