![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ফেরদৌস আল আমন। পৃথিবীর কাছে প্রশ্ন করি- কি আমি! কেনো আমি! উওরে পাই এক আকাশ শূণ্যতা; কখনো কখনো শূণ্যতা গুলোও মুখ খুলতে চায় অস্ফুট স্বরে বলতে চায় কিছু; বাতাসের হাহাকার তা পৌঁছতে দেয়না অব্যক্তই থেকে যায়, উওরের টুকরো টুকরো আশাগুলো. . . . College: bhaluka college '05 University: Mawlana Bhashani Science and Technology University B.Sc. Engg. · High School: bhaluka pilot high school '03
বর্ণপরিচয় নামে একটি প্রাথমিক ভাষাশিক্ষার বই প্রকাশ করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। অবশ্যই ‘লিখিত’ ভাষাশিক্ষার; মুখের ভাষা প্রায়ই শেখানোর দরকার হয় না। আজ থেকে দেড়শো বছর আগে, ১২৬২ বাংলা সনের পয়লা বৈশাখ বেরিয়েছিল তার ‘প্রথম ভাগ’। এতে আছে যুক্তব্যঞ্জনহীন একুশটি পাঠ। বর্ণমালা দিয়ে শুরু, শেষ পাঠ এক থেকে দশ সংখ্যার অঙ্ক আর শব্দগত রূপ। তার আগের আগের পাঠে লম্বা টানা বাক্য এসেছে— ‘পাঠশালার ছুটি হইলে, বাড়ী গিয়া, গোপাল পড়িবার বইখানি আগে ভাল জায়গায় রাখিয়া দেয়; পরে, কাপড় ছাড়িয়া, হাত পা মুখ ধোয়।’ আগের পাঠে এ রকম একটি টানা বাক্য— ‘ছুটী হইলে, বাড়ীতে গিয়া, রাখাল পড়িবার বই কোথায় ফেলে, কিছুই ঠিকানা থাকে না।’
‘দ্বিতীয় ভাগ’ বেরোল ঠিক দু’মাস পরে, ১ আষাঢ়, ইংরেজি সাল ১৮৫৫। এখন আমরা তাই দেড়শো বছর উদযাপন করছি, বর্ণপরিচয় প্রকাশের। দ্বিতীয় ভাগের শুরুতেই আছে যুক্তব্যঞ্জনের পাঠ, য-ফলা এসেছে প্রথম পাঠেই। বর্ণপরিচয়ের সজ্জা তখনকার সব বর্ণশিক্ষার বইয়ের মতোই বর্ণানুক্রমিক। প্রথম ভাগে আ-কার, ই-কার, ঈ-কার পর পর এসেছে; দ্বিতীয় ভাগে একই ভাবে সাজানো হয়েছে য-ফলা, র-ফলা, ল-ফলা।
বিদ্যাসাগর রচিত এই দু-ভাগের বর্ণপরিচয় বাঙালি শিশুদের বর্ণশিক্ষার জন্য লেখা বা প্রকাশিত প্রথম বই নয়। গবেষকদের তথ্য থেকে পাই, ঊনচল্লিশ বছর আগেই শ্রীরামপুর মিশন থেকে বেরোয় ‘লিপিধারা’ (১৮১৬); ১৮১৮-তে কলকাতার স্কুল বুক সোসাইটি প্রকাশ করে বর্ণমালা— রচয়িতা জেম্স স্টিউয়ার্ট। মাঝখানেও বেরিয়ে যায় বেশ কয়েকটি বর্ণপরিচয়ের বই। যার মধ্যে সব চেয়ে জনপ্রিয় হয়েছিল ‘পাখি সব করে রব’-খ্যাত মদনমোহন তর্কালঙ্কারের শিশুশিক্ষা। তার প্রথম ভাগ বেরোয় ১৮৪৯-এ, দ্বিতীয় ভাগ ১৮৫০-এ। বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়-এর অর্জন আলোচনা প্রসঙ্গে এ বইদুটি গুরুত্বপূর্ণ।
গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, এ বইদুটি বিদ্যাসাগরের সাক্ষাৎ প্রেরণা, এবং এ বইদুটির কাছে বিদ্যাসাগরের ‘ঋণ’ও কম নয়। ঋণ কথাটির উল্লেখে আমাদের একটু অস্বস্তি হতেই পারে, কিন্তু অধ্যাপক আশিস খাস্তগীরের মতো গবেষকেরা দেখিয়েছেন যে, বর্ণপরিচয়ের ‘পরীক্ষা’য়, অর্থাৎ ব র ক ধ ঝ ইত্যাদি বিন্যাসে বিদ্যাসাগর প্রায় হুবহু মদনমোহনের অনুসরণ করেছেন; মদনমোহনের বই থেকে কিছু পাঠাশ্রিত বাক্যও বর্ণপরিচয়-এ ঠাঁই নিয়েছে; মদনমোহনের যুক্তব্যঞ্জনের শব্দগত উদাহরণের অনেকগুলিই (১৭০টিতে ১৩১টি) বর্ণপরিচয়-এ পাওয়া যায়, আর দুয়ের দ্বিতীয় ভাগের ভূমিকার কথাবার্তাও অনেকটা এক। অর্থাৎ বর্ণপরিচয়-কে অভিনব মৌলিক রচনা বলা যাবে না। আসলে দুটি বইই খানিকটা দুই বন্ধুর সহযোগিতার ফল। মদনমোহনের শিশুশিক্ষা শেষ পর্যন্ত চারটি ভাগের সিরিজ হিসেবে বেরিয়েছিল। তার চতুর্থ ভাগটি ছিল বিদ্যাসাগরেরই রচনা, যা পরে বিচ্ছিন্ন ভাবে বোধোদয় নামে প্রকাশিত হয়। শিশুশিক্ষা আর বর্ণপরিচয় কিছুটা অসংলগ্ন ভাবে হলেও দুই বন্ধুর নৈকট্য আর বিচ্ছেদের একটি প্রচ্ছন্ন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে।
পরিচয় কী ভাবে হচ্ছে, বর্ণের :
‘বর্ণপরিচয়’-এর শিশুশিক্ষা থেকে এই বিচ্ছেদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে বিদ্যাসাগরের স্বাতন্ত্র্য, এবং তাঁর পাঠ-বিন্যাসের না হোক, দৃষ্টিভঙ্গির মৌলিকত্ব। প্রথমত লক্ষ করি, শিশুশিক্ষা যেখানে পদ্য অর্থাৎ মিলযুক্ত বাক্য বহুল পরিমাণে ব্যবহার করেছে, বর্ণপরিচয় সেখানে নিছক গদ্যময়। শিশুশিক্ষা-র প্রথম ভাগেই আছে ‘পাখী সব করে রব রাতি পোহাইল’ শীর্ষক পদ্যটি। তা ছাড়া দ্বিতীয় ভাগে আছে ‘অনিয়মে রাজ্য নাহি রয়। কুনটের নাট্য কিছু নয়’ ইত্যাদি। পরের সংস্করণগুলিতে অবশ্য মদনমোহন মিলযুক্ত বাক্যের পরিমাণ বেশ কমিয়েছেন। বিদ্যাসাগর পদ্য কিছুই ব্যবহার করেননি। এমনকী, যে ‘জল পড়ে। পাতা নড়ে’ স্মরণ করে রবীন্দ্রনাথ উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন, তা বর্ণপরিচয়-এর প্রথম ভাগে কোথাও নেই। ‘৮’ পাঠে আছে কাছাকাছি সংগঠনের কিছু বাক্য— ‘কাক ডাকিতেছে। পাখি উড়িতেছে। পাতা নড়িতেছে। গরু চরিতেছে। জল পড়িতেছে। ফল ঝুলিতেছে।’ এর মধ্যে পদ্যের ছোঁওয়া খুব বেশি নেই। শিশুশিক্ষায় তা ছিল, এবং প্রবোধচন্দ্র সেন অনুমান করেছেন শিশুশিক্ষার স্মৃতিই রবীন্দ্রনাথকে বেশি প্রভাবিত করেছিল।
কেন নেই, এ প্রশ্নটা উঠতেই পারে। পরে যোগীন্দ্রনাথ সরকারের হাসিখুসি (১৮৯৭) আর রবীন্দ্রনাথের সহজ পাঠ-এর (১৯৩০) সাফল্য দেখে ভাবি, বিদ্যাসাগর এত সচেতন ভাবে এই প্রথম পাঠে পদ্যকে এড়িয়ে গেলেন কেন? এমন হতেই পারে যে, মদনমোহন অন্তত দুখানা কাব্যগ্রন্থের কবি, তিনি তো ‘কবিরত্ন’ পদবিই পেয়েছিলেন। বিদ্যাসাগরের ওই দিকে মতি ছিল না, যদিও তাঁর গদ্যে বহু ক্ষেত্রেই সৌন্দর্য ফুটেছে।
