![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন নিয়ে, আমি প্রান্তিক জনতার কথা বলতে এসেছি.......!
“হামরা হচি বাহে অচ্ছুতের এমন অচ্ছুত
যে হামাক দেখি, কুকুরগুলা পর্যন্ত ঘাউ ঘাউ করি উঠে’’
(আমরা হচ্ছি বাবা এমন অচ্ছুতের অচ্ছুত, যে আমাদেরকে দেখে কুকুর গুলো পর্যন্ত ঘেউ ঘেউ করে উঠে)
কথা গুলো বলছিলেন বৈদ্যনাথ মন্ডল। যিনি পেশায় একজন শুকর পালের রাখাল। বর্ষার শুরু হলেই শুকরগুলোর চারণভূমি পানিতে তলিয়ে যায় এবং দেখা দেয় খাদ্য সংকট। শুকরদের আর ঘরে রাখা যায় না সেসময়। বৃষ্টির পানিতে তখন ‘শূকর রাখালগন’ তাদের একপাল শূকর নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়েন। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তারা শূকর চড়িয়ে বেরান এই পাড়া সেই পাড়া, এই জেলা সেই জেলা, এই অঞ্চল সেই অঞ্চল। বৈদ্যনাথ মন্ডল তাদেরই একজন। যিনি কিনা শূকর পাল নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়েছেন। ঠিক জানেন না, এবার তিনি কোথায় যাবেন। গতবার তিনি রংপুর থেকে গিয়ে ঠেকেছিলেন সাতক্ষীরা পর্যন্ত। পুরো দেশ জুড়ে খেয়ে চলা এসব শূকরেরা এই পালের মধ্যে একটা আরেকটার সাথে যৌন সঙ্গম করে, তারা গর্ভবতী হয়, বাচ্চা প্রসব করে, শাবকেরা বড় হয় আর কেউ কেউ বিক্রি ও হয়ে যায়।
রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামের বাসিন্দা বৈদ্যনাথ মন্ডলের এবারের যাত্রায় তার একমাত্র সঙ্গী হল শূকর নামক নিকৃষ্ট জীবগুলো, একটা ছড়ি আর সাথের একটা পোটলা। ছড়ি ঘুড়িয়ে তিনি শূকর পালকে কমান্ড করেন। আর তার প্রতিটা কমান্ড অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে এই শূকর সন্তান গুলো। তারা জানে কোন কমান্ডে তাদের রাস্তায় উঠতে হবে আর কোন কমান্ডে নামতে হবে চারন ভূমিতে কিংবা কখন তাদের বিশ্রামের সময়। কমান্ডের বাইরে কারো যাবার জো নেই। এক অর্থে তিনি একজন দক্ষ কমান্ডারও বটে। যেখানে রাইত সেখানে কাইত নামক তত্ত্বে যেখানেই রাত নামে সেখানেই ‘শূকর রাখাল’ তার তাবু (আসলে পলিথিন) ফেলে শুকরের সাথে রাত্রী যাপন করেন। তাদের সাথে থাকা পোটলায় থাকে খাবার-দাবার, সরঞ্জাম আর পলিথিন। খাবার দাবার মূলত মালিকেরাই দিয়ে দেন আর সেই সাথে বেতন হিসেবে প্রদেয় হয় প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা। এই সামান্য কিছু টাকার দিকে মুখিয়ে থাকে অভাব আর দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত শূকর রাখাল পরিবারগুলো। পরিচালিত হয় ‘শূকর রাখালে’র আস্ত একটা পরিবার। উত্তরন সেখানে অসম্ভব, ‘শূকর রাখালে’র ঘরে জন্ম হয় আরেক ‘শূকর রাখালে’র। আর মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায় অল্প বয়সে, হয়তোবা আরেক শূকর রাখালের সাথে।
পতিত জমিতে শূকর চরালে জমি উর্বর কিংবা জমির আগাছা দমন হলেও বংশানুক্রমিক এই পেশাটি সমাজের ‘ভদ্র লোকেদের’ কাছে বিবেচিত হয় শূকরের মত নিকৃষ্ট হিসেবে। অনেক গৃহস্থ ঘর মাঝে মাঝে তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে যেতে পর্যন্ত দেয় না এসব অচ্ছুতদের। বেশ ঘৃন্য একটা কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়, সকলে তাদের এড়িয়ে চলে। অথচ সমাজের অনেক সম্মানিত মুসলমানও রয়েছেন এই শূকর পালের মালিক। শূকর বিক্রির টাকা দিয়ে তারা তাদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরন করেন। এতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না, যত সমস্যা এই শূকর রাখালদের।
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৫৩
অগ্নি সারথি বলেছেন: অনুধাবন করবার জন্য ধন্যবাদ। তারা শেখ সেলিম, তাপস, কর্ণেল ফরুক, সালমান রহমান, জয়ের সমতুল্য কোন অর্থে?
