![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিয়ে প্রতিটি মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই বিয়ে, কাবিন, যৌতুক এবং তালাক সংক্রান্ত ইসলামী নিয়মকানুন সবাইকে জানানোর জন্য নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর ইসলামের আলোকে অতীব জরুরীঃ-
১) বিয়ে কী?
২) বিয়ে কি শুধু ছেলের বা মেয়ের দরকার? নাকি উভয়ের?
৩) কাবিন বা দেন মোহর কী?
৪) কাবিন কেন ধার্য্য করা হয়?
৫) কাবিন বা দেন মোহর কিভাবে পরিশোধ করতে হয়?
৬) ছেলের বিয়ের সময়কার সামর্থ্যরে উপর কি কাবিন বা দেন মোহর নির্ভর করে?
৭) প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বিয়ের দেন মোহর কিভাবে পরিশোধ করেন? তিনি বাকিতে কোন দেন-মোহর ধার্য্য করেছেন কি?
৮) মোহরে ফাতেমী বলতে কি বুঝায়?
৯) কাবিন বা দেন মোহর ধার্য্য করে তা পরিশোধ না করলে কি হয়?
১০) কাবিন কি মেয়েদের হক?
১১) হক কি এবং হক আদায় না করলে কি হয়?
১২) ইসলাম বিয়েকে সহজ করতে, নাকি কঠিন করতে বলেছে?
১৩) কাবিনের সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ সীমা কত?
১৪) কাবিন বেশী ধার্য্য করলে সওয়াব কি বেশী হবে?
১৫) কাউকে কাবিন চাপিয়ে দেয়া হলে তার ব্যাখ্যা কী?
১৬) কাবিন আদায় সামাজিক নিয়ম নাকি ইসলামী নিয়ম?
১৭) কাবিন বা দেন মোহর আদায়ের উত্তম পন্থা কী?
১৮) দেন মোহর স্ত্রী কিভাবে খরচ করবেন? এবং স্বামী খরচ করতে পারবেন কি?
১৯) দেন মোহর হিসাবে কোন স্বর্ণালংকার বা টাকা স্ত্রীকে দিলে তা স্বামীর প্রয়োজনে স্ত্রীর কাছ থেকে খরচ করার জন্য নিতে পারবেন কি? পারলে, আবার কিভাবে পরিশোধ করতে হবে?
২০) কাবিনের টাকা নিজেকে পরিশোধ করতে হবে, নাকি অন্য কেউ পরিশোধ করলে হবে?
২১) যদি কোন ব্যক্তির কাছে ১,০০,০০০/= (একলক্ষ) টাকা থাকে ঐ ব্যক্তি কত টাকা কাবিন ধার্য্য বা পরিশোধ করলে তার উপর চাপ সৃষ্টি হবে না এবং স্বামী-স্ত্রীর সম্মান রক্ষা হবে?
২২) ২০১০ সালের টঘউচ জবঢ়ড়ৎঃ অনুযায়ী বাংলাদেশের মাথাপিছু বাৎসরিক আয় (চবৎ ঈধঢ়রঃধ ওহপড়সব) ১,৫৮৭ ডলার। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১০ অনুযায়ী বাংলাদেশের চবৎ ঈধঢ়রঃধ ওহপড়সব ৭৫০ ডলার। সুতরাং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কাবিন কত হতে পারে? (২০১০ সালের টঘউচ জবঢ়ড়ৎঃ অনুযায়ী সৌদি আরবের মাথাপিছু বাৎসরিক আয় ২৪,০০০ ডলার)।
২৩) দেশে আয় করা ছেলে এবং বিদেশে আয় করা ছেলের মধ্যে কাবিন নির্ধারণ কি একই হবে?