কিংবা আরও কি কোনও কারণ আছে? পরে বর্ণশিক্ষা-তাত্ত্বিকদের এবং ভাষাবিজ্ঞানীদের আলোচনায় কবিতার ভাষাসংগঠন কৃত্রিম এবং গদ্যের ভাষাসংগঠন তুলনায় বেশি স্বাভাবিক— এই বিরোধটা উঠে এসেছে। বিদ্যাসাগর কি এই রকম ভেবেছিলেন যে, গদ্যের স্বাভাবিক ক্রম বা অন্বয়ই আমি শেখাব; পদ্যের উল্টোপাল্টা সিনট্যাক্স আমার দরকার নেই। তা থেকে বাচ্চারা বাক্যের আদর্শ গঠন সম্বন্ধে ভুল সংকেত পেতে পারে।
আমরা জানি না বিদ্যাসাগর ঠিক এ রকম ভেবেছিলেন কি না। কিন্তু তাঁকে এখানে মদনমোহন থেকে বেশ আলাদা হতে দেখি। পরে মদনমোহনও নিজের থেকে আলাদা হয়ে আসেন, বিচ্ছিন্ন বন্ধুর গদ্যকে অংশত গ্রহণ করেন।
এগিয়ে কয়েকটি পা ফেলা :
দ্বিতীয়ত যে ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগর সব চেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয়ে আছেন তা তাঁর বর্ণমালার সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস। এ ক্ষেত্রে ‘প্রথম ভাগ’-এর প্রথম ও ষাট নম্বর সংস্করণের ‘বিজ্ঞাপন’-দুটি তাঁর এ সংক্রান্ত কাজের একটি স্পষ্ট ছবি তুলে ধরে। এই ছবি পুঁথির নিরাদর্শ ও প্রচলনবদ্ধ বর্ণমালা থেকে একটি নতুন ও আদর্শায়িত (স্ট্যাণ্ডার্ডাইজ্ড) বর্ণমালায় উত্তরণের। নতুন বর্ণমালা মুদ্রণযুগের উপযোগী হবে। সেই সঙ্গে শিশুদেরও শিখতে সুবিধে হবে। এই আদর্শ বর্ণমালায় একটি ধ্বনির জন্য একটি প্রতীকই আদর্শ।
বিদ্যাসাগর প্রচলনের বিরুদ্ধে গিয়ে যা যা করা উচিত ছিল সবটা পারেননি। এমনকী, আজ পর্যন্তও সবটা করায়নি। কিন্তু, তিনি প্রথম থেকেই ষোলো স্বরবর্ণ চৌত্রিশ ব্যঞ্জনের বাঁধা ছক থেকে দীর্ঘ ঋ-কার আর দীর্ঘ ৯-কার বাদ দিয়েছেন। এত দিন স্বরবর্ণের তালিকায় ছিল অনুস্বার ও বিসর্গ। বিদ্যাসাগর তাদের নিয়ে এলেন ব্যঞ্জনবর্ণের শেষে; আর চন্দ্রবিন্দুকে স্বতন্ত্র বর্ণের মর্যাদা দিলেন। তাকেও বললেন ব্যঞ্জনবর্ণ—যা আমাদের মতে ঠিক নয়। চন্দ্রবিন্দু আসলে স্বরধ্বনির একটি বৈশিষ্ট্য— অনুনাসিক স্বর। তাকে স্বরবর্ণের তালিকায় আনাই সঙ্গত ছিল। আর, ফুটকিওয়ালা ড়, ঢ় আর য়-কে ড, ঢ আর য থেকে আলাদা করে এনে বর্ণমালায় বসালেন। এ সব খুব ভাল কাজ হল, কারণ এগুলির উচ্চারণ বেশ আলাদা। ৎ-কেও অচ্ছুত রাখলেন না, নিয়ে এলেন বর্ণমালায়। ক্ষ-কে ব্যঞ্জনের তালিকা থেকে উৎখাত করে যুক্তব্যঞ্জনের দলে ঠেলে দিয়েও বেশ করলেন। পাঠকদের মনে পড়বে, রবীন্দ্রনাথ সহজ পাঠ-এর প্রথম ভাগে অকারণে তাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন (‘শাল মুড়ি দিয়ে হ ক্ষ...’), যদিও পদ্যের ও দুটি লাইন চমৎকার। ষাট সংস্করণে অ-আ-কে ‘স্বরের অ স্বরের আ’ হিসেবে পড়া তুলে দিলেন, আর অ (এখন ও) ধ্বনিতে যে সব কথা শেষ হয়, যেমন ‘অপেয়, মৃগ, তৃণ, কৃশ, মৌন, নিরীহ’— সেগুলির শেষে * চিহ্ন বসিয়ে উচ্চারণটা ধরিয়ে দিলেন, শিক্ষক আর ছাত্রেরা যাতে মৃগ্, তৃণ্, কৃশ্, ইত্যাদি না পড়ে।
