নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাজেট নিয়ে বিএনপির এত পুটু জ্বলছে কেন???????????

১২ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৩৫



অর্থমন্ত্রী মুহিত সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছেন। বাজেটটি ভাল কি মন্দ তা নিয়ে আলোচনার আগেই বিএনপির ব্যারিস্টার মওদুদ বলে দিয়েছেন, এটা একটা বেলুন। অর্থাৎ বেলুন বাতাস বা গ্যাস ভর্তি থাকে, তারপর তা বেরিয়ে গেলেই বেলুন চুপসে যায়। তাই মওদুদের মতে, নানা প্রস্তাবনা ও অঙ্গীকারের গ্যাসভর্তি এই বাজেটও চুপসে যেতে বেশি সময় লাগবে না। বিএনপি শেষ পর্যন্ত বাজেট আলোচনায় যোগ দিলেও কোন গঠনমূলক আলোচনা করবে না এটা জানা কথা। এদের বিরোধিতা কেবল বিরোধিতার জন্যই।

কিন্তু এই বাজেট সম্পর্কে আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজের অভিমত কি? মওদুদ সংসদে বাজেট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বাকশাল, বঙ্গবন্ধুকে টেনে এনে অবান্তর কথাবার্তা বলেছেন। তাঁর লেখা বইতে জিয়াউর রহমান সম্পর্কে যেসব অপ্রিয় সত্য রয়েছে, সম্প্রতি তা ধরা পড়ায় এবং যুবদল ও ছাত্রদলের ক্যাডারদের রোষের মুখে পড়ায় মওদুদ শেষ রক্ষার জন্য বাকশালের মতো মরা হাতি নিয়ে টানাটানি করবেন, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই।

মওদুদ আহমদের চাইতেও তার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আরও এক কাঠা দৃঢ়। তাঁর চরিত্রের বৈশিষ্ট্য এই যে, তাঁর নেপথ্যের অভিভাবকেরা তাঁকে যেসব কথা বলার জন্য শিখিয়ে দেন, তা সঠিক না হলেও ঠাস ঠাস বলে দিতে পারেন। এই ব্যাপারে তার কোন লাজলজ্জা নেই। সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে তিনি বলে দিলেন, শাহবাগ চত্বরের গণজমায়েতের মানুষ সকলেই নাস্তিক। শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতীদের পলায়নের পর তিনি বলে দিলেন সেখানে গণহত্যা হয়েছে। অথচ ’৭১ সালের প্রকৃত গণহত্যাকারীদের তিনি এখন সবচাইতে বড় দোসর।

বর্তমান বাজেট সম্পর্কেও তিনি তার দলীয় কার্যালয়ে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত দলীয় নেতাদের সংবর্ধনা সভায় যা বলেছেন, তা অজ্ঞতা এবং বিদ্বেষপ্রসূত। তিনি বলেছেন, এটা ‘লুটপাটের বাজেট।’ বর্তমান বাজেট নিখুঁত এবং সর্বত্রুটিমুক্ত এ কথা অর্থমন্ত্রীর কোন হিতৈষীও বলবেন না। কিন্তু এই বাজেট উচ্চাভিলাষী হলেও যে বিনিয়োগবান্ধব বাজেট তা বিদেশেও স্বীকৃতি পাচ্ছে। বরং বিএনপি সরকারের আমলের বাজেটগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের বাজেটগুলো তুলনা করলে দেখা যাবে, বিএনপি আমলের প্রত্যেকটি বাজেটে নব্য ধনীদের জন্য লুটপাটের ব্যবস্থাটি রক্ষা করে চলা হয়েছে। যে ভারতীয় পণ্যের নামে বিএনপি সবসময় নাক সিটকায়, বাংলাদেশকে সেই ভারতীয় পণ্যের বাজারে পরিণত করে গিয়েছিলেন বিএনপির অর্থমন্ত্রী প্রয়াত সাইফুর রহমানই।

অর্থমন্ত্রী মুহিতের এবারের বাজেট সম্পর্কে বিএনপির বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় তবু একটা অর্থ খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু এ সম্পর্কে আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজের প্রতিক্রিয়ার অর্থ খোঁজা কষ্টকর। বর্তমানে এই সুশীল সমাজের প্রধান মুখপাত্র সম্ভবত বিশ্রাম নিচ্ছেন। তাই তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য নামের আরেক খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ। সংসদে বাজেট পেশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘এই বাজেট অতি উচ্চাভিলাষী, এর বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।’ তার এই প্রকাশ্য উক্তির অন্তরালে না বলা কথাটি সম্ভবত এই যে, এটা নির্বাচনী বাজেট।’ ভোট দাতাদের বিভ্রান্ত করে ভোট আদায়ের জন্য এই চোখ ধাঁধানো বাজেট করা হয়েছে। এটা বিএনপির নেতাদের বলার কথা। বলেছেন, সুশীল সমাজের এবং এলিট ক্লাসের মুখপাত্র ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। তাজ্জব কি বাত্।

