নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ আমি

আকাশের আঁধারে নিশ্চুপ কেউ একজন......

আঁধার আকাশ

আকাশের আঁধারে নিশ্চুপ কেউ একজন......

আঁধার আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দৃষ্টিভঙ্গী (পর্ব – ১)

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৮

মাঝে মাঝে কেন জানি মনে হয় কোন সমাজে বাস করছি এটা নিয়ে একটু মাথা ঘামানো দরকার। মুক্ত ও প্রগতশীল চিন্তা আমাদের মাঝে, আমাদের মানুষের মাঝে কবে থেকে জন্মাবে সেটার আসলেই কোন ঠিক ঠিকানা নেই।



আমার কথা শুরুতেই খানিকটা জটিল মনে হতে পারে। তবে বলার কিছু সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। একটা উদাহরণ দিয়েই শুরু করা যাক। কয়েকদিন আগে আমার জনৈক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করছিল, “ওই তোর সমস্যা কি রে?” আমি কিঞ্চিৎ টাশকিত স্বরেই বললাম, “সে কি? নাস্তার বিল তো আমি দিলামই! আবার খেপছিস কেন?” বন্ধু তখন চোখ পাকিয়ে বলল “গাধার মত কথা বলবি না, তুই ভাবী কে নিয়ে বেড়াতে যাস না কেন সেটা জিজ্ঞেস করছি!” আমি বললাম, “হঠাৎ বেড়াতে যাওয়ার কথা আসলো কোত্থেকে, তোকে বিচার দিয়েছে বুঝি?” বন্ধুবর রেগে টং! ধমক দিয়ে বলল, “বলতে হবে কেন? আমি কি দেখি না? তুই যাস না ক্যান আমারে সেটা বুঝা আগে!”



উত্তরটা আমি দিয়েছিলাম কেন আমি ওকে নিয়ে একা ঘুরতে যাই না, বেচারার সেটা পছন্দ হয় নি! আরেকবার উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যাক। একবার এক বন্ধু কে দেখলাম কোন একটা পার্কে তার প্রেমিকা কে নিয়ে বসে আছে। আমি দূর থেকেই দেখেছি, তাই কাছে গিয়ে ওদের কে ডিস্টার্ব না করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি দূরে বেঞ্চে বসে বাদাম চিবুচ্ছি, মাঝে মাঝে ওইদিকে চোখ যায়। একসময় লক্ষ করলাম তারা একজন আরেকজনের হাত ধরল। বিষয়টা কেবল হাত ধরাতেই সীমাবদ্ধ, কিন্তু আশে পাশের মানুষ যারা আছে তাদের সবার দৃষ্টি একসাথে নিবদ্ধ হল ওদের দুইজনের দিকে। কেউ কৌতূহলী, কেউ মজা দেখছে, কেউ বিরক্তির দৃষ্টি তে তাকাচ্ছে। হঠাৎ করে কোত্থেকে দুটো ছোকরা মত এসে জুটল। সে কি হাসাহাসি তাদের! সরাসরি না বলে অনির্দিষ্টভাবেই ওদের উদ্দেশ্যে নানা কথা বলছিল।



এখন আমার কথা হল যে দেশে মানুষ সামান্য হাত ধরা কে স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারে না, তারা সমাজে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করবে কি ভাবে? পার্কে গেলে মানুষের দৃষ্টি থাকে কোথায় যুগল বসে আছে, তারা রোমান্টিক কিছু করছে কি না সেদিকে আগে নজর দেয়া। আর ঢাকা শহরে তো কাছের মানুষকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার বিশেষ কোন জায়গা নেই। যা আছে সবই পাবলিক প্লেস। আর সেখানে গেলে হাজার জোড়া চোখ যদি আমার আর আমার সহধর্মিণীর দিকে নিবদ্ধ থাকে, সেখানে যাওয়াটা কতটুকু স্বস্তিকর তা ঠিক বোধগম্য নয়।



সমস্যাটা হচ্ছে, ধর্মের নামে কিছু ফতোয়া আমাদের দেশের মানুষকে শিখিয়েছে যে নারী পুরুষ একসাথে চলাটা পাপ। ভালোবাসা পাপ। প্রেম পূজারী দুইজন একে অন্যের হাত ধরাটা পাপ। আর একটা ব্যাপার যেটা বলতে খারাপ লাগছে যদিও এবং কিঞ্চিৎ অশ্লীলও শোনায়, তাও বলি! এক কুকুর কখনো অন্য কুকুরের খাওয়া দেখতে পারে না। আর এই স্বভাবটা কিভাবে যেন আমাদের বাঙ্গালীদের মাঝে ঢুকে পড়েছে। ঈর্ষা, লোভ তাদেরকে অন্য মানুষদের বিরক্ত করতে উৎসাহিত করে। এতে এক প্রকার বিকৃত মানসিক আত্মতৃপ্তি আছে।



এর প্রতিকার কি জানি না, খোঁজার চেষ্টাও করি নি। তবে এর সাথে যে “দৃষ্টিভঙ্গী” নামক ব্যাপারটার বিশাল যোগাযোগ আছে তা ঠিকই বুঝতে পারি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.