২৪) বাকিতে বিয়ে, যেমন:- ১০,০০,০০০/= (দশ লক্ষ) টাকা কাবিনের মধ্যে ১,৫০,০০০/= (একলক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা উসুল, ৮,৫০,০০০/= (আট লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা বাকি। এই টাকা কিভাবে পরিশোধ করবে? এবং পরিশোধ করতে পারবে, তার নিশ্চয়তা কি? আল্লাহ না করুক, দেন-মোহরের সব টাকা পরিশোধ করার আগেই স্বামী বা স্ত্রী কেউ একজন মারা গেলেন সেক্ষেত্রে কী হবে? (বর্তমানে চট্টগ্রামে অনেকে ১০,০০,০০০/=, ২০,০০,০০০/=, ২৫,০০,০০০/= টাকারও বেশী বাকিতে কাবিন ধার্য্য করছে, অন্যদিকে কেউ কেউ ৫০,০০০/=, ৬০,০০০/= টাকা কাবিন ধার্য্য করে নগদ পরিশোধ করছে।)
২৫) বিয়ের বয়স সীমা কত? বাংলাদেশে একজন ছেলের শিক্ষা জীবন শেষ করতে কমপক্ষে ২৪-২৫ বছর লাগে । এমতাবস্তায় তার বিয়ে করা সম্ভব কি? এবং কাবিন কত হলে তার উপর চাপ সৃষ্টি হবে না?
২৬) কাবিন আদায় সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য হাদিসগুলো কি কি?
২৭) যৌতুক কী?
২৮) কনে পক্ষ বরকে যে উপহার সামগ্রী প্রদান করেন, তা গ্রহন করা কতটা যুক্তিযুক্ত?
২৯) পাত্রী পক্ষ বরকে অনেক সময় অতি উৎসাহি হয়ে বাড়ী, গাড়ী এবং আসবাব-পত্র প্রদান করেন, তা কি যৌতুকের আওতাভুক্ত হবে?
৩০) উপহার এবং যৌতুকের মধ্যে পার্থক্য কী?
৩১) তালাক কী?
৩২) তালাক কি শুধু স্বামীর বা স্ত্রীর কারণে হয়? নাকি উভয়ের কারণে হতে পারে?
৩৩) তালাকের কারণে কি স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ক্ষতি হয়? নাকি যে কোন একজনের?
৩৪) তালাকের কারণে ভরণপোষনের নিয়মাবলী কি কি?
৩৫) তালাকের জন্য স্বামী দায়ী হলে কিভাবে ভরনপোষন আদায় করতে হবে?
৩৬) তালাকের জন্য স্ত্রী দায়ী হলে কিভাবে ভরনপোষন আদায় করতে হবে?
৩৭) কাবিনের সাথে তালাকের কোন সম্পর্ক আছে কি?
বিঃদ্রঃ কোর-আন ও হাদিসের রেফারেন্স আবশ্যক।
৩৮) বাকিতে বিয়ে হওয়া এক দম্পতি তিন বৎসর সংসার করার পর তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তারা একে অপরকে সয্য করতে পারছিলেন না এবং শেষ পর্যন্ত তাদের তালাক হয়। এই জন্য দুই জনেরই সমস্যা ছিল বলে তাদের আশপাশের লোকজন মনে করেন। তাদের দুই বৎসর বয়সী একটি পুত্র সন্তান আছে। তালাকের পর স্ত্রী দাবী করছেন যে দেন-মোহরের টাকা তার ম্বামী পরিশোধ করেন নাই এবং তিনি মাফও করেন নাই। স্বামীর দাবী স্ত্রী তাকে মাফ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বামীর বর্তমান অবস্থা এই রকম যে তার দেন-মোহরের টাকা পরিশোধ করার মত কোন অর্থ সম্পদ নাই। এইক্ষেত্রে তাদের জেনা হবে কি? এবং তাদের সন্তান কি বৈধ হবে?
