![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
টিভি আলোচক অধ্যাপক পিয়াস করিমের মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়ার পারিবারিক সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া হয়েছে ফেসবুকে।
সোমবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান পিয়াস করিম। তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন।
মরহুমের পরিবারের সদস্যরা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বুধবার সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত পিয়াস করিমের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। জোহরের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদে তার জানাজা হবে।
এ ঘোষণার পরপরই ফেসবুকে প্রতিবাদ শুরু হয়। অনেকেই এর বিরোধিতা করে স্ট্যাটাস দেন।
পিয়াস করিমের লাশ যাতে শহীদ মিনারে না আসতে পারে সেজন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে টিএসসিভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠন স্লোগান একাত্তর।
প্রাণের ’৭১ নামে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের আরেক সংগঠনও বুধবার সকাল থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
শহীদ মিনারে মরদেহ নেয়া ঠেকাতে ফেসবুকে একটি ‘ইভেন্ট’ খোলা হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পবিত্র শহীদ মিনারে পিয়াস করিমের লাশ নিয়ে অপবিত্র করা মানি না, মানব না।’
ইভেন্ট পেইজের কভারে লেখা রয়েছে, ‘পিয়াস করিমের লাশের ভার বইবে না বাংলাদেশ, পবিত্র শহীদ মিনার অবমাননা রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ।’
বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শহীদ মিনারে অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে এই ইভেন্ট পেইজের উদ্যোক্তারা।
পেইজ খোলার এক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ২০০ জনকে কর্মসূচিতে অংশ নিতে আহবান জানানো হয়। ওই সময় পর্যন্ত ২২৫ জন তাতে সাড়া দিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আগ্রহ দেখান।
পেইজটিতে মঞ্জুরুল আলম নামে একজন লিখেছেন, “এই লাশ শহীদ মিনারে নেয়া ঠেকাতে হবে দুটি কারণে। প্রথমত, লাখো শহীদকে অপমান হতে রক্ষা করা। দ্বিতীয়ত, জীবন্ত পাকি… একটা শিক্ষা দেওয়া ও উপলব্ধি করতে দেওয়া, মরলে সামনে তাদেরও অনুরূপ অবস্থাই হবে।”
ভাষাবিজ্ঞানী ও লেখক হুমায়ুন আজাদের ছেলে অনন্য আজাদ তার ফেসবুকে লিখেছেন, “তার মৃত্যুতে দেশের ক্ষতি হয়নি বরং দেশ আজ এক মিথ্যাবাদী থেকে রেহাই পেয়েছে। ভদ্রলোকটি সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করত, এতে অবশ্যই তাকে সাধুবাদ জানাতে হবে। কিন্তু সমালোচনা কিংবা বিশ্লেষণের নামে অধিকাংশ সময়েই মিথ্যা-অসত্য-অর্ধসত্য তথ্য পরিবেশন করত।”
মিলন পাঠান নামে একজন ফেইসবুকে লিখেছেন, “যারা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিরোধিতা করেছেন, তাদের শহীদ মিনারে যাওয়া অপমানকর।”
ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন তার ফেইসবুকে লিখেছেন, “অবাক হয়ে লক্ষ্য করছি, পিয়াস করিমের মৃত্যুতে বাঁশের কেল্লার চাইতে অনেক জোরেশোরে হেঁচকি দিয়ে প্রায় ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নাকাটি করছেন কিছু সেক্যুলার, প্রগতিশীল এবং বামপন্থী।”
“তাদের স্মৃতিচারণ এবং কান্নাকাটি শুনে মনে হচ্ছে, তারা মৃতদেহটি শহীদ মিনারে নিয়ে সম্মান জানাবেই, হয়তো বুদ্ধিজীবী গোরস্থানেও কবর দেবে, হয়তো রাষ্ট্রীয় সম্মানের দাবিও জানাবে।”
স্লোগান ’৭১ এর সভাপতি ভূঁইয়া মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পিয়াস করিম সব সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এ রকম একজন স্বাধীনতাবিরোধীর লাশ আমরা কোনোভাবেই শহীদ মিনারে আসতে দিতে পারি না। এ কারণে সকাল থেকেই আমরা অবস্থান গ্রহণ করব।”
প্রাণের ’৭১ এর আহবায়ক শাহীন রাকিব বলেন, “সকাল থেকে আমরা শহীদ মিনারে অবস্থান করব যাতে একজন রাজাকারের সন্তান এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা ব্যক্তির লাশ পবিত্র শহীদ মিনারে না আসতে পারে।”
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক পিয়াস করিমের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। তার বাবা অ্যাডভোকেট এমএ করিম একাত্তরে ছিলেন কুমিল্লা জেলা শান্তি কমিটির একজন নেতা।
বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের আলোচনায় অংশ নিয়ে ডানঘেঁষা রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিতি পান অধ্যাপক পিয়াস। গত বছর যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে শাহবাগে শুরু হওয়া গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের কৌশল নিয়ে বিতর্কিত মন্তেব্যের কারণেও তিনি সমালোচিত হন।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদও ঠেকাবে
পিয়াস করিমের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়ার পারিবারিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট ‘ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ও।
জোটের ছাত্রনেতারা বিকালে শহীদ মিনারের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা করে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদভুক্ত সাতটি সংগঠন হল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র সমিতি, বাসদ ছাত্রলীগ এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কেন্দ্র।
উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করার পর ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতাকারী ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল নিয়ে উল্টাপাল্টা মন্ত্রব্যকারী হলেন এই পিয়াস করিম।
“এরকম একজন রাষ্ট্রীয় অপরাধীকে শহীদ মিনারে এনে আমরা শহীদ মিনারকে অপবিত্র করতে দেব না। আমাদের নিষেধ অমান্য করে মরদেহ শহীদ মিনারে আনা হলে আমরা প্রতিরোধ করব।”
উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো তাদের দাবি জানিয়েছে, তাদের কথা বিবেচনা করা হবে।
পিয়াসের লাশ শহীদ মিনারে আনার অনুমতি দেবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে এখনো বলা হয়নি, বললে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
পিয়াস করিমের মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছে কামাল পাশা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন গণজাগরণ মঞ্চের একাংশও।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা এই অধ্যাপককে ‘জামায়াতের এজেন্ট’ আখ্যায়িত করে বলেছে, “স্বাধীনতাবিরোধী পিয়াস করিমের মরদেহ পবিত্র শহীদ মিনারে প্রবেশ যে কোনও মূল্যে প্রতিহত করার জন্য গণজাগরণ মঞ্চ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করছে।”
পিয়াস করিম: আবেদন পায়নি ঢাবি
সদ্য প্রয়াত অধ্যাপক পিয়াস করিমকে শহীদ মিনারে নেওয়ার ঘোষণা তার পরিবার দেওয়ার পর বিতর্কিত এই টিভি আলোচককে ঠেকাতে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানালেন, মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়ার কোনও আবেদন তারা পাননি। সূত্র: বিডিনিউজ।
২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
সোজা সাপটা বলেছেন: ছি ছি ছি ....। এই বাংলাদেশে আর কত কি দেখবো।
৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৪
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: "সমস্যাটা হচ্ছে চেতনাগত এবং দর্শনগত জায়গায়। নানা মতাদর্শের পথ মাড়িয়ে পিয়াস করিম শেষ পর্যন্ত যে দর্শন ফেরি করে গেছেন সেটা ওই শহীদ মিনারের মতাদর্শের পরিপন্থি। নানা ঘাটের জল খেলেও পিয়াস করিম তার বয়সের বিবেচনায় অপূর্ণ জীবনের শেষদিকে এসে তার প্রয়াত পিতার মতোই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিরোধিতা করে গেছেন। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত যে পাকিস্তানি মতাদর্শের ভিত্তিমূলে আঘাত করার কারণে পিয়াসের পিতা এম করিমদের শত্রু হিসেবে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন, সেই পাকিস্তানি আদর্শকেই বুকে ধারণ করেছেন পিয়াস করিম।সমস্যাটা হচ্ছে চেতনাগত এবং দর্শনগত জায়গায়। নানা মতাদর্শের পথ মাড়িয়ে পিয়াস করিম শেষ পর্যন্ত যে দর্শন ফেরি করে গেছেন সেটা ওই শহীদ মিনারের মতাদর্শের পরিপন্থি। নানা ঘাটের জল খেলেও পিয়াস করিম তার বয়সের বিবেচনায় অপূর্ণ জীবনের শেষদিকে এসে তার প্রয়াত পিতার মতোই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিরোধিতা করে গেছেন। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত যে পাকিস্তানি মতাদর্শের ভিত্তিমূলে আঘাত করার কারণে পিয়াসের পিতা এম করিমদের শত্রু হিসেবে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন, সেই পাকিস্তানি আদর্শকেই বুকে ধারণ করেছেন পিয়াস করিম।"
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৬
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: প্রগতিশীল ছাত্র জট আসলেই বীর কাঙ্গালি!
একবার দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ করে শাহবাগের রাস্তাঘাট বন্ধ করে পুলিশের কোলে বসে মণকে মণ বিরিয়ানী হজম করে।
এখন আবার একজন মৃত ব্যক্তির লাশের সাথে লড়াই করে বীরত্ব জাহির করে!
সাবাশ ব্যাটারা বাগের বাচ্চচা ! এগিয়ে যা!