![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আস সালামু ‘আলাইকুম,
আলহামদুলিল্লাহির রব্বিল ‘আলামিন, ওয়াস সলাতু ওয়াস স্বলামু ‘আলা রসুলিল্লাহ।
আপনি কি যে ধর্মের মানুষ হন না কেন, তাহলে আসুন একটি বাস্তব ঘটনা পড়ি ও বুঝিঃ
আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা’আলা সর্বপ্রথম আরাশ, কুরসী, সারা দুনিয়া, আসমান, জমীন, গ্রহ, নক্ষত্র সৃষ্টি করলেন,তারপর সৃষ্টি করলেন জীন জাতি। (সুরা আল-হিজরঃ ২৭)
...... কালক্রমে জ্বিন জাতির অবাধ্যতায় আল্লাহ তাদের শাস্তি দেয়ার পর স্থির করলেন মানব জাতি তৈরি করবেন।
তিনি বললেনঃ
“স্মরন কর যখন তোমার রব ফেরেশ্তাদের বলেছিলেন ‘আমি পচা গলা কাদার ঠনঠনে গারা থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছি।’ ”(সুরা আল-হিজরঃ২৮)
তারপর আদাম(আঃ) কে উচ্চ মর্যাদা দিলেন। (সুরা আল-হিজরঃ ৩০) কিন্তু ইবলীস(শায়তান) আল্লাহর আদেশকে অমান্য করল। আল্লাহ তাকে জান্নাত থেকে বের করে দিলেন আর ইবলীস আল্লাহর নিকট সময় চাইলো কিয়ামাত পর্যন্ত, যেন সে মানবজাতিকে বিপথগামী করতে পারে। এদিকে আল্লাহও তার চ্যালেঞ্জ গ্রহন করলেন এবং তার প্রকৃত বান্দাকে রক্ষা করার কথা জানালেন। (সুরা আল-হিজরঃ ৩১-৪৩)
এরপর আল্লাহ তা’আলা আমাদের আদি পিতা ও মাতাকে জান্নাতে থাকতে দিলেন এবং একটি গাছের নিকট না যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। (সুরা আ’রাফঃ ১৯)
এরই মাঝে আল্লাহ আমাদের আদি পিতা আদাম (আঃ) এর পিঠ থেকে আমাদের সমস্ত মানব জাতিকে(আমাদের) বের করে তাঁর সামনে হাজির করলেন এবং আমাদের সবার থেকে সাক্ষ্য নিলেনঃ
“আমি কী তোমাদের রব নই?” (সুরা আ’রফঃ ১৭২)
আমরা ও জবাব দিলামঃ
“অবশ্যই!!! আপনি আমাদের রব ” (সুরা আ’রফঃ ১৭২)
তারপর আল্লাহ আমাদের বললেন ‘আমরা যেন ভুলে না যাই! আর অজ্ঞতাবশত আল্লাহর সাথে শিরক না করি......কিয়ামাতের দিন এই সাক্ষ্য তুলে ধরা হবে।’ (সুরা আ’রফঃ ১৭৩)
কিন্তু একদিন আমাদের আদিপিতা আদাম(আঃ) এবং মা হাওয়া (আঃ) ইবলীসের প্রচারনায় ভুল করে বসলেন। (সুরা আ’রাফঃ ২০-২২) তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেন আল্লাহ তাদের ক্ষমাও করলেন আর তাদের নামিয়ে দিলেন জান্নাত থেকে পৃথীবিতে (সুরা ত্বহাঃ ১২৩) এবং জানিয়ে দিলেন মৃত্যুর মাধ্যমে মানব জাতিকে বের করে তাদের আসল ঘর (জান্নাতে) ফিরিয়ে আনা হবে। (সুরা আ’রাফঃ ২৩-২৫)
এরপর শয়তান অনেক ভাবে তাদের কুপ্রচারনা দিতে লাগলো যেন তারা (মানব সন্তান) আল্লাহর সাথে কুফরী করে তাকে ভুলে যায় কারন সে ওয়াদা করেছিলো,আল্লাহর সাথে চ্যালেঞ্জ করেছিল।
(সুরা আল-হিজরঃ ৩৯-৪০)
এরপর বিভিন্ন ওয়াস ওয়াসার মাধ্যমে শয়তান সর্বপ্রথম শিরক (মুর্তিপূজা)এর প্রচলন ঘটায়। ‘ওয়াদ’ ছিলেন প্রথম পূজিত ব্যাক্তি যার মুর্তি বানানো হয়। এছাড়াও ৫ জন আল্লাহর নেককার বান্দাও ছিলেন নুহ পুর্ববর্তী আমলে। (সুরা নুহঃ ২৩)
যুগে যুগে নাবী রসুলরা এসেছেন...... এরকম ২৫ জন নাবী রসুল এর নাম আমরা কুরআন থেকে জানতে পেরেছি। যারা এসেছেন শুধুমাত্র আল্লাহর দিকে আহবান করার জন্য তারা শুধু বলতেনঃ
