নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরি।

শুন্য বিলাস

জামাল হোসেন

শুন্য বিলাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

লড়াই ।

২২ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮

গলির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনটা সমাগম। একেবারে শুরুতে আছে একদল কিশোর গ্যাং। গ্যাংপ্রধান দুই গলি পরে অবস্থান করা শত্রুপক্ষের দূর্বৃত্তপনার বিবরণ পেশ করে সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য সকলকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানান। পকেট থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বের করে পাশে দাড়ানো সেকেন্ড ইন কমান্ড জাতীয় মাঝারি নেতাকে ইশারা করলেন সকল যোদ্ধাদের এই ভাইরাস রক্ষাকবচ দ্বারা সুরক্ষিত করে দিতে। এই সময়টাতে তিনি নজর রাখতে লাগলেন পাশের শত্রুশিবিরের দিকে।" লড়াই হবে। এদের রেহাই নাই।" লাল কালো চুল একবার ঝাকি দিয়ে পাশের জনকে বললেন তিনি। মাথা নেড়ে সম্মতি দিতে বিলম্ব করলেন না পাশেরজনও।

গলির মাঝামাঝি সমাগমে অবশ্য থমথমে ভাব।সাদা পিপিই পরিহিত একদল স্বেচ্ছাসেবককে খুব তৎপর দেখা গেল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দিতে।এইখানেও লড়াইয়ের বয়ান আছে। তবে এই লড়াই মীমাংসিত । দুই সপ্তাহ মৃত্যুর সাথে লড়াই করে পরাস্ত হয়েছেন পয়ত্রিশের এক পুরুষ।এলাকায় তার দাপটের নমুনাস্বরুপ জানাজাস্থলেই শোকবার্তা সম্বলিত কালো ব্যানার শোভা পাইতেছে। মুখাবয়ব উন্মুক্ত রেখে একজন আহবান জানালেন কেউ শেষ বারের মত দেখতে চাইলে যেন দেখে নেয়। জান্নাতুল মাওয়া গোরস্থানমুখী তাদের যাত্রা এখনি শুরু হবে। একবার ব্যানারে মৃতের নামটি এবং ছবি পাঠ করে জামসেদ।একে চেনেনা সে। ব্যানারে খচিত গউছ পাঠানের হাসিমুখ ছবি যেন জামসেদকে একবার বলে সমবেত জনতার মত সেও যেন তাকে দেখে একবার। চেনাজানাহীন গউছ পাঠানের মরা মুখ দেখতে লাইনে দাঁড়িয়ে যায় জামসেদ। ত্রিশ সেকেন্ড বাদেই খাটিয়ার সামনে নিজেকে আবিস্কার করে সে। ব্যানারে খোদিত হাসি এখনো বহাল আছে গউছ পাঠানের চেহারায়। চোখের নিচে কালো দাগ আর খোচা খোচা অনভ্যস্ত শুশ্রু গউছ পাঠানের সুদর্শন চেহারাকে যেন অন্য মাত্রা দিয়েছে। জামসেদের একবার মনে হল এই অচেনা গউছ পাঠান যেন তারই বিস্মৃত কোন সহোদর। জামসেদের বাহাস করতে ইচ্ছা জাগে তার সাথে । এত সহসা কেন হেরে যাও তোমরা ভ্রাতা? দেখ তোমাদের উত্তরপ্রজন্ম কেমন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে গলির প্রবেশমুখে!
শেষ সমাগমের লড়াইটি অবশ্য কিংবদন্তীতুল্য। তিনজন জুলিয়েট বসে আছে রাস্তায়। সখীবেস্টিত রুপবতী মধ্যমজনের স্বীকৃত রোমিও হওয়ার জন্য রাস্তার অপর পাশে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়েছে দুইজন যুবা। দুইদলেই তিনচারজন সম্মুখ যোদ্ধা রয়েছেন হুকুমের অপেক্ষায়। নিজেদের জমাট পেশিশক্তির আদিরুপ দেখাতে প্রস্তুত সকলে।কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতার মত এখানের দলনেতাকে অবশ্য স্যানিটাইজার কিংবা ভাইরাসের অন্য কোন রক্ষাকবচ বিলাতে দেখাতে দেখা গেল না। মুখোশও নেই কাহারো।হৃদয়ঘটিত বাতচিতে এসবের আবেদন মনে হয় তলানির দিকেই।মোবাইলের স্ক্রীনে একবার চেহারা দেখে ক্রমশ তেজি হতে থাকা লড়াই আরেকবার পরখ করে জুলিয়েট তাকালেন পশ্চিমাকাশে। লাল আভা ছড়িয়ে দিনের যবনিকাপাতের হুশিয়ারি দিচ্ছে সূর্যদেবতা। মানুষের দুনিয়ায় জীবিত দশার ইতিটানা গউছ পাঠানকে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সটিও হুইসেল দিতে দিতে রোমিও জুলিয়েটদের লড়াইস্থল অতিক্রম করে গেল তখন।
"কুকুর ঘেউ ঘেউ করে।কাফেলা এগিয়ে চলে। "কেউ একজন বলল পাশ থেকে। জামসেদ কাউকে দেখেনা আশপাশে।কে কথা বলে?সন্ধ্যাকাল চিরকালই অমীমাংসিত।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: সন্ধ্যার সময়টা আসলেই রহস্যময়। তখন মানুষ গুলো যেন কেমন হয়ে যায়! অতি সহজ একটা মানুষকেও রহস্যময় লাগে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.