২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:২৫
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমরা, এই পালকের মতই অস্পৃষ্য।।
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৫০
অগ্নি সারথি বলেছেন: হয়তোবা তাই ভাই!
শুভকামনা জানুন।
৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:৫১
মহা সমন্বয় বলেছেন: এতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না, যত সমস্যা এই শূকর রাখালদের।
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৫৭
অগ্নি সারথি বলেছেন: বৈদ্যনাথ মন্ডলের মালিকের নাম ওসমান সর্দার। সমাজের মানুষেরা শূকর পালনের অর্থে তাদের রুটি রুজির সংস্থান করলেও শূকর এবং শূকর রাখাল পেশাটি সমাজে চরম ভাবে গর্হিত।
শুভকামনা।
৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৬:১৩
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: অথচ সমাজের অনেক সম্মানিত মুসলমানও রয়েছেন এই শূকর পালের মালিক। শূকর বিক্রির টাকা দিয়ে তারা তাদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরন করেন। এতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না, যত সমস্যা এই শূকর রাখালদের।
তথ্যতে মাথা ঘুরে
যা দিলো হেথা অগ্নি;
মুসলমানেও করে
শূয়রে ট্যাকা লগ্নি !!!
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:১৮
অগ্নি সারথি বলেছেন: এই অঞ্চলের বেশির ভাগ মালিকই মুসলমান, ভাই। শূকরের পালে শূকর জন্ম নেয়, শূকর বড় হয়, শূকর সারা দেশ চষে বেড়ায়, শূকর বিক্রি হয়ে যায়। মালিক শুধু খবর পান আর টাকা গোনেন। অনেক সময় শূকর চোখেও দেখেন না তারা।
৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:৩২
আবুল হায়াত রকি বলেছেন: এই দেশের লেবাসদারি মুসলমান সব করতে পারে! যেমনটি ঘৃণা ঠিক তেমনি ফায়দার আশায় সেটাকেই পুঁজি বানাতে ছাড়ে না। এই দেশের অধিক জনসংখ্যার মানুষ মুসলীম ঠিক যেমন ভারতের কতিপয় হিন্দু কিছু করলে দোষটা কিন্তু পুরোটা সম্প্রদায়ের উপরেই যাচ্ছে। এটা মানতেই হবে এদেশের মুসলিমরা নামমাত্র লেবাসদারি সুবিধাভোগি।
অবজ্ঞার এমন একটা স্থর থেকে ঘটনাটা তুলে এনেছেন যা বর্তমানে সবার অগোচরে। শুভ কামনা জানবেন দাদা।
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:১৯
অগ্নি সারথি বলেছেন: এদেশের মুসলিমরা নামমাত্র লেবাসদারি সুবিধাভোগি।- সহমত ভাই।
৬| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:২২
হাসান মাহবুব বলেছেন: বিচিত্র রকম নিষ্ঠুর জীবন সংগ্রাম।
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৩০
অগ্নি সারথি বলেছেন: বাস্তবিক বড়ই নিষ্ঠুর ভাই।
৭| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০৩
পুলহ বলেছেন: হাসান মাহবুব বলেছেন: বিচিত্র রকম নিষ্ঠুর জীবন সংগ্রাম।
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯
অগ্নি সারথি বলেছেন: খুব নিবিড়ভাবে না দেখলে কিংবা অনুভব না করলে বুঝবার জো নেই। শুভকামনা জানবেন সুপ্রিয় সুহৃদ।
৮| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০৭
কল্লোল পথিক বলেছেন:
“হামরা হচি বাহে অচ্ছুতের এমন অচ্ছুত
যে হামাক দেখি, কুকুরগুলা পর্যন্ত ঘাউ ঘাউ করি উঠে’
বড়ই করুণ কথা।
খুব কষ্ট পেলাম।
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:০৪
অগ্নি সারথি বলেছেন: সূচী আর অসূচীর তালিকায় সাধারনত হাড়ি, ডোম, মেথর এদের অবস্থান সর্বনিম্নে কিন্তু শূকর রাখালদের অবস্থান তারও অনেক নিচে। আর এই বিষয়টি সমাজে যুগের পরে যুগ ইগনোর হয়ে থেকেচে। তারাও আর দশ জনের মত সম্মানজঙ্ক একটা পেশায় অধিষ্ঠিত হতে চায় কিন্তু অভাব আর ক্ষুধার তাড়নায় শূকর রাখালের ঘরে জন্ম নেয় আরেক শূকর রাখাল।
শুভকামনা জানবেন প্রিয় সহব্লগার।
৯| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৩০
সুমন কর বলেছেন: বৈদ্যনাথ মন্ডলের কাহিনী পড়ে খারাপ লাগল। সমাজ এদের জন্য কিছু করবে না !!!