৩৯) দিনে এনে দিনে খায়, এমন লোক বিয়ে করতে কত দেন-মোহর ধার্য্য করতে পারে? (বাংলাদেশের অধিকাংশ লোকের অর্থনৈতিক অবস্থা হল দিনে এনে দিনে খায় অথবা মাসের বেতন দিয়ে মাস চলে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১০ অনুযায়ী ৪০% লোক দারিদ্র সীমার নিচে এবং ২৫.১% লোক চমর দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছেন।)
বিঃদ্রঃ কোর-আন ও হাদিসের রেফারেন্স আবশ্যক।
মনস্তাত্ত্বিক প্রশ্নঃ-
১) অনেকের ধারণা, সামর্থ্যরে বেশী কাবিন লিখলে বা বাকিতে কাবিন ধার্য্য করলে মেয়ে নিরাপদ থাকবে। তাহলে মেয়েরা কি ছেলেদের কাছে নিরাপদ নয়? ছেলেরা এমন কি অপরাধ করেছে যে, তাদেরকে অভিভাবক এবং মেয়েরা বিশ্বাস করতে পারছে না? যাকে বিশ্বাস করা যায় না তার সাথে সম্পর্ক করা কি ঠিক?
২) সমাজে অনেক সময় দেখা যায় মেয়েদের কারণে পরিবারে অশান্তি হয়, এমনকি বিচ্ছেদের মত জঘন্য ঘটনাও ঘটছে। এক্ষেত্রে ছেলেদের নিরাপত্তা কি?
৩) মেয়েদের নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠলে, ছেলেদেরও নিরাপত্তা চিন্তা করতে হবে। আপনি কী মনে করেন?
৪) আমাদের মধ্যে অনেকে বলেন, কাবিন নাকি মেয়ের একমাত্র উবসধহফ। না, কাবিন কখনও একমাত্র উবসধহফ হতে পারে না। হয়ত উবসধহফ হতে পারে ভাল পাত্র/পাত্রীর বা ছঁধষরঃু-এর। কাবিন হল বিয়ের কতগুলো শর্ত বা নিয়মকানুনের মধ্যে একটি। আপনার মতামত কী?
৫) দেন-মোহর পরিশোধ করা যদি বিয়ের কযেকটি শর্তের মধ্যে একটি হয়ে থাকে, তবে তা পরিশোধ না করলে বিয়ে হবে কি? বিয়েই যদি ঠিকভাবে না হয়, তাহলে তালাকের কথা চিন্তা করা হাস্য ঘটনা ছাড়া কিছুই না। আমাদের ঠিকভাবে বিয়ে করা জরুরী? নাকি তালাকের কথা চিন্তা করা জরুরী? কেউ যদি মনে করে সে অনেক পাপ করতেছে তাই এখানেও পাপ করলে অসুবিধা কী? হ্যাঁ আপনাকে বলছি, আপনি যদি ইচছাকৃতভাবে পাপ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনি বিয়ে না করে কোন মেয়ের সাথে জেনা করলেই পারেন। আর আমরা যারা জেনা করতে চাই না তারা অবশ্যই বিয়ের সব সর্ত পূরণ করেই বিয়ে করব। আপনি চিন্তা করেন।
৬) উদাহরন আছে, স্বামী প্রয়োজন হলে দেন-মোহরের স্বর্ণালংকার বিক্রি করে কাজে লাগায়। যদি সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বনিম্ন দেন-মোহর ধার্য্য করে এবং উপহার হিসাবে কিছু স্বর্ণালংকার দেওয়া যায় সেক্ষেত্রে স্বামী প্রয়োজনে তা কাজে লাগালে দেন-মোহর পরিশোধ হওয়া না হওয়া নিয়ে কোন প্রশ্ন দেখা দিবে না। আর স্বামীও নিরাপদ থাকবে। আপনি কি একমত?
