নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদনান সৈয়দ

আদনান সৈয়দ। জন্ম : ঢাকা। পেশাঃ ফাইনানসিয়াল এনালিষ্ট এবং প্রফেশনাল বিজনেস প্লানার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এমবিএ। নেশা: লেখালেখি ও সাংবাদিকতা। বর্তমানে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত। মেইল: [email protected]

আদনান সৈয়দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে দুটি কথা

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৩১





ছোট্ট ছেলে রাজীব। ক্লাস সেভেন এ পড়ে। মুন্সীগঞ্জ থেকে শাহবাগ আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছে তার চাচাতো ভাই রকিবের হাত ধরে। ওর সাথে কথা বলে দেখা গেল শাহবাগ আন্দোলনের বিষয় বস্তু সম্পর্কে সে রিতিমত সজাগ। বাংলাদেশ থেকে রাজাকার দের ফাঁসি এবং জামাতকে সমুলে উৎখাত করেই রাজীব ঘরে ফিরতে চায়। ছোট্ট শিশুর কন্ঠেও স্পষ্ট দেখতে পেলাম টগবগে তারুন্য যেন ঝলমল করছে। তখন খুব আনন্দ পেলাম এই ভেবে যে শাহবাগের এই আন্দোলন স্বার্থক হয়েছে। ঝিমিয়ে পরা, নেতিয়ে যাওয়া অর্ধচেতন মানুষদের চাবুক মেরে আমাদের এই তরুন নতুন প্রজন্মরা রাতারাতি যেন জাগিয়ে দিয়েছে। সত্যি, আমরা সবাই যেন ঘুমিয়ে পরেছিলাম। সেই রাক্ষুসী ঘুম আমাদের ভেঙ্গেছে। আমরা আবার নতুন করে ভোরের আলো দেখছি। প্রতিদিন রাজাকার আলবদরদের ফাঁিসর দাবীতে শাহবাগ এখন যেন প্রতিবাদী তরুন কন্ঠস্বরদের এক মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। যে বাংলাকে পেতে আমাদের সাত সমুদ্র রক্ত দিতে হয়েছে সেই রক্তের হিশাব-নিকাষ এখন শুরু হয়েছে। আমাদের তরুন প্রজন্মদের ইস্পাত দৃঢ় প্রত্যয় হল এই রাজাকার, যুদ্ধপরাধী এবং এদের সূতিকাগার জামাতে ইসলামী দলটির বাংলা থেকে উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত ওরা আর তাদের ঘরে ফিরে যাবে না। শাহবাগ এখন বাংলার তরুনদের এক বিশ্বাসের দূর্গ। আরেক নতুন একাত্তর এই তরুন বিপ্লবীদের কে যেন প্রতিনিয়ত হাতছানি দিয়ে ডাকছে।



ইতিমধ্যে শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে চারপাশে চাপা ফিসফাসও বেশ শুনতে পাই। জামাতে ইসলামির ক্যাডাররা এই আন্দোলন নিয়ে বাজাওে বিভিন্ন রকম নেতিবাচক এবং মুখরোচক খবর বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়াতে শুরু করে দিয়েছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন দানা বাঁধছে ”এই আন্দোলন আর কতদিন চলবে? বাংলাদেশের বড় দুটি দল এই তরুনদের কে বিপথে নিয়ে যাবে নাতো? আওয়ামী লীগ এই শাহবাগ আন্দোলনকে তাদের নিজেদের স্বার্থে ইচ্ছামত ব্যাবহার করবে নাতো? ইত্যাদি,ইত্যাদি।” শাহবাগ আন্দোলনের সাথে যুক্ত কাউকে কাউকে দেখছি খুব আবেগের বশবর্তী হয়ে টিভি টক শোতে অনেক কথাই বলে ফেলছেন। তবে সব মিলিয়ে এতটুকু আসস্থ করা যায় যে শাহবাগের এই বিপ্লবী তরুনরা সব দিকেই তাদের চোখ কান পুরোপুরি খোলা রেখেছেন। প্রতিদিন তাদের নিত্য নতুন ঘোষনা দেখে অন্তত চোখ বুজে সেই কথাই বলে দেওয়া যায়। তারপরও প্রসংগত এখানে এই বিষয়ে দুটো কথা বলে রাখতে চাই। সত্যি বলতে স্বাধীনতার বিয়াল্লিশ বছর পর বাংলাদেশ আবার যেন চোখ মেলে তাকিয়েছে। বাংলাদেশের তরুনরা সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করে দেশেকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে। সে জন্যই শাহবাগের এই আন্দোলন কোন ভাবেই যাতে বাধাগ্রস্থ বা ষড়যন্ত্রের শিকার না হয় সে জন্য আমাদের তরুনদের চোখ কান সবসময় খোলা রাখতে হবে। কোন বড় রাজনৈতিক দল কোন ভাবেই যেন এই শাহবাগের নতুন প্রজন্মদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি ছুড়ার সুযোগ না পায় সে দিকটি অবশ্যই গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। এই আন্দোলনকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌছে দেওয়ার এইতো সুবর্ণ সময়! শাহবাগের আন্দোলন মিশে যাক বাংলার ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের প্রতিটা ধুলো কনার সাথে। এ কথা সত্য যে বাংলার তরুন প্রজন্মরা বাংলাদেশের সুবিধাবাদী রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তাদের কাছে দলের চেয়ে দেশ বড়। আমরা আশা করব এই শাহবাগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নদীর বুকে আরেকটা নতুন চর জেগে উঠবে। যে চরে উর্বর ফসলের ঘ্রাণ বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে যাবে। সেই নতুন চরের ঠিকানায় বাংলার মানুষ এখন ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করছে।



শাহবাগ এখন হাজারো জনতার কন্ঠস্বর। তরুনদের সাথে কন্ঠ মেলাতে বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের ঢল এখন শাহবাগ স্কয়ারে। আবারো বলব, তরুনদের এই আন্দোলন কোন ভাবেই যেন বাধাগ্রস্থ বা কোন ধরনের ষড়যন্ত্রের শিকার না হয় এটাই হল আমাদের প্রানের দাবী। এই শাহবাগ আন্দোলনকে সামনে রেখে আমাদের নতুন প্রজন্মরা এই ভালোবাসার প্রিয় বাংলাদেশটাকে আবার নতুন করে ঢেলে সাজানোর সুযোগ পাক- এই আমাদের প্রার্থনা।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৩৫

নাওেয়দ বলেছেন: একটু টুইস্ট রাখলে মনে হয় লেখাটা ভালো লাগত।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪০

আদনান সৈয়দ বলেছেন: টুইস্ট বলতে আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন ঠিক বুঝতে পারলাম না। আমি শুধু এই কথাটাই বুঝি তা হল শাহবাগ এর আন্দোলনে যেন কোন দলীয় প্রভাব না পরে। অন্যভাবে বলতে গেলে তরুন রা যাতে পেতে রাখা কোন দলীয় ফাঁদে পা না দেয়।

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩৭

ওছামা বলেছেন: দেশের প্রবীনরা তরুদের অকর্মা বলছে বলে, তাই শূধু নিজেদের কর্মা প্রমান করার জন্যে নামকা-ওয়াস্তে আন্দোলোন করা উচিত না।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৫১

আদনান সৈয়দ বলেছেন: একমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.