নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ওমা এটা তো এক মিনিটের কাজ।
ওরে বাবা, এটা ভীষণ ভারী।
বাক্য দু’টিতে ‘মা’ এবং ‘বাবা’ শব্দ দু’টির ব্যবহার ভাববার মত। ছোটবেলা থেকে আমাদের পরিপার্শ্ব আমাদের মনোজাগতিক দুনিয়ায় জেন্ডার রোলকে এমন এক আদলে সেট করে দিয়েছে যে আমরা অনায়াসসাধ্য কোন কিছুর সাথে নারীকে এবং আয়াসসাধ্য কোন কিছুর সাথে পুরুষকে মিলিয়ে দেখতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করি। এবং এ বিষয়টি অজান্তেই আমরা আত্তীকরণও করে ফেলি। তাই আমাদের উচ্চারণও এই সত্যকে মাঝে সাঝেই প্রকাশ করে দেয়।
[[নারী অবদমনের ইতিহাস ‘সভ্যতা’ প্রত্যয়েরও বেশি বয়সী। এই অবদমনের শেকড় প্রায় এক হাজার খ্রীষ্টপূর্বের ইতিহাসের সেই অধ্যায়ে প্রোথিত যার নৃতাত্ত্বিক নাম ‘নবোপলীয় যুগ’। ফ্রেডরিক এঞ্জেলস তার দ্য অরিজিন অফ দ্য ফ্যামিলি, প্রাইভেট প্রোপার্টি আন্ড দ্য স্টেট (ইংরেজি অক্ষর টাইপ হচ্ছে না কেন যেন) গ্রন্থে সম্পদের ধারণার সূত্রপাতের সময়কেই নারীর অবদমনের সূচনাকাল বলে উল্লেখ করেছেন। নবোপলীয় যুগে পরিবারের ধারণা গড়ে ওঠার পরপরই মনযোগের কেন্দ্র ক্রমেই গোষ্ঠীগত সম্পদ থেকে পারিবারিক সম্পদের দিকে স্থানান্তরিত হতে থাকে। নারীর প্রজননক্ষমতার কারণে নতুন এক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে দেখা হয় সম্পদ হিসেবে। উৎপাদন কর্মকাণ্ডের ভার দীর্ঘ এক প্রক্রিয়ায় পুরুষের হস্তগত হওয়ার মাধ্যমে সম্পদের উপর কর্তৃত্ব চলে যায় পুরুষের হাতে আর নারী এক নিষ্ক্রিয় অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়। আশ্চর্যের বিষয় হল ‘আদিম সমাজ’ মাতৃতান্ত্রিক হওয়া সত্ত্বেও পরবর্তী সময়ে এই নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে হাজার বছর ধরে নারীর কোন অবস্থান দেখা যায় নি। মূলত ইউরোপজুড়ে যখন রেনেসাঁ’র উদ্ভব, তখন নারীকে অধিকারের দাবীতে স্বল্প পরিসরে অবস্থান নিতে দেখা যায়। এই মৃদু আন্দোলন ক্রমে একটি বিক্ষুব্ধ তরঙ্গের জন্ম দেয় যার ঢেউ আস্তে আস্তে বিশ্বের সব অংশেই লাগে। এই লেখাটির মূল বিষয় এদিকে নয়। তাই এই অধ্যায় আপাতত এখানেই থাক।]]
আমার মূল কথাটি হল খেলার আসরে নারী। অন্যান্য সব ক্ষেত্রের মত এখানেও নারীর প্রবেশ ঘটে অনেক পরে। (উইকিপেডিয়া থেকে জানতে পারি) প্রাচীন অলিম্পিক এর যুগে মহিলাদের খেলা দেখার অনুমতি পর্যন্ত ছিল না। অষ্টাদশ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীতে খেলাধুলায় নারীরা একটু একটু করে আসতে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে খেলাধুলায় নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ শুরু হয় গত শতাব্দীর শেষ দিকে।
