![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাতাসে ভেসেছে সেই প্রিয় সুর- আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। তরুণ প্রজন্মের ডাকে এভাবেই এক পতাকাতলে এক সুরের জালে একাকার হয়ে যায় বাংলাদেশ। গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পালিত হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত গাওয়ার এই কর্মসূচি।
রাজধানীর সুরম্য ভবনের অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অজপাড়াগাঁয়ের নড়বড়ে খুঁটির ওপর কোনোরকমে দাঁড়িয়ে থাকা জরাজীর্ণ বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা একযোগে একই আবেগে হৃদয়ের সব মমতা ঢেলে দিয়ে তাদের সংহতি প্রকাশ করেছে নতুন প্রজন্মের প্রাণের দাবির সঙ্গে। কোটি কোমল কণ্ঠ আকাশ কাঁপিয়ে তুলে আবার ঘোষণা করেছে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি।
শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন আন্দোলনের উদ্যোক্তা সংগঠন ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ডা. এমরান এইচ সরকার। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে কর্মস্থলমুখী মানুষ কিছু সময়ের জন্য থমকে দাঁড়ায়। সুর মেলায় জাতীয় সংগীতের সুরে। চারপাশে নেমে আসে গভীর নীরবতা। আবেগাপ্লুত তরুণদের চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রুধারা। জাতীয় সংগীত শেষে 'জয় বাংলা' স্লোগানে আবার জেগে ওঠে সবাই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গণ-অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
দেশের সর্বত্র এই কর্মসূচি পালনের খবর পাওয়া গেছে। গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচির প্রতি একাত্ম হয়ে একই সময়ে রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেটসহ দেশের সব শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দারুণ স্বতঃস্ফূর্ততায় এই কর্মসূচি পালিত হয়। একসঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে তারুণ্যের জাগরণের সঙ্গে যুক্ত হয় সারা দেশের স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর আগে একই সঙ্গে সারা দেশে তিন মিনিট নীরবতা পালন এবং মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশ একাত্ম হয়েছে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত গাওয়ার পর আজ সোমবার শহীদ স্থপতি ও ব্লগার রাজীব স্মরণে কালো ব্যাজ ধারণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি পালিত হবে। একই সঙ্গে জামায়াত-শিবির ঘোষিত আজকের হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান ও প্রতিহত করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে।
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে গতকাল জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন ছায়ানটের শিল্পীরা। সংগীত পরিবেশন শেষে আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান, 'আপনি যে ওয়াদা রাজীবের মাকে জানিয়ে এসেছেন। তা বাস্তবায়ন করুন।'
বৈরী আবহাওয়া থামাতে পারেনি কিছুই : যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে শাহবাগ চত্বরে শুরু হওয়া লাগাতার গণ-অবস্থান কর্মসূচির ১৩তম দিনে এসে বৈরী আবহাওয়ার প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলো। তবে গতকাল দুপুর থেকে শুরু হওয়া বিরামহীন বৃষ্টি আন্দোলনে কোনো ছন্দপতন ঘটাতে পারেনি। প্রতিবাদী জনতা বৃষ্টিস্নাত হয়েও গণজাগরণ মঞ্চের চারপাশেই অটল অবস্থান বজায় রাখেন।
'ঝড় হবে, বৃষ্টি হবে- সংগ্রাম চলবেই চলবে'- এমন স্লোগানে মুখর ছিল প্রজন্ম চত্বর। মঞ্চ থেকে বক্তারা বলতে থাকেন, গুলি, বোমা, ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা উপেক্ষা করেই বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন। এ প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধারাও বৈরী আবহাওয়া আর হত্যার হুমকি উপেক্ষা করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
গণজাগরণ মঞ্চে এখন তীব্র হয়ে উঠেছে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি। গণজাগরণের সক্রিয় কর্মী ব্লগার রাজীব হায়দারসহ কয়েকজন আন্দোলনকারী জামায়াত-শিবিরকর্মীদের হাতে হত্যার শিকার হওয়ার পর থেকে এ দাবিই সামনে চলে এসেছে। গতকাল গণজাগরণ মঞ্চ থেকে শহীদ রাজীব স্মরণে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের ফোয়ারার পাশে একটি অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সংসদে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন (সংশোধন) বিল পাস হওয়ায় গণজাগরণ মঞ্চ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় আন্দোলন মঞ্চে এ সংবাদ পৌঁছলে উপস্থিত জনতা করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানায়। একই সঙ্গে রাজাকারদের ফাঁসি নিশ্চিত ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ অন্যান্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়।
