নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরি।

শুন্য বিলাস

জামাল হোসেন

শুন্য বিলাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় ।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৫৮



ক্লাসে দেরি করে হাজির হওয়ার অভ্যাস ছিল সিদ্ধার্থের । আগুন চোখে তাকাতেন তিনি । সিদ্ধার্থের বাউণ্ডুলে ভঙ্গিতে কিঞ্চিত বিভ্রান্ত হইয়া প্রবেশাধিকার দিলেও ক্লাশে ক্রমাগত প্রশ্ন করিয়া শোধ লইতেন । উত্তর দিতে না পারিলে তার চোখে মুখে বিজয়ের অনুক্ত হাসি ফুটে উঠত ।সঠিক জবাব দিতে পারলে বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠত তার। ইস্পাত কঠিন প্রশ্ন ছিল বটে। পড়াতেনও অধিকতর কঠিন বিষয়গুলো । ক্লাস টেষ্টে দশে সাত পাওয়ার পরেও তিনি আগুন চোখে তাকিয়েছিলেন। নিচু গলায় কাউকে না শুনিয়ে বলেছিলেন 'I expect more from you.' পরের টেষ্টে দশে সাড়ে নয়। তিনি কুড়ির বালিকার মত উল্লাসে 'ওয়াও' বলে উঠলেন । পরক্ষনেই উচ্ছ্বাস লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা ।

তার ইস্পাত কঠিন চেহারার আড়ালে বিরহানলে দগ্ধ একটা অবয়ব ছিল যা পাঠ করা ছিল সাধারণের পক্ষে দুরূহ। তবে একদিন তিনি নেমে আসলেন সাধারণ মানুষের দুনিয়ায় ।বৃষ্টির দিন ছিল । ক্লাসে এসেই বললেন আজ পড়াতে ইচ্ছে করছে না। গান শোনা যেতে পারে । ক্লাসের দুই প্রতিভা পরপর চারটি গান গাওয়ার পরে তিনি ক্লাসের ইতি টানতে যাচ্ছিলেন প্রায় এমন সময় সিদ্ধার্থ তাকে গান গাওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি চমকে উঠেন। এ হিম্মত কার ! কিন্তু বৃষ্টিভেজা মন কেমন করা দিনে প্রত্যাখানের দিকে তিনি গেলেন না। শর্ত দিলেন গান গাওয়ার সময় তার দিকে তাকানো যাবেনা । সবাইকে হোয়াইট বোর্ডের দিকে তাকানোর কঠিন আদেশ দিয়ে তিনি শেষ বেঞ্চে গিয়ে বসলেন । গেয়ে উঠলেন ' আকাশ মেঘে ঢাকা শাওন ধারা ঝরে ,যেদিন পাশে ছিলে সেদিন মনে পড়ে ............। ' সিদ্ধার্থ সবসময়ই ব্যাকবেঞ্চার । পেছনের বঞ্চে বসাতেই তার যাবতীয় সুখ । সিদ্ধার্থের পাশের বেঞ্চে বসে তিনি গান গাইছেন । বাইরে ঝুম বৃষ্টির সাথে এই হাহাকার জাগানিয়া গান । গানের মাঝপথে সিদ্ধার্থের চৌর্যবৃত্তি জেগে উঠে । চোখের দিকে না তাকানোর কঠিন আদেশ এড়িয়ে চকিতে একবার তার চোখের দিকে তাকায় সে । অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে তার। মনে হয় এ মানবীর গান শুনে কোন কারন ছাড়াই এক জনম পার করে দেয়া যায় অনায়াসে । একে ছাড়া তার চলে না । কোনভাবেই না ।
এক্সট্রিম ইন্ট্রুভারট সিদ্ধার্থ কখনোই শিক্ষিকা-ছাত্রের সম্পর্কের বাইরে এক জনম পার করে দেয়ার কথা তাকে জানাতে পারেনা ।
সৌন্দর্য চর্চা নিয়ে দারুণ উদাসীনতা ছিল তার । তবে মাঝে মাঝে মাতালের মত সাজতেন । রঙ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতেন । একদিন সম্পূর্ণ নীল সাজে এসেছিলেন ক্লাসে । শাড়ি ,জুতা ,চুড়ি ,লিপস্টিক, কপালের টিপ, গলা-কান-নাকের অলংকার,নখের রঙ , চশমার ফ্রেম ,চুলের খোপা সব নীল । সিদ্ধার্থ চারপাশে একবার তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করেছিল এটা ক্লাশরুমই তো না অন্য কোথাও! সিদ্ধার্থ ভাবে ক্লাশ শেষে একবার তাকে গিয়ে বলে -Be with me । বলা হয়না ।কথা বলায় বেশ অপটু সে ।
সমুদ্রতীরে এলোচুলে দাড়িয়ে একবার ছবি দিয়েছিলেন একটা ফেসবুকে । ছবিটার দিকে একটানা আধা ঘন্টার মত তাকিয়ে সিদ্ধার্থের বুকের গভীরে এক উথালপাতাল সমুদ্রের ঢেউ খেলা করে। মনে হয়েছিল এই সৌন্দর্য, এই মানবী একটা ধ্বংস । Beauty that must be destroyed .
সময়ের পাগলা ঘোড়া মানুষকে ছুড়ে ফেলে এখানে সেখানে । তিনি সংসারের খাতায় নাম লেখাইয়াছেন । Beauty that must be nourished ।
সিদ্ধার্থ বৈরাগ্য সাধনে রত ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:০২

সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।

২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪২

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সময়ের পাগলা ঘোড়া মানুষকে ছুড়ে ফেলে এখানে সেখানে ।
মানুষ আর কতকাল সময়ের গােলাম হয়ে থাকবে ?

৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:০৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সিদ্ধার্থ বোকা...

৪| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষের ছোট্র একটা জীবন। অথচ প্রতিনিয়ত কর ঘটনা ঘটে চলেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.