![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চরম 'রসিকতা' করেছেন মাদাম জিয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনসভায়। কথাটা হাল্কা হলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি, পাবলিক দেখলেই কি 'চাপা মারতে' ইচ্ছে করে আপনার? কি করে আপনি বললেন, বলতে পারলেন 'আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল নয়। বিএনপি হলো মুক্তিযুদ্ধের দল।' উহ অসহ্য! এমন মিথ্যা কি করে একজন জাতীয় নেত্রী যিনি তিন তিনবার প্রধানমন্ত্রী, একবার রাষ্ট্রপতির স্ত্রী, চীফ মার্শাল ল' এ্যাডমিনিস্ট্রেটরের বেগম ইত্যাদি হয়েছিলেন, তিনি বেমালুম বলে ফেললেন হাজার হাজার মানুষের সামনে। সত্যিই হাসির খোরাক কারণ ঐ সময় বিএনপি নামের কোন রাজনৈতিক দল জন্মগ্রহণই করেনি। কি করে একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের দল হতে পারে? আপনি মাদাম বিএনপির দলীয় চেয়ারপার্সন ও দেশনেত্রী। আপনি তাহলে কি বিএনপি'র জন্মকথা জানেন না? স্বামী মারা যাবার পর হঠাৎ করে নেত্রী বনতে চাইলে বুঝি এমনই পরিণতি হয়, তাই না মাদাম? আপনার এত প্রিয় দলের জন্ম কবে, তাও তো জানেন না। বিএনপির জন্মের অনেক আগেই, কমপক্ষে ১০ আগেই মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে।
মাদাম, আপনি বলেছেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আওয়ামী লীগের কোন নেতাই সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করেননি। কিন্তু একবার বলবেন কি, আওয়ামী লীগ না শুরু করলে জিয়াউর রহমান কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করতে যেতেন? ইতিহাস বলে, জিয়া তো পাকিস্তানী অস্ত্র বহনকারী 'সোয়াত' জাহাজ খালাস করতে পাকিস্তানী সুপিরিয়রের অর্ডার পালন করতেই গিয়েছিলেন, যখন পাকিস্তানী সেনাবাহিনী মানুষ হত্যা আর বাঙালীদের ডিসআল করতে শুরু করেছিল। এই তো মুক্তিযুদ্ধের ব্যাকগ্রাউন্ড মেজর জিয়ার। পরে যখন সীমান্ত পথে পালাতে গিয়েছিলেন তখন গ্রামবাসীরা তাঁকে ও সঙ্গীদের আটকে দেন। পরে এরপর গণহত্যা শুরু হলে চট্টগ্রামের কয়েকজন তরুণ সংস্কৃতিকর্মী ও বেতার প্রযোজক-প্রকৌশলী মিলে যে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী নেতার কেন্দ্র চালু করেন তার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বেলাল মোহাম্মদ ভাবেন, বাঙালী সৈন্যরাও আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন, এটা বোঝাবার জন্য একজন বাঙালী সেনা কর্মকর্তার বিবৃতি প্রচার করা দরকার। তখন চট্টগ্রাম ই.পি.আর-এর প্রধান ক্যাপ্টেন রফিক বেলালকে মেজর জিয়ার খোঁজ করতে বলেন। তারপর বেলাল মোহাম্মদ অনেক বলে কয়ে তাঁকে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। তারপর অবশ্যই সেক্টর কমান্ডার এবং পরে ব্রিগেড কমান্ডার হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালে কি তাঁর ভূমিকা ছিল সেকথা তাঁর সতীর্থ ক'জন সেক্টর কমান্ডার তো এখনও জীবিত আছেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে তাঁর ভূমিকা নিয়ে কত কথা হয়েছে। সে কথা সবাই জানে। মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান সেনাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) এ. কে. খন্দকার বীরউত্তম এখনও জীবিত রয়েছেন।
যাক মুক্তিযুদ্ধ যখন চলছিল, আপনি কোথায় ছিলেন, আপনাকে নিয়ে যেতে নাকি তিন তিনবার মেজর জিয়া টাকা-পয়সা দিয়ে লোক পাঠিয়েছেন, অথচ শুনেছি আপনি যাননি। স্বচ্ছন্দেই আছেন বলে জিয়াকে জানিয়ে দিয়েছিলেন। তো আপনি এসব জানবেন কোত্থেকে। যদি নাই জানেন ইতিহাস কিংবা সংগ্রামের দিনপঞ্জি, তবে সে ব্যাপারে বিকৃত তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন কেন?