অ্যাথলেটিক্স’এ নারী এবং পুরুষের জন্য আলাদা ক্যাটাগরি দেখা যায়। এই ক্ষেত্রে ক্যাটাগরির শুরুতে ‘পুরুষদের’ অথবা ‘মহিলাদের’ কথাটি উল্লেখ থাকে। অলিম্পিক’এর সাম্প্রতিক আসরগুলোতে দু’একটা মিক্সড ক্যাটাগরির কথা শুনেছি। কিন্তু এই মিক্সচার নিছক ক্যাটাগরিক্যাল। ক্রীড়াঙ্গনে পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নারীর সঙ্গে সহ-অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করতে দ্বিধা বোধ করে বলেই মনে হয়। ২০০৩ সালে কোন একটি গলফ টুর্নামেন্টে বিজয় সিং নামের এক খেলোয়াড় আনিকা সোরেনসাম নামের একজন মহিলা গলফারের সাথে জুটি বাঁধার প্রস্তাবে টুর্নামেন্ট ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
ফুটবল, ক্রিকেট ? ক্রিকেটে নারীর অংশগ্রহণও গত শতকের শেষের দিককার কথা। ক্রিকেট মানেই পুরুষদের ক্রিকেট। মহিলাদের ক্রিকেটেই শুধু ‘মহিলাদের’ কথাটির উল্লেখ পাওয়া যায়। একই কথা ফুটবলেও। ১৯৯৪ এর ফুটবল বিশ্বকাপই ছিল আমার দেখা প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ। খেলা দেখতে দেখতে আমার শিশু মনে প্রশ্ন জেগেছিল ফুটবল দলে শুধু পুরুষ খেলোয়াড় কেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রশ্নটাকে অবান্তর মনে হচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় বয়েসী মনে প্রশ্নটি আবার নতুন করে জেগেছিল। এমন একটা ফুটবল বা ক্রিকেট দল কল্পনা করতে চাইতাম যেখানে নারী পুরুষ সবাই আছে। ইদানিং জানলাম ইংল্যান্ডের কোচ মার্ক লেইন সাসেক্স কাউন্টির দ্বিতীয় একাদশে সারাহ টেইলর এবং হোলি কলভিন নামের দুই মহিলা ক্রিকেটারের জন্য দ্বার উন্মুক্ত করেছেন। অনেক ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে টেইলর এবং কলভিন এর ক্রিকেট দলে সংযুক্তি আমার কল্পনার সেই দলটির একটি বাস্তব সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলছে।
সারাহ টেইলর
Click This Link
http://en.wikipedia.org/wiki/Women's_sports
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৪৭
অচিন্ত্য বলেছেন: আমি আসলে পরিসংখ্যানগুলো একেবারেই জানি না। ধন্যবাদ হাসান ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৪৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনি একটু এ্যাথলেটিকসে নারী আর পুরুষদের টাইমিংগুলা ঘেঁটে দেখেন। তাহলে আর নারী পুরুষ আলাদা ক্যাটাগরি নিয়ে আপনার উষ্মা থাকতো না। আরে মেয়েরা যদি উসাইন বোল্ট, জাস্টিন গ্যাটলিন, ইয়োহান ব্লেকদের সাথে দৌড়াইতো তাইলে তারা জীবনে কোন পদক পাইতো? ২০১২ তে মহিলাদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে জয়ী শেলি এ্যান ফ্রেজার এর টাইমিং হৈল ১০.৭৫ সেকেন্ড। আর পুরুষদের সপ্তম স্থান অধিকারীর টাইমিং ৯.৯৮ সেকেন্ড। জ্ঞানবুদ্ধির দিক দিয়ে পুরুষ-নারী বিভেদ করাটা অন্যায়, তবে শারিরীক দিক দিয়ে নারী পুরুষের চেয়ে অনেক পিছায় আছে এটা মেনে নিয়েই ক্রীড়া সংগঠন করা উচিত।