৭) কাবিন বা দেন-মোহর যেহেতু বিয়ের একটি শর্ত, তাই ৪০,০০০/= - ৫০,০০০/= টাকা ধার্য্য করে তা নগদ পরিশোধ করুন। তাহলে বিয়ে সহী ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়ে গেল। তারপর আপনি আপনার সামর্থ্য মত স্ত্রীর নামে ব্যাংক একাউন্ট করে টাকা রাখতে পারেন অথবা বীমা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার পরিবারের কোন প্রয়োজনে সে টাকা ব্যবহার করতে পারবেন।
৮) অনেকে বলতে শুনা যায়, দেন-মোহর কম ধার্য্য করলে মেয়েকে ছেড়ে/ডিভোর্স দিয়ে আর একটি বিয়ে করবে। আসলে আজ বিয়ে করে কাল ছেড়ে দিবে বা কাল বিয়ে করে পরশু ছেড়ে দিবে ................... এই রকম চিন্তা করা বোকামী ছাড়া কিছুই নয়। কারণ বিয়ে এত সহজ নয়। আর যদি এই রকম কেউ ইচছাকৃতভাবে করে তাকে দ্বিতীয়বার কেউ মেয়ে বিয়ে না দিলেই হয়। আপনি একমত কি?
৯) যারা নগদ বিয়ে করেছেন তারা স্বামী স্ত্রীকে বা স্ত্রী স্বামীকে তালাক দেয়ার জন্য কি বিবাহ করেছেন? আর যারা বাকিতে বিয়ে করেছেন তারা কি তালাক দেয়ার কথা মাথায় রেখে বিবাহ করেছেন? আপনি আপনার বিবেককে প্রশ্ন করুন। তা যদি না হয়, তাহলে বিয়ের আগেই কেন ছাড়া-ছাড়ি বা তালাক নিয়ে প্রশ্ন উঠবে?
১০) বাকিতে বিয়ে করলে দুর্ঘটনা বা বিচ্ছেদ ঘটবে না তার কোন নিশ্চিয়তা নেই। তাছাড়া হাজারে বা লক্ষ-এ দুই-তিনটি দুর্ঘটনা বা বিচ্ছেদ হয়ত ঘটতে পারে। এই জন্য স্বামী বা স্ত্রী উভয়ই দায়ী হতে পারে। তার জন্য সব ছেলেকে শুধু শুধু অবিশ্বাস করা কি ঠিক? তাছাড়া দুর্ঘটনায় কারও হাত থাকেনা এবং দুর্ঘটনা বা বিচ্ছেদের পর স্বামী বা স্ত্রী কেউ স্বাভাবিক জীবনে খুব সহজে ফিরে আসতে পারে না। সুতরাং দুর্ঘটনা বা বিচ্ছেদের কথা চিন্তা না করে, বিয়ে যাতে সহী, সুন্দর এবং দাম্পত্য জীবন সুখের হয় তার দিকে দৃষ্টি দেয়া উচিৎ। আপনি চিন্তা করতে পারেন।
১১) বাকিতে বিয়ের ক্ষেত্রে, যেমনঃ- ১০,০০,০০০/= (দশ লক্ষ) টাকা কাবিন, ১,৫০,০০০/= (একলক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা উসুল, ৮,৫০,০০০/= (আট লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা বাকি। কেউ যদি এই বাকি প্রতি মাসে ২,০০০/= (দুই হাজার) টাকা করে পরিশোধ করতে চাই তারজন্য কমপক্ষে ৪২৫ মাস বা ৩৫ বৎসর ৫ মাস সময় দরকার। স্বামী কি সারা জীবন শুধু স্ত্রীর দেন-মোহরের টাকা পরিশোধ করতে থাকবেন? যারা ঋণগ্রস্ত তারা বুঝতে পারেন ঋণ পরিশোধ করা কত কঠিন কাজ। স্বামী যদি কোন কারণে চাপে থাকে তার প্রভাব স্ত্রী উপরও থাকবে।সুতরাং চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ নয় কি?
