![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রবিন শাহের নির্বাচিত কবিতা ২০১৬
--ধনী—
দু হাত বাড়িয়ে
সে ছুটে এসেছিল- জীবনের কাছে
জীবনও অকাতরে তারে করেছিল দান- প্রান ঐশ্বর্য্য ।
উদাম হৃদয়ে সে এসেছিল জীবনের কাছে
জীবনও অঝরও ধারায় ঝরে পরেছিল তার ওপর- রিনিঝিনি রিনিঝিনি ছন্দে
তা থৈ তা থৈ নেচে ছিল সে , কি যে পরমানন্দে !! কি যে পরমানন্দে !!
--শেষ বিদায়--
এক পলকের এ জীবন
বাচতে দাও প্রান ভরে ।
এ গানই , জীবনের শেষ গান
গাইতে দাও প্রান খুলে ।
এ ভালোবাসাই , শেষ ভালোবাসা
ভুল-ত্রুটি সব ভুলতে দাও ।
এ আনন্দ , শেষ আনন্দ
প্রান আনন্দে মাততে দাও ।
এ খেলা , জীবনের শেষ খেলা
সেরা খেলাটা খেলতে দাও ।
এ বিদায়, শেষ বিদায়
আরেকটু কাছে থাকতে দাও ।
এ উচ্ছাস , জীবনের শেষ উচ্ছাস
হাসতে হাসতে অশ্রু নামে ।
এ শোক , জীবনের শেষ শোক
কান্নার জোয়ারে সব ভাসে ।
এ দেখাই শেষ দেখা
যেমন আকাশ দেখে- পাখি উৎসব ।
এ কথাই শেষ কথা
কথার মায়ায় জড়িয়ে ধরি ।
এ ভ্রমন , আমাদের শেষ ভ্রমন
ফুরফুরে হাওয়ায় উড়ি আর উড়ি ।
এ কাজই জীবনের শেষ কাজ
পরতে পরতে ছড়াই সুন্দর ।
এ বিশ্বাসই জীবনের শেষ বিশ্বাস
বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই ।
এ ঘুমই জীবনের শেষ ঘুম
নিশ্চিহ্ন আমি আধারে মিলাই ।
এই তো চায়ে শেষ চুমুক
প্রান ভরে নেই অমৃত স্বাদ ।
একটু পরেই আসবে মরন , উড়বে আমার পরান পাখি
ভাঙবে খাচা সকল বাধ ।
--ভুলে যাওয়া—
ভুলে যাই পুরাতন
ভুলে যাই ভবিষ্যত
ভুলে যাই চাওয়া
ভুলে যাই পাওয়া
ভুলে যাই লেনদেন
ভুলে যাই দীর্ঘ শ্বাস
শুধু এই মুহুর্তে বাচি- সতেজ নির্যাস
সহযে হাসি আনন্দে - নিত্য প্রকাশ ।
--নির্জন গুরু--
“লাখো জনতা” আসলে একজন
আমিও ঐ একজনই
আমি আমার ভক্ত
আমি আমার আনন্দ
আমাতেই আমি মুক্ত
“লাখো জনতা”র মাঝে আমি যেমন
একলা আমি তেমনই- সদা সর্বদা মুক্তানন্দ ।
--পুরুষোত্তম--
একটি শীতল অটল ধারালো ছুরি , যদিও নরম কেকের ওপর দিয়ে যায়
তবু ছুরি সবসময় ছুরি
তার “শীতল ধারালো অটল” ধর্ম থেকে সে একচুলো নড়ে না
সুস্বাদু কেকের কোমলতার কাছে সে কাবু হয় না ।
--আমার স্বাদ—
বসন্তের আমি এক মাতাল হাওয়া
ফুরফুরে উড়ে বেড়ানোই আমার নিয়তি
এ জগত সংসার আমার ফুলের বাগান ।
পরশে আমার , ফুলেরা ঐ দোলে আর দোলে
ওদের সুখে হৃদয় আমার , ওড়ে শুধু ওড়ে ।
--মন্ত্র--
বিশালে হাসি
এমনি ভালোবাসি....