তিনি কাদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করছেন তা আমি জানি না। তবে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর যে নয়, এটা অনেকে বলে থাকেন। তার নাম দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। তিনি অবশ্যই দেশের সাধারণ মানুষের নয়, শাসক দেবকুলের প্রিয় পাত্র। কেউ কেউ বলেন, তার নাম হওয়া উচিত ছিল সেনাপ্রিয় ভট্টাচার্য্য। কারণ, দেশের গণতান্ত্রিক সরকারগুলোর তিনি সব কাজের সমালোচক। কিন্তু সেনা শাসকদের (এক এগারোর সময়) কাছ থেকে ডাক পড়লে তাদের চাকরি নিয়ে বিদেশে গিয়ে ওই শাসনের স্তবস্তুতি করতে দ্বিধা করেন না।

আমি অর্থনীতিবিদ নই, বাজেট বিশেষজ্ঞ নই। সুতরাং বাজেটের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বলতে পারব না, সেটি কতটা ভাল কিংবা কতটা মন্দ। কিন্তু দেশের বাজেট যেহেতু সাধারণ মানুষেরও জীবনের ভাল-মন্দের সঙ্গে জড়িত, সে জন্য সাধারণ মানুষের মতোই সাধারণভাবে বাজেটের ভাল-মন্দ দিক বুঝতে পারি। দেশের অনেক নিরপেক্ষ অর্থনীতিবিদের সঙ্গেও আলোচনা করে বুঝতে পেরেছি, অর্থমন্ত্রী মুহিত কোন অর্থনৈতিক জাদুকর নন এবং জাদুকরী বাজেটও কোনবার দেননি; কিন্তু তাঁর বাজেট মোটামুটি ভারসাম্যমূলক এবং সামরিক শাসন ও বিএনপি আমলের কোন কোন বাজেটের মতো গরিব মারা বাজেট নয়।

বর্তমান অর্থমন্ত্রী একজন সাদাসিধে মানুষ। চতুর রাজনীতিক নন। অনেক সময় এমন অপ্রিয় সত্য বলে ফেলেন, যা তাঁকে বিতর্কিত করে। শেয়ারবাজারে ধস, বিভিন্ন বড় দুর্নীতি এবং পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকা নিয়ে তাঁর কথাবার্তা অনেক সময় আমার কাছেও ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে। কিন্তু বাজেট প্রণয়নে তিনি কখনও ভারসাম্যহীনতার পরিচয় দেননি। আর কিছু না হোক গত কয়েক বছরের অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক দুর্বিপাক, মনুষ্যসৃষ্ট অরাজকতার মোকাবেলায় তাঁর বাজেট জাতীয় প্রবৃদ্ধি বাড়ায় ধীরগতি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে পেরেছেÑ যা বিএনপি সরকার, এমনকি এক এগারোর সরকারও পারেনি।

বিএনপি এবং এক এগারোর সরকারের আমলেও দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ উর্ধগতির লাগাম টেনে ধরা যায়নি। অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের রাশ টেনে ধরা যায়নি। জাতীয় প্রবৃদ্ধি থমকে দাঁড়িয়েছিল। ব্যাংকে লিকুয়িডিটির অভাব দেখা দিয়েছিল। বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছিল অবাধে। বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও একটা স্থবিরতা দেখা দিচ্ছিল। এক এগারোর আমলে অর্থনীতির কাঠামোই ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম করেছিল।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় বসার পর দুর্নীতি দমন, নাগরিক জীবনকে সন্ত্রাসমুক্ত করা এবং বিদ্যুত, পানি, গ্যাস সমস্যায় দ্রুত সমাধানে তেমন এগুতে না পারলেও কৃষি ও শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের সাফল্য, সন্ত্রাসী দমন, দেশী-বিদেশী সমালোচনাকারীদেরও প্রশংসা অর্জন করেছে। সবচেয়ে প্রশংসিত হয়েছে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং তার গতি রক্ষার ক্ষেত্রে সাফল্য। এটা অর্থমন্ত্রীর উচ্চাভিলাষী বাজেটগুলোর জন্যই সম্ভব হয়েছে। বাজেটগুলোর লক্ষ্যমাত্রায় হয়ত নানা প্রতিবন্ধকতায় সম্পূর্ণভাবে পৌঁছা যায়নি, কিন্তু যেটুকু গেছে তা সমস্যা- জর্জরিত একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য কম নয়।