১২) সামর্থ্যরে বাহিরে বাকিতে কাবিন বা দেন-মোহর ধার্য্য করে স্ত্রীর নিকট মাফ চাইলেই নাকি কাবিন আর পরিশোধ করতে হয় না, এমনটাই মনে করছেন অনেকে। তা হলে ধরার দরকার কি? তাছাড়া বিয়ে করা কি অপরাধ/পাপ যে মাফ চাইতে হবে? কারণ অপরাধ বা পাপ করলে মাফ চাওয়ার প্রশ্ন আসে। মানুষ বিয়ে করে সওয়াবের জন্য এবং অন্যায় বা অপরাধ জনিত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য। সেখানে মাফ চাওয়ার কথা আসবে কেন? বরং সামর্থ্য অনুযায়ী কাবিন বা দেন-মোহর ধার্য্য করলেই কোন সমস্যা থাকে না এবং সবকিছু সুন্দর হয়ে যায়।
১৩) সামর্থ্যরে বেশী কাবিন বা দেন-মোহর ধার্য্য করলে উক্ত টাকা পরিশোধ করার জন্য ছেলেরা দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহন করতে পারে। যা দেশের এবং জনগনের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। আর ছেলের নিশ্চিত নৈতিক অবক্ষয়। কোন স্ত্রী যেমন চাই না তার স্বামীর নৈতিক অবক্ষয় ঘটুক, তেমনি আমরা কেউ তা কখনও সমর্থন করিনা। একদিকে নৈতিক অবক্ষয়, অন্যদিকে দেন-মোহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে। ছেলেদের উপায় কী? সামর্থ্যরে বেশী কাবিন বা দেন-মোহর কখনও সমস্যা ছাড়া সমাধান হতে পারে না। সুতরাং সামর্থ্য অনুযায়ী কাবিন বা দেন-মোহর নগদ পরিশোধ করে দেয়ায় একমাত্র সহী, স্বচ্ছ এবং সুন্দর উপায়।
১৪) আমরা তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের অধিবাসী হয়ে আমেরিকা বা সৌদি আরবের মত চিন্তা করার কোন সুযোগ নাই। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১০ অনুযায়ী বাংলাদেশের বাৎসরিক মাথাপিছু আয় (চবৎ ঈধঢ়রঃধ ওহপড়সব) ৭৫০ ডলার। আমরা যদি কোটিপতিদের (১%) বাদ দিয়ে বাকী (৯৯%) জনগণদের নিয়ে হিসাব করি সেক্ষেত্রে মাথাপিছু বাৎসরিক আয় আরো অনেক কমে যাবে। মাথাপিছু বাৎসরিক আয়, বর্তমান বাজার দর ও জীবন যাত্রার মান বিবেচনা করে বাংলাদেশে কারো ৫০,০০০/- টাকার উপরে দেন-মোহর ধার্য্য করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত বলে আপনি মনে করেন। (বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১০ অনুযায়ী ৪০% লোক দারিদ্র সীমার নিচে এবং ২৫.১% লোক চমর দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছেন।)
১৫) বি সি এস ক্যাডার হওয়া প্রতিটি শিক্ষিত ছেলে-মেয়ের প্রধান টার্গেট। কারণ এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চাকুরির মধ্যে অন্যতম। কোন ছেলেকে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স -মার্ষ্টাস শেষ করতে কম পক্ষে ২৪ বৎসর সময় লাগে। আর সেশনযটের কারণে কম পক্ষে ২৫ বৎসর সময় লাগে। যদি প্রথম চান্সে ক্যডার হওয়া যায় সেক্ষেত্রে পরীক্ষা কার্যক্রম শেষ করে নিয়োগ পেতে আরও ২ বৎসর সময় লাগে। অর্থাৎ বি সি এস ক্যাডার কর্মকর্তা হতে কমপক্ষে ২৮ বৎসর সময় লাগে। তারপর পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনকে মিষ্টি মুখ করানো এবং গিফ্ট দিতেই প্রথম দুই-তিন মাসের বেতন শেষ হয়ে যায়। চাকরি হওয়ার পর থেকে নিজের, পরিবারের, আত্মীয়-স্বজন ও সমাজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খরচসহ আরো অন্যান্য খরচ তাঁর উপর বর্তায়। চাকরি পাওয়া পর পরই বিয়ের কথা আসে। বাংলাদেশ জাতীয় বেতন ষ্কেল ২০০৯ অনুযায়ী তাঁর বেতন ষ্কেল ১১,০০০/= - ২০,৩৭০/=। বর্তমান বাজার দরে এতো খরচ মিটানোর পর ঐ ক্যাডার