নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটা বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন নিয়ে, আমি প্রান্তিক জনতার কথা বলতে এসেছি...!

অগ্নি সারথি

একটা বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন নিয়ে, আমি প্রান্তিক জনতার কথা বলতে এসেছি.......!

অগ্নি সারথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাষ্ট্রহীন শিশু তথা ‘আটকে পড়া পাকিস্তানী’ আকসারের গল্প

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২২



বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত, ঘিঞ্জি বিহারী ক্যাম্পের একরুমের একটা মাত্র পাকা ঘরে আরেক বোনের সাথে বেড়ে উঠছে ৮ বছর বয়সী ছোট্ট আকসার (ছদ্মনাম), যার বাবা পেশায় একজন নাপিত এবং মা অন্যের বাসা বাড়িতে কাজ করে কোনমতে টেনেটুনে সংসারটিকে চালিয়ে নিচ্ছেন। সভ্য জগতের আর দশটা শিশুর মত স্বাধীন-সুন্দর নয় আকসারের শৈশব, বিহারী ক্যাম্পের লম্বা আজিজ লেন আর এনজিও পরিচালিত বিহারীদের স্কুল-এর মাঝেই সীমাবদ্ধ আকসারের জীবন। বাইরে গিয়ে খেলাধুলা কিংবা ঘোরাঘুরি কোনটাই তার জন্য প্রযোজ্য নয় কারন সে ‘বিহারী’।

১৯৪৭ এর পর যখন দ্বিজাতিত্বত্ত্বের মধ্য দিয়ে ভারত-পাকিস্তান নামে দুটো রাষ্ট্রের জন্ম হল তখন ভারত জুড়ে শুরু হয়েছিল হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা। আর এ দাঙ্গায় প্রায় ১০ লক্ষ লোক মারা যায় এবং ২ কোটি লোক বাস্তুহারা হয়। ফলে ভারতের বিহার রাজ্য থেকে প্রায় ১০ লক্ষ মুসলমান চলে আসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আর কিছু চলে যায় পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্ব পাকিস্তানে তথা বাংলাদেশে অভিবাসী হবার পর এরা পরিচিত হতে থাকে বিহারি হিসেবে আর পশ্চিম পাকিস্তানে এরা পরিচিত হতে থাকল মোহাজির হিসেবে। আমাদের বয়ানের আজকের নায়ক ‘আকসারে’র পূর্ব পুরুষদের বাড়ি ছিল কুচবিহারের নীলকুঠি থানার হাতির পিলখানা নামক গ্রামে। তার দাদা কাশেম মিয়া পেশায় মাড়োয়ারীদের তামুকের পেটি বানানোর কাজ করতেন। বিয়ের কিছুদিন পর কাশেম মিয়া একদিন তার স্ত্রীকে মিথ্যে বলে লালমনিরহাট সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কুচবিহার হতে চলে আসেন রংপুরে তার বোনের বাড়িতে। এখানে এসে স্থায়ী ভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে সে তার বোনের স্বামীর ব্যবসার কাজে সহায়তা করতে থাকেন। এভাবে প্রায় দুই বছর কেটে যাবার পর দেশে যখন গন্ডগোল (মুক্তিযুদ্ধ) শুরু হল তখন তারা আবার লালমনিরহাট হয়ে ভারতের সিতাই বর্ডার দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে কুচবিহারে চলে গেলেন। কিন্তু এবার সীমান্ত অতিক্রম করবার সময় তাদের নাম পড়ে গেল ভারতীয় স্মরনার্থী তালিকায়। কুচবিহারে বসে তিনমাস ভারত সরকারের ফ্রি রেশন তো তারা খেল কিন্তু এই ফ্রি রেশন যে কাল হয়ে যাবে তা বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারে নাই। তিনমাস পর ভারত সরকার আবার তাদেরকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিল কারন তারা তখন গন্য হয়েছিলেন স্মরনার্থী হিসেবে।

যদিও আবুল কাশেম দেশ ত্যাগ করবার আগে জেনে গিয়েছিলেন যে ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে উর্দুভাষী বিহারীরা পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করেছিল কিন্তু এবার ফেরত এসে দেখলেন অবস্থা আরো ভয়াবহ। ১৯৫২-র ধারাবাহিকতায় সেই বিহারীদের অনেকেই স্বাধীনতাযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে নিজেদের পাকিস্তানী দাবি করে সশস্ত্র লড়াই করার কারনে পুরো দেশ এখন বিহারীদের বিরুদ্ধে ফুঁসছে। হাজার হাজার বিহারী মারা পড়ছিল, তাদের ঘরবাড়ি সব জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছিল। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ধরে হত্যাকান্ডে সহযোগীতার পর ও এই 'বিহারী' রা প্রতারিত হলো পাকিস্তানীদের দ্বারা কারন পাকিস্তান জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী আত্নসমর্পনকারী সৈন্যদের পাকিস্তানে ফিরিয়ে নিলেও দায়িত্ব নিল না এই ‘বিহারী’ জনগোষ্ঠীর। ফলে 'বিহারী' রা আবারো আটকা পড়লো এমন এক ভূ-খন্ডে যার প্রধান জনগোষ্ঠির হত্যাকান্ডে তারা সরাসরি জড়িত ছিলো। এমন একটা অরাজক পরিস্থিতিতে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে আর লুকিয়ে বেড়াতে শুরু করলেন আবুল কাশেম। তার ইন্ডিয়াতে চলে যাবার রাস্তাটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ঠিক সে সময় এগিয়ে আসে ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে অবস্থানরত বিহারীদের পুনর্বাসনের চেষ্টায় মনযোগ দেয়। তারা বিহারী নেতাদের সাথে কয়েক দফায় বসে এবং তাদের সিদ্ধান্ত চায়। বিহারীরা পাকিস্তানে চলে যাবার পক্ষে রায় দেয়, তখন থেকে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিহারীদের আটকে পড়া পাকিস্তানী বলে অভিহিত হতে থাকে। এমন অবস্থায় শুরুর দিকে রেডক্রস বিহারীদের প্রায় এক তৃতীয়াংশকে পাকিস্তানে পুনর্বাসন করতে সক্ষম হয় এবং বাকীদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে ৬৬টি ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়। আবুল কাশেম ও তার পরিবারের ও ঠাই হয় এমন একটা ক্যাম্পে। পাকিস্তানে চলে যাবার আশায় প্রথম ১০ বছর আবুল কাশেমের পরিবার আটকে পড়া পাকিস্তানী হিসেবে তাবুতে বাস করা শুরু করে এবং এর মাঝেই আবুল কাশেমের মৃত্যু হয়। আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর দুই পুত্র এবং এক কন্যাকে নিয়ে বিপদে পড়েন তার স্ত্রী পরিমন নেসা। এ যুদ্ধ যেন যুদ্ধ পরবর্তী একটা দেশে আরেকটা জীবন যুদ্ধ। এ বাড়ি ও বাড়ি কাজ করে, ছোট ছোট সন্তানদের দিয়ে কাজ করিয়ে টেনে হিচরে তার সংসারটা কোন রকম টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন পরিমন নেসা। তাদের আর পাকিস্তানে ফেরা হয় না। তারপর তার সন্তানেরা বড় হয়, বিয়ে থা করে এবং সংসারের দায়িত্ব বুঝে নেয়।

