নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু উযাইর

আবু উযাইর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইমার্জেন্সির দিন-রাত্রি

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৩

দশ বছরের মেয়েটির এক চোখে মোটা করে বাঁধা প্রেশার ব্যান্ডেজ। সেই ব্যান্ডেজ ভিজে সেখান থেকে গড়িয়ে রক্ত চুঁইয়ে পড়ছে ট্রলিতে। তার একটি চোখের টিউমার অপারেশন হয়েছিলো আজ দুপুরে, অন্য একটি হাসপাতালে। অপারেশনের পর থেকে সেই যে তার চোখে রক্তপাত শুরু হয়েছিলো, তা আর বন্ধ করা যায়নি। বিকালেই তাকে রেফার করা হয়েছিলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।



কিন্তু কোন এক দালালের খপ্পড়ে পড়ে তারা যায় অন্য কোথাও। সেখানে বন্ধ করা যায়নি তার রক্তপাত। সেখান থেকে কোন রেফারেল কাগজ না দিয়ে একটি চিরকুটে এই হাসপাতালের ঠিকানা লিখে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।



মেয়েটিকে দেখে চমকে উঠলাম। চেহারা রক্তশূণ্য হয়ে ফ্যাকাশে হতে শুরু করেছে। পালস বাড়ছে আর কমে আসছে ব্লাড প্রেশার। যখন দেখছি তখন সে মাকে বলছে, “ও মা, একটু পানি খাইবার মন চায়”। আহ, তার মস্তিষ্ক প্রোটেকশন নিতে তাগাদা দিচ্ছে। পিপাসা বাড়িয়ে পানি দিয়ে রক্তশূণ্যতার ঘাটতি সাময়িকভাবে পূরণ করার চেষ্টা করছে। শকের সাইন। শকে চলে যাচ্ছে সে। ব্লাড প্রেশার নেমে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। রক্তপাত বন্ধ না করতে পারলে মৃত্যু অনিবার্য। তা করতে হবে একজন ভাসকুলার সার্জন দিয়ে, এই মুহূর্তে তা আছে একমাত্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।



সাথের একজন পুরুষ লোককে তাড়াতাড়ি সিএনজি আনতে বললাম। সময় খুব দ্রুত কমে আসছে। মেয়ে|টিকে পানি খাওয়ানো হচ্ছে, কিন্তু তৃষ্ণা আর মিটছে না। এরই মধ্যে অন্য একটি রোগীর লোকজন সহ হৃদয়বান কিছু মানুষ গাড়ী ঠিক করে নিয়ে আসলো, এমনকি ভাড়াও দিয়ে দিলো কেউ একজন। শেষবারের মতো রোগীর পালস দেখলাম। আরো কিছুটা দ্রুত হয়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। ও আল্লাহ, এই কি তার জীবনের শেষ সময় চলছে? তাকে গাড়ীতে উঠানো হলো।



জানিনা জীবন নাকি মৃত্যু তার ভাগ্যে লেখা রয়েছে আজ।

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.