+।
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৩৭
অগ্নি সারথি বলেছেন: বৈদ্যনাথ মন্ডলদের নিপিড়ন আর নিগ্রহের খবর জানেই না এই সমাজ, সুমন দা। তারা শূকরদের মতই অচ্ছুত!
শুভকামনা রইল।
১০| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭
অশ্রুকারিগর বলেছেন: হাসান মাহবুব বলেছেন: বিচিত্র রকম নিষ্ঠুর জীবন সংগ্রাম।
সুমন কর বলেছেন: বৈদ্যনাথ মন্ডলের কাহিনী পড়ে খারাপ লাগল। সমাজ এদের জন্য কিছু করবে না !!!
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৪০
অগ্নি সারথি বলেছেন: বাস্তবিক তাই ভাই। শুভেচ্ছা জানবেন।
১১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৫৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: অগ্নি সারথি ,
অচ্ছুতের জীবন কাহিনী , যে কাহিনী আগে জানা হয়নি এমন করে ।
বৈদ্যনাথ মন্ডল হয়তো অচ্ছুত এক পেশায় নিয়োজিত কিন্তু আমরা যে ভদ্র মুখোশের আড়ালে অচ্ছুত সব নেশায় মত্ত প্রতিদিন !!!!!!
০১ লা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৪৭
অগ্নি সারথি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। শুভকামনা জানবেন।
১২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫০
প্রামানিক বলেছেন: দারুণ একটা বিষয় তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ
২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:১১
অগ্নি সারথি বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ প্রামানিক দা।
১৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৩১
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
খুব মনযোগ দিয়ে রংপুরের পায়রা বন্দের শুকর পালকদের
কাহিনীটা পড়লাম । ছোট সময়ে দেখেছি আমাদের দেশের
গ্রামের বাড়ীতে গ্রীস্মকালে শুকরপাল ওয়ালাদেরকে
খবর দিয়ে আনা হত ঝোপ ঝার টিলা ও উচু শক্ত
জমিতে গজে উঠা কচু গাছ সাবার করার জন্য ।
এটা বছর ৪০/৫০ এক আগের কথা । শুকরেরা
শুরের শো শো শব্দে মাটি উলট পালট করে
সব কচু গাছ এর লতা ও মাটির নীচের কচু
খেয়ে শক্ত মাটিকে চাষের মত করে দিত
বেশ গভীর ভাবে । এতে সে জমিতে
পরের বছর বেশ ভাল ফসল ফলত।
শুকর পালন খুব লাভজনক একটি
পেশা ,এটাকে সঠিকমত সহায়তা
পোশকতা দিলে দেশের জন্য
অনেক ভাল হয় সেসাথে
এদের জন্য সকলেরই
থাকা উচিত যথাযথ
সম্নান সমাজের
অপরাপর সব
পেশার মত।
শুভেচ্ছা রইল
২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:২৯
অগ্নি সারথি বলেছেন: আপনার মনযোগ এবং গুরুত্বপূর্ন মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
১৪| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:০৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রতি উত্তরের জন্য ।
৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:২৮
অগ্নি সারথি বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৪০
চাঁদগাজী বলেছেন:
বড়ই করুণ কাহিনী; এরা শেখ হাসিনার কেহ হয় না, শেখ সেলিম, তাপস, কর্ণেল ফরুক, সালমান রহমান, জয়ের মতো?