প্রিয় আজিজ লেন

এবার আসি, আকসারের গল্পে। আকসারের বাবা মায়ের ইচ্ছা আকসার একদিন লেখা পড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হবে। কিন্তু সভ্য মানুষেদের সমাজ আকসারকে সে এখতিয়ার দেয় না। কারন সে বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দা, ‘আটকে পড়া পাকিস্তানী’। আকসারকে যখন একটা পাবলিক স্কুলে ভর্তি করা হল তখন শুরুর দিকটায় স্কুল যাওয়াতে আকসারের আগ্রহের কোন কমতি ছিলনা কিন্তু ধীরে ধীরে সে আগ্রহে যেন ভাটা পড়া শুরু হল। কারন সহপাঠীরা তার সাথে বসত না, খেলাধুলা তো অনেক দূর। এমনকি স্কুলের শিক্ষকরা পর্যন্ত সুবিধাজনক আচরন করতনা। অবশেষে মাত্র কদিনের মাথায় আকসারের তীব্র আপত্তিতে তাকে স্কুল ছাড়িয়ে ক্যাম্পেই বিহারীদের জন্য একটা এনজিও স্কুলে ভর্তি করা হল। আকসারের জীবনটা ক্যাম্পের আজিজ গলিটার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, এটাই তার শৈশব। এটাই তার বেড়ে ওঠা। এর বাইরে যাবার কোন অনুমতি তার নেই কারন তার পরিবার ভয় করে বাইরের অমানুষেদের। এই অনুমতি যে শুধু আকসারের-ই নেই বিষয়টা তা নয় বরং এই ক্যাম্পের শয়ে শয়ে আকসারের বেড়ে ওঠা, শৈশব বলতেই তাদের ঘরের সামনের গলিটা। অন্যত্র গিয়ে বাসা ভাঁড়া করে কিংবা জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে থাকবার মত অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা শুধু আকসারের নাপিত পিতা কেন বরং বেশির ভাগ পিতারই নেই এখানে। ক্যাম্পের বেশির ভাগ পুরুষ পেশায় দর্জি, নাপিত কিংবা ভ্যান চালক। সরকার হতে বরাদ্দ দেয়া একটা মাত্র রুমে গাদাগাদি করে বসবাস পুরো একটা পরিবারের। আছে পানি, টয়লেট এবং হাজারো নানা সমস্যা। পড়াশোনা করে উঠে আসবার পরিবেশ কিংবা সামর্থ্য ছেলে শিশুদেরই নেই সেখানে মেয়ে শিশুদের পড়াশোনা করাটা যেন এলাহী কান্ড। তবে হ্যাঁ মেয়েরা কোরআন পড়া শেখে। কোরআন শিখতে শিখতে, ঠুস করে একদিন অল্প বয়সেই বিয়ে। বিয়ে বলতে ক্যাম্পের ভেতরেই কিংবা আরেক ক্যাম্পের কোন বিহারীর সাথে। তারপর তাদের বাচ্চা তথা স্বাধীন বাংলাদেশে আরেক ‘আটকে পড়া পাকিস্তানী’র আবির্ভাব ঘটে। তারা উর্দুতে কথা বলা শেখে। ফরফর করে উর্দুতে কথা বলে, উর্দুতে খায় আর উর্দুতে ঘুমায়। আবারো আজিজ লেন কিংবা নাপিত অথবা দর্জি। তারপর বিয়ে, আবারো একটা ‘আটকে পড়া পাকিস্তানী’র আবির্ভাব।

উপরের গল্পটি শুধু একজন আকসারের নয় বরং বাংলাদেশে আটকে পড়া শয়ে শয়ে ‘বিহারী’র সন্তান আকসা্রের গল্প। পাকিস্তান-বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, বিহারী ইত্যাদির কোন কিছু না জেনেও তারা আজ বংশ পরম্পরায় কিংবা জন্মসূত্রে 'আটকে পড়া পাকিস্তানী' হিসেবে সামাজিক ভাবে পরিচিত। রাষ্ট্র তাদের ভোটাধিকার প্রদান করবার মধ্য দিয়ে দায়মুক্তি নিলেও আকসারদের সামাজিক মুক্তির দায়ভার গ্রহন করে না। সভ্য মানুষেরা তাদের দেশাত্ববোধের নামে, আকসারদের প্রতি ছুড়ে দেয় তাদের অসম্ভব ঘৃনা। আর তাই প্রতিদিন আজিজ লেনে হাজারো আকসা্রের জন্ম হয় এবং হাজারো আকসার বিলীন হয়ে যায় আটকে পড়া পাকিস্তানী হিসেবে!