কর্মকর্তা কত টাকা দেন-মোহর তার স্ত্রীকে দিতে পারে বলে আপনি মনে করেন। এটি কি ২০,০০০/= - ৩০,০০০/= টাকার বেশী হওয়া উচিৎ? তাছাড়া বিয়ে সম্পন্ন করতে আরো খরচ আছে। তারা দেশের এবং দেশের জনগণের জন্য নিরলস পরিশ্রম করছে। যেখানে বি সি এস ক্যডার কর্মকর্তারা এত বেশী কাবিন বা দেন-মোহর দিতে পারেন না সেখানে অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারীও বেশী দিতে পারার কথা না। সুতারাং কে কত বেশী দেন-মোহর দিতে পারবে সেটি বিবেচনা না করে কে কত সুন্দর এবং মান-সম্মান নিয়ে চলতে পারে সেদিকে লক্ষ্য দেয়া উচিৎ।
১৬) অনেকে দেশ, মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সবকিছু থেকে দূরে বিদেশে অনেক পরিশ্রম করে টাকা আয় করছে এবং রেমিট্যান্স পাঠিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। তাঁর উপর যাতে চাপ সৃষ্টি না হয় সেদিক লক্ষ্য রেখে অবশ্যই দেন-মোহর নির্ধারন করা উচিত।
১৭) অনেকে বলছে, মানুষের সামাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে কাবিন নির্ধারণ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন-যাত্রার পরিবর্তন এসেছে, ঠিক আছে। কিন্তু পরিবর্তনটা কি রকম তা চিন্তা করতে হবে। আসলে বাংলাদেশের জীবন-যাত্রার ব্যয় যে হারে বেড়েছে, আয় সে হারে বাড়েনি। মোবাইল খরচ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্রের উর্ধ্বগতি, মানুষের মৌলিক চাহিদা মিটানোর আকাঙ্খা যেমনঃ মানসম্মত অন্ন ও বস্ত্র, উন্নত বাসস্থান, শিক্ষা এবং উন্নত চিকিৎসা প্রভৃতি শুধু ব্যয়কেই বাড়িয়ে দিয়েছে , কিন্তু আয় সে তুলনায় বাড়েনি।
১৮) ৫০০০/- টাকা দেন-মোহর ধার্য্য করেও যদি বিয়ে করতে ইসলামীভাবে কোন বাধা না থাকে তবে তাই করা উচিৎ। কারণ বিয়ের পর স্ত্রীর ভরনপোষন হতে শুরু করে সকল আর্থিক সাপোর্ট সামর্থ্যমত স্বামীই বহন করে থাকে।
১৯) দুঃখ কষ্ট, আনন্দ-বেদনা, দুর্ঘটনা ইত্যাদি মানুষের জীবনের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। কারো সুখ বা দুঃখ দেন-মোহর বেশী ধরে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। কারণ দেন-মোহরের সাথে সুখ-দুঃখের কোন সম্পর্ক নেই। দেন-মোহর শুধু মাত্র বিয়ে হওয়ার সাথে সম্পর্কিত।
২০) বর্তমানে অনেকে ৫, ১০, ২০ লক্ষ-এরও বেশী টাকা কাবিন ধার্য্য করছে। অধিকাংশই পরিশোধ করছে না । উসুল হিসাবে যে স্বর্ণালংকার প্রদান করা হয়, তা রক্ষনাবেক্ষনের নামে অনেক শ্বশুর-শ্বাশুরী বা বর পক্ষ তাদের নিজ হেফাযতে রাখে। আবার কতিপয় কয়েকজন নগদ অর্থ পরিশোধ করে তা ব্যাংকে স্ত্রীর নামে রেখে দেয়। স্ত্রীর সকল ভরণপোষন যেহেতু স্বামী বহন করে সেহেতু ঐ টাকা ব্যাংকে থেকে যায়। স্ত্রীর দেন-মোহরের টাকা বলে স্বামীও তা কাজে লাগাতে পারছেন না। পরোক্ষভাবে দেন-মোহরের টাকা/স্বর্ণালংকার স্বামী নিয়ন্ত্রণ করছেন বা উক্ত টাকা/স্বর্ণালংকার হতে স্ত্রী সরাসরি সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না। অথচ ৫০০০/- টাকা কাবিন ধার্য্য করে তা পরিশোধের মাধ্যমে সুন্দরভাবে বিয়ে হয়ে যায়। পরবর্তীতে আপনি ইচ্ছা করলে যত খুশী স্ত্রীর নামে টাকা-পয়সা রাখতে পারেন, আপনি তা না করার কারনে সমাজে বিয়ে সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। কতিপয় লোকের অজ্ঞতার কারণে বিয়ে অনেক জটিল হয়ে যাচ্ছে এবং সমাজ অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে কি আপনারা মনে করেন না?