সেনাবাহিনীর লোক সরাসরি যুদ্ধ করবেন, না কি বসে বসে বাঁশি বাজাবেন? মুক্তিবাহিনীর কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুবক এমনকি শিল্পী-চিত্রকর যে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন, তা কি আপনি জানেন? আওয়ামী লীগ সত্তরের নির্বাচনে সারা পাকিস্তানে ৫৬ দশমিক যে ভোট পড়েছিল তার ৭৫ ভাগ পেয়েছিল। আর সেই সুবাদে তাঁরা প্রথমে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি কিন্তু তিনি গ্রেফতার হওয়ায় তাঁর পরিবর্তে উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম দায়িত্বে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী মনসুর আলী, সাহায্য মন্ত্রী কামারুজ্জামান এবং প্রধান সেনাপতি ছিলেন কর্নেল (অব) এম,এ, জি ওসমানী। এরা কোন দলের? প্রবাসে সরকার গঠন করে কি করছিলেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী খোন্দকার মোশতাক আহমদ মুক্তিযুদ্ধে থেকেও মার্কিনী দালালী করেছেন। অথচ তিনিও আওয়ামী লীগের। উনিও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ছিলেন। কিন্তু আপনি এসব জানবেন কি করে, কারণ আপনি তো পাকিস্তানী সেনাকর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ওদের সেনাছাউনিতে বাস করছিলেন। আপনি যখন এ সব কথা বলেন, তখন পাগলও হাসে বোধ হয়। একজন জাতীয় নেত্রী, সম্মান করে আপনার ভক্তরা আপনাকে দেশনেত্রী উপহার দিয়েছে। দেশের বা জনগণের কতটুকুই বা জানবেন?
কোন একজন রাজনৈতিক নেতা কিংবা নেত্রীর বক্তৃতা প্রসঙ্গে বলা উচিত নয় কিন্তু তিনিই তো নেতা বা নেত্রী হন, যাদের সব গুণ অর্থাৎ প্রতু্যৎপন্নমতিত্ব আছে, আছে মেধা, চটজলদি কথা বলা, অনুভব করার ক্ষমতা। ভাল বক্তা হওয়া একটা প্রধান গুণ। এটা না থাকলে নেতা কখনও তাঁর কথাগুলো কনভিসিংলি বা এ গুলোর সঙ্গে উপস্থিত পাবলিককে বোঝাতে পারেন না। যথার্থ বাংলাভাষা জানতে হয়। না হলে আবেগ, উপলব্ধি এবং সঙ্কল্প অনুযায়ী বাক্য বিন্যাস করা যায় না। রাজনৈতিক বক্তৃতায় পরিবেশ-পরিস্থিতি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী শব্দ চয়ন অত্যন্ত অপরিহার্য। এ ৰেত্রে আপনার দলেরই ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তৃতা লৰ্য করবেন, কী চমৎকার পাঞ্চুয়েশন এবং কী তীৰ্ন বাক্যগঠন করে প্রতিপৰকে আক্রমণ করেন। এই যোগ্যতা অর্জনের জন্য চাই প্রশিৰণ। ঘরের দরজা বন্ধ করে আয়নার সামনে বক্তৃতা করা। বাংলা ভাষায় যখন বক্তৃতা করেন, তখন বাক্যগঠন অনুযায়ী কোথায় উঠতে হবে, কোথায় নিচু স্বরে আবার কখন ক্রোধের প্রকাশ করতে হবে, সে সব বুঝিয়ে এই প্রাকটিস করানোর মতন একজন দৰ শিৰক রাখতে হবে, যা বিউটিশিয়ানের ভূমিকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। প্র্যাকটিসের মাধ্যমে কণ্ঠস্বরকেও পরিশীলিত এবং স্বচ্ছন্দে গ্রহণযোগ্য করতে হবে। পাবলিক মিটিংয়ে যদি নেতা-নেত্রীর বক্তৃতায় উত্থান-পতনই না থাকে, তবে তার সাবলীলতা ভঙ্গ হয়। মানুষ উত্তেজনার মুহূর্ত ধরতে পারেন না, ফলে করতালি দেয়া কিংবা উলস্নাস প্রকাশ অথবা প্রয়োজনে সেস্নাগান দেয়া বুঝতে পারেন না। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ কিংবা সরকারকে বা প্রতিপৰকে সমালোচনার যে ওজন বক্তব্যে থাকার কথা, তা প্রকাশ পায় না। এ সম্পর্কে আপনাদের খুবই সম্পর্ক থাকতে হবে। কারণ আপনাদের বক্তব্য গোগ্রাসে মানুষ গিলতে থাকে। নেতা কিংবা নেত্রী কতটা কনভিনসিংভাবে বক্তৃতা করলেন, তার ওপরই রাজনৈতিক বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করবেন জনগণ। ...এতদিন হয়ে গেল, তারপরও কেন বলছি একথা, এই বিষয়গুলো বোঝবার জন্য আপনি ভিডিও'র মাধ্যমে মাঠে ময়দানে, পথসভায় আপনার বক্তৃতার ভিডিও ক্লিপ দেখে এ বিষয়ে পারঙ্গম ব্যক্তি কোন একজনকে দিয়ে শুধরে নিতে পারেন। ...সরি মাদাম, এতসব কথা লিখলাম বলে এটাকে আবার ঔদ্ধত্য ভাববেন না। এটা আপনার ভাল'র জন্যেই বললাম।
অবশ্য লাজনম্র গৃহবধূর রাজনৈতিক জীবন বেশ বহু বছরই পালন করছেন, বেশ সফলভাবেই। তবে মাঝে মধ্যে যে ভুলগুলো করেছেন, তা বিসদৃশই ছিল। যেমন ১৯৯২ সালে আপনি প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য আনত্মর্জাতিক মর্যাদাসম্পন্ন একটি বিষয় 'দ্বিবার্ষিক এশীয় চিত্রকলা প্রদর্শনী'। সেবার ছিল পঞ্চম প্রদর্শনী অর্থাৎ দশম বর্ষ। আর এই সময় দেশ-বিদেশের অত্যনত্ম গুণী, বরেণ্য, সম্মানীয় চিত্রকর, সমালোচক ও প-িতেরা আসেন আমাদের দেশে। আর এই এশীয় দ্বিবার্ষিক যেহেতু রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুরম্ন করেছিলেন, তখন আমি শিল্পকলা একাডেমীর পৰ থেকে প্রতিমন্ত্রী জাহানারা বেগমের মাধ্যমে ৫ম দ্বিবার্ষিক উদ্বোধনের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। মৃত স্বামীর কীর্তি এবং তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে এমনকি সমাগত গুণী শিল্পীদের প্রত্যাশা আপনি পূরণ করতে পারেননি। আপনি প্রথমে সম্মতি জানিয়েছিলেন কিন্তু হঠাৎ করে গভীর রাতে বাতিল করে রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে উদ্বোধন করতে বলে দিলেন।
আরও একবার এমনি দুঃখজনক এবং আমাদের জন্য লজ্জাকর ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল, সেই একই প্রধানমন্ত্রিত্বকালে। এও আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। সেবার জগদ্বিখ্যাত শিল্পী সেতারিয়া, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে বিদেশে জর্জ হ্যারিসন ও ওসত্মাদ আলী আকবর খাঁকে নিয়ে কনসার্ট করা ও অর্থ সাহায্যকারী বন্ধু পন্ডিত রবি শংকর এলেন বাংলাদেশে। ওসমানীতে সরকারী শ্রোতা এবং শিল্পকলার তখনকার অস্থায়ী মঞ্চে একদিন বাজিয়েছিলেন বেসরকারী শ্রোতা ও অর্থের বিনিময়ে আগত সঙ্গীতপ্রেমীরা। এদিন যে টাকা উঠেছিল, তা তিনি বাংলার শিল্পীদের জন্য কিছু করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যনত্ম তা আর হয়নি। তবে বাংলাদেশ থেকে চলে যাবার পর প্রধানমন্ত্রী মাদাম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চাই। যথারীতি আমি প্রতিমন্ত্রী 'সংস্কৃতি' জাহানারা বেগমকে বললাম। তিনি কথা দিলেন, আমি ব্যবস্থা করে দেব। পরে জানালেন, মাদামের সময় হবে না। ...শুনে হাসলাম। জগদ্বিখ্যাত এ শিল্পীর সঙ্গে দেখা করতে বিদেশের কত প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী নিজেদের ধন্য মনে করেন, আর আমার দেশের রূপ গরবিনী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিষয়টিকে পাত্তাই দিলেন না। আমি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে বললাম, ৰতি কার হলো ম্যাডাম? রবি শংকরের না খালেদার? ...আমার মনে হয়, এ বোধও তাঁর ছিল না। তাই এই সুযোগ হেলায় হারালেন। অথচ বিরোধীদলীয় নেত্রী