মন্তব্য ৪৯ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৪৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৪

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: B:-) দেশে দেশে যুদ্ধ করে বড়রা কিন্তু কষ্ট স্বীকার করে ছোটরা। যা দু:ক্ষ জনক।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৩

অগ্নি সারথি বলেছেন: বিষয়টা আমি বড় কিংবা ছোট হিসেবে দেখছি না শাহাদাৎ হোসাইন ভাই। বিষয়টা হল বিহারীদের মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী প্রজন্মের পরবর্তী প্রজন্মগুলো কিভাবে বেচে আছে এদেশে। রাষ্ট্র এবং সমাজ তাদের প্রতি কি ধরনের দায়িত্ব পালন করছে এবং তারা কোন ধরনের দর্শন নিজেদের মধ্যে ধারন করছে।

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০২

দেলোয়ার সুমন বলেছেন: শাহাদাৎ ভাই এর সাথে সহমত,
আশাকরি আকসার দের ভাগ্য একদিন বদলাবে,

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৪

অগ্নি সারথি বলেছেন: ধন্যবাদ!

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০৭

আহা রুবন বলেছেন: ময়মনসিংহ শহরের আমার এক নাপিত বন্ধুর সূত্রে বেশ কয়েকজনকে জানতাম। এদের বাসা ভাড়া করে থাকার সামর্থ থাকার পরও ক্যাম্পে মানবেতর অবস্থায় বসবাস করত। সেই বন্ধুটি অবশ্য বাঙ্গালিদের সঙ্গে এমনভাবে মিশত, না বললে কেউ বুঝত না, যে সে বিহারি। আমার দুটো বিহারি পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তা আছে। এরা বাংলাদেশের সঙ্গে মিশে গেছে। ভাল চাকরি করে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত তারা। আসলে বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করে, স্বাভাবিক হলেই অনেক সমস্যা দূর হয়ে যেত। বিহারিরা এখনও ভাবে পাকিস্তানই তাদের দেশ। সমস্যাটা তারাই জিইয়ে রেখেছে, চালাকরা মূলধারায় চলে এসেছে।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৮

অগ্নি সারথি বলেছেন: ময়মনসিংহ শহরের বিহারীদের সঙ্গে কথা বলবার সৌভাগ্য আমার হয় নাই কিন্তু আমি সৈয়দপুর (নীলফামারী) এবং রংপুরে প্রায় ৫০ টিরও বেশি বিহারী ক্যাম্পে গিয়েছি এবং তাদের সাথে কথা বলেছি, যেটা আমার একটা গবেষনা কাজের অংশ ছিল। ক্যাম্পে থাকা এসব বিহারী পুরুষদের যে প্রধান পেশা গুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি তা হল- নাপিত, হোটেলে/দোকানে কাজ, দর্জি, ভ্যান/রিক্সা গাড়ি চালক ইত্যাদি ইত্যাদি। এই পেশায় নিযুক্ত এসব মানুষেরা হয়তোবা বাইরে গিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতে পারবে কিন্তু যদি না থাকে তবে তাদের কিছুটা অর্থনৈতিক সাশ্রয় হয় আর অর্থনৈতিক নিরাপত্ত্বাটাকে প্রাধান্য কে না দেয় বলেন। আবার, এসব বিহারীরা ভয়েও থাকে। দলছুট হয়ে গেলে যদি নিজেদের আবাসটা হারিয়ে ফেলে এবং বাঙ্গালীদের সাথে কোন ধরনের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে তবে ক্যাম্পে ফিরবার আর কোন রাস্তা তাদের থাকবেনা। এমন হাজারটা উদাহরন রয়েছে ভাই। সুন্দর এবং নিরাপদ একটা আবাস কে না চায় বলেন। তবে আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, নেহায়েত শখের বসে এসব বিহারীরা ক্যাম্পে থাকছে না। ক্যাম্পে না থাকবার রাস্তাটা আপনি পরিস্কার করেন দেখবেন ক্যাম্পগুলো বিহারী শূন্য হয়ে পড়েছে।
আপনি বলছেন, আপনার দুটো পরিবারের সাথে আত্মীয়তা রয়েছে। খুব ভাল কথা, কিন্তু আমি এবং আমার মত লাখো বাংলাদেশী আপনাকে বলবে যে আমাদের কোন বিহারী পরিবারের সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ কিংবা আত্মীয়তা নেই। কারন আমরা তাদের ঘৃনা করি।
বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করবার রাস্তাটাও তো পরিস্কার নয় তাদের জন্য। আমি আকসারের কথা বলেছি- আকসারকে যখন একটা পাবলিক স্কুলে ভর্তি করা হল তখন শুরুর দিকটায় স্কুল যাওয়াতে আকসারের আগ্রহের কোন কমতি ছিলনা কিন্তু ধীরে ধীরে সে আগ্রহে যেন ভাটা পড়া শুরু হল। কারন সহপাঠীরা তার সাথে বসত না, খেলাধুলা তো অনেক দূর। এমনকি স্কুলের শিক্ষকরা পর্যন্ত সুবিধাজনক আচরন করতনা। অবশেষে মাত্র কদিনের মাথায় আকসারের তীব্র আপত্তিতে তাকে স্কুল ছাড়িয়ে ক্যাম্পেই বিহারীদের জন্য একটা এনজিও স্কুলে ভর্তি করা হল। - এখানে আকসারের দোষটা কোথায় ছিল আমাকে পারলে জানিয়ে যাবেন।
আপনি বলছেন সমস্যাটা তারাই জিইয়ে রেখেছে- দ্বিমত করবনা কিন্তু আমি যদি বলি সমস্যাটাকে জিইয়ে রাখবার জন্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আমরা তাদেরকে বাধ্য করেছি!

