![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র। লেখালেখি আমার কাজ না। তবুও মাঝে মাঝে লিখতে ইচ্ছে হয়, তাই লিখি। https://www.facebook.com/Juphon
হোসানা ফ্লরেস।
পড়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বাইরের দেশের ছেলে বলে তার প্রতি ছেলেমেয়েদের বাড়তি একটা উৎসাহ সে দেখতে পেতো। এতে তার মজাও লাগতো।
কিন্তু তারপরও তার দৃষ্টি ছিল একজনের প্রতি, সায়রা।
মেয়েটা কথা বলে কম। পারত পক্ষে কারো সাথে কথা বলে না। প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট বেঞ্চেই বসবে ও। ও শুধু মেয়ে বন্ধুদের সাথেই কথা বলে। মানে একটু কনজারভেটিভ।
অন্যদের কাছে অনেক প্রিয় হলেও ফ্লরেস সায়রার আশেপাশেও যেতে পারে না। সত্যি কথা বলতে সায়রা ওকে পাত্তাই দেয় না।
দেখতে দেখতে ফার্স্ট সেমিস্টার ফাইনাল চলে এসেছে। পরীক্ষা হল, রেজাল্টও দিলো।
সায়রা ফার্স্ট, আর ফ্লরেস সেকেন্ড।
পরেরবার উল্টো। ফ্লরেস ফার্স্ট আর সায়রা সেকেন্ড।
রেজাল্ট দেখে ফ্লরেস সায়রার সাথে কথা বলতে এগিয়ে যাচ্ছিলো। আর সায়রা তা বুঝতে পেরে ওখান থেকে চলে গেলো।
এই নিয়ে ৫ বার সায়রা এই কাজটি করেছে। এতে ফ্লরেস আরও আকৃষ্ট হচ্ছে সায়রার প্রতি।
কিন্তু সায়রা কোন ভাবেই পাত্তা দেয়না ওকে।
এতদিন হয়ে গেছে, কিন্তু দুজনের কথা হয়নি এখনো
আজ ফ্লরেস সায়রার পথ আগলে দাঁড়াবে বলে চিন্তা করেছে, বলবে সে সায়রাকে অনেক পছন্দ করে। এককথায় ভালোবাসে।
-----------------------
যথারীতি সায়রা ওকে পাত্তা দিলো না।
এবারো ফ্লরেস হতাশ। কিন্তু ও দমে যাবার পাত্র নয়। একের পর এক নতুন পদ্ধতিতে সে সায়রার কাছে যেতে চেষ্টা করছে। মনের কথা বলা দূরে থাক, এখনো তো ও কোন কথাই বলতে পারেনি।
অদ্ভুত একটা মেয়ে।
-----------------------
দীর্ঘ একবছরের চেষ্টার পর ফ্লরেস সায়রার মন জিতে নিতে পেরেছে।
ওদের চিন্তা পড়ালেখা শেষ করে দুজন দুজনের ফ্যামিলিকে সম্পর্কের ব্যাপারটা জানাবে।
-----------------------
ফ্লরেস এখন ফ্লরেস হোসানা নেই। আহসান-উল-হক হয়ে গেছে। এখন একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকুরী করে, সাথে সায়রাও।
ওদের বিয়ে হলো মাসখানেক আগে।
-----------------------
সায়রা অসুস্থ। ও এখন আর চাকুরী করে না। কিভাবে যে বিয়ের প্রায় বছর হতে চলল নিজেই বুঝে উঠতে পারেনি।
-----------------------
সায়রার ছেলে হয়েছে। নাম ফাহিম।
-----------------------
ও আবারো চাকুরী করছে। আগের জায়গাতেই।
একবছর বয়সী ছেলেটাকে নানা-নানি খুব ভালই সামাল দিতে পারে।
কিন্তু আহসান কেমন যেন পাল্টে গেছে। ওকে একটু সময় কম দিতে চাইছে। দিন-রাত নিজেকে অনেক ব্যস্ত বলে বুঝায়। অফিসে আসার পর থেকেই ও বুঝতে পারে আসলে সমস্যাটা ব্যস্ততা নয়, সোহানা। ওদের কলিগ। সোহানার হাবভাব মোটেও ভালো ঠেকছে না সায়রার কাছে।
কেমন যেন একটা ঠেস দিয়ে কথা বলে সায়রাকে, আর আহসানের গায়ে গায়ে লেগে থাকতে চায়।
-----------------------
সংসারের অবস্থা খুব খারাপ। ওদের মধ্যে এখন কথা হয় খুবই কম।
-----------------------
আহসানের সকালের ঘুম ভাঙলো সায়রার ডাকে।
-এই যে, উঠো। আমি বাইরে যাচ্ছি। তারেক [ওদের ক্লাসমেট] ফোন করেছিলো।
বলেছে আমরা যেন দুপুরে ওর বাসায় খাই।
-আমি যেতে পারবো না। আমার অনেক কাজ। অফিসে গতকালের কাজগুলো শেষ করতে পারিনি।
-আজকে কিসের অফিস? আজকে তো উইক এন্ড।
-হুম। কিন্তু ফাইলগুলো বাসায় নিয়ে এসেছি। তুমি একাই যাও।
-ওকে।
[কিছুক্ষণ পর আহসানও বের হবে। সোহানা আসবে ওর সাথে দেখা করতে। একসাথে কফি খাবে বলেছে সকালের দিকে।]
------------------------
যে মেয়ে তারেকদের সাথে কথাই বলতো না, ও এখন ওদের ভালো বন্ধু হয়ে গেছে।
তারেককে একদিন ও সব কথা খুলে বললো।
তারেকও ওকে সাহায্য করবে বলেছে।
আজকাল তারেকের সাথে সায়রা অনেক গল্প করে, সময় কাটায়।
------------------------
আজ তারেক এসেছে সায়রার বাসায়। আহসান নেই বাসায়। বাইরে গেছে। একটু পরেই হয়তো আসবে। ও এসেছে আহসানকে সায়রার কথাগুলো বুঝাবে বলে।
আহসান বাইরে বলে উঠে চলে যাবে, এমন সময় ধাম্...ম্...ম্।
লাঠির এক বাড়ি দিতেই তারেক বেহুশ...।
-----------------------
তারেক মারা গেছে এখন এক মাস হলো।
আহসানও জেলে।
সায়রা ওকে দেখতে এসেছে।
-তুমি কেন ওকে মারলে? ও কেন এসেছে জানতে চাইতে পারতে অন্তত? ও তোমাকে বুঝাতে এসেছিলো। বলতে চেয়েছিল সোহানার সাথে না মিশতে।
-লোকজন তোমাদের নিয়ে অনেক কথা বলতো। তা শুনেই আমার মেজাজ চরে গিয়েছিলো।
-কই, তুমি সোহানার সাথে এতদিন মিশেছো, আমার তো মেজাজ চরেনি...। এখন আমি কোথায় যাবো? তোমার কিছু হলে আমি কি করবো? ফাহিমকে নিয়ে কোথায় থাকবো?
------------------------
আহসানের ফাঁসির আদেশ হলো। ওর ফাঁসিও হবে ও জানে। এতদিনে ও নিজের ভুলটা বুঝতে পারছে। কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে।
©somewhere in net ltd.