নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

খালেদার ঘোষণা বিএনপিতেই গুরুত্বহীন

০২ রা জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৩০

ম্যাডাম ঈদের পর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তো কোনো কমিটিই পুনর্গঠন করেননি। তাহলে কিসের আন্দোলন হবে। আন্দোলন আবারও ভেস্তে যাবে।’ কথাগুলো বললেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক কর্মী। নাম আবেদ রহমান। ছাত্রদল করার অপরাধে তিনি এখন হলছাড়া। থাকেন আজিমপুরে এক মেসে। কিন্তু নতুন কমিটি না হওয়ায় ছাত্রদলের কোনো পর্যায়ের পদ নেই তার।



জয়পুরহাটের জনসভায় খালেদা জিয়া আন্দোলনের হুমকি দেওয়ার পরদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে এই প্রতিবেদককে আবেদ বলেন, ‘ভাই ছাত্রদল কইরা হল ছাড়লাম। বাড়ি থেকে টাকা এনে রাজনীতি করি। ম্যাডামের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছিলাম। ম্যাডামও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কমিটি হয়নি। এবারও আন্দোলন হবে না। কারণ এখন যারা কমিটিতে আছে সবাই সরকারের দালাল। সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তারা চলে। কি করে তারা আন্দোলন করবে।’



একই কথা বললেন এস এম হলের ছাত্রদল কর্মী সবুজ রায়হান। তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল করে সবকিছুই হারালাম। কিন্তু কোনো পদ পেলাম না। ছাত্রত্বও এখন শেষ পর্যায়ে। এখন যারা ছাত্রদল করে কারও ছাত্রত্ব নেই। ফলে তারা ক্যাম্পাসেও আসতে পারে না। আন্দোলন কি করে হবে।’



এই পরিস্থিতি যে শুধু ছাত্রদলের তা নয়, বিএনপির সহযোগী সব সংগঠনেরই একই অবস্থা। যুবদলের কর্মী রায়হানুল ইসলাম বলেন, ‘ম্যাডাম আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এতে আমরা খুশি। কিন্তু মাঠে থাকবে কারা। কোনো কমিটিই পুনর্গঠন করা হয়নি। আগের মতো আন্দোলনে রাজপথে কাউকেই পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। কারণ আগে যারা কমিটির নেতৃত্বে ছিল এখন তারাই আছে। কোনো পরিবর্তন নেই। তাহলে কীভাবে আন্দোলন সফল হবে।’



নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আন্দোলন কর্মসূচি যাই ঘোষণা করুক, আসলে এগুলো সরকারকে চাপে রাখার জন্য। এ বছর কোনো আন্দোলনই হবে না। ঢাকা মহানগর কমিটি পুনর্গঠন না করলে কোনো কর্মসূচিই কাজ হবে না।’



আসাদুল হক নামে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন যে ঘোষণা দিয়েছেন সেই ঘোষণা অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তৈরি আছেন। কিন্তু যারা নেতৃত্বে আছেন তারা যদি বাগড়া দেয় তাহলে তো সমস্যা। তাই আগে নেতাদের ঠিকভাবে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন আবার ব্যর্থ হতে পারে।’



তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। তারা বলছেন, জনগণের প্রয়োজনেই জনগণ আন্দোলনে নামবে। কমিটি পুনর্গঠন কোনো বিষয় নয়। আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করলে আন্দোলন হবে। জনগণই রাজপথে নেমে আসবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।



বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আন্দোলনের সঙ্গে কমিটি পুনর্গঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করলে আন্দোলন হবে। জনগণ তাদের প্রয়োজনেই আন্দোলনের জন্য মাঠে নামবে।’



তাহলে কেন বিএনপি আন্দোলন করে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আপনারা কি দেখেননি কেন পারেনি। সরকার কাউকে কি ঘর থেকে বের হতে দিয়েছে? এখন আপনারা বলছেন সরকারের বাহিনীগুলোর মতো বিএনপির নেতাকর্মীরাও কি বন্দুক নিয়ে বের হোক?’



এবারও তো সেই পরিস্থিতি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রয়োজনেই জনগণ মাঠে নামবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না। এরপর যদি কোনো পরিস্থিতির অবতারণা হয় তার দায় সরকার নিবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই বলবো না।’



বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আন্দোলন এবং সংগঠন দুটি আলাদা বিষয়। আন্দোলনের সঙ্গে সংগঠনকে পুনর্গঠন করার কোনো সম্পর্ক নেই। যুদ্ধের ময়দানেও নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে পারে। সেটা কোনো সমস্যা নয়। ম্যাডাম বা দল মনে করেছে ঈদের পর আন্দোলনের সময়। সেই জন্যই তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। দলের সেই ঘোষণায় সবাই ঝাঁপিয়ে পড়বে। এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।’



এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কমিটি পুনর্গঠনের যে প্রক্রিয়া সেটা কি্ন্তু বন্ধ নেই। সে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সুতরাং আন্দোলন চলবে পাশাপাশি কমিটি পুনর্গঠন দরকার হলে সেটাও চলবে।’