৪| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০৭

শূণ্য পুরাণ বলেছেন: রোহিঙ্গাদের মত এরা রাষ্ট্রহীন নয়, তবে এ কাহিনী কম বেদনার নয়।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩

অগ্নি সারথি বলেছেন: দ্বিমত করতে যাবনা শূণ্য পুরাণ। তবে আর্থ-সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় এরাও রাষ্ট্রহীন। আমার রাষ্ট্র আছে কিন্তু সেই রাষ্ট্র আমার মাথা তুলে দাঁড়াবার ক্ষমতাকে হরন করে চলেছে প্রতিনিয়ত। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:২১

প্রিন্স হেক্টর বলেছেন: বিহারীরা হইতেছে "ধোবি কা কুত্তা, না ঘর কা রাহা, না ঘাট কা"। ওরা জন্মসূত্রে ভারতীয়, থাকে বাংলাদেশে আর মনেপ্রানে নিজেদের পাকিস্থানি মনে করে।

টু বি অনেষ্ট আমি বিহারীদের দেখতে পারি না। এরা আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত সবক্ষেত্রে আমাদের বিরোধীতা করেছে। ওরা এখনও নিজেদের পাকিস্থানি মনে করে। ওদের এদেশে রাখা মানে হচ্ছে দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষা।

অনেক বিহারীদের আবার দুমুখো নীতি আছে, ওরা গাছেও খায়, তলাতেও কুড়ায়। স্বচ্ছল ভাবে চলার সামর্থ্য থাকলেও অনেকে ক্যাম্পেই থাকে। তারা পাকিস্তান থেকে আসা আর্থিক সহযোগীতাও নিয়ে থাকে, আবার বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সব ধরণের সুযোগসুবিধা দাবী করে।

তবে বেশ কিছু বিহারী এখন পুরোদস্তুর বাংলাদেশী হয়ে গেছে। আমাদের দেশকে আপন করে নিয়েছে। তাদের সম্পর্কে আমার কোন মাথাব্যাথা নাই। আমার আপত্তি হলো এখনো নিজেদের পাকিস্তানী মনে করা বিহারীদের নিয়ে।

হাইকোর্টের রায় অনুসারে, ১৯৭১ এর পর যাদের জন্ম এদেশে হয়েছে, তারা সবাই বাংলাদেশী। সরকারের উচিত যারা বাংলাদেশকে প্রান থেকে ভালোবেসে নিজের দেশ মনে করে থাকতে চায়, তাদের এদেশের সাধারন নাগরিক হিসেবে সকল সুযোগ সুবিধা দেয়া। আর যারা এখনো পাকিস্তান যেতে চায় লাত্থি মেরে সবকয়টাকে পাকিস্থানে পাঠিয়ে দেয়া। আমরা গরিব দেশ, ৪০-৫০ বছর ধরে লাখ লাখ রিফিউজি পালা আমাদের পোষায় না।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০২

অগ্নি সারথি বলেছেন: দুঃখিত ভাই আপনার এই মন্তব্যের কোন জবাব আমার কাছে নেই তবে নিচে 'এক নিরুদ্দেশ পথিকের' করা মন্তব্যটি দেখতে পারেন।

৬| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৪১

আহা রুবন বলেছেন: প্রিন্স হেক্টরের সঙ্গে সহমত পোষন করি। খাব, পরব, থাকব বাংলাদেশে আর গান গাইব ফাক-ই-স্থানের! এগুলোকে পশ্চাদেশে লাথি মেরে বের করে দেয়া দরকার।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০৫

অগ্নি সারথি বলেছেন: সহমত ভাই। ৮ বছর বয়সী শিশু আকসারদের সহ আর সকলকেই লাথি মেরে দেশ হতে বের করে দেয়া উচিত। কিন্তু প্রশ্নটা হল তারা যাবে কোথায়? পাকিস্তান কিংবা ভারত কেউই তো তাদের দায়িত্ব স্বীকার করছে না। তারা যেখানেই যাক না কেন, আমাদের কি! এই দেশটা আমাদের আর তারা যুদ্ধাপরাধী, যুদ্ধাপরাধীর বাচ্চা যুদ্ধাপরাধী।

শুভকামনা জানবেন।

৭| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৪৪

জগতারন বলেছেন:
প্রিন্স হেক্টর-এর সাথে ১০০ ভাগ সহমত। সেই সাথে এইটুক যোগ না করলেই নয়-
'এখনও যে সমস্ত বিহারি মনে করে, তারা আটকে পরা পাইক্কা তারা মোনাফেক মুসলমান'
এদের পাছায় শুধু **থি দিয়ে দূর করা দরকার।
বাংলাদেশ সকার সাধ্যমত সবকিছু করেছে এদের ভালোর জন্য।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০৬

অগ্নি সারথি বলেছেন: ঠিকাচে।

৮| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯

বুক ওয়ার্ম বলেছেন:
আকসার এর মত বাংলায় জন্মানো শিশুরা বাংলার সন্তান।
এরা জন্মসুত্রে বাংলাদেশের নাগরিক

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০৮

অগ্নি সারথি বলেছেন: যদি তাই হবে তবে রাষ্ট্র তাদের মানুষের মত বাঁচবার অধিকারটুকু ফিরিয়ে দিক।

৯| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৫

এক নিরুদ্দেশ পথিক বলেছেন: রাষ্ট্রের নিরাপত্তার কৌশল ঠিক রেখেও যে অপ্রধান জাতিসত্তার আধিকার স্বীকার করা যায়, সেই যোগ্যতা আমরা দেখাতে পারিনি বরং সেখানে আমরা বার বার ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা দেখাচ্ছি। আমরা অপ্রধান জাতি সমূহের উপর আর্থিক আর সামাজিক আগ্রাসনই অব্যহত রাখিনি, তাদের বেচে থাকার অধিকারকে সংকুচিত করেছি।

