নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরি।

শুন্য বিলাস

জামাল হোসেন

শুন্য বিলাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

লাল লাইটার

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৭



হিটারের লাইটার বলে এক জাতীয় লাইটার আছে বাতাসে যার আগুন নিভে না। এই বস্তুটির প্রতি সিদ্ধার্থের বেশ বড়মাপের দূর্বলতা আছে। চমকপ্রদ ডিজাইনের বিচিত্র রঙের লাইটার আজকাল বনেদি সিগারেট দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। শুক্রবার সকালে সিদ্ধার্থ গিয়েছিল এমনই এক দোকানে।
বারো তেরো বছরের এক বালক কিন্তু ভঙিতে সাক্ষাত মঙ্গোলীয় রাজা চেঙ্গিস খান দোকানে বসে আছে । চেহারার তেজ এমনই প্রখর যে বড়বেলায় এ সম্মুখ লড়াইয়ে শত্রুপক্ষকে কচুকাটা করবে সন্দেহ নাই । সিদ্ধার্থ হিটারের লাইটার দেখতে চাইলে প্রথমে যেটা দিল ওইটাতে ইংরেজী বড় হরফে লাভ (LOVE) লেখা। ওইটা বদলাইয়া দিতে বললে চেঙ্গিস খান রক্তহিম করা অগ্নিদৃষ্টিতে বাজখাঁই গলায় জিজ্ঞেস করে, "লাভ লেখা থাকলে কি সমস্যা? আপনের দরকার আগুন ! "
বাতচিতে না গিয়ে আরেকটা দিতে বলিলে পরবর্তীতে যেইটা দিল ওইটাতে আবার মার্সিডিজ গাড়ির ছবি খোদাই করা। লাইটারে খোদাইকৃত গাড়ির প্রতি সিদ্ধার্থ অনাগ্রহ জানিয়ে আরেকটা দিতে বললে চেঙ্গিস খানের চোখ দিয়ে এবার যেন সাক্ষাৎ অগ্নিকুণ্ড বাহির হওয়ার দশা। "লাইটার কিনবার আইছেন না তামাশা করবার আইছেন? বলে হুংকার ছাড়িয়া অনেক কষ্টে সুপ্ত আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ দমন করে ইংরেজীতে এক দুই লাইন লেখাযুক্ত স্ট্রবেরির ছবিওয়ালা লালরঙা আরেকখান লাইটার সিদ্ধার্থের দিকে প্রায় ছুড়ে মারে । এইবার নাকচ করলে চেঙ্গিস খানের হাতে গর্দান হারানোর ভয় (বন্দুক, তরবারিসহ যাবতীয় আগ্নেয়াস্ত্র অাকৃতির লাইটার দোকানে দাপটের সহিত বিরাজ করিতেছে) এবং আমলে নেওয়ার মত খুত না পেয়ে ওই লাল লাইটারই খরিদ করে চেঙ্গিস খানের হাত থেকে গর্দান অক্ষত রেখেই সিদ্ধার্থ বাসায় ফেরে ।
বাসায় ফিরে সিগারেট জ্বালিয়ে লাইটারের ইংরেজী লেখার দিকে নজর দিয়ে দেখে ওখানে লেখা- " Red girls are filled with love." । বাংলায় তর্জমা করলে দাড়ায়,
" লাল বালিকারা ভালবাসায় পূর্ণ।"
সন্ধ্যাবেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোটভাই কাম ফ্ল্যাটমেট অরুন সিদ্ধার্থের রুমে গল্প করতে করতে লাইটারটি নাড়াচাড়া করার সময় ওই লেখাটি তার চোখে পড়ে। নিমিষেই চোখ বড় হয়ে যায় তার।চেঙ্গিস খানের চোখে ছিল সুপ্ত আগ্নেয়গিরি আর অরুনের চোখে নারী হ্রদয়ের ভালবাসা পাওয়ার জন্য মজুদ এক হিমালয় হাহাকার।
পরক্ষনেই বলে, " এই লাল মেয়েগুলা কই থাকে ভাই?"
এমন সময় পাশের রুম থেকে অরুনের বন্ধু ওকে ডাক দিলে ওর গলা সপ্তমে চড়ে।বাজখাঁই স্বরে হুঙ্কার ছাড়ে ," ওই শুয়োর ডাকস ক্যান? "
মনে হয় সিদ্ধার্থের কাছ থেকে লাল বালিকাদের আস্তানার হদিস না জানা পর্যন্ত তার অন্তর্জগতের উচাটন থামবে না ।
আবার ডাকে, " ভাই..........!"

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: লাইটার। নামটা শুনে প্রথমে খটকাই লাগে। তবে এই লাইটার অন্য একটা বার্তা দিতে চাইছে। লাইটার ফাউন্ডেশন নামের এই সংগঠন তরুণদের এক উদ্যোগ। এই উদ্যোগের শুরুতে তরুণদের বলা হলো, এসো এই লাইটার হাতে তুলে নাও। যে লাইটার আলো জ্বালায় আশার–স্বপ্নের।

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: মেট্রিক পরীক্ষার পরে শখ করে একটা লাইটার কিনে ছিলাম অনেক দাম দিয়ে। আব্বার কাছে ধরা খেয়ে গেলাম সিগারেট ধরাতে গিয়ে।

৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৭

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: এমনই একটা লাইটার ছিল আমার।আব্বার ভয়ে কম্পিউটারের টেবিলের ড্রয়ারে রেখে একদিন বেরিয়ে গেলাম কলেজে।ফিরে এসে ড্র্যার খুলতেই একটি চিরকুট পেলাম যেখানে লেখা ছিল,
এবারে মত ক্ষমা করে দিলাম পরের বার বেতের বাড়ি মাটিতে পড়বে না একটাও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.