বিদ্যাসাগর আরও কতটা করতে পারতেন পরে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। খুব সম্প্রতি কালেও একটি বিতর্ক আমরা লক্ষ করলাম। হ্যাঁ,বর্ণমালা থেকে ৯(লি) তাঁর বর্জন করাই উচিত ছিল। বাংলায় একটি শব্দও ‘লি’ দিয়ে লেখা হয় না, সংস্কৃতেও একটি-দুটির বেশি উদাহরণ নেই। কেন এটি রয়ে গেল বর্ণমালায়? ৎ-কে নিয়ে আসায় জটিলতা বাড়ল— দেবনাগরী ও অন্যান্য বর্ণমালায় ত-এ হসন্ত দিয়েই দিব্যি কাজ চলে যায়। চন্দ্রবিন্দুকে, আগেই বলেছি, স্বরবর্ণের তালিকায় আনা উচিত ছিল। তার সঙ্গে ব্যঞ্জনের সম্পর্ক অতিশয় ক্ষীণ।
বর্ণপরিচয়-এ আরও কিছু কিছু কৃতিত্ব দেওয়া হয় বিদ্যাসাগরকে, যা হয়তো সর্বাংশে তাঁর প্রাপ্য নয়, তিনি নিজে জানলে তা প্রত্যাখ্যান করতেন। যেমন বলা হয়েছে বিদ্যাসাগর সহজ থেকে কঠিনে গেছেন, ছোট শব্দ থেকে বড় শব্দে, ছোট বাক্য থেকে বড়, খানিকটা যৌগিক ও জটিল বাক্যে। কিন্তু এ কাজ ও সময়ে মদনমোহন করেছেন, বিদ্যাসাগরের অন্য পূর্ববর্তীরাও করেছেন। নিশ্চয়ই ইংরেজি প্রাইমারের মডেলও তাঁরা দেখেছেন। এই ‘লজিক্যাল’ পদ্ধতি হল শিশুপাঠের একেবারে প্রথম শর্ত, তা না থাকলে শিশুশিক্ষা বা বর্ণপরিচয় প্রথম পাঠ হিসেবে কিছুই দাঁড়াত না। দু’বর্ণের শব্দ, তিন বর্ণের শব্দ, চার বর্ণের শব্দ, পাঁচ বর্ণের শব্দ— এ ভাবে পর পর সাজাতেই হত এ সব বর্ণপাঠকে, যেমন সাজাতে হত ছোট শব্দের অল্প কথার পাঠ ‘বড় গাছ’, ‘ভাল জল’ থেকে ‘কাক ডাকিতেছে’, ‘গরু চরিতেছে’ হয়ে ‘উমেশ ছুরিতে হাত কাটিয়া ফেলিয়াছে’ ধরনের বাক্য, এবং শেষে একটানা পাঠের জন্য গল্পের আভাস-ওয়ালা জটিলতর বাক্য— ‘আর যদি তুমি কাহাকেও গালি দাও, আমি সকলকে বলিয়া দিব, কেহ তোমার সহিত কথা কহিবে না।’ লক্ষ করতে হবে, এ ধরনের বাক্যে প্রচুর কমা ব্যবহার করে পড়ার বাকস্পন্দনটি ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিদ্যাসাগর।
আরও কিছু সমস্যা :
কিন্তু, এই ‘লজিক্যাল বর্ণপাঠেও দু’ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রথমত, উদাহরণের শব্দগুলির মধ্যে প্রচুর শব্দ এসেছে, যেগুলি বাঙালি শিশুর জগতের শব্দ নয়, বহু দূরবর্তী অভিধানের শব্দ। নিরক্ষর বড়দের জগতেও খুব একটা ব্যবহৃত হয় না। ‘ঊর্ধ্ববাহু’ যেমন (পরবর্তী সংস্করণগুলিতে তাকে বর্জন করে ‘ঊষা’ কথাটিকে চলে আসতে দেখি), ‘ঐরাবত’ যেমন— যদিও রাজা-রানির রূপকথায় ‘ঐরাবত’ হয়তো ছিল, মৌখিক সাহিত্যের মধ্যে। দ্বিতীয় ভাগে যুক্তব্যঞ্জনের পাঠে এ ধরনের অপরিচিত শব্দ প্রচুর এসেছে। আমরা জানি এই দ্বিতীয় ভাগের ভূমিকার কথা। হ্যাঁ, লেখক বলেছেন যে, এ শব্দগুলির মানে বা প্রয়োগ শেখানোর দরকার নেই, শুধু ‘শিক্ষক বালকদিগকে উহাদের বর্ণবিভাগ মাত্র শিখাইবেন’। সাবধান করে দিয়েছেন, ‘অর্থ শিখাইতে গেলে, গুরু, শিষ্য, উভয় পক্ষেরই বিলক্ষণ কষ্ট হইবেক।’ কিন্তু, তবু মনে হয়, অপরিচিত শব্দের এত বোমাবিস্ফোট দরকার ছিল না, আর একটু সহজ করা যেত, ‘বালকদিগের’ (‘বালিকারা’ এখনও হিসেবে আসেনি— অনেক দিন পর্যন্ত আসবে না) কষ্ট আর একটু লাঘব করা যেত। বিদ্যাসাগর নিজেও এ সম্বন্ধে সচেতন ছিলেন, মাঝে মাঝে গল্পের আভাসযুক্ত টানা পাঠ দিয়েছেন। এই ভাবে চলেছে ষষ্ঠ পাঠ পর্যন্ত। তার পর দুই অক্ষরের এবং তিন অক্ষরের ‘মিশ্র সংযোগ’— রেফ, ব-ফলা (এটা পুনরাবৃত্তি, আগেই যথেষ্ট এর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে) আর, ‘তীক্ষ্ণ’, ‘সূক্ষ্ম’, ‘মহত্ত্ব’, ‘পার্শ্ব’ ইত্যাদি প্রয়োগ দেখিয়ে পর পর টানা পাঠে চলে গেছেন ইশপ থেকে নেওয়া ভুবনের গল্প পর্যন্ত। তিন অক্ষরের মিশ্র সংযোগে ‘দ্র’ (‘আর্দ্র’) নেই, ‘ক্ত্র’ (‘বক্ত্র’), ন্ধ্র (‘রন্ধ্র’)-ও নেই। কিন্তু, ‘ট্ব’ আছে ব-ফলার পাঠে, ‘খট্বা’ উদাহরণ সহ।
এই পাঠের সূক্ষ্ম বিচার এখন করাই যায়। বিদ্যাসাগর বিভিন্ন স্কুল স্থাপন বা পরিদর্শন করতে গিয়ে পালকিতে বসে লিখছেন, এ রকম একটি সংবাদ আছে। একটু কি তাড়াহুড়ো ছিল তাঁর? নইলে ‘যাওয়া’ ক্রিয়াপদের এত পুনরাবৃত্তি কেন? প্রথম ভাগে ৬ পাঠ থেকে ক্রিয়াপদের বাক্য শুরু হল। তার পর থেকে ‘যাওয়া’, ‘কাপড় পরা’ ইত্যাদি ক্রিয়াপদ অল্প পরিসরেই বেশি বার এসেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।
বই না পড়লে, হবে না ভাল ছেলে
আর ‘পড়া’ আর ‘পড়তে যাওয়া’ আর ‘বই পড়া’ ইত্যাদির তো কথাই নেই। ‘যাওয়া’, ‘কাপড় পরা’-র পুনরাবৃত্তি (৬ ও ৭ পাঠে ১১টি ক্রিয়াপদের ৫টি ‘যাওয়া’; ৯ পাঠে ‘কাপড় পরা’ ৬টি ক্রিয়ার মধ্যে ২টি) অসতর্কতার কারণে হতেই পারে, কিন্তু ‘পড়া’, ‘বই পড়া’-র পুনঃ পুনঃ পুনরাবৃত্তি অত্যন্ত সচেতন ভাবেই করেছেন বিদ্যাসাগর, এটা তাঁর ‘ভাল ছেলে’ নির্মাণ প্রকল্পের অঙ্গ। বাঙালির প্রায় অলীক প্রবাদ ‘লিখিবে পড়িবে খাইবে সুখে, মৎস্য মারিবে থাকিবে দুখে’ বা ‘লেখাপড়া করে যেই, গাড়িঘোড়া চড়ে সেই’-এর প্রধান প্রবক্তা ছিলেন বিদ্যাসাগর— এ বইয়ের ছত্রে ছত্রে তার সাক্ষ্য ছড়ানো।
এই ‘ভাল ছেলে’ নির্মাণের ব্যগ্রতা নিয়ে সঙ্গত ভাবেই পরে প্রশ্ন উঠেছে। যে মন দিয়ে পড়াশোনা করে, বাপ-মার কথা শোনে, ভাইবোনদের সঙ্গে মারপিট করে না, স্কুল থেকে ফিরে বইপত্র গুছিয়ে রাখে, হাত-মুখ ধুয়ে পড়তে বসে, এবং পড়ে পড়ে পড়ে, এবং খেলার সময় ছাড়া খেলা করে না— সেই অসম্ভব এক ভাল ছেলে তৈরি করতে চান বিদ্যাসাগর। সে মিথ্যা কথা বলবে না, নিষ্ঠুর হবে না, না-বলে পরের দ্রব্য নেবে না।