--সুত্র--
হাসি এখন
কান্না পরে ।
--মধুর ভুল--
কাটা গুলো – এই ভুল গুলো সরিয়ে
শুধু ভালোবাসবে আর আমার সুবাস নিবে
মাতাল হবে , ধন্য হবে
--ধনী--
যে দেয় , সে পায়
যে চায় , সে হারায় ।
--জপমালা--
প্রতিদিন ১০০ বার বলিঃ
আমিই “মুক্ত প্রেমানন্দ”
প্রতিদিন ১০০ বার বলিঃ
আমার কারনে সবাই সুন্দর
প্রতিদিন ১০০ বার বলিঃ
“সহজ প্রেমানন্দ” ছাড়া আর সব ফালতু ।
--সর্বোক্ষন--
শিশুর মুক্ত মনরে করো স্মরন
হাসো বিশালে অকারন
এই কথাটা মানিলে ও মন
হবে না আর তোমার মরন ।
--ইচ্ছা গুরু--
মানুষ নিজেই নিজের ইচ্ছাগুরু
এই ইচ্ছার বলেই সে অদম্য প্রেমের রাজা হয়
এই ইচ্চার ঘাটতিতেই সে ঘৃনার চোরাবালিতে ডুবে মরে ।
ইচ্ছার পূজায় সে মহাশক্তিধর
এই ইচ্ছার অপূর্নতায় সে দুর্বল ।
চরম ইচ্ছায় সে অসম্ভবকে সম্ভব করে
এই ইচ্ছার অভাবে সে সামান্য কাজেই ব্যর্থ হয় ।
তার নিজের ইচ্ছাতে সে সুখী
আর ইচ্ছা নেই বলে সে নিজেকেই নিজে করে রাখে দুখী ।
দ্বিধান্বিত ইচ্ছায়- সে থাকে সন্দেহের কারাগারে বন্দি
অথচ “অদম্য ইচ্ছা” , তারে বিশ্বাসের আকাশে মুক্তি দেয়।
--হাজিরা--
তোমার উপস্থিতি যদি হয় , অন্যের ভালোলাগার কারন
ধন্য তুমি , “প্রেমানন্দ” তুমিই কর ধারন
--তীরন্দাজ--
সবাই দেখছিল- সে লক্ষ্য বস্তুর দিকে চেয়ে আছে
আসলে তার “মন-চোখ” চেয়েছিল- সেই বিশালতার দিকে- “মুক্ত প্রেমানন্দ” যার নাম
তার সাবলীল নিমগ্নতায়-
দূর এসে পরেছিল কাছে
বড় হয়ে গিয়েছিল ছোট
কঠিন হয়ে গিয়েহিল সহজ
জনতা হয়ে গিয়েছিল – নীলাকাশের পায়রা ।
--বাস্তবতা--
বিড়াল ভয় পায় বলে , বিড়ালের কপালে খাবার ঝোটে না
সিংহ Damcare বলে , সিংহের সামনে খাবার হাজির।
--মানুষ ধর্ম—
মানুষ নামের ফুল ফুটেছে
সে ফুলের ঘ্রানে , প্রান মাতাল হয়েছে
পরমেশ্বর , বিমূর্ত থেকে মূর্ত হয়েছে
মানুষের হাসিতে নূর ঝরেছে
মানুষ দেখে , নয়ন জুড়িয়েছে
মানষের বিশালতায় , জীবন ধন্য হয়েছে
জন সমুদ্রে , হৃদয় জেগেছে
মানুষের টানে , হৃদয় নেচেছে
মানুষের টানে মানুষ , মরনকেও পেছনে ফেলেছে
মানুষ নেই যেখানে , সেখানে আধার নেমেছে