অবাঙালী পাহাড়ি, অবাঙালী সমতলি এবং শরণার্থী (বিহারি এবং রোহিঙ্গা) এই তিন ধারার মানুষের অধিকার জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশে দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে।

৪৬ এবং পরবর্তী সময়ের হিন্দু আগ্রাসন, বিহারের দাঙ্গা, জীবন নিয়ে পালিয়ে পাকিস্তান আসা, সেই সাহায্যের কারনে আর উর্দু ভাষী হবার কারনে পাকিস্তানের অখন্ডতা চাওয়া এবং সর্বোপরি পাক হানাদারদের সহায়তা করা, প্রায় সব জায়গাতেই বিহারি শরণার্থীরা সহায় সম্বল আর জীবন হারিয়েছে, তারা সব ক্ষেত্রেই লুজার। ৫৪র আদমজী দাঙ্গা, ৭১ এর পরে চাক্তাই খালে আর কর্ণফুলীর স্রোতে অগুনিত বিহারির লাশ ভাসা, সান্তাহারের বিহারী গনকবর কিংবা ১৯৭২ সালের ১০ মার্চ খুলনার বিহারী গনহত্যা, ঢাকা স্টেডিয়ামে বিহারিদের জড়ো করে রক্ষীবাহিনীর সেই নির্বিচার হত্যা (কাদেরিয়া বাহিনীর), এই সব বাংলার মানুষ বিলকুল ভুলে গেসে। একদিকে আমরা তাদের ভাসমান জীবনের উপর সরাসরি হামলা চালিয়েছি, অন্যদিকে সে সময়ের আশ্রয় দেয়া রাষ্ট্র পাকিস্তান তাদের সাথে বিশ্বাসঘতকতা করেছে, তাদের সরিয়ে নেবার মিথ্যা আশ্বাসই খালি দিয়েছে। লক্ষণীয় যে, বিহারীদের ধর্মীয় পরিচয় তাদের কোন উপকারে আসছে না।

সামান্য ছুতায় এদের সহায় সম্বল কেড়ে নেওয়াই দুর্বৃত্তদের টার্গেট, জেনেভা ক্যাম্পের জমি দখল যেখানে এই নৃশংস অগ্নিকান্ড আর ঘুমন্ত শিশু ও নারী হত্যার অন্তরালের কারন সেখানে পুলিশ সক্রিয় সহায়ক। ভাবতে অবাক লাগে আমাদের চিরবিবাদমান রাজনৈতিক বাঙ্গালী আর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদীরা এই ইস্যুতে আগ্রাসী স্থানীয়দের জুলুমের পক্ষে।

অন্তঃসার শূন্য এবং নতজানু পররাষ্ট্রনীতির করনে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়া, করাচিতে আটকে পড়া লাখো বাঙ্গালীদের নিজ বাসভূমে ফেরত আনার কোন কার্যকর ভূমিকা নিতে কাউকে দেখি না।

আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, কারচীর বাংলাদেশীরাও কি এভাবেই ভয় শঙ্কা এবং দ্বিধায় ভাসমান এবং ফেরারি দিনাতিপাত করছেন? করাচীর আটকে পড়া বাঙালী শিশুরাও কি এভাবেই স্কুলে নিগৃহীত হচ্ছেন?

ছিটমহল ভাগাভাগি হয়েছে, বৃহৎ রাষ্ট্র ভারতের কথিত উদারতা, পরিকল্পনা এবং স্বার্থের বাইরে এসে ওপাড়ের সাবেক বাংলাদেশী ছিটমহলের মানুষেরা কেমন আছে জানতে মন চায়?

অনগ্রসর ও আন্সিভিলাইজড সমাজে সংখ্যাধিক্যের দম্ভ ভিন্ন ধরণের তবে তা সন্ত্রাসেরই বহুরূপী মঞ্চায়ন।

দেশ হীন মানুষের মর্যাদা নিয়ে উপমহাদেশীয় ভাবনা ম্যাচিউর হোক, ভারতীয় উপমহাদেশে মানবতার শিক্ষা পোক্ত হোক!

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১১

অগ্নি সারথি বলেছেন: ইতিহাস বস্তুডায় সবসময় প্রতিনিধিত্বশীলেরাই প্রতিনিধিত্ব করে। এ আবার নতুন কি!
বিহারীদেরকে মানুষ ভেবে লম্বা একটা মন্তব্যের জন্য স্যালুট বস!

দেশ হীন মানুষের মর্যাদা নিয়ে উপমহাদেশীয় ভাবনা ম্যাচিউর হোক, ভারতীয় উপমহাদেশে মানবতার শিক্ষা পোক্ত হোক!

১০| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৬

রাতু০১ বলেছেন: ভাগ্য একদিন বদলাবে সবার, আশা ।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৩

অগ্নি সারথি বলেছেন: সুন্দর প্রত্যাশাটুকুনের জন্য ধন্যবাদ!

১১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৪

মেঘ ছাউনী বলেছেন: বিহারী সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম,যা আগে জানা ছিল না।ধন্যবাদ অগ্নি ভাইয়া।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:২৬

অগ্নি সারথি বলেছেন: আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ মেঘ ছাউনী। শুভকামনা শতত।

১২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪৫

পুলহ বলেছেন: কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো সম্পর্কে কোন বাইনারি মন্তব্য (হ্যা/না, ১/০, কিংবা সাদা/কালো) করা যায় না। এটাও তেমন একটি বিষয়।
এক নিরুদ্দেশ পথিক ভাইয়ের মন্তব্য খুব ভালো লেগেছে।
জাতি/ধর্ম/বর্ণ নির্বিশেষে মানবজাতির প্রতিটি নির্যাতিত মানুষ মুক্তি পাক- এটাই শুধু কামনা করি।
শুভকামনা সারথি ভাই!

