নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নবগঠিত ছাত্রদল নিয়ে বিপাকে বিএনপি!!

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:১৫



নতুন কমিটি ঘোষণা নিয়ে বিপর্যস্ত ছাত্রদল। দলের ভ্যান গার্ড হিসেবে পরিচিত ছাত্রদলের এ বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে টালমাটাল পুরো বিএনপি।

খালেদা জিয়া যখন ঈদুল আযহার পর সরকার বিরোধী কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন ঠিক তখনই নতুন কমিটি ‍ঘোষণা নিয়ে গৃহবিবাদে আক্রান্ত বিএনপির আন্দোলনের মূল শক্তি ছাত্রদল।

গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঘোষণা দেয়া হয় ছাত্রদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি। এতে সভাপতি করা হয়েছে রাজিব আহসানকে, সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে আকরামুল হাসানকে।

মূলত এর পর থেকেই গৃহদাহে ভুগছে সংগঠনটি। আন্দোলন তো দূরের কথা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এখন ব্যস্ত একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি সংঘাতে। ইতোমধ্যেই নয়াপল্টনে ছাত্রদল অফিসে তালা দিয়েছে পদবঞ্চিত হিসেবে দাবি করা ছাত্রদল নেতাকর্মীদের একাংশ। এমনকি তাদের হাতে শনিবার ধাওয়াও খেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ সিনিয়র নেতারা।

পাশাপাশি ছাত্রদলের দুই সাবেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও বর্তমান বিএনপির ছাত্র বিষয়ক ও সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি ও সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর কুশপুতুলও দাহ করা হয়েছে। তাদের অবাঞ্জিতও ঘোষণা করেছে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, জাভেদ হাসান স্বাধীন, তরুণ দে, ফেরদৌস আহমেদ মুন্না, তরিকুল ইসলাম টিটু ও নূরুজ্জামান মুকিত লিংকন, মাহবুবুল আজম, এম কামরুজ্জামান, আব্দুল মান্নান ফরহাদ, আহসানুল হক রুবেল, রাকিবুল ইসলাম রয়েল, সাঈদ ইকবাল টিটু প্রমুখ।

পক্ষে বিপক্ষে কাদা ছোঁড়াছোঁড়ি

ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে কাদা ছোঁড়াছোঁড়ি। এক পক্ষের দাবি অছাত্র, বিবাহিত ও আদুভাইদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি করার দীর্ঘ ঐতিহ্যের ছেদ ঘটিয়ে এবারই প্রথম করা হয়েছে তারুণ্য নির্ভর কমিটি। সেক্ষেত্রে সাম্প্