মানুষ চলে গেলে , বুকের পাজড় ভেঙে নয়ন ভিজেছে
মানুষে ঘৃনায় , হৃদয় পুরেছে
“মানুষ”কে যে ভুলে গেছে , অমানুষ সে হয়েছে
“হাস্বোজ্জল নিজের রূপ”রে যে স্মরন করেছে
আনন্দ আকাশে সে উড়েছে
বহুরূপে সম্মুখে তোমা , ছাড়ি কোথা খুজিছো ঈস্বর? – বিবেকানন্দ বলেছে
সবার ওপরে মানুষ সত্য , তাহার ওপরে নাই
ভৃত্য চড়িল উটের পৃষ্ঠে , ওমর ধরিল রশি
মানুষে স্বর্গে তুলিয়া ধরিয়া , ধুলায় নামিল শশী
– কবি নজরুল বলেছে
মানুষ ভজো , মানুষ পূজো
শোন বলিরে পাগল মন
মানুষের ভেতরে মানুষ , করিতেছেন বিরাজন – সাইজি বলেছে
বাড়িতে আসিলে অথীতি নারায়ন তা থৈ নাচিয়া ওঠে আমার মন। - রবিন বলেছে
--ভেতর-বাহির--
“বাহির” , আমার স্বর্গ
আর “ভেতর” , সে স্বর্গের উৎস ধারা
এক একটা মানুষ , স্বর্গের এক একটা ফোটা, একটা আনন্দ
……০……
প্রিয় সাধকদের থেকে চয়নকৃত চুম্বক অংশঃ
ফূর্তির কবি ওমর খৈয়ামের নির্বাচিত কবিতা (অনুবাদঃ কাজী নজরুল ইসলাম)ঃ-
১
প্রেমের চোখে সুন্দর সেই হোক কালো কি গৌর-বরন
পরুক ওড়না রেশমি কিংবা পরুক জীর্ন দীন বসন
থাকুক শুয়ে ধুলায় সে কি থাকুক সোনার পালঙ্কে
নরকে সে গেলেও প্রেমিক করবে সেথায় অন্বেষন ।
২
নিদ্রা যেতে হবে গোরে অনন্তকাল, মদ পিও
থাকবে না কো সাথী সেথায় বন্ধু প্রিয় আত্মীয়
আবার বলতে আসবো না ভাই, বলছি যা তা রাখ শুনে-
ঝরেছে যে ফুলের মুকুল, ফুটতে পারে আর কি ও?
৩
মরুর বুকে বসাও মেলা, উপনিবেশ আনন্দের
একটি হৃদয় খুশি করা তাহার চেয়ে মহৎ ঢের
প্রেমের শিকল পরিয়ে যদি বাধতে পার একটি প্রান-
হাজার বন্দী মুক্ত করার চেয়েও অধিক পুন্য এর ।
৪
শারাব নিয়ে বসো, ইহাই মহমুদেরই সুলতানৎ
দাউদ নবীর শিরিন-স্বর ঐ বেনু বীণার মধুর গৎ
লুট করে নে আজের মধু, পূর্ন হবে মনস্কাম
আজকে পেয়ে ভুলে যা তুই অতীত আর ভবিষ্যৎ ।
৫
এক নিশ্বাস প্রশ্বাসের এই দুনিয়া, রে ভাই, মদ চালাও !
কালকে তুমি দেখবে না আর আজ যে জীবন দেখতে পাও
খাম খেয়ালির সৃষ্টি এ ভাই, কালের হাতে লুটের মাল
তুমিও তোমার আপনাকে এই মদের নামে লুটিয়ে দাও !