২১) বিয়ে কঠিন করা হলে ছেলে-মেয়েরা বিয়ে করতে নিরুৎসাহিত হয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হতে পারে। ছেলে-মেয়েদের অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখার একমাত্র নিরাপদ উপায় হতে পারে বিয়ে। সুতরাং দেন-মোহরের সহজ শর্তকে কঠিনভাবে চিন্তা না করে সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বনিম্ন দেন-মোহর ধার্য্যরে মাধ্যমে বিয়ের ব্যব¯থা করে ছেলে-মেয়েদের অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত রাখতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন কি?
২২) বাকিতে বিয়ের ক্ষেত্রে একজন দেনাদার, অন্যজন পাওনাদার। দেনাদার এবং পাওনাদারের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভাল থাকে না। সুতরাং বাকিতে বিয়ে, পরিবারের সুখের অন্তরায় হতে পারে।
২৩) সমাজ মানুষের সৃষ্টি। সমাজ নিজস্ব গতিতে চলতে পারে না। মানুষ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য সমাজকে যেভাবে চালায় সেভাবে সমাজ চলবে। কারণ মানুষের মঙ্গলের জন্যই সমাজের সৃষ্টি। তাই না?
২৪) বিয়ে কোন রিক্স নয়। বিয়ে নিরাপদ, বিয়ে বিশ্বাস, বিয়ে সম্মান এবং আস্থা। আপনার মতামত কী?
বিঃদ্রঃ আপনার প্রিয় ছেলে, ভাই, ভাতিজা, চাচা, দাদা, নানা, বন্ধু বা কাছের কেউ হতে পারে কারও স্বামী এবং স্বামী আবার স্ত্রীর কুটুম্বদেরও কাছের মানুষ। সুতরাং তাকে বিপদে ফেলবেন না। আপনি যদি অন্যের ছেলেকে বিপদে ফেলতে চান আপনার ছেলেও একই বিপদে পড়বে। আমরা একে অন্যের, কারও শত্রু নই।
২| ৩০ শে জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:১২
সব্র্দা সত্যবাদী বলেছেন: কাজী অফিস উত্তরা থেকে প্রাপ্ত
৩| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৩:১০
শামীম পাটওয়ারী বলেছেন: দেনমোহর নিয়ে কিছু গুরুত্তপূর্ন সমস্যার উত্তর নিয়ে দারুন একটি ভিডিও দেখুন এখানে
https://www.youtube.com/watch?v=QXhpFcKaUrM
।
৪| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ২:৩১
আশিক চন্দন বলেছেন: যিনি পোস্ট দিয়েছেন, তিনি কি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেয়ে গেছেন? আমিও জানতে চাই। যদি উত্তর পেয়ে থাকেন তাহলে সেই উত্তরগুলো উল্লেখ করলে উপকৃত হবো। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জুলাই, ২০১১ বিকাল ৪:৪৬
সোজা সাপটা বলেছেন: কাজী সাহেব মনে হয় ভালো উত্তর দিতে পারবেন।
যোগাযোগ: মগবাজার কাজী অফিস