শেখ হাসিনা নির্দিষ্ট সময়ে ওসমানীতে এলেন এবং অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে উঠে গিয়ে মহান শিল্পীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানালেন। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধকালে তার সহযোগিতা ও সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করলেন। ... সংস্কৃতি বিষয়ে বুঝি আমাদের রাজনীতি করা মানুষদের এমনি মনোভাব। দু'জনের ব্যবহারে সেই পার্থক্যই ফুটে উঠল।
থাক পুরনো কাসুন্দি। এখন তরতাজা বিষয় নিয়ে কথা বলছিলাম, সেখানেই ফিরে আসি। আপনি মাদাম মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিসত্মানী সেনাবাহিনীর ইয়ার-দোসত্মদের সাথেই থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন, এটা তো জানি। সেই আপনি কি করে দেশ স্বাধীন করেছেন, এ কথা বলেন। আর সেই কথা শুনে জনসভার লোকজন উলস্নাসে ফেটে পড়ে। জনসভা না বলে ভাড়া করা সমর্থকদের সভা বলাই ভাল। বাংলার রক্তিম ইতিহাসে আপানি একটি ধূসর পৃষ্ঠা আঠা দিয়ে লাগাতে অসত্যেও আশ্রয় নিলেন, তা হলো-বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল আওয়ামী লীগ নয়। ... কথাটা 'চমৎকার, হৃদয় গ্রাহী' বলেছেন মাদাম, কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয় ইতিহাসের কাছে। তথ্যে ভুল আছে। কারণ এ তথ্য আপনি জানেনই না। গায়ের জোরে ইতিহাস পাল্টানো যায় না। আপনার আমলে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছিল তাকে আপনি আপনার ইচ্ছেমতোন শব্দ পরিবর্তন করে সত্যকে অসত্য এবং বাসত্মবকে অবাসত্মব বানাতে চেয়েছেন। মানুষ গ্রহণ করেননি। আপানি যে ঘোষণাকে স্বাধীনতার বলে চালাতে চেয়েছেন, তা ঠিক নয়, কারণ ঐ ঘোষণা ছিল সামরিক অভু্যত্থানের। মেজর জিয়াউর রহমান কু্যর মাধ্যমে ৰমতাধর হয়ে সরকারপ্রধান বনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সবার বলাতে নিজেই বুঝতে পেরেছিলেন এটা আর্মি কু্য নয়। সুতরাং তিনি বঙ্গবন্ধুর নামেই ঘোষণাটি লিখলেন এবং পড়লেন। এই ঘটনার সাৰী ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের বহুজন। যেমন জিয়া ইংরেজীতে তার ঘোষণাপত্রটি তৈরি করেছিলেন। এর বঙ্গানুবাদ মুখে মুখে করেছিলেন নাট্যজন অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ এবং লিখেছিলেন ভাইস প্রিন্সিপ্যাল আবুল কাশেম সন্দ্বীপ। চট্টগ্রাম নেতাদের যে প্রকৌশলীরা এই বার্তা রেকর্ড ও প্রচার করেছিলেন তাঁরাও বেঁচে আছেন। সুতরাং ইতিহাসকে চাইলেই এখনও বিকৃত করতে পারবেন না। আচ্ছা মাদাম, আপনার দলের আপনি, এমকে আনোয়ার, খোন্দকার মোশারফ, নজরম্নল ইসলাম খান, এমন নেতারা কি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? কোথায় করেছেন? রাজনৈতিক বিরোধিতা করবেন, করম্নন তাই