৬
নগদ যা পাও হাত পেতে নাও,
বাকির খাতা শূন্য থাক।
দুরের বাদ্য লাভ কি শুনে,
মাঝখানে যে বেজায় ফাঁক।
……………
বাবা জালালুদ্দিন রুমির কাব্য গ্রন্থ থেকে চয়নকৃত চুম্বক অংশঃ
হৃদয়ের কৃষক আমি
বুনে যাই “প্রেম বীজ” , আর তুলে নেই “আনন্দের ফসল”
*
যেখানেই তুমি থাকো , আর যাই করো না কেন , প্রেমেই থেকো ।
খুলে গেলাম আমি আর হলাম প্রেমে পূর্ন
*
এমনকি সমস্ত পৃথিবীও যদি দুঃখ দিয়ে মুড়ে ফেলা হত
সে তেমন কষ্ট পেতনা , যদি শক্ত করে “প্রেম” কে ধরে থাকতো
এবং প্রেম যদি তাকে এতটুকুন নাচাতো
এমন হাজারো পৃথিবী তার ছোট্ট হাতে এসে পরতো
*
যখন আমি তাকে দেখি তখন আমি আমাকেই দেখি
আর যখন আমি আমাকে দেখি তখন তাকেই দেখি
*
তোমার আলোর ঝলকানিতে আমায় বিদ্ধ করো , যাতে আমার দৃষ্টি তোমার প্রেমে হয় উজ্জ্বল
*
বাইরে দৌড়িয়ো না , ভেতরে দৌড়াও , যেমনটি পাকা আঙ্গুর নিজের মিষ্টতার দিকেই দৌড়ায়
*
ও প্রেম , ও বিশুদ্ধ গভীর প্রেম , এইখানে , এখনে , সবাতে
*
জিজ্ঞেস করো না – প্রেম কি করতে পারে ?
বরং তাকাও এই দুনিয়ার রঙে
*
যখন আত্মা জেগে ওঠবে- ঠোটে
তুমি সেই চুম্বন করবে অনুভব
যা তুমি চেয়েছিলে
*
যদি সারা জাহানো কাটায় ভরে যায় , তখনো প্রেমিকের হৃদয় গোলাপের বিছানা
*
যখন তুমি প্রেম কে খুজে পাবে , তুমি খুজে পাবে তোমার নিজেকে
ডানা নিয়েই তুমি জন্মেছিলে
পোকা মাকড়ের মতো হামাগুড়ি দেয়ার জন্যে তুমি না , হামাগুড়ি দিয়োনা
*
আমি চাই সেই প্রেম যে পাহাড় নাড়িয়ে দেয়
আমি চাই সেই প্রেম যে সমুদ্রকে পর্যন্ত আলাদা করে দেয়
আমি চাই সেই প্রেম যে হাওয়ায় ধরায় কাপন
আমি চাই সেই প্রেম যে বজ্রের মতো গর্জন করে ওঠে
আমি চাই সেই প্রেম যে মৃত্যুকেও জাগিয়ে তোলে
আমি চাই সেই প্রেম যে পরমানন্দে আমাদের উঠিয়ে নেয়
আমি চাই সেই প্রেম যে অসীমের স্তব্ধতা
*
এটা প্রেমঃ
গোপন আকাশে যায় উড়ে
*
জটিল সব ভাবনাকে ছাড়িয়ে যাও
আর খুজে পাও সেই বেহিসেবি বেহেস্ত
তোমার ছোট এই পৃথিবীটাকেও ছাড়িয়ে যাও
আর খুজে পাও প্রভুর রাজষিক সেই দুনিয়া
*
প্রেমের পরষে তীতা হয়ে যায় মিঠা
প্রেমের পরষে তামা হয়ে যায় সোনা
প্রেমের পরষে ময়লা হয়ে যায় পরিষ্কার
প্রেমের পরষে যন্ত্রনা হয়ে যায় আরোগ্য
প্রেমের পরষে মরনও বেচে যায়
প্রেমের পরষে বাদশা হয়ে যায় গোলাম
জ্ঞানে প্রেম বেড়ে ওঠে
বেহায়া হয়েও অন্ততঃ কেউ এমন রাজষিক শক্তিতে জায়গা করে নিতে পেরেছে ?
*
“প্রেম” আমাদের আত্মা কে ওপরে উঠিয়ে নেয়- কোন মই ছাড়াই
*
আমিতো তোমারি প্রেম সমুদ্রে বেচে থাকি
*
একবার যদি তোমার স্বার্থপর সত্তাকে বশীভূত করতে পারো
তোমার সমস্ত আধার হয়ে যাবে আলো ।
*
এ জগত সংসার এক রসের ভান্ডার
হও রসিক আর পান করো সাবধানে ।
…………………………
বাবা লালন সাই এর গানঃ-
মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি /
মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি ।
…………..
