![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত কয়েক মাস ধরে জামায়াত-শিবির দেশব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও তা-ব চালাচ্ছে। প্রথম থেকে অনেকের মনে সন্দেহ ছিল, এসব তা-বের সঙ্গে পাকিস্তানী জঙ্গীদের সংযোগ রয়েছে। অবশেষে সবার সন্দেহ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। শনিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ রাজধানীর নিকুঞ্জ, কাঁঠালবাগান ও পুরনো ঢাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হরকত-উল-মুজাহিদের সদস্য ৪ পাকিস্তানী নাগরিক ও ১২ বাংলাদেশী নাগরিকসহ মোট ১৬ জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে। জানা গেছে, জামায়াতের নির্দেশ পালন, জঙ্গী তৎপরতা ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ভারতীয় জাল রুপী, ১ লাখ ৩ হাজার বাংলাদেশী টাকা, ৪ হাজার পাকিস্তানী রুপী, ৪শ’ মার্কিন ডলার, ৪টি পাকিস্তানী পাসপোর্ট, ৮টি তাজা হাতবোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, মোবাইল ফোনসহ নাশকতা চালানো ও জঙ্গী তৎপরতা সংক্রান্ত বই এবং কাগজপত্র। শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, গ্রেফতারকৃতরা একই চক্রের সদস্য। তাদের উদ্দেশ্য ছিলÑবড় ধরনের নাশকতা ঘটিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা। ইতোপূর্বে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী তৎপরতার সঙ্গে পাকিস্তানী জঙ্গীদের সম্পর্কের বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে নাশকতামূলক তৎপরতার সঙ্গে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর জড়িত হওয়ার খবরটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। ১৯৭১ সালে তৎকালীন জামায়াতের নেতা ও কর্মীবৃন্দ ছিল পাকিস্তানী হানাদারদের সবচেয়ে বড় সহযোগী। স্বাধীনতার পর জামায়াতের রাজনৈতিক তৎপরতা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সপরিবারে শহীদ হন। তাঁর মৃত্যুর পর খন্দকার মোশতাক ও সামরিক স্বৈরাচারীদের শাসনামলে জামায়াত ধীরে ধীরে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত হয়। একই সঙ্গে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীরা বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে। সেই সময় বাংলাদেশের তৎকালীন শাসকদের সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদের অনুকরণে দেশে তৈরি করা হয় সাম্প্রদায়িক ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’, একই সঙ্গে বেতার-টেলিভিশনসহ সব প্রচার মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম উচ্চারণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
যাই হোক, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বর্তমান মহাজোট সরকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। দেশে জনকল্যাণমূলক অগ্রগতির ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। মহাজোট সরকার তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার, কাদের মোল্লা ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর জামায়াত যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে বিচারের রায় বানচালের জন্য। জামায়াতের পুরনো বন্ধু পাকিস্তানী জঙ্গীদেরও নাশকতার কাজে লাগানো হচ্ছে। এদিকে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচীর প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন ঘোষণা করেছে।
দেশবাসীকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে জামায়াত ও পাকিস্তানী জঙ্গীদের সম্মিলিত নাশকতার বিরুদ্ধে। একাত্তর সালে এরা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়েছিল সেদিন তাদের পরাজয় হয়েছিল। সেই পরাজিত শক্তি আবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসমূলক তৎপরতায় লিপ্ত তারা। এই দুই অপশক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গৃহীত হবেÑ এটাই জনগণের প্রত্যাশা।
©somewhere in net ltd.