বলে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল নয় এটা বলা ঠিক হবে না মাদাম। বলতে পারতেন, মুক্তিযুদ্ধ করে কি দিয়েছেন দেশবাসীকে? আরও বলতে পারেন, 'মুক্তিযুদ্ধ না করেই আমি কত দিয়েছি এবং এখনও দিয়ে যাচ্ছি।' বলতে পারতেন, "দেশকে গড়ে তোলার জন্যে 'সুপুত্র' তারেক জিয়াকে গড়ে পিটে তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছি।" তাহলেও বুঝতাম। এতদিন যা বলেছেন বলেছেন কিন্তু এখন তো আমাদের শেকড় ধরেই টান মেরেছেন। এটা সইবে না মাদাম। আপনার স্বামী কি করেছেন তা আপনি না জানলেও রণাঙ্গনের সতীর্থরা জানেন। বড় নির্মমভাবে জানেন কর্নেল তাহেরের পরিবার। জিয়া মুক্তিযোদ্ধা না কু্য দেতা'র নায়ক? তিন কি করে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেন। যেমন এরশাদ কোর্ট মার্শাল করেছিলেন জেনারেল মঞ্জুরের সহযোদ্ধাদের। মঞ্জুরের মতো ব্রিলিয়ান্ট অফিসারকে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করেননি। জিয়াকে হত্যা করার অজুহাতে কত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছিল সেই হত্যাকা-ে, তার তো হিসেব সেনা দফতরেই আছে। অনেক কথাই বলা হয়নি কিংবা প্রকাশ পায়নি অনেক পেছনের কারণে। কিন্তু ৪০ বছর পেরিয়ে গেছে। এখন এসব কথা মুখ খুলে বলতে হবে, না হলে মিথ্যাচার, কপটতা, দুর্নীতি, দুবর্ৃত্তায়নই দেশকে অনাকাঙ্ৰিত সর্বনাশের দিকে টেনে নিয়ে যাবে।
মাদাম, আপনাকে একটি প্রশ্ন : বিএনপি যদি মুক্তিযুদ্ধের দলই হয়, তবে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও মানুষ হত্যার জলস্নাদ বাহিনী জামায়াতে ইসলামী আপনার দোসত্ম হলেন কি করে? নিজামী-মুজাহিদ আপনার জানি দোসত্ম হতে পারেন কিন্তু দেশের মানুষের কাছে তারা যুদ্ধাপরাধী। জামায়াত কিংবা নিজামী-সাঈদীদেরও কি ক'দিন পরে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করবেন?
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নাকি নওগাঁ_হয়ত দু'জায়গাই বলেছেন। মাদাম খালেদা জিয়া বলেছেন, এরপর রোডমার্চ গ্রাম থেকে ঢাকায় আসবে। বাহ কি চমৎকার গণতন্ত্র, নিজেরা এসি দামী মোটরে চড়ে রোডমার্চ করলেন তো গ্রাম থেকে যারা আসবেন, তারা কিসে চড়বেন। তাহলে আপনাদের দাবি করা তিন হাজার গাড়ির বদলে কি গরম্নর গাড়ি ব্যবহার করবেন? না কি পায়ে হেঁটে আসতে বলবেন?
মাদাম জিয়া এই রোডমার্চ শেষ হলে পরে আরও বড় কর্মসূচী ঘোষণা দেবেন। সে যে আবার কি হবে, কে জানে? সে কি এ্যারোপেস্ননে মার্চ হবে। মাটিতে তো হয়েই গেল, এবার তাহলে আকাশে তাদের সমর্থনের 'লালমেঘ' জমাট বাঁধতে বুঝি চাইবেন। উনি যা চাইবেন তাই তো হবে। তৃণমূলের কমর্ীরা যা চাইবেন, তাহবে না কারণ দেশনেত্রী'র চাহিদাই উনারা পূরণ করছেন। আমার এক বন্ধু বললেন, নতুন প্রজন্ম নতুন প্রজন্ম করছেন খালেদা, কেন? এরপরের '... মার্চ'-এ তারেক জিয়াকে অধিষ্ঠিত করবেন। তাই ভদ্রতা করে বুড়ো, প্রবীণ যাঁরা আছেন তাঁদের রিটায়ারমেন্ট দিয়ে দিচ্ছেন। এবারে মাদামের বক্তৃতার যোগফল তাই বলছে, এবার তিনিই আসবেন, যিনি স্টার্লিং পাউন্ডে কোটি কোটি টাকা খরচ করে শরীর মেরামতের কারখানা থেকে যুতসই সংস্কারের পর আসবেন অমাদের মধ্যে। সস্ত্রীক কন্যাসহ তারেক বছরের পর