এই ভাল ছেলে নির্মাণ কি কেবল ‘ঔপনিবেশিক প্রতিশ্রুতিতে অকুণ্ঠ আস্থা’-র প্রমাণ? আমাদের তা পুরোপুরি মনে হয় না। গবেষকরা তো লক্ষই করেছেন যে, গোড়াকার ও মধ্য উনিশ শতকের কলকাতা ও শহরতলির মধ্যবিত্ত সমাজের মদ্যপান, বারাঙ্গনাবিলাস, তুমুল বাবুগিরি আর আরও নানা রকম বেলেল্লাপনার মধ্যে ‘ভাল ছেলে’-র সন্ধান অনেকেই করেছেন। প্যারীচাঁদ মিত্র করেছেন তাঁর ‘আলালের ঘরের দুলাল’-এ। অন্যদের সঙ্গে মধুসূদন করেছেন নাটকে প্রহসনে। উপনিবেশ-স্থাপনের সময় সংস্কৃতি-সংঘর্ষে সমাজের কেন্দ্রচ্যুতির সম্ভাবনা দেখা দিলে নীতির উপর জোর পড়ে, কেন্দ্র নিজেকে আবার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। কিন্তু, তা কেবল ঔপনিবেশিকতার সময় ঘটে, তা নয়। সামন্ত্রতন্ত্রেও তা ঘটে, ধর্মতন্ত্রেও তা ঘটে— সামন্ত্রতন্ত্রেরই বিস্তার তা। পরে প্রগাঢ় রাজনীতিতন্ত্রেও তা ঘটে। অখণ্ড ও নির্লাগাম প্রভুত্বের অধীনে বশ্যতার নানা বিন্যাস প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত অব্যাহত আছে— সে প্রভুত্ব ব্যক্তির হোক, ধর্মনেতার হোক, রাজনৈতিক নেতানেত্রীর হোক বা এক অস্পষ্ট ‘সমাজ’-এর হোক। ইশপের গল্প থেকে শুরু, হিতোপদেশ-এ চাণক্য শ্লোক-এ, নানা গোষ্ঠীর লোককথা-রূপকথায় এই বৃহত্তর নৈতিক মূল্যবোধ আরোপের চেষ্টা দেখতে পাই। তবে, আমাদের দেশে ‘পড়াশোনা’-র আকাশচুম্বী মাহাত্ম্য কেবল ঔপনিবেশিক পটভূমিতেই গড়ে উঠেছে, তা-ও ঠিক। তার লক্ষ্য ছিল না জ্ঞানার্জন, লক্ষ্য ছিল সরকারি চাকরি। এখনও অবস্থা প্রায় একই।
সাফল্যের অর্থ কী :
আমরা দেখেছি, বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাকি প্রায় দেড়শো প্রথম বর্ণপাঠের বইয়ের কোনওটিই দাঁড়াতে পারেনি। তা কি বর্ণপরিচয়ের তুলনাগত শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ? আমাদের তা মনে হয় না। আমাদের মতে, মদনমোহনের শিশুশিক্ষা, যার কাছে বর্ণপরিচয়-এর ঋণ যথেষ্ট, তা প্রথম বর্ণপাঠের বই হিসেবে আর একটু চিত্তাকর্ষক ছিল। তাতে প্রচুর নীতিশিক্ষা অবশ্যই ছিল, কিন্তু ছিল পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল-র মতো কবিতা, ছিল মিল-বসানো বাক্যের দ্বিপদী। বিদ্যাসাগর কেন কবিতার ওই আকর্ষণ থেকে শিশুদের বঞ্চিত করলেন, তার একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা আমরা করেছি, কিন্তু তা আমাদের কাছেও সন্তোষজনক নয়। প্রচুর কঠিন শব্দেরও একটা সাফাই দেওয়া যেতে পারে। উনিশ শতকের গোড়া থেকে যে ‘সাধু’ বাংলা গদ্য গড়ে উঠছিল, তাতে কঠিন শব্দ সাদরে আমন্ত্রিত হত। তার বিকল্পও গড়ে উঠছিল নকশা সাহিত্যে, প্যারীচাঁদ/টেকচাঁদের ‘আলাল’-এ বা হুতোম-এ— কিন্তু, তা ‘সাধু’ রীতি বলে গৃহীত হয়নি। শিবনাথ শাস্ত্রীরা যাকে ‘ভট্টাচার্যের চানা’ বলে ঠাট্টা করতেন, সেই গদ্যের পাঠের জন্য হয়তো বিদ্যাসাগর ‘বালকদিগকে’ প্রস্তুত করতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু, বর্ণপরিচয়-এর ওই অভাবিত সাফল্য— তার কারণ কী? পরমেশ আচার্য বিদ্যাসাগরের তুখোড় ‘ব্যাবসাবুদ্ধি’র কথা