“বল,লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ”
কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে বারবার মানুষ এই আহবান ভুলে যায়। এমনকি মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহীম (আঃ)ও তার পরবর্তী প্রজম্মকে শিরক এর হাত থেকে বাচানোর জন্য আল্লাহর নিকট দু’আ করে গিয়েছেন। (সুরা ইব্রাহীমঃ ৩৫)
পিতা তাঁর পুত্রকে আদরের সাথে বলে গিয়েছেনঃ
“আব্বু! শিরক করো না!” (সুরা লোকমানঃ ১৩)
ছেলে তার বাবাকে বলেছিলোঃ
“বাবা! আপনি শয়তানের ইবাদাত করিবেন না” (সুরা মরিয়ামঃ ৪৪)
এভাবে মানুষ ও জ্বীন নির্বিশেষে সবাইকে এক আল্লাহর পথে আহবান জানিয়েছেন সব যুগের নবী ও রসুলরা। সর্বশেষ আসলেন মুহাম্মাদ(সঃ) যিনি ১৪০০ বছর পুর্বের এক নিরক্ষর জাতির মধ্য থেকে
(সুরা জুমু’আঃ ২) নবুয়্যত পেয়েছিলেন আর পেয়েছিলেন এক অসাধারন মুজিজা ‘কুরআন’।
কুরাআন আল্লাহ তা’আলা প্রথমে দিলেন আসমান,জমীন,পাহাড়ের উপর তারা বলল এই কুরআন এর দ্বায়িত্ব তারা নিতে পারবে না কিন্তু মানুষ এক কথায় এই কুরা’আন মেনে নিলো। (সুরা আহজাবঃ ৭২)
আফসোস মানুষ বড়ই অজ্ঞ আর জালেম...... সে কুর’আন নিলো ঠিকই কিন্তু সেটা ঠিকমতো মানতে পরলো না অথচ আল্লাহ বললেনঃ
আমি কুর’আন কে সহজ করে দিয়েছি বুঝার জন্য... (সুরা কামারঃ ১৭)
কিন্তু আমরা বুঝতে পারলাম না!!! তাই আল্লাহ আমাদের তিরস্কার করলেন। (সুরা আহজাবঃ ৭২)
কারন, আমরা আমাদের নিজ বাড়িতে(জান্নাতে) যাওয়ার চাইতে এই ক্ষনিকের দুনিয়াকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে ফেলেছি। পরিফলে আমরা নিজের অজান্তে করছি ‘শিরক’...... অথচ আল্লাহ সাবধান করে দিয়েছেনঃ শিরক এর গুনাহ কোনদিন ক্ষমা করা হবে না। অর্থাৎ আমরা কোনদিন জান্নাতে জেতে পারবো না বরং জাহান্নাম এ সারাজীবন থাকতে হবে। (সুরা নিসাঃ ৪৮)
এবার শ্রেষ্ঠ রসুল(সঃ) মারা গেলেন যদিও তিনি সতর্ক করে গিয়েছিলেন শিরক থেকে দূরে থাকতে কিন্তু তার মৃত্যুর পরপরই আবার শুরু হলো মহাউম্মাদনায় ‘শিরক’। কেননা আর কোন নাবী রসুল আসবেন না............... তাই আজ এই একবিংশ শতাব্দিতে পুর্বের তুলনায় হাজার গুন বেশি শিরক, কুফরী, হারাম চেপে বসেছে।
তাই আল্লাহর তাওহীদ প্রচারে মু’মিনদের প্রতি আল্লাহর সাবধান বানীঃ
“হে মু’মিন গন! তোমাদের মধ্য থেকে কেউ দ্বীন থেকে ফিরে গেলে নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন এক দল আনবেন (পুর্বের দলকে বাদ দিয়ে) যাদের তিনি ভালোবাসবেন;যারা তাঁকে ভালোবাসবেন..” (সুরাঃ মায়িদাহঃ ৫৪)
তাই আমরা যে কোন দল,মত, গোত্র বা ত্বরীকা বর্জন করে শুধুমাত্র আল্লাহর বিশুদ্ধ তাওহীদ ও রসুল(সঃ) এর সহিহ সুন্নাহকে প্রচার এর উদ্দ্যেশে যাত্রা শুরু করেছি।
আল্লাহ আমাদের এখলাস ও তাওহীদভিত্তিক এই প্রচার কবুল করুন এতে বরকত দিন। আসুন আমারা আমাদের আসল গৃহে (জান্নাতে) ফিরে যেতে প্রচেষ্টা চালাই। (আমীন)
©somewhere in net ltd.