নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথু ঘোষ

বুদ্ধদেব গুহের "মাধুকরি" উপন্যাসের পৃথু ঘোষ আমি

পৃথু ঘোষ

আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন, খুজি আমি তারে আপনায়..............

পৃথু ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কৃষি জমি এখন সোনার হরিণ: এক বিঘা জমি দু লাখ টাকার কমে মিলে না

০৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ ভোর ৪:১০

দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে কৃষি জমি এখন সোনার হরিণ। যতদিন যাচ্ছে ততই কৃষি জমির দাম বাড়ছে। বর্তমানে এক বিঘা কৃষি জমির দাম নিচে দু’ লাখ টাকা থেকে উপরে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। গ্রামের প্রবাসীদের প্রেরিত টাকার সিংহভাগ জমি কেনায় বিনিয়োগ হচ্ছে।



লোকসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে জমির উপর চাপ বাড়ছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকায় চাষি ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০০ সালের পর কৃষি জমির দাম দ্রুত বাড়ছে। আবার এলাকা ভেদে জমির দামও ভিন্ন রয়েছে। যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুত গ্রামের চাষি মোঃ ইজাজুল ইসলাম জানান, তাদের এলাকায় প্রতি বিঘা কৃষি জমির দাম চড়তে চড়তে ৪ লাখ টাকায় উঠেছে। তিনি জানান, তাদের এলাকায় ভাল সবজি আবাদ ও বোরো ধান হয়। এজন্য জমির চাহিদাও ব্যাপক। ২০০০ সালে এক লাখ টাকাতে এক বিঘা ( ৩৩ শতক ) জমি কেনা যেত। ২০০৫ সালে দাম বেড়ে ২ লাখ টাকা হয়। তারপর দাম দ্রুত বাড়ছে। যশোরের এলাঙ্গীখালী এলাকার উপ-সহকারি কৃষি অফিসার বেল্লাল হোসেন জানান, দু’ আড়াই লাখ টাকার নিচে এক বিঘা জমি কেনা যায় না। তিনি জানান, কৃষি জমির দাম দ্রুত বেড়ে চলেছে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারি ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি অফিসার ফিরোজ আল মামুন জানান, বর্তমানে এ উপজেলাতে এক বিঘা জমি দু লাখ টাকার নিচে কেনা যায় না। বছর পাঁচেক আগে প্রতি বিঘার দাম এক লাখ ২০-২৫ হাজার টাকা ছিল। পদ্মার চরাঞ্চল রামকৃষ্ণপুর, চিলমারি মরিচা ও ফিলিপনগর ইউনিয়নে দাম কম বলে তিনি জানান। উপজেলা কৃষি অফিসার প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, আল্লারদরগা এলাকাতে দাম আবার বেশি। মিরপুর উপজেলাতে এক বিঘা কৃষি জমি দু’ লাখ টাকার নিচে মিলে না। কুষ্টিয়া সদর উপজেলাতে জিকে প্রকল্প এলাকায় যেখানে সেচ সুবিধা আছে সেখানে তিন লাখ টাকার উপরেও এক বিঘা কৃষি জমি বিক্রি হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ গোলাম ফারুক জানান, দু’ লাখ টাকার নিচে এক বিঘা চাষের জমি কেনা যায় না। রাস্তার পাশের জমির দাম আরো বেশি বলে তিনি জানান। মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, কৃষি জমি প্রতি বিঘা দু’ লাখ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। দামুরহুদা উপজেলাতেও কৃষি জমি প্রতি বিঘার দাম দু’ লাখ-আড়াই লাখ টাকা। ৫-৬ বছর আগে দাম ছিল এক লাখ ২০-৩০ হাজার টাকা।



ঝিনাইদহ জেলাতে প্রতি বিঘা কৃষি জমির দাম চড়তে চড়তে দু’ আড়াই লাখ টাকা হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলার কুল্লাপাড়ার চাষিরা জানান, তাদের এলাকাতে চাষের মিলানো দায়। প্রতি বিঘা দু’ থেকে আড়াই লাখ টাকা দামে কেনাবেচা হচ্ছে। শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের মাসুদ রেজা পান্না জানান, ১৫ বছর আগে তাদের মাঠে এক বিঘা জমির দাম ৪০ - ৫০ হাজার টাকা ছিল। এখন ইচ্ছা করলেই জমি কেনা যায় না। বর্তমানে এক বিঘার দাম তিন লাখ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলায় ধানী জমি দু’লাখ টাকা বিঘা। আবার চিংড়ি ঘের এলাকায় দাম তিন লাখ টাকা। মাগুরা জেলাতেও এক বিঘা কৃষি জমি দু’লাখ টাকা করে কেনাবেচা হচ্ছে।



এব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশ স্বাধীনের পরও ৫-৭ ’শ টাকায় এক বিঘা কৃষি জমি কেনা যেত। ১৯৭৫-৭৬ সালে দাম বেড়ে এক হাজার টাকা, ১২’শ টাকা হয়। ১৯৮০ সালের পর দাম বাড়তে থাকে। ১৯৮৫ সালে ১৫ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকায় এক বিঘা কৃষি জমি কেনা যেত। ১৯৯০ সালে দাম বেড়ে ৪০- ৫০ হাজার টাকা বিঘা হয়। এরপর দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।



কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রণীত কৃষি ডাইরি ২০০৯-এ বর্ণিত তথ্যে জানা যায়, দেশে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ হচ্ছে ৯০ লাখ ৯৪ হাজার হেক্টর। আর আবাদযোগ্য পতিত জমি আছে দু’ লাখ ৭৮ হাজার হেক্টর। দেশে বর্তমানে এক ফসলী জমি হচ্ছে ১৮ লাখ ৫৫ হাজার হেক্টর, দো ফসলী জমি ৪৪ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর ও তিন ফসলী জমির পরিমাণ হচ্ছে ১৮ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর এবং তিন ফসলীর অধিক জমির পরিমাণ ৪০ হাজার হেক্টর। জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত কারণে দেশে আবাদী জমির উপর চাপ বাড়ছে। প্রতি বছর বর্ধিত জনসংখ্যার বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে বিপুল পরিমাণ আবাদী জমি অনাবাদী জমিতে পরিণত হচ্ছে।



এদিকে গ্রামের মানুষের হাতে টাকা জমলে জমি কিনে থাকে বহু বছর আগ থেকে। বর্তমানে গ্রামের প্রবাসীদের প্রেরিত টাকার সিংহভাগ জমি কিনে বিনিয়োগ করে থাকে। তাদের প্রেরিত টাকা গ্রাম এলাকাতে অন্য কোন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ নেই। এজন্যও কৃষি জমির দাম বাড়ছে। আবার গ্রামের জমির মালিকদের একটা বড় অংশ জেলা বা উপজেলা শহরে বাসা-বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন। তারা গ্রামের কৃষি জমি ফসল ভিত্তিক বা বছর ভিত্তিতে লিজ দিয়ে থাকেন। বর্তমানে এক বিঘা জমি বছর ভিত্তিক ৭- ৮ হাজার টাকায় লিজ দেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.