একটি বিদেশী কাগজে (হাতের কাছে কাগজটি নেই বলে আক্ষরিক উদ্ধৃতি দিতে পারছি না) বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, আলেন্দের আমলের চিলিতে সিআইএর চক্রান্তে পরিকল্পিতভাবে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালিয়ে দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। বিদেশী বিনিয়োগ সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ায় কলকারখানায় অরাজকতা ও শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। অতঃপর গণতান্ত্রিক আলেন্দে সরকারকে ক্ষমতা থেকে রক্তাক্ত পথে উচ্ছেদ করা হয়।

বাংলাদেশে বর্তমান হাসিনা সরকারকেও ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদের জন্য গোড়া থেকেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরিকল্পিত ধ্বংসাত্মক তৎপরতা শুরু করা হয়। এমনকি সামরিক ও মৌলবাদী অভ্যুত্থান ঘটানোরও চেষ্টা করা হয়। চিলির সঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশের তফাত এই যে, বাংলাদেশে এই ভয়াবহ ও অবিরাম ধ্বংসাত্মক তৎপরতার মুখেও গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পেরেছে এবং তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রচেষ্টা চালু রাখতে সক্ষম হয়েছে।

একশ্রেণীর বিদেশী পর্যবেক্ষকের এই মন্তব্য যে অত্যুক্তি নয়, তা বাংলাদেশের গত সাড়ে চার বছরের ইতিহাসের দিকে তাকালেও বোঝা যাবে। কথায় কথায় কোন ইস্যু ছাড়াই হরতাল ডাকা এবং হরতালের নামে যথেচ্ছভাবে গাড়ি-বাড়ি ভাংচুর, অগ্নিকা-, দেশের রাজনীতিকে যতটা অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে, তার চাইতে বেশি চেয়েছে অর্থনৈতিক কাঠামো একেবারে ভেঙ্গে ফেলতে। বেগম জিয়া প্রকাশ্যে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে অর্থ বিনিয়োগ না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। দেশটিতে বিরোধী দলের প্রাত্যহিক স্যাবোটাজ ও ধ্বংসাত্মক তৎপরতা দেখে অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারী বাংলাদেশ থেকে তাদের অর্থনৈতিক কর্মকা- গুটিয়ে নিতেও চাইছেন।

এই পরিস্থিতির মুখে যতটা সম্ভব অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং বিদেশী বিনিয়োগ ধরে রাখার মতো একটা বাজেট পেশ বর্তমান সরকার ও তার অর্থমন্ত্রীর জন্য কম কৃতিত্বের কথা নয়; এটা উচ্চাভিলাষী বাজেট হতে পারে, কিন্তু অবাস্তব বাজেট নয়। এই বাজেট জাতির অস্তিত্বের জন্য যে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করা হয়েছে, তাকে মোকাবেলা করার মতো একটি বাজেট। এর ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে, কিন্তু এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে যেসব সেনাপ্রিয় ভট্টাচার্য্যি মশায়রা আগাম ফতোয়া দিচ্ছেন, তারা দেশের হিতকামী ভট্টাচার্য্যি নন। চিলিতেও গণতান্ত্রিক আলেন্দে সরকারের বিরুদ্ধে এই ধরনের একটি এলিট শ্রেণীকে তৎপর হতে দেখা গিয়েছিল, আলেন্দের বাজেটকে আখ্যা দেয়া হয়েছিল ‘গরিবকে প্রতারণার বাজেট।’ সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশে সম্ভব হবে না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:২৩

লিঙ্কনহুসাইন বলেছেন: হুম বুঝলাম বিএনপির পুটু জ্বলছে !!! কিন্তু আপনি এতো চুলকাচ্ছেন কেন ?

২| ১২ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৫১

আহমেদ রশীদ বলেছেন: ভাইরে মলমের দরকার সব ঠিক হয়ে যাবে

৩| ১২ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৫২

গান পাগলা বলেছেন: আপনি এতো চুলকাচ্ছেন কেন ??????????

৪| ১২ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১০

মো ঃ আবু সাঈদ বলেছেন: গত চার বছরে ভাল ভাল বাজটে দিয়েছতো তাই....

ভাল ত ভাল না...শেয়ার বজার ব্যাপক চাঙ্গা উনার জন্য আজ শেয়ার থেকে লাভ করে মানুষ টাকা রাখার জয়গা নাই....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.