নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাল ২০১০। গুডবাই ব্লু স্কাই। ক্যাম্পাস ছেড়ে রাজধানীর একটা কলেজে মাস্টারি নিয়ে আদাবরে আস্তানা গেড়ে বসেছি। এই এলাকায় যাতায়াত অবশ্য বছর তিন আগ থেকেই। রিং রোডটা যেখানে মিরপুর রোডের সাথে মিশেছে, অর্থাৎ শ্যামলী হলটা যেখানে ছিল তার কাছাকাছি বিডিআর শপ, বর্তমানে সম্ভবত সমবায় বাজার নাম হয়েছে, তার উল্টো দিকে একটা সুন্দর বাড়ি চোখে পড়ত। গলির ভেতর গলি, তার ভেতরে গলি। এর ভেতরেও কীভাবে যেন হাওয়া পথ চেনে। তবু সে তো শহুরে হাওয়া। সে হাওয়ায় দম বন্ধ হয়ে আসে। তখন বিকেল বলতে সন্ধ্যার হোস্টেল ডিউটির প্রস্তুতির সময়। তখন ছুটি বলতে সপ্তাহের ক্লান্তি মুছবার দিন। ছুটির দিনটায় রিং রোড ধরে একটা চক্কর। শ্যামলী খেলার মাঠ, পাশে বিডিআর শপ, রাস্তার ওপাশে সেই সুন্দর বাংলোমতন দোতলা বাড়িটা। দুই দিকে দু’টা গেট। গেট পেরিয়ে পার্কিং।
কর্মস্থল বদল। অফিস ধানমণ্ডি। সপ্তাহান্ত পরিশ্রমে প্রাণান্ত। লেগুনায় বাঁশবাড়ি হয়ে সাতমসজিদ রোড ধরে ধানমণ্ডি সাতাশের মোড়। কোনদিন পথেই নাশ্তা, কোনদিন অফিসে হাজিরা দিয়ে পড়িমড়ি করে ক’টা মুখে পুরে নাস্তার ডেমো। সেই বাড়িটা অনেকদিন দেখা হয় না। এর মাঝে অফিস ধানমণ্ডি থেকে মহাখালি শিফট। ওয়ান লাইনে যাতায়াত। যাওয়ার সময় গাড়িটা তাজমহল রোড ধরে রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। কলেজটা আগের মত নেই। অনেক কনস্ট্রাকশন হচ্ছে। হবেই তো। শহরও তো আগের মত নেই। অনেক মানুষ, অনেক ধোঁয়া। গাড়িটা ফিরতি পথে শ্যামলী দিয়ে ঢোকে। ওভারব্রিজ, শ্যামলী, বিডিআর শপ, সেই বাড়িটা। ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যেত। মাঝে মাঝে দেখতাম জানলার কাঁচ হালকা আলোয় ঘুম ঘুম।
পুরনো বই কিছু বিক্রি করে দেওয়া দরকার। বই এর স্তূপ ঘাঁটতে ঘাঁটতে আর কোনগুলো বিক্রয় হবে তা আঁটতে আঁটতে চোখ আটকে গেল এইচএসসি’র বাংলা বইখানায়। খুব পড়তাম। আমি অনার্সে বাংলা পড়তে চেয়েছিলাম। বিধির লিখন না যায় খণ্ডণ। বইখানা উল্টাতে উল্টাতে ‘একটি তুলসী গাছের কাহিনী’- সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। গল্পখানা আমাকে খুব স্পর্শ করেছিল। আমার মাস্টার্সের রিসার্চ ওয়ার্কের প্রাইমারি সোর্স হিসেবে এই গল্পখানাও ছিল। সেদিন আরো একবার না পড়ে থাকা গেল না। সে রাতে ঘুমের ঘোরে গল্পটি রিকনস্ট্রাক্ট হল। গল্পের চরিত্রদের মধ্যে নিজেকেও দেখতে পেলাম। আর গল্পের বাড়িটা ঘুমের ভেতর চেহারা বদলে হয়ে গেল বিডিআর শপের উল্টোদিকের সেই সুন্দর বাংলো বাড়িটা।
বাড়িটাতে মানুষ বসতির চিহ্ন দেখতাম। মাঝে সাঝেই পার্কিংএ গাড়ি দেখতাম। এক বা একাধিক। ছাদে দেখতাম কাপড় শুকাচ্ছে। বাড়িটার সামনে একটা দোলনা। তার পাশে চার্চের বড় ঘণ্টা আকৃতির একটা সিমেন্টের গঠন। বাড়ির বাইরে অসংখ্য টবে অনেক ধরণের গাছ, কয়েকটা সাইকাস জাতীয় গাছ আর কয়েকটা ডেকোরেটিং শ্রাব। দোতলার দুই পাশের দুই বারান্দার কোনটাতে কখনো কাউকে দেখিনি। কারা থাকে এই বাড়িতে ? একটা যুদ্ধ লাগলে অনেক মানুষ হয়ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। এই বাড়ির লোকজনও কি পালিয়ে যাবে ? পালিয়ে গেলে বাড়িটা কি দখল হয়ে যাবে ?
আজ অনেক দিন পর আবার সেই বাড়িটার সামনে দিয়ে যেতে যেতে মনে পড়ল প্রথম দেখার অনেক পরে খেয়াল করেছিলাম বাড়িটার নাম রজনী।
১৮ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৮:২৩
অচিন্ত্য বলেছেন: পিঙ্ক ফ্লয়েড শোনা হয় না অনেক দিন। আহা, এমন শিক্ষক পাওয়া ভাগ্যের বিষয়। নিশ্চয়ই শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক তাঁকে খুব একটা পছন্দ করতেন না। হ্যাঁ, উপন্যাসখানা পড়েছি। 'জোছনা ও জননীর গল্প' এখনো পড়া হল না। পড়তে হবে। আমার পরিচিত যারা পড়েছে সবাই বলেছে পড়তে পড়তে তাদের চোখ ভিজে এসেছিল।
২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪১
অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: ছোট বেলায় পুরানো ব্রিটিশ আমলের একটা বাংলো বাড়িতে থাকতাম । সে কথা মনে পড়ে গেল । কলেজে পড়া গল্পটার কথাও ।
১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৫৮
অচিন্ত্য বলেছেন: তাই নাকি ! বাড়ির ছবি শেয়ার করলে ভাল লাগবে
অনেক দিন আপনার কোন সাড়া শব্দ নেই
নতুন লেখা চাই
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: Did-did-did-did-you see the frightened ones?
Did-did-did-did-you hear the falling bombs?
Did-did-did-did-you ever wonder why we had to run for shelter
গানটার কথা মনে করায় দিলেন অনেকদিন পর। গল্পটার কথাও। আমার নিরানন্দ কলেজ জীবনে আনন্দময় মুহূর্ত ছিলো বাংলা ক্লাশ। আমাদের ম্যাডাম খুব যত্ন করে পড়াতেন। আমরা ভালো নম্বর পাবো কী না তা নিয়ে তার খুব একটা মাথাব্যথা ছিলো না। সাহিত্যের নির্যাসটা আস্বাদন করতে পারছি কী না সেটাই তার মূল লক্ষ্য ছিলো।
রজনী নামে হুমায়ুন আহমেদের একটা উপন্যাস আছে। পড়েছেন?