![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক সময় বাংলাদেশ পরিচিত ছিল সোনালি আঁশের দেশ হিসেবে। পাটের সেই গৌরবময় দিন আবার ফিরে আসছে। বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী দেশী পাটের জীবনরহস্য বা জিন নক্সা (জিনোম সিকোয়েন্সিং) বের করার ক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এর ফলে আগামী চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে কৃষকের হাতে রোগ প্রতিরোধী ও উন্নত জাতের পাট তুলে দেয়া সম্ভব হবে। এর আগে ২০১০ সালে বাঙালী বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম ও তাঁর দল তোষা পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। ২০১২ সালে তাঁরা উন্মোচন করেছিলেন ছত্রাকের জীবনরহস্য। এবার উন্মোচিত হলো দেশী পাট বা সাদা পাটের জীবনরহস্য। অনেকেই মনে করেন, এবারের এ সাফল্যের মধ্য দিয়ে পাটের জিন নক্সা (জিনোম সিকোয়েন্সিং) উন্মোচনের গবেষণায় পূর্ণতা পেয়েছে বাংলাদেশ। রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর গণভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের এ সাফল্যের কথা ঘোষণা করেন। গত শতাব্দীর পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পাট মানেই বোঝাত তৎকালীন পূর্ববঙ্গ বা বাংলাদেশকে। পাট বিক্রি করে সে সময় সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করত। তবে সত্তর দশকে বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম তন্তুর আবির্ভাবের ফলে পাটের ব্যবহার ও চাহিদা হ্রাস পেয়েছিল। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে পাট আবার তার হারানো মর্যাদা ফিরে পায়। পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে বিশ্বে আবার প্রাকৃতিক পাটের ব্যবহার শুরু হয়। কিন্তু ততদিন ভারতসহ এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশ পাট উৎপাদনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট এগিয়ে গেছে। অপরদিকে বাংলাদেশে বিএনপি সরকারের আমলে অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এশিয়ার বৃহত্তম আদমজী পাটকল। এ সময় দেশের অনেক চাষীই পাটচাষ বন্ধ করে দিয়েছিল।
তবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে আবার নতুন উদ্যমে পাটের চাষ শুরু হয়। কারণ উৎকর্ষের বিচারে বাংলাদেশের পাট পৃথিবীর মধ্যে সেরা। ২০১২ সালে পাটের জন্য ক্ষতিকর এক ধরনের ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন করায় আমরা উন্নতজাতের পাট উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছি। এই সাফল্যকে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ আবার বিশ্বের দরবারে ‘পাটের দেশ’ বলে পরিচিত হবে। তবে সরকারকে অবশ্যই পাটচাষের ক্ষেত্রে কৃষকদের সহায়তা ও উৎসাহ দিতে এগিয়ে আসতে হবে। আদমজীসহ আরও কিছু পাটকল বন্ধ করায় দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। পাটের সুদিন ফিরে আসায় আরও কিছু আধুনিক পাটকল স্থাপনের কথা ভাবা দরকার।
এছাড়া পাট গবেষণার সাফল্যের ফলাফল থেকে যাতে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ও জনগণ লাভবান হন তা নিশ্চিত করা দরকার। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ও পাইরেসি একটি নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে মূল বিজ্ঞানী ও গবেষক অনেক সময় বঞ্চিত হন। পাট গবেষণার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা যাতে তাদের উদ্ভাবনের স্বত্ব বা পেটেন্ট পান সে বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী। তা সম্ভব হলে বিশ্বের যে কোন স্থানে পাট গবেষণার জন্য বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা অর্থ পাবেন। এছাড়া পাট নিয়ে কথা বলতেই বাংলাদেশের নামটিও সসম্মানে উচ্চারিত হবে। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আগামীতে দেশের বস্ত্রশিল্পে কাপড় তৈরির উপযোগী সুতা পাট থেকে উৎপাদন করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞানীদের নতুন উদ্ভাবন দেশে পাটের উৎপাদন ও গবেষণার ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সূচনা করবে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪
আমিনুর রহমান বলেছেন:
বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম ও তার দলের প্রতি রইল শুভ কামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২০
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আশা করি অন্তত এই ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার বিজ্ঞানীদের পাশেই থাকবে এবং পাট শিল্পের সেই হারানো দিনের ব্যাপারে কাজ করবে।