নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে দেশে জঙ্গী তৎপর

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৮



করার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর আশঙ্কা করছে গোয়েন্দা সংস্থা। দেশের বিভিন্নস্থানে ব্যাপক বোমাবাজি, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করা হতে পারে। এ জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন ও জঙ্গী তৎপরতা বন্ধসহ দুর্ধর্ষ অপরাধী ও সশস্র রাজনৈতিক ক্যাডারদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা ও সতর্ক নজরদারি করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। উগ্র ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী সংগঠন ও তাদের সহযোগী এনজিওগুলো রহস্যজনক তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গী, দাগি অপরাধী, দুর্ধর্ষ রাজনৈতিক ক্যাডার, অস্ত্রধারীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে মিশে গিয়ে ব্যাপক বোমাবাজি, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোসহ চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধমে আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পর সরকারের শেষ সময়ে এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনগুলো সারাদেশে ব্যাপক বোমাবাজি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভয়াবহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়েছিল। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন নির্বাচনী সমাবেশ ও বক্তৃতা সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য হন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জনসভায় ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আহত হন। জঙ্গীদের বোমাবাজি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মারাত্মক আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর মাধ্যমে ভয়ভীতি, আতঙ্ক ছড়িয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সমাবেশকে কার্যত অচলাবস্থার সৃষ্টি করে তোলে। এবারও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের শেষ সময়ে এসে আগের ঘটানার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ জন্য দেশী ও বিদেশী প্রভাবশালী মহল ও গোষ্ঠী জড়িত থাকার ইঙ্গিত পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা।

গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সারাদেশে সতর্কতা ও গোয়েন্দা নজরদারির জালে আটকা পড়ে বরগুনায় আনসারুল্লা বাংলা টিম ও বগুড়ায় বিইএম। এই দুটি উগ্র মৌলবাদী ও জঙ্গী সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয় আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসিমউদ্দীন রাহমানিয়াসহ ৪০ জনকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় জঙ্গী তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত আলামত। বগুড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় জেএমবির আদলে গড়ে ওঠা বিইএম জঙ্গী সংগঠনের প্রধানসহ কয়েকজনকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় জঙ্গী তৎপরতার আলামত। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্নস্থানে এ ধরনের ধর্মভিত্তিক উগ্র মৌলবাদী দল ও জঙ্গী সংগঠনের রহস্যজনক তৎপরতা চলছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

রিপোর্টে উল্লেখ করা তথ্যে জানা গেছে, দেশে প্রায় ৬০টি উগ্র ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী সংগঠন, জঙ্গী সংগঠন ও এনজিও রহস্যজনক তৎপরতায় লিপ্ত। এর মধ্যে প্রায় ১০টি ধর্মভিত্তিক উগ্র মৌলবাদী সংগঠন জঙ্গী তৎপরতায় লিপ্ত থাকার কারণে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থা ১০টি ধর্মভিত্তিক উগ্র মৌলবাদী জঙ্গী সংগঠনের নিষিদ্ধ করার জন্য তালিকা তৈরি করেছে। এ ছাড়াও রোহিঙ্গাসহ মিয়নমারভিত্তিক ১৩টি সংগঠন রহস্যজনক তৎপরতা চালাচ্ছে। সরকারের ওপর মহলে জঙ্গী সংগঠনগুলোর এই তালিকা দেয়া হয়েছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই জঙ্গী সংগঠনগুলো ভয়াবহ নাশকতায় লিপ্ত হতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করার তালিকাভুক্ত জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে বিদেশী জঙ্গী সংগঠনগুলোর কানেকশন রয়েছে। সরকারের ওপর মহলে এই বিষয়গুলো অবহিত করা হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব উগ্র মৌলবাদী জঙ্গী সংগঠনগুলো সম্প্রতি গ্রাম এলাকায় গরিব ও সাধারণ ছেলেদের জঙ্গী তৎপরতায় উদ্বুদ্ধ করছে। ধর্মীয় উম্মাদনা সৃষ্টি করে লিফলেট, পোস্টার ছেড়ে আকৃষ্ট করার তৎপরতা চালাচ্ছে। সংগঠন গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছে। তারা বিভিন্ন নামে ও ব্যানারে জঙ্গী তৎপরতা চালানোর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের মিসর দূতাবাস উড়িয়ে দেয়ার হুমকির ঘটনায় গ্রেফতারকৃত শিবিরকর্মী শওকত ওসমান ওরফে শওকত আফসারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে জামায়াতÑশিবিরের জঙ্গী তৎপরতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানা গেছে। ফার্মগেটের ফোকাস কোচিং সেন্টার থেকে গ্রেফতার করে তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার মৌলবাদী চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে তথ্য পায় ডিবি পুলিশ। মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষে শিবিরের এই সক্রিয় কর্মী মুরসিকে পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীর গুলশান-২ এ অবস্থিত মিসর দূতাবাসে হামলার হুমকি দেয়। শিবিরকর্মী শওকত ওসমানকে রিমান্ডে আনার পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এর আগে আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসিমউদ্দীন রাহমানিসহ ৩১ জনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী দেশে ভয়াবহ নাশকতা ঘটানোর জন্য জঙ্গী সংগঠনগুলোকে সংগঠিত করার তৎপরতার তথ্য জানানো হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার বানচাল ও বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে মাঠে নামানো হয়েছে উগ্র মৌলবাদী জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনগুলোর বি-টিম হিসেবে আনসারুল্লাহ বালা টিম নামের এই জঙ্গী সংগঠনটিকে মাঠে নামিয়েছে। দেশব্যাপী নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা অবনতি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য মাঠে নামানো হয়েছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামের এই জঙ্গী সংগঠনটিকে। আদালত থেকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসিমউদ্দীনকে ৭ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে এই ধরনের তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসিমউদ্দীন ছাড়াও এই সংগঠনের গ্রেফতারকৃত আরও ৯ জনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.