নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের পাণ্ডিত্য জাহির করার জন্য চায়ের দোকানগুলো অনেক পণ্ডিতের কাছে একটা আদর্শ প্লাটফর্ম। বিচিত্র সব মানুষের সমাবেশ এই দোকানগুলোতে । সবাই দারুণ রিসোর্সফুল । ডোনাল্ড ট্রাম্প, পুতিন ,এরদোগান থেকে সেফাতুল্লাহ ,জাতিসংঘ থেকে বঙ্গভবন , স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে তেলাপিয়া চাষ সব বিষয়ে তাদের অগাধ পাণ্ডিত্য । জীবন্ত উইকিপিডিয়া এক একজন । । সেলিম মিয়ার চায়ের দোকানে এরকম চার পাঁচজন পণ্ডিতের একটা গ্রুপ আছে ।গার্মেন্টস ব্যবসায়ী , সবজি আড়তের মালিক, রাইদা পরিবহনের ড্রাইভার , দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়ে এখন ঢাকায় বাড়ি করে থিতু হওয়া একজন বাড়িওয়ালা মিলে তাদের প্যানেল । দোকানদারের সাথে আলাপে জানা যায় শুরুতে এরা কেউ কারো পরিচিত ছিলেন না । বাড়িওয়ালা ভদ্রলোকের সাংগঠনিক প্রতিভার জোরে চা পান সুত্রেই তারা আজ একই পতাকার তলে । কথাবাজ এই বাড়িওয়ালাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডার চা সিগারেটের দাম পরিশোধ করেন । নিজে দুনিয়ার সর্বশেষ হাল হকিকত নিয়ে জ্ঞানগর্ভ বয়ান দেন । মাঝে মাঝে অন্যদেরও অল্প সময়ের জন্য ফ্লোর দেন । আজ শুক্রবার বলেই কিনা পীর দরবেশ বুজুর্গদের কেরামতি নিয়েই তাদের আলাপ ।
একজনের বয়ানে জানা গেল কিভাবে বেশ কয়েক বছর আগে চাদপুরে এক পাগলবেশী সাধুর সাথে অসদাচরনের কারনে পুরো এক বাজার নদীতে তলিয়ে গিয়েছিল । একদা এক সাধু বাবা বাজারের এক চায়ের দোকানে এসে এক আগন্তুকের কাছে চা চেয়েছিলেন। তো আগন্তুক বিরক্ত হয়ে কাপের তলানিতে থাকা হাল্কা গরম চা দরবেশের গায়ে ছুড়ে মারেন। আমার শইলে আগুন দিলি?জ্বলে গেলাম, মরে গেলাম বলে সাধু বাবা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে ঝাপ দিলেন। সাধুর ঝাপ দেওয়ার সাথে সাথেই ফুসে উঠে নদী । নদীর পাড় ভাঙনের শুরু । মাস খানেকের মাঝেই পুরো বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় ।
কারওয়ান বাজারের সবজি আড়ৎদারের জবানে আরেক দরবেশের কেরামতি শোনা গেল । আড়ৎদার সাহেব নিজেই ভিকটিম । একদিন খুব ভোরবেলা উত্তরা থেকে কারওয়ান বাজারে পৌঁছে সিএনজি থেকে নামতে না নামতেই এক পাগল এসে দশ টাকা চাইল । তো আড়তদার ভদ্রলোক টাকা নাই বলে তাচ্ছিল্য ভরে তাড়িয়ে দিতে চাইলে পাগলের জবাব " টাকা দিবি না ক্যান? তোর কাছে তো টাকা আছে। বারশ সাইত্রিশ । " এইরকম নির্দিষ্ট পরিমান টাকার কথা শুনিয়া খটকা লাগে তার। মানিব্যাগ খুলে সমস্ত টাকা গুনলেন।বারশ সাইত্রিশ।তিনি মূহুর্তেই বুঝে গেলেন এ কোন দরবেশ তার সামনে হাজির। 'বাবা মাপ দেন' বইলা আড়তদার ভদ্রলোক দরবেশের পায়ে লুটিয়ে পড়লেন। 'তুই মিছা কছ । লোক ঠকাস । দুর হ। ' বইলা পা ছাড়াইয়া সাধু দ্রুত গতিতে হাটা দিলেন। 'বাবা
আপনেরে কই পামু ?' বইলা আড়তদার ভদ্রলোক সাধুর সাথে অগ্রসর হইবার উপক্রম করতেই সাধুর সাবধানী - " আমারে পাওয়ার দরকার কি তোর ? আমার লগে আইবিনা । শেষ হয়ে যাইবি। তুই নিজেরে খোজ। "
এরপর থেকেই তার কারবার নিম্নমুখী । এখন টিকিয়া আছেন কেবল । এখনো সাধুর সন্ধান করেন এখানে সেখানে ।
#
২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৮
সনেট কবি বলেছেন: বেশ
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৯
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে লিখেছে আপনি৷খেয়াল করলে দেখবেন এসব চায়ের দোকান হল বেশিরভাগ অল্প শিক্ষিত আর কুসংস্কারাচ্ছনন্ মানুষের বিনোদনের জায়গা৷এখানে যে যত আজগুবি কথা বলতে পারবে সে তত জ্ঞানী বলে স্বীকৃতি পাবে৷
৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: এই জন্যই চায়ের দোকানে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকি।
অদ্ভুত সব গল্প শুনে মুগ্ধ হই।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: শুন্য বিলাস ,
একদম ঠিক বলেছেন , এসব চায়ের দোকানেই পন্ডিতদের দেখা পাওয়া যায় । এরা জানেনা, বিশ্বব্রহ্মান্ডে এমন কোনও বিষয় বোধহয় নেই । সবাই মনে হয় পিএইচডি করা । কিছু গোবেচারা মানুষ এসবের শ্রোতা হয়ে অবাক হয়ে শোনে যা তারা জীবনেও শোনেনি বা তাদের ভাবনা চিন্তাতেও নেই ।
তো এই রকম এক আড্ডায় একজনে বয়ান দিলেন -- হুমায়ুন আহম্মদ এর কাছে রবীন্দ্রনাথ কিছু না, শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক হইলো হুমায়ুন আহম্মদ ...