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৩৫

অগ্নি সারথি বলেছেন: জাতি/ধর্ম/বর্ণ নির্বিশেষে মানবজাতির প্রতিটি নির্যাতিত মানুষ মুক্তি পাক।
ধন্যবাদ পুলহ ! শুভকামনা জানবেন।

১৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৩৬

আখেনাটেন বলেছেন: ঢাকা শহরে বাস করে অনেকেই বিহারীদের এই অবর্ণনীয় অবস্থার কথা জানে না। অথবা জানলেও মানে না। অথবা যারা মানে তাদের কিছু করার নেই এখানে। ব্যাপারটা পুরোটাই রাজনৈতিক। তাই এর সমাধানটাও রাজনৈতিকই হওয়ার কথা। কিন্তু হতাশার কথা এই যে, স্বাধীনতার পর কিছু উদ্যেগ চোখে পড়লেও এর পর কোনো রাজনৈতিক দলই এটিকে তেমন গুরুতর সমস্যা মনেই করে না। পাকিদেরও এ নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। একবিংশ শতাব্দিতেও একটি মানবিক শহরের বুকে কিছু মানুষ অমানবিক জীবন-যাপন করছে।



০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৫

অগ্নি সারথি বলেছেন: সহমত আখেনাটেন। একবিংশ শতাব্দিতেও একটি মানবিক শহরের বুকে কিছু মানুষ অমানবিক জীবন-যাপন করছে। আমি দেখেছি, নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক নেতাদের মিটিং কিংবা মিছিলে এই বিহারী লোকেরাই কিন্তু জনতার কাতার পূর্ন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। রাজনৈতিক নেতারা তাদের ব্যবহার করছে কিন্তু অধিকার সংক্রান্ত প্রশ্নে একদম চুপ বরং আমরা এমন একটা সিস্টেম তৈরি করে রেখেছি যা থেকে তাদের বের হয়ে আসাটা দুস্কর।

১৪| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৩:২৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এদের নিয়ে যে কোন রিপোর্ট পড়লে খারাপ লাগে। এদের অভিভাবকদের কারণেই এদের আজ এ অবস্থা। এরা স্বাধীনতার পর পর বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে নিলে এত ঝামেলা হতো না। পাকিস্তানের আটকে পড়া বাংলাদেশীরা কিন্তু এখন পাকিস্তানী হিসেবে মূলধারাতে মিশে গেছে। কিন্তু তেড়া পাকিস্তানীদের কারণে আজকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাংলাদেশে কষ্ট করছে। তবে এদের অনেকেই কায়িক শ্রম করে মূলধারায় মিশে গিয়েছে। বাকীদের জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত খুবই জরুরী...

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৭

অগ্নি সারথি বলেছেন: যুদ্ধপরবর্তী সময়ে যখন বিহারীদের খুন-গুম ঘটনাগুলো মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল তখন ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস কিন্তু বাংলাদেশে অবস্থানরত বিহারীদের পুনর্বাসনের চেষ্টায় মনযোগ দেয়। তারা বিহারী নেতাদের সাথে কয়েক দফায় বসে এবং তাদের সিদ্ধান্ত চায়। বিহারীরা পাকিস্তানে চলে যাবার পক্ষে রায় দেয়। শুরুর দিকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ বিহারীকে পাকিস্তান সরকার গ্রহন করলেও বাকীদের আর ফেরত নেয় নাই কিংবা বাংলাদেশ সরকারও তাদেরকে ফেরত পাঠাতে কোন কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে নাই। ফলাফল দিনের পর দিন ক্যাম্পগুলোতে পচতে থাকে এসব বিহারীগন।
আপনি বলছেন, মূলধারাতে মিশে গিয়েছে! কিন্তু তার সংখ্যাটা বেশ নগন্য। আর মূল ধারাতে মিশে যাবার রাস্তাটাও এত সোজা নয়। আমার তো মনে হয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের থেকে এখন জরুরী হল রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত!

১৫| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৯

বিজন রয় বলেছেন: এখন দিন বদলেছে। ওদেরকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা কেউ করেনি।
দুঃখজনক।
মানুষ যে কোন ভাবেই মুনষ্যত্বহীন।

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ সারথী।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩২

অগ্নি সারথি বলেছেন: মানবিক মন্তব্যটির জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ বিজন রয়।

১৬| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৮

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন সেই সময়ের প্রাপ্তবয়স্কদের অনেকেই এখন আর বেঁচে নেই। অনেকেই বার্ধক্যে । যারা বেঁচে আছেন তারা হতাশার নিঃশ্বাস ফেলেন অস্থির-অনিশ্চিত জীবনের দিকে তাকিয়ে। পাকিস্তান সরকার বার বার আশ্বাস দিয়েও তাদের ফিরিয়ে নেয়নি। এদের অনেকেই দেশের মুল ধারায় মিশে গেলেও আর্থিক দূরবস্থার কারণে বেশির ভাগ মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশতে পারেনি। এদের নিয়ে বাংলাদেশের ভাবা উচিত। এদের নাকি ভোটাধিকারও আছে তাছাড়া, আইন অনুযায়ী এরা বাংলাদেশের নাগরিক। এরা ক্যাম্পে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছে। মানবিক কারনে এদের সম্পর্কে সমাজের মূল স্রোতের মানুষের ও দেশের দৃষ্টিভঙ্গি পালটিয়ে এদের পুনর্বাসিত করা দরকার।
মানবিক বিষয়টি নিয়ে চমৎকার পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ অগ্নি সারথী।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৫১