মানুষের মহিমাই ধরা পড়েছে জালাল খার গানের বিভিন্ন চরণে। কয়েকটি দৃষ্টান্ত এ-রকম,-
৬. থাকতে ক্ষুধা প্রেম শুধা
পান করো রে পাগলা মন
হায়রে পান করো রে পাগলা মন
থাকতে ক্ষুধা প্রেম শুধা ।।
দিন গেলে দিন আর পাবেনা
ভাটা যদি লয় যৈবন ।
আসমানে জমিনে যে প্রেম অনন্তকাল ধরিয়া।
তাই তো তারে মেঘ বাদলে রাখে শান্ত করিয়া।
তা না হলে হলে হুলে। (হায়রে) শোভিত না (খোদার) এই ভুবন
থাকতে ক্ষুধা প্রেম শুধা
পান করো রে পাগলা মন ।
পাহাড়ে সাই ঘুরে যে প্রেম ফাটাইয়াছে এক সাথে।
তাই তো পানি বাস্প হইয়া উঠে গিয়া তার মাঝে।
দেখছ নি তাই মন ভাবিয়া। হইতেছে কত পরেশন
থাকতে ক্ষুধা প্রেম শুধা
পান করো রে পাগলা মন
খোদার প্রেমে জংগলবাসী মনি ঋষি আওলিয়া (আওলিয়া…)।
সারা জনম কাটায় তারা গাছতলাতে বসিয়া
পাইলো কী ধন কইলো না রে
পাইলো কী ধন কইলো না তাই (সদাই) কান্দেরে জালালের মন
থাকতে ক্ষুধা প্রেম শুধা
পান করো রে পাগলা মন।।
………………
প্রিয় কবি সাহিত্যিকদের থেকে চয়নকৃত চুম্বক অংশঃ
--পাতার মুকুটপরা নিঃস্ব মানুষ--
আমি প্রকৃত নিঃস্ব মানুষের মতো
মরতে চেয়েছি
পাহাড়ের ঘর অরণ্যে
একদল মানুষ ওদের স্নিগ্ধ মেয়েদের নিয়ে এলো
ওরা গাইলো
ঝরনাধারার মতো নাচলো
আমাকে ক্রীতদাসত্বের গ্লানি
বিষয়ে বললো
বিমানের তেল ফুরিয়ে যাওয়ার পর
তার প্রয়োজনীয়তার কথা বললো
একটা ফুটফুটে মেয়ে
তারা প্রকৃত নিঃস্ব ও সৎমানুষের মতো
বাঁচতে বলে
আমার মাথায়
পাতার মুকুট
পরিয়ে দিলো
সকালে ওই মুকুট দেখে যারা খুব হাসলো
ওদের আমার খারাপ মনে হলেও
একটি অদৃশ্য ভালোবাসা
আমাকে শান্ত রেখেছিল…
-হাফিয রশীদ খান
………
হিসেব
_____- তসলিমা নাসরিন
কত টুকু ভালোবাসা দিলে,
ক তোড়া গোলাপ দিলে,
কতটুকু সময়, কতটা সমুদ্র দিলে,
কটি নির্ঘুম রাত দিলে, কফোঁটা জল দিলে চোখের –
সব যেদিন ভীষণ আবেগে শোনাচ্ছিলে আমাকে,
বোঝাতে চাইছিলে আমাকে খুব ভালোবাসো,
আমি বুঝে নিলাম-
তুমি আমাকে এখন আর একটুও ভালোবাসোনা।
ভালোবাসা ফুরোলেই মানুষ হিসেব কষতে বসে, তুমিও বসেছো।
ভালোবাসা ততদিনই ভালোবাসা
যতদিন এটি অন্ধ থাকে, বধির থাকে,
যতদিন এটি বেহিসেবি থাকে।
…………
মনে থাকবে?
____-আরণ্যক বসু
পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক
আমরা তখন প্রেমে পড়বো
মনে থাকবে?
