নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ব্লগের লেখা সম্পূর্ণরূপে আমার ব্যক্তিগত মতামতের প্রতিফলন। আমার চাকুরী, চাকুরীদাতা কর্তৃপক্ষ ও কর্মস্থলের সাথে এর কোনও সম্পর্ক নাই।

জওয়াদুল করিম খান

জওয়াদুল করিম খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হরিণের কি মগজ ছিল?

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩

বনের রাজা সিংহ বার্ধক্যজনিত কারণে সম্প্রতি খুব অসুস্থ। রাজবদ্যি নাড়িটাড়ি টিপে বললেন, “রাজামশাই আপনি আবার চাঙা হতে পারবেন, যদি কোন জওয়ান মর্দ হরিণের মগজ খেতে পারেন।” সিংহ করুণ হেসে বলল, “কি যে বল? আমি ভাল করে নড়তে পারি না কি করে একটি জওয়ান মর্দ হরিণ ধরব?” সেখানে উপস্থিত শেয়াল বলল, “মহারাজ, আমি এই রকম একটি প্রাণি আপনার একেবারে নাকের ডগায় এনে দেব, আপনি শুধু থাবা মারবেন”। সিংহ বলল, তা পারব। নাকের ডগায় এনে দিলে আমার এক থাবায় সে কুপোকাৎ হবেই। কিন্তু তুমি সেটা কিভাবে করবে”। “সেটা আমার উপর ছেড়ে দিন”, শেয়াল মুচকি হেসে বলল।

শেয়াল হরিণদের এলাকায় যেয়ে বলল, “বনের রাজা সিংহ আর আপনাদের মারবেন না।” “কেন? কেন? তিনি কি বৈঞ্চব হয়েছেন? নিরামিষভোজী?” হরিণরা। না, তা না। তিনি ঠিক করেছেন, তিনি আপনাদের আর মেরে খাবেন না। যারা এমনিই মরে যায়, তাদের লাশগুলি শুধু খাবেন। তোমরা লাশগুলি দেওয়ার ব্যবস্থা করবে, তারও কষ্ট কমবে, আর তোমাদেরও ভয় থাকবে না। সবার লাভ।
হরিণরা নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগল, না ব্যবস্থাতো খারাপ নয়।

শেয়াল বলল তাই তিনি চাচ্ছেন, তোমাদের একজন প্রতিনিধি যেয়ে তাঁর সাথে চুক্তি করে আসুক, একেবারে পাকাপাকি ব্যবস্থা। হরিণদের একজন মুরুব্বী সামনে এগুলো। না, না, শেয়াল বাঁধা দিল। বুড়ো মানুষ হবে না, দুই দিন পর মরে যাবেন, চুক্তির কথা আর মনে থাকবে না। ইয়াং জেনারেশনের কেউ আসুন। ঐ যে আপনি আসুন, ঠিক যেমনটি দরকার, শেয়াল সেভাবে বাছাই করল।

সিংহ দেখল শেয়াল সত্য সত্যই সাথে করে একটা হরিণ নিয়ে আসছে। দূর থেকে দেখেই সিংহের লোভ লকলক করে উঠল। বেশী কাছে আসার আগেই সে লাফ দিল, বুড়ো অসুস্থ সিংহ, আর তাগড়া হরিণ, ফস্কে গেল। তবে, হরিণটির কানে থাবার চোট লাগল। আহত কান নিয়ে হরিণটি পালিয়ে গেল।‘আ’

সিংহ কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, এ কি হল? সখা শেয়াল! মহারাজ দুঃখ করবেন না, একে আবার আপনার সামনে হাজির করাচ্ছি, একটু অপেক্ষা করুন।

শেয়াল আবার আসতে দেখে হরিণগুলি গুঁতাতে এল। শেয়াল বলল, সরি, আপনাদের লোক ভুল বুঝেছেন, খামাখা লাফালাফি করে কানে আঁচড় খেয়েছেন। আরে রজামশাই তো খুব কনফিডেন্সিয়াল কথা বলবেন, তা কানে কানে বলতে হবে না, আর আপনি ভেবেছেন কানে থাবা মারবেন, ছিঃ। এরপর শেয়াল হরিণদের স্বার্থ নিয়ে এক জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিল, শেষে কেঁদেই ফেলল।

হরিণটি আবার শেয়ালের পিছু পিছু গেল। এবার সিংহ কোনও ভুল করল না। থাবা, কামড় সব রকম করে তার প্রাণ-সংহার করল। শেয়াল হঠাৎ বলে উঠল, দাঁড়ান মহারাজ এক্ষুণি মগজ খাবেন না।
সিংহ একটু থতমত খেয়ে গেল, কেন ? কেন?
- না, তেমন কিছু না, তবে কিনা এই মগজ আপনার জন্য হচ্ছে ওষুধ, একটু সাফ সুতরো হয়ে তা খাবেন না?
সিংহ বলল তা শেয়াল তুমি ঠিকই বলেছ, দাঁড়াও আমি ঐ নদী থেকে একটু হাতমুখ ধুয়ে আসি।

যেই সিংহ আড়ালে গেল, শেয়াল অমনি একটু থাবা বাড়িয়ে সামান্য একটু মগজ বের করে খেল। আহ্ কি স্বাদ! এত বুদ্ধি খাটাল, আর সামান্য একটু ভাগ পাবে না। সে আর একটু খেল। হঠাৎ খেয়াল করল মগজ শেষ!

সিংহ ফিরে এসে হরিণের খুলিটা সম্পূর্ণ উপড়ে ফেলল, আর আর্তনাদ করে উঠল। কি হয়েছে মহারাজ, শেয়াল নিরীহের মতো জিজ্ঞাসা করল। মগজ নেই, সিংহ কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল।

হুমম, বুঝেছি মহারাজ এর মগজই ছিল না, থাকলে কি আর কানে থাবা খেয়ে আবার আসে? শেয়াল বলল। আপনাকে এইবার আমি একটা মগজ আলা হরিণ এনে দেব। সিংহ আর কি করবে একটু কলিজা খেতে লাগল। ক্ষুধা তো মিটল।

(ব্লগ -২, গল্প -১)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: হাহা!

২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:২৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: মজাদার| মৌলিক কি?

৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫৮

জওয়াদুল করিম খান বলেছেন: শিক্ষণীয় বিষয় আছে: কোনও মানুষ বা জাতি কতোটা বোকা হলে একইভাবে বারবার প্রতারিত হয়...?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.