অগ্নি সারথি বলেছেন: সহমত। গুরুত্বপূর্ন মন্তব্যটুকুর জন্য অনেক ধন্যবাদ লিটন ভাই।

১৭| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: পৃথিবীর সবচেয়ে অমানবিক চিন্তাধারা হচ্ছে, "পূর্ব পুরুষের কৃতকর্মের শাস্তি উত্তরাধিকারীদের ভোগ করা"। এখানে এটিই হচ্ছে। আর যারা নিজেদের এখনো পাকিস্তানী মনে করে, তারা মূলত জন্ম থেকে এমন এক আবদ্ধ গণ্ডিতে বড় হয়েছে, যেখানে মুক্তভাবে চিন্তা করার মানসিক সামর্থ্য কয়জনের গড়ে উঠেছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

বরাবরের মত ব্যতিক্রমী, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট। পোস্টে প্লাস। ২০০১-২০০২ সালের দিকে এই বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী কাজ করার ইচ্ছে ছিল, কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে। কিন্তু তারুণ্যের হাজারো প্ল্যানের মাঝে তা কোথায় হারিয়ে গেছে।

ভাল থাকুন সবসময়, চলুক আপনার ভিন্ন ভিন্ন অনুসন্ধানী পোস্টের লেখা। +++

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৩

অগ্নি সারথি বলেছেন: ধন্যবাদ বোকামানুষ। আপনার চিন্তা ভাবনায় স্যালুট!

১৮| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫৫

আজীব ০০৭ বলেছেন: আপনার অনুসন্ধানী পোস্টের লেখায় +++

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৪

অগ্নি সারথি বলেছেন: ধন্যবাদ আজীব ০০৭। নিয়মিত হচ্ছেন দেখে ভাল লাগছে।

১৯| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৫

সুমন কর বলেছেন: আকসারের গল্প পড়ে খারাপ লাগল। পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৩৫

অগ্নি সারথি বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা প্রিয় সহব্লগার।

২০| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২৮

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পটি পড়ে যদিও একটু খারাপ লেগেছে তারপরেও আপনার বর্ননাতে মুগ্ধ । ওরা হতে পারে ভিন্নমতালম্বী কিন্তু মানুষ বলেতো কোন কথা আছে , আছে মানবিকতা। ভাল থাকবেন।

একজন ভাল লেখিকা নতুন ব্লগে এসেছে কিন্তু ওনার লিখা প্রথম পেইজে আসছেনা তাই ওনি মনক্ষন্ন। আমার মতে ওনি অনেক প্রতিভাবান অাসুন ওনার পোষ্টটি পড়ে দেখে নিই ওনার লিখনির অবস্থান।
view this link
এখানে লিঙ্কটি দিলাম প্লিজ পড়বেন

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৩৮

অগ্নি সারথি বলেছেন: ধন্যবাদ।

২১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ, অনেক গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়ে কলম ধরেছেন। ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে মানবিক কারনে দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকা বিষয়টির সমাধানে বাংলাদেশ পাকিস্তান উভয়ে দেশেরই সুমতি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন সময়ের দাবি।

'এক নিরুদ্দেশ পথিক' ভাইয়ের বিশ্লেষনধর্মী মন্তব্যটির অনেক কথার সাথেই সহমত।

ভাল থাকবেন প্রিয় সারথী।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬

অগ্নি সারথি বলেছেন: বেশ গুরুত্বপূর্ন একটা মন্তব্য করেছেন।
ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে মানবিক কারনে দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকা বিষয়টির সমাধানে বাংলাদেশ পাকিস্তান উভয়ে দেশেরই সুমতি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন সময়ের দাবি - সহমত।

শোষন আর নিপীড়নের চিত্রটা ধরতে পারার জন্য ধন্যবাদ ভ্রাতা।

২২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২৮

নতুন নকিব বলেছেন:



ইনস্ট্যান্ট প্রতি মন্তব্যে আপ্লুত!

তা দাদা ভাই, কাছে যখন পেয়েই গেলাম একটু আজাইড়া প্যাচাল পারি। অগ্নির সাথে আপনার দহরম মহরম; আর সে কারনে আপনি 'অগ্নি সারথী' - জোসনার সাথে, চাঁদের সাথে, প্রভাতের সাথে কেন আপনার এই সারথ্য-সম্প্রীতি গড়ে উঠল না?

দাদা ভাই, দ্রুততার সাথে মন্তব্যটি টাইপ করতে গিয়ে দ্বিতীয় লাইনের মাঝাামাঝি অংশে 'উভয়ে' শব্দটিতে একটি এ -কার অতিরিক্ত থেকে গেছে। কষ্ট করে যদি ঠিক করে দেন, কৃতজ্ঞ থাকব।

অনেক ভাল থাকবেন।

২৩| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:১০

টারজান০০০০৭ বলেছেন: বাঙালি হত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণ এবং সহযোগিতা করে বিহারিরা দোষী কোনো সন্দেহ নাই , কিন্তু স্বাধীনতার বিরোধিতা করে এমনকি স্বাধীন রাষ্ট্রে রাষ্ট্রদোহিতার কাজ করেও উপজাতি সন্ত্রাসীগুলো যেই জামাই আদর পায় , বিভিন্ন কোটায় নিম্নমানের মেধা নিয়ে যারা সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি , সরকারি চাকুরীর সুবিধা বাগাইতেছে তাদের ব্যাপারে কবি নীরব কেন বুঝি না। এই মানবিক বিষয় তুলে ধরার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
সতর্কতা : আপনি অতি শীঘ্রই রাজাকার উপাধি পাইতে পারেন !