বলেছেন এই প্রসঙ্গে। বিদ্যাসাগর নিজে ছিলেন প্রেসের মালিক, সরকারের শিক্ষাবিষয়ক পরামর্শদাতা, স্কুল ইন্সপেক্টর। সেই প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে এটাও আমাদের ভাবতে ইচ্ছা হয় যে, অন্যান্য ক্ষেত্রে উনিশ শতকের বাঙালি-সমাজে যাঁর অবিসংবাদিত মহত্ত্ব ও প্রিয়তা, যা তাঁকে কেন্দ্র করে অজস্র সত্য, কল্পিত ও অতিরঞ্জিত অসংখ্য লোকগল্প তৈরি করে, তা-ও একটা কারণ নিশ্চয়ই। বর্ণপরিচয় বাড়িতে রইল তো ওই মহত্ত্বের একটা প্রান্ত ছুঁয়ে থাকা গেল, যেন একটা গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক কর্তব্য করে ফেলা গেল। এখানে ভালমন্দের বিজ্ঞানসম্মত বিবেচনার প্রসঙ্গ আসে না।
বর্ণপরিচয়-এর শিক্ষণের চরিত্র :
বর্ণপরিচয় পড়ানো যে ভাবে হত বা এখনও হয়, তার মধ্যেও একটা যে প্রভুত্বের ভূমিকা আছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এ বই ছেলেমেয়েরা আদর করে বা অন্যদের সঙ্গে কাড়াকাড়ি করে পড়ে না। আর, ছোটরা একাও পড়া শুরু করতে পারে না এ বই, পড়তে শেখার পর একা একা নিজের আনন্দে কতটা পড়ে, তা-ও বলা দুষ্কর। যোগীন্দ্রনাথ সরকারের হাসিখুসি-তে যেমন এক ছত্রের ছড়ার মধ্য দিয়ে পদ্যের মজা পেতে পেতে বইটি পড়ার দিকে এগিয়ে যায় ছেলেমেয়েরা, বা রবীন্দ্রনাথের সহজ পাঠ প্রথম ভাগ ‘বর্ণপরিচয়ের পর পঠনীয়’ হওয়া সত্ত্বেও, এবং বর্ণমালায় ‘ক্ষ’ থাকা সত্ত্বেও বর্ণের ছড়ার সংগীতটিকে ধরে রাখে, বর্ণপরিচয়-এ তার চিহ্নমাত্র নেই। ফলে, ভাবাই যায়, পাঠশালায় বা বাড়িতে যাঁরা বর্ণপরিচয় দিয়ে বর্ণশিক্ষা দিতেন, বা এখনও দেন, তাঁদের কতটা কসরত করতে হয় এ বই নিয়ে। একে তো পাঠশালায় শিক্ষাদান বিষয়টি ছিল অতিশয় প্রভুত্ব-নির্ভর, নাটকে ‘পড়্, পড়্, ল্যাখে ল্যাখে পড়্’-এর সঙ্গে বেতের আস্ফালনের ছবিতে যা বদ্ধমূল হয়ে থাকে, অন্য দিকে বইটির পাঠগুলির শরীরে ও সংকল্পে শিশুর মনোরঞ্জনের কোনও বিশেষ উপাদান নেই। প্রথম দিকে তো ছবিও ছিল না— এখন অবশ্য কোনও কোনও বিচিত্র সংস্করণে হাওড়া ব্রিজের ছবিও পায় ছেলেমেয়েরা। তাতে বইটির শিক্ষাগত আকর্ষণ কতটা বাড়ে, জানি না।
ফলে,বাঙালি লেখকরা এক সময় সরে এলেন বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়-এর ছাঁচ থেকে। যোগীন্দ্রনাথ সরকার হাসিখুসি-তে আনলেন মজা, ফুর্তি— শিশুর নিজের জগতে ঢুকে পড়ে তাকে খেলা দেওয়ার খুশি। বইয়ের নামেই দৃষ্টিভঙ্গির বদল চোখে পড়ে। বর্ণশিক্ষা নয়, শিশুশিক্ষা নয়, বর্ণপরিচয় নয়। এ ধরনের কেজো, সদিচ্ছামূলক কোনও নাম নয়, নাম হাসিখুসি। নামের মধ্যেই আমন্ত্রণ। ‘টিয়াপাখীর ঠোঁটটি লাল, ঠাকুরদাদার শুকনো গাল’ অসামান্য কবিতা নয়, কিন্তু পশুপাখির বিচিত্র জগৎ, ছোটদের নিজস্ব কাণ্ডকারখানা (‘আমি কেমন আপনি নাইতে পারি! মণি পারে না, টুনিও পারে না!’)