![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হলমার্কের তানভীর মাহমুদের পর আরেক ব্যাংকখেকোর সন্ধান পেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নাম তার গাজী মাহমুদ কামলা ওরপেৎ জিএম কামাল। তিনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় সাতশ’ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন । সম্প্রতি এই বিষয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং পরিদর্শন বিভাগে এসেছে । বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের সুপারিশ করে গত ১০ এপ্রিল প্রতিবেদনটি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-২। তদন্ত পরিচালনা করেছেন সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ। উল্লেখ্য, দৈনিক ইনকিলাবে গত বছরের ২৮ নভেম্বর এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ।এর সূত্র ধরে পরিচালিত তদন্তে জিএম কামালের অর্থ আত্মসাতের ভয়াবহ তথ্য বেরিয়ে আসে।
তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে ভাটারা থানার একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) অনুলিপিও পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়। জিডিটি করেছেন সিআইডি’র মতিঝিল ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর। এতে বলা হয়েছে, ভূয়া দলিলের মাধ্যমে ইউসিবিএলের ১০০ কোটি টাকা লোপাট শিরোনামে সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সচেতন মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আপনার থানাধীন ইউসিবিএলের বসুন্ধরা-বারিধারা শাখায় সিআইডি পুলিশের একটি বিশেষ টিম অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
জানা যায়, জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নেয়ার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন গাজী মাহমুদ কামালের (জিএম কামাল) নেতৃত্বে একটি প্রতারক চক্র । গাজী মাহমুদ কামাল একইভাবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইউসিবিএল-এ তিনি বাড্ডা থানার ভাটার মৌজার যে ছয় কাঠা জমি বন্ধক রেখেছেন তার কাগজপত্র ভূয়া। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও লিমোহরযুক্ত জমির যে দলিল ব্যাংটির কাছে জমা দেয়া হয়েছে তা প্রকৃত নয় । বিভিন্ন কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও সিল জাল করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, জিএম কামালের মালিকানাধীন গাজী ফেব্রিক্স ও গাজী কর্পোরেশনের নামে ২০১০ সালে ৯ কোটি টাকার সিসি লোন দেয় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা। তখন ওই শাখার ম্যানেজার ছিলেন ব্যাংকটির সাবেক এফএভিপি মোঃ রিফাত তানজির আহম্মেদ। একই জমি বন্ধক দিয়ে জিএম কামাল পূর্বে মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের দিলকুশা শাখা থেকে ঋণ নেন । জিএম কামালের দাখিলকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা করেন ইউসিবিএলের প্যানেল আইনজীবী হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েনটস। বন্ধককৃত জমিটির মৌজা নং- সাবেক ২৯৪, এসএ ১১৮, মৌজা ভাটার, সিএস খতিয়ান নং ৫৯, এসএস খতিয়ান নং ৫৫, আরএস খতিয়ান নং ১৩৭৬। গাজী মাহমুদ কামালের (জিএম কামাল) নামে গুলশান ভূমি অফিসে সিটি জরিপে কোনে রেকর্ড নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জিএম কামাল গুলশান ভূমি শুলশান ভূমি অফিসে ০৩/০৬/২০০৮ তারিখে ১৪১৬ বাংলা সনের উক্ত ভূমির কর পরিশোধ করেন এবং ২০/০৬/২০১০ তারিখে ১৪১৭ থেকে ১৪২০ বাংলা সনের ভূমি কর পরিশোধ করেন যা বিতর্কিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই জমির আরেক দাবিদার মোঃ কফিল উদ্দিন ঢাকা প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে গাজী মাহমুদ কামাল, তার স্ত্রী গাজী শাহিনা কামাল, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের দিলকুশা শাখার তখনকার ম্যানেজার মোঃ আনোয়ার হোসেনসহ ৮জনকে বিবাদী করে মামলা করেন। মামলা নং ৯২/০৯ । ঢাকার ১ম আদালতের যুগ্ম জেলা জজ কে এম ইমরুল কায়েস ২০১০ সালের জুনে জিএম কামাল গংদের বিরুদ্ধে আদেশ জারি করেন । অথচ পরের মাসে (জুলাই ২০১) ওই জমিই বন্ধক দিয়ে ইউসিবিএল থেকে ঋণ নেন জিএম কামাল। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইউসিবিএলের সাবেক কর্মকর্তা এফএভিপি ও ম্যানেজার মোঃ রিফাত তানজির আহম্মেদ , এফএভিপি ও ম্যানেজার মোঃ ইব্রাহিম এবং বর্তমান সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মোঃ গোলাম ইদ্রিস আলোচ্য জমির মালিকানা সংক্রান্ত আদালতে মামলা বিচাররাধীন থাকা সত্ত্বেও গোপনীয়তা বজায় রেখে ঋণ আবেদনকারী গাজী মাহমুদ কামালকে (জিএম কামাল) ব্যাংকের তালিকাভুক্ত প্যানেল আইনজীবীর দায়সারা গোছের আইনি পরামর্শমূলক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২৬ জুলাই ২০১০ তারিখে তার ও তার প্রতিষ্ঠানের নামে ৯ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেন। জিএম কামাল ব্যাংকের এক টাকাও পরিশোধ না করায় ঋণটি খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের অনুসন্ধানের ফলাফল অংশে বলা হয়েছে, ঋণ মঞ্জুরপত্রের তৃতীয় পাতায় আলোচ্য বন্ধকি জমির সকল তথ্য উল্লেখ থাকলেও ৫৫নং সিএস খতিয়ানভুক্ত কোনো দাগ নং উল্লেখ নেই । বিষয়টি রহস্যজনক । আরও বলা হয়, জিএম কামাল কর্তৃক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে বন্ধককৃত জমিটি দায়বদ্ধ রয়েছে। অথচ উক্ত জমির নির্মানাধীন ৯তলা ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে জনৈক এমএম ইকবাল আহম্মেদের পক্ষে জেলা কমান্ড্যান্ট আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ঢাকা কার্যালয়ের ১৫ জন সশস্ত্র আনসার প্রহরী নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্তব্যরত রয়েছেন।
প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়েছে, অনুসন্ধানে প্রকাশ পায় মোঃ কফিল উদ্দিন এবং এমএম ইকবাল আহম্মেদ উভয়ই প্রয়োজনীয় দলিলপত্র সাপেক্ষে আলোচ্য জমির বৈধ মালিকানা দাবি করেন। তন্মধ্যে এমএম ইকবাল আহম্মেদের পক্ষে আলোচ্য জমিতে সশস্ত্র আনসার নিয়োজিত আছে। তার কোনো মামলা আদালতে মূলতবি নেই। এই জালিয়াতির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইউসিবিএলের প্রধান কর্তৃপক্ষকে তাদের বসুন্ধরা শাখার উল্লিখিত দায়ী ব্যাংক কর্মকর্তা এবং তথ্য গোপনকারী ঋণ প্রহীতা গাজী মাহমুদ কামালের (জিএম কামাল) বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করা যেতে পারে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রায় ৩০টি ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি। এক্ষেত্রে তিনি ভূয়া জমি মর্টগেজ দেয়া ছাড়াও অভিনব প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ট্রেড লাইসেন্সসহ ব্যবসায়িক কাগজপত্র তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংকে চলতি হিসাব খুলেছেন তিনি। এসব হিসাবে বছরখানেক ভূয়া লেনদেনের পর কোটি কোটি টাকার সিসি লোন নিয়েছেন তিনি । এভাবে তার আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ ৭শ’ কোটি টাকার বেশি বলে জানা গেছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করছে। এসব বিষয়ে জিএম কামালের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার পান্থপথের গাজী টাওয়ারের অফসে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার বক্তব্য নেয়ার জন্য ফোনেও একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তার কোনে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮
কারিম বলেছেন: কোন পত্রিকায় আসছে এই নিউজ? লিংকটা একটু দরকার