বুকের মধ্যে মস্তো বড় ছাদ থাকবে
শীতলপাটি বিছিয়ে দেব;
সন্ধে হলে বসবো দু'জন।
একটা দুটো খসবে তারা
হঠাৎ তোমার চোখের পাতায় তারার চোখের জল
গড়াবে,
কান্ত কবির গান গাইবে
তখন আমি চুপটি ক'রে দুচোখ ভ'রে থাকবো
চেয়ে...
মনে থাকবে?
এই জন্মের দূরত্বটা পরের জন্মে চুকিয়ে দেব
এই জন্মের চুলের গন্ধ পরের জন্মে থাকে যেন
এই জন্মের মাতাল চাওয়া পরের জন্মে থাকে
যেন
মনে থাকবে?
আমি হবো উড়নচন্ডি
এবং খানিক উস্কোখুস্কো
এই জন্মের পারিপাট্য সবার আগে ঘুচিয়ে দেব
তুমি কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমেষে সবটুকু জল শুষে নেব
মনে থাকবে?
পরের জন্মে কবি হবো
তোমায় নিয়ে হাজারখানেক গান বাঁধবো।
তোমার অমন ওষ্ঠ নিয়ে
নাকছাবি আর নূপুর নিয়ে
গান বানিয়ে__
মেলায় মেলায় বাউল হয়ে ঘুরে বেড়াবো...
মনে থাকবে?
আর যা কিছু হই বা না হই
পরের জন্মে তিতাস হবো
দোল মঞ্চের আবীর হবো
শিউলিতলার দুর্বো হবো
শরৎকালের আকাশ দেখার__
অনন্তনীল সকাল হবো;
এসব কিছু হই বা না হই
তোমার প্রথম পুরুষ হবো
মনে থাকবে?
পরের জন্মে তুমিও হবে
নীল পাহাড়ের পাগলা-ঝোরা
গাঁয়ের পোষাক ছুড়ে ফেলে
তৃপ্ত আমার অবগাহন।
সারা শরীর ভ'রে তোমার হীরকচূর্ণ ভালোবাসা।
তোমার জলধারা আমার অহংকারকে ছিনিয়ে নিল।
আমার অনেক কথা ছিল
এ জন্মে তা যায়না বলা
বুকে অনেক শব্দ ছিল__
সাজিয়ে গুছিয়ে তবুও ঠিক
কাব্য করে বলা গেল না!
এ জন্ম তো কেটেই গেল অসম্ভবের অসঙ্গতে
পরের জন্মে মানুষ হবো
তোমার ভালোবাসা পেলে
মানুষ হবোই__ মিলিয়ে নিও!
পরের জন্মে তোমায় নিয়ে...
বলতে ভীষণ লজ্জা করছে
ভীষণ ভীষণ লজ্জা করছে
পরের জন্মে তোমায় নিয়ে...
মনে থাকবে?
…………
ঈশ্বর বন্দনায় ব্যাস্ত মানুষগুলোর
ঈশ্বর থাকে সাত আসমানে;
আমার ঈশ্বর এইখানে
যেখানে তুমি আমি জড়িয়ে আছি
গভীর আলিঙ্গনে !
-আঞ্জুমান রোজী
…………………
আমরা তো অল্পে খুশি
কি হবে আর দুঃখ করে
আমাদের সুখ আছে রে ভাই
সাধারন ভাত কাপড়ে
-সংগৃহীত
……………..
দৈনন্দিন বেচে থাকার সংগ্রামে অযথাই উদ্বিগ্ন দুশ্চিন্তার নাটক চলে বিরতীহীন । এই অর্থহীন বিদ্ধংশী আচরন চলতে থাকে ঠিক ঐ শিশুর মত-যে সৈকতে বালুর প্রাসাদ গড়ে আবার তা ঢেউ এ ভেসে গেলে হতাশ হয়ে পরে।
~ H.H. Dilgo Khyentse Rinpoche
………….
ঘরের কাঠে ঘুনে খায়
কাঠ আনিতে বনে যায় ।
-খনার বচন
©somewhere in net ltd.