০১ লা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৩

অগ্নি সারথি বলেছেন: প্রান্তজনের কথা বলতে গিয়ে অনেকবারই রাজাকার, ছাগু ট্যাগিং খেয়েছি। এখন আল-বদর, আল-শামস এইগুলানের প্রতীক্ষায় রয়েছি আরকি!
উপলব্ধিটুকুর জন্য ধন্যবাদ ভ্রাতা।

২৪| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৪৩

আততায়ী আলতাইয়ার বলেছেন: ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে পাক হানাদার বাহিনী ঢাকা থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আগে ঢাকার বাইরে যেসকল বিহারী সপরিবারে পাইকারি হারে হত্যার শিকার হয়েছিলো ধর্ষনের শিকার হয়েছিলো তাদের হত্যাকান্ড গুলোর ও মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় বিচার হওয়া দরকার। বাংলাদেশী জাতীয়তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইতিহাস বিশ্লেষন করলে হয়তো ব্যাপারটা তেমন কিছু নয় কিন্তু নিউট্রাল পয়েন্ট অব ভিয়্যু থেকে চিন্তা করলে ব্যাপারটা মুক্তিযুদ্ধের জন্য কিঞ্চিত হলেও বিব্রত কর এবং ভবিষ্যতে এটা নিয়ে কথা উঠবে না যে তার কোন নিশ্চয়তা নাই। যেসব স্থানে বিহারী হত্যা হয়েছিলো সেইসব এলাকার লোকাল ন্যাপ ও আওয়ামিলীগ নেতাদের বিচারেও আওতায় আনা দরকার।

০১ লা মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৫

অগ্নি সারথি বলেছেন: ইতিহাস বস্তুডা সর্বদাই প্রতিনিধিত্বশীলদের জন্য এবং দ্বারা লিখিত হয়!
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।

২৫| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: একটা স্পর্শকাতর, কিন্তু মানবিক বিষয় নিয়ে লিখেছেন, এ জন্য অভিনন্দন!
তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের অমানবিকতা, শঠতা ও কূটনৈতিক কপটতার কারণে এদেরকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে এমন দুর্ভাগ্য বরণ করে নিতে হয়, তবে পরবর্তীতে আমাদের সরকারগুলোর অদূরদর্শিতাও এ সমস্যাটিকে এতদিন ধরে জিইয়ে রেখেছে। যেহেতু এ জনগোষ্ঠির বৃহদাংশ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই এ দেশের সরকার এবং জনগণ এদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলনা। কিন্তু এদের পরবর্তী প্রজন্মকে দেশের মূল ধারার সাথে একাত্ম হবার একটা পথ খোলা রাখা সমীচীন ছিল বলে মনে করি। হাইকোর্টের রায় অনুসারে, ১৯৭১ এর পর যাদের জন্ম এদেশে হয়েছে, তারা সবাই বাংলাদেশী (৫ নং মন্তব্য থেকে উদ্ধৃত) -- এটা যদি সত্য হয়, তবে সেটা আরো বেশী সমীচীন ছিল।
"তখন তারা আবার রংপুরের হারাগাছ উপজেলার সিতাই বর্ডার দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে কুচবিহারে চলে গেলেন" - এই সিতাই বর্ডারটি কি হারাগাছ উপজেলায়? আমার ধারণা ছিল লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় অথবা রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায়। ১৯৭১ সালে লক্ষ লক্ষ বাঙালী এ পথ দিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিলেন বলে শুনেছিলাম।
কুচবিহারে বসে তিনমাস ভারত সরকারের ফ্রি রেশন তো তারা খেল কিন্তু এই ফ্রি রেশন যে কাল হয়ে যাবে তা বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারে নাই -- কোন কিছুই ফ্রী খাওয়া কখনোই ভাল না।
রাষ্ট্র তাদের ভোটাধিকার প্রদান করবার মধ্য দিয়ে দায়মুক্তি নিলেও আকসারদের সামাজিক মুক্তির দায়ভার গ্রহন করে না। সভ্য মানুষেরা তাদের দেশাত্ববোধের নামে, আকসারদের প্রতি ছুড়ে দেয় তাদের অসম্ভব ঘৃনা। আর তাই প্রতিদিন আজিজ লেনে হাজারো আকসা্রের জন্ম হয় এবং হাজারো আকসার বিলীন হয়ে যায় আটকে পড়া পাকিস্তানী হিসেবে -- এমন পরিস্থিতির আশু অবসান একান্ত কাম্য। সব ধরণের অমানবিকতার বিরুদ্ধে মানবিকতার জয় হোক! এক নিরুদ্দেশ পথিক এর সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই, দেশহীন মানুষের মর্যাদা নিয়ে উপমহাদেশীয় ভাবনা ম্যাচিউর হোক, ভারতীয় উপমহাদেশে মানবতার শিক্ষা পোক্ত হোক!
এক নিরুদ্দেশ পথিক (৯ নং), পুলহ (১২ নং), আখেনাটেন (১৩ নং), গিয়াস উদ্দিন লিটন (১৬ নং) এবং বোকা মানুষ বলতে চায় (১৭ নং) মন্তব্যগুলো ভাল লেগেছে।


০৩ রা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:২৬

অগ্নি সারথি বলেছেন: আপনার সুন্দর চিন্তাভাবনা গুলোর সাথে একাত্মতা জানাই এবং একই সাথে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি!
আপনি ঠিক আছেন, ভূলটা আমার। সিতাই বর্ডার মূলত কুচবিহারে তথা লালমনিরহাট আদিতমারি পার হয়ে ওপারের ভারতীয় অংশ। ঠিক করে নিলাম।
আপনি এবং এক নিরুদ্দেশ পথিক এর সাথে আমিও কন্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই, দেশহীন মানুষের মর্যাদা নিয়ে উপমহাদেশীয় ভাবনা ম্যাচিউর হোক, ভারতীয় উপমহাদেশে মানবতার শিক্ষা পোক্ত হোক!
সুন্দর মন্তব্যে ভালোলাগা খায়রুল আহসান ভাই। শুভকামনা শতত!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.