বছর লন্ডনে কাটিয়ে দিচ্ছেন। এত টাকা কি করে রোজগার করছেন তিনি। তিনি নাকি হাল ধরবেন। মান্নান ভূঁইয়া মরে বেঁচে গেছেন। থাকলে এখন তাঁকে মরতে হতো। তারই মহড়া এই রোডমার্চ নামের গাড়ি সফর। এর মাধ্যমে প্রচারটা করছেন ছেলেরই পৰে। আবার যুদ্ধের কথাও বলেছেন। যুদ্ধটা এত সহজ নয়। কয়েকটা পথসভা, আর জনসভা করলেই যুদ্ধের প্রস্তুতি হয় না। তার জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রাম লাগে, যা একাত্তরে আওয়ামী লীগের ছিল, আপনার নেই, বিএনপিরও নেই। তারেক জিয়া তো দূরের কথা।
আওয়ামী লীগ দেশ বন্ধক দিচ্ছে। আগের দিন বলেছিলেন, বিক্রি করে দিচ্ছে। মাদাম আপনারা কার কাছে 'কাউলা' দিতে চান দেশটাকে? বুঝতে পারছে না দেশবাসী, এ কথা ভাববেন না। এটা সবাই জানে ওমরাহ'র অছিলায় বার বার সৌদি আরব যান কেন? পাকিসত্মানী দোসত্মদের বায়নাক্কা নিয়ে কূটনীতিকরা কি গোপনে ওখানেই দেখা করেন?
সর্বশেষে একটা প্রশ্ন রেখে শেষ করি, আপনি মাদাম খালেদা জিয়া একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে সত্যিই কোথায় ছিলেন? মেজর জিয়া আপনাকে নিয়ে যেতে লোক পাঠিয়েছেন-শুনেছি তিনবার, আপনি যাননি। বরঞ্চ স্বচ্ছন্দেই আছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ...এ প্রশ্নের জবাব যদি দেন- তবে বুঝব আপনি সত্যিই সাহসী, স্পষ্টভাষী এবং যা বলেন, বিশ্বাসের সঙ্গেই বলেন। কোন রাখঢাক করেন না।
জয় হোক মাদাম-জয় হোক আপনার। আপনি তো রায় দিয়েই ফেলেছেন, নিজামী-সাঈদীরা স্বাধীনতাবিরোধী নন। বাহ কী চমৎকার! এই না হলে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন? বলিহারী যাই মাদাম!
২| ২৯ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৩৮
ইসপাত কঠিন বলেছেন: ভাই, আপনি রাজনীতি নিয়ে অনেক বেশী পোস্ট দিয়ে ফেলেছেন। এবার একটু রেস্ট নেন। তারপর পারলে জর্জ বুশ রে নিয়ে একটা পোস্ট দেন। বাংলা সিনেমার নায়িকা নিয়ে পোস্ট দেন। অন্য যে কোন বিষয় নিয়ে পোস্ট দেন।
৩| ২৯ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৩৮
জহিরুলহকবাপি বলেছেন: শুভ কামনা থাকল ।
সামনের দিকে এগীয়ে চলুন ।
৪| ২৯ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১১:১১
গারো হিল বলেছেন: ালপোস্ট । পড়াশোনা করছস নাকি এমনিতেই নকল কইরা পাস করছস.......তা না হলে মাদাম কেন রে ?
৫| ২৯ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৩২
বিডিট্রন বলেছেন: মনে হচ্ছে পেইড.....
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৯:০৬
মাহাভুব আল হাছান বলেছেন: মুক্তি যুদ্ধা নিয়ে কোন বিতর্কে যাবোনা ।
কারন মুক্তি বাংঙ্গালী জাতীর অহংকার ।
তবে ভাই আমি একটি কথা বলতে চাই তা হলো আমি ভাল হলে জনগনই ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচনে পাস করিয়ে দিবে । পাচেঁ জানুয়ারীর মত একক
নির্বাচনে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করি না ।
খালেজিয়াই বলুন আর হাসিনা বলুন কেউ আসলে মন থেকে জনগনকে ভালবাসে না । সবাইক্ষমতার পাগল ।
তবে ভাই রাজনীতি বাদ দিয়ে চলুন পেত নীতির চিন্তা করি ।
অলড্যা বেষ্ট ভাল থাকুন শুভ কামনা থাকল ।
সামনের দিকে এগীয়ে চলুন ।