জাতীয় সংসদে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সংশোধিত আইন পাস হওয়ার খবর জানানোর জন্য সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, রাশেদ খান মেনন, সাবের হোসেন চৌধুরী ও ফজলে হোসেন বাদশা সমাবেশস্থলে যান। এ সময় তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'বাংলার মানুষকে জাগ্রত করেছে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর। সংসদের পক্ষ থেকে প্রজন্ম চত্বরে এসেছি। তাদের দাবি অনুযায়ী আইন সংসদে পাস হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যেও যে আন্দোলন চলছে, এটা একাত্তরের মতো পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। যে ব্লগার রাজীব নিহত হয়েছেন, তাঁর স্মরণেও সংসদে শোক প্রকাশ করেছি। প্রজন্মের দাবি আমরা বাস্তবায়ন করেছি।' এ সময় ডা. ইমরান জাতীয় সংসদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, 'এটি আমাদের প্রাথমিক বিজয়। চূড়ান্ত বিজয় না আসা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ছি না।'
প্রজন্ম চত্বরে মিষ্টি বিতরণ : গতকাল জাতীয় সংসদে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) বিল ২০১৩ পাস হওয়ার পর গণজাগরণমঞ্চে মিষ্টি বিতরণের ধুম পড়ে যায়। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের মধ্যে মিষ্টি সরবরাহ করা হয়। এ সময় অনেককে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।
মঞ্চে সরকারদলীয় এমপিরা, চলছে তাঁবু টানানোর কাজ : অন্যদিকে গতকাল বৈরী আবহাওয়ার কারণে আন্দোলনকারীদের অনেকটাই বেগ পেতে হয়। এ অবস্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাতেই বাঁশের খুঁটি দিয়ে তাঁবু টানিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করা শুরু হয়। এ কাজের জন্য রাতেই এক ট্রাক বাঁশ ও অন্যান্য সরঞ্জাম আনা হয়।
এ ছাড়া রাতে একসঙ্গে ১৭ জন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী সাদা গেঞ্জি গায়ে মঞ্চে হাজির হন। তাঁরা হচ্ছেন ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, শাজাহান খান, আবদুল মান্নান খান, সুবিদ আলী ভূঁইয়া, আহাদ আলী সরকার, আসাদুজ্জামান নূর, জুনায়েদ আহমেদ পলক, শামসুল আলম চৌধুরী, আবুল কাশেম, জাহানারা বেগম, বেবী মওদুদ, রওশন জাহান সাথী, চয়ন ইসলাম, তারানা হালিম ও রহমত আলী। তাঁদের গেঞ্জির সামনে লেখা ছিল 'বদলে দেব এ দেশকে যেমনটি দিয়েছি একাত্তরে'। পেছনে লেখা ছিল, 'ওই দেখা যায় ফাঁসির মঞ্চ, ওই যে মোটা রশি, একাত্তরে পাপ করেছিস, হবেই তোদের ফাঁসি।' এরপর রাতে আরো অর্ধশতাধিক সংসদ সদস্য প্রজন্ম চত্বরে আসেন।
জামায়াতের হরতাল প্রতিরোধের ডাক : নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু জামায়াতের ডাকা হরতাল প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, হরতালে যানবাহন চলবে। সব খোলা থাকবে। হরতালকারীদের প্রতিরোধ করতে হবে। সংহতি জানাতে এসে দোকান মালিক সমিতির নেতারা বলেন, 'সব দোকানপাট খোলা থাকবে। আমরা এ হরতাল মানি না।'
সড়ক পরিবহন সংস্থার পক্ষ থেকে খন্দকার এনায়েত হোসেন বলেন, 'সব ধরনের যানবাহন চলবে। আমরা কোনো হরতাল মানব না।'
মুক্তিযুদ্ধ কমান্ড কাউন্সিলের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল সমাবেশে যোগ দেয়। এ সময় তারা বলে, জয় বাংলাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে।
আরো একাত্মতা প্রকাশ : সমাবেশে মেহেরুন্নেসা নামের এক গৃহিণী ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট বাতিলের ঘোষণা দিয়ে গতকাল আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান।
এভাবে আরো সংহতি জানিয়েছে গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী, ইডেন কলেজ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্র্থীরা, সরকারি কর্মকমিশন, কর্মকমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোস্তফা চৌধুরী, কানাডাপ্রবাসী নজরুল ইসলাম মিন্টু, বদরুন্নেসা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নেতৃত্বে শতাধিক শিক্ষার্থী, ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী, বারডেম স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, তেজগাঁও মডেল হাই স্কুল, লিবিয়াপ্রবাসী রশিদ আহমেদ মুন্না, তিতুমীর কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল ব্যাংক ও শিকদার মেডিক্যালের পরিচালক লিসা ফাতেমা হক শিকদার, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, ফ্যাশন ডিজাইনার এমদাদ খান, মাহিন খান, ফারজানা মুন্নিসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মসূচি পালন : শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল ১০টায় রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা গেয়ে ওঠেন জাতীয় সংগীত। অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে এ কর্মসূচিতে। যেসব স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল সেখানে এ কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত আকারে পালিত হয়েছে।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গোড়ান আলী আহমদ হাই স্কুল ও আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, গভ. ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, টিকাটুলী শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়, মিতালী বিদ্যাপীঠ, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ, বাড্ডা আলাতুন্নেছা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বনানী বিদ্যানিকেতনসহ রাজধানীর সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তবে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি কিছু মাদ্রাসায় এ কর্মসূচি উপেক্ষা করা হয়েছে জানা গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। উপাচার্য এ সময় বলেন, 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে তরুণ প্রজন্ম আজ ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়েছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার তরুণদের এই দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।'
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লার নেতৃত্বে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শাদাত উল্লাহ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়ার নেত্বত্বে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
বেসরকারি প্রাইম ইউনিভার্সিটির উত্তরা ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আবুল হোসেন।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে জাতীয় সংগীত গেয়ে ওঠে। এ সময় অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা বেগমসহ অন্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজেও এ কর্মসূচি পালিত হয়। স্কুলের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম জানান, স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র থাকায় সংক্ষিপ্ত আকারে কর্মসূচিটি পালন করতে হয়েছে।
বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করার পর তাদের একটি দল শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয়।
সারা দেশের চিত্র
চট্টগ্রাম : শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের গণজাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মিলিতভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। পরে প্রতিবাদী স্লোগানে এলাকা প্রকম্পিত হয়।
খুলনা : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মহানগরী এবং জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গতকাল সকাল ১০টায় একযোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়েছে।
বরিশাল : জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে তরুণ প্রজন্মের গণজাগরণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
যশোর : যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে জেলার দুই হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গতকাল সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মিলিতভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
রাজশাহী : শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মিলিতভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য এম আবদুস সোবহান। পরে রাজীব হায়দার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সিলেট : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়েছে।
রংপুর : শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের দেওয়া কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রংপুরে দুই হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় সংগীত গেয়ে ও স্লোগান দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
এনইউবি ও এইউবিতে পতাকা উত্তোলন : স্বাধীনতা প্রজন্মের শাহবাগ থেকে ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে গতকাল সকাল ১০টায় নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (এনইউবি) বনানীস্থ প্রধান ক্যাম্পাসসহ সব ক্যাম্পাসে পৃথকভাবে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশেও (এইউবি) জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত গেয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৯
আমিনুর রহমান বলেছেন:
জয় বাংলা !
জয় প্রজন্ম !