— সব নিয়ে, এমনকী, ঈষৎ ভয়াবহ ‘হারাধনের দশটি ছেলে’ নিয়ে এই ‘মজা’-র প্রবল উপস্থিতি ‘হাসিখুসি’-কে শিশুর প্রিয় বই করে তুলেছে। যোগীন্দ্রনাথের অন্যান্য বইয়েও এই দারুণ ফুর্তির উপহার সাজানো আছে। বড়দের দিক থেকে উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগে তার নানা সমালোচনা করাই যায়, কিন্তু, তাতে পাঠ হিসাবে ছোটদের কাছে তার আকর্ষণ কমে না।
রবীন্দ্রনাথের সহজ পাঠ ‘বর্ণপরিচয়-এর পরে পঠনীয়’ হলেও তাতে বর্ণপরিচয়ের লক্ষ্য অস্পষ্ট থাকে না। কিন্তু, এতে উন্মোচিত হল এক কবিত্বময় নিসর্গছবি, স্মৃতি ও কল্পনায় ঐশ্বর্যঋদ্ধ পৃথিবী। গ্রামীণ বাংলার প্রকৃতি ও জীবনযাত্রা, রামায়ণের সূত্র, দিগন্তের ও-পারে তেপান্তর, তার ও- পারে রাজার বাড়ি, কলকাতার স্বপ্নময় দৌড়োদৌড়ি— এ সবই অভিনব ও সুন্দর। সম্ভবত বাঙালি শিশুকে প্রথম কবিত্বে দীক্ষা দেয় এ বই। অন্য লক্ষ্য নিয়ে আরও বই পরে বেরিয়েছে, কিন্তু শিশুশিক্ষার ‘ক্লাসিক’ আর হয়নি।
উদযাপন ও তার লক্ষ্য:
তবু বর্ণপরিচয়-এর দেড়শো বছর শ্রদ্ধায় উদযাপনযোগ্য একটি মুহূর্ত। তখনকার বাংলার শ্রেষ্ঠ ও সর্বাঙ্গীণ রূপে মানবিক এই মানুষটি বাঙালি শিশুদের লিখিত ভাষা শেখানোর বই লেখার কথাও ভেবেছিলেন বলে কৃতজ্ঞ বোধ করি। শুধু ‘ব্যাবসাবুদ্ধি’-তে এমন সাফল্য আসে না, তা আমরা আগেই বলেছি। অন্যান্য ভাষায় বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়-এর মডেলই অনেকে অনুসরণ করেছেন। উৎকলমণি মধসূদন রাও-এর বইটি যেমন— সেটি এখনও চলে। বই ছাপার নন্দনতত্ত্ব গ্রামে আর শহরে এক হয় না। বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়-এর গোলাপি মলাটের নিউজপ্রিন্টের বইটি এখনও ট্রেনের কামরায় বিক্রি হয়।
মূলত অবশ্য এই উপলক্ষে আমরা উদযাপন করি বিদ্যাসাগরকে— সেই অসামান্য মানুষটিকে। কিন্তু, এই উদযাপনের লক্ষ্য যদি কেবল অতীতপূজা হয়, তবে এর কোনও অর্থই দাঁড়ায় না। এ অতীত কতটা পূজ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার, বিচারবিমর্শ করারও এই এক অবকাশ। আর এ-ও যখন লক্ষ করি যে, বর্ণপরিচয় ও অন্যান্য বর্ণশিক্ষার বইয়ে ছয়লাপ অর্ধ শতাব্দীর পরেও ১৯০১-এ সাক্ষরতা দাঁড়ায় ৫.৩৫ শতাংশ, ১৯১১-তে একশোতে ছ-জনও নয়, ১৯৫১-তে মাত্র একুশ জন— তখন মনে হয় যে রকমই হোক এ বই— তা আমরা আরও অনেক শিশুর হাতে পৌঁছে দিতেই তো পারিনি, তার সম্ভাবনাকে আমরা অনেকটাই ব্যর্থ করেছি। সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের দোষ দিতেই পারি আমরা, কিন্তু আত্মবৃত্তবদ্ধ শহুরে ‘ভদ্রলোকেরা’ও এর জন্য কম দায়ী নই। এই উদযাপন আমাদের নতুন দায়িত্বে ও সংকল্পে পৌঁছে দিয়েই সার্থক হোক।
ধন্যবাদে পবিত্র সরকার ।
©somewhere in net ltd.