তবে বিএনপির এই আন্দোলনের ঘোষণাকে পাত্তা দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, এগুলো শুধুই ফাঁকা বুলি। বিএনপির আন্দোলন করার মতো কোনো সাংগঠনিক শক্তি নেই।



আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য নূহ উল আলম লেলিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিএনপি নেত্রীর আন্দোলনের ঘোষণা ফাঁকা বুলি। এগুলো লোক দেখানো। আসলে তাদের আন্দোলনের কোনো শক্তি নেই। যেটা ইতোপূর্বে প্রমাণিত হয়েছে। এসব আমরা মাথায় নিচ্ছি না।’



এ বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন বিএনপির আন্দোলন সফল হবে কি হবে না সেটা নির্ভর করছে তাদের আন্দোলনের কৌশলের ওপর।



তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ঈদের পর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় বিএনপি কোন পদ্ধতিতে আন্দোলনে যায়। তাদের আন্দোলনের কৌশলের ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।’



ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে আমি পলিটিক্যাল গ্যালারির বক্তব্যই মনে করি। কারণ তাদের দলের যে পুঁজি বা বাস্তবতা রয়েছে সেটিকে তারা বিশ্লেষণ করে কোনো কর্মকৌশল ঠিক করেছে কি না সেটা আমার জানা নেই। তবে তাদের উচিত সব কিছু নিয়ে একটি নির্মোহ বিশ্লেষণ করে সামনের দিকে পা বাড়ানো।’



কমিটি পুনর্গঠন ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ



এর আগে দল গুছিয়ে উপজেলা নির্বাচনের পর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। উপজেলা নির্বাচন শেষ, তবে এখনো দল গোছানো শেষ করতে পারেনি দলটি। বরং দলে পুনর্গঠনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তা গতি হারিয়েছে।



নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গত ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। ওই নির্বাচনের এক মাসের মাথায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দল গুছিয়ে আবার আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন।



তার এ ঘোষণার একদিন পর দলের স্থায়ী কমিটির সভায় ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি এবং ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং বিএনপির সব জেলা কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। দল গুছিয়ে উপজেলা নির্বাচনের পর বিএনপি আবার আন্দোলনে নামবে।



গত ফেব্রুয়ারিতে দল পুনর্গঠনের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। সেই উদ্যোগ এখন পর্যন্ত সফল হয়নি। গত চার মাসে শুধু শ্রমিক দলের নতুন কমিটি করা হয়েছে। আর কয়েকটি জেলার কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। এখন পুনর্গঠন প্রক্রিয়া কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।



জানতে চাইলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শ্রমিকদলের কাউন্সিল হয়েছে। অন্যান্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কাউন্সিলের প্র¯‘তি চলছে। এর মধ্যে কিছু জেলা কমিটিও পুনর্গঠন করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।



গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে খালেদা জিয়া এক মাসের মধ্যে নতুন কমিটি করতে বলেছিলেন। কিন্তু চার মাসেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। এ কমিটি গঠন নিয়ে দলের মধ্যে বিরোধ চাঙা হয়ে উঠলে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া থমকে যায়।



এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি স্থায়ী কমিটির সভায় ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে খালেদা জিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দেন, নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে শিগগির বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কারাগার থেকে বের হলে করা হবে কেন্দ্রীয় কমিটি।



সূত্র জানায়, ছাত্রদল পুনর্গঠনের সে উদ্যোগও থেমে গেছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কারাগার থেকে বের হয়েছেন কিন্তু কমিটি পুনর্গঠনের কোনো প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।

গত এপ্রিলে জেলা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেন খালেদা জিয়া। ওই মাসে পঞ্চগড়, সৈয়দপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম উত্তর, নওগাঁ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ উত্তর, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি জেলার কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করে দেন খালেদা জিয়া। কিš‘ এখন সেই উদ্যোগও থেমে আছে। এখন কেন্দ্র থেকে কমিটি করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে কেন্দ্র থেকে রংপুর জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির বিরুদ্ধে নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ বিক্ষোভ করেছে।



জানতে চাইলে জেলা কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান ঢাকাটাইমসকে বলেন, তাদের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়নি। এটি চলমান প্রক্রিয়া। সারা বছরই এ প্রক্রিয়া চলবে। প্রথম দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে কিছু কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এখন সবার সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন জেলায় কমিটি করার কাজ চলছে।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩৭

জনতার রায় বলেছেন: বিএনপির তথাকথিত 'আন্দোলনের' অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আওয়ামী লীগ সরকারের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। ওবায়দুল কাদের ৎ বলেই ফেললেন, "উনি কোন ঈদের পরে আন্দোলন শুরু করবেন - আল্লাহই জানেন।"

২| ০২ রা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৫

বিডিট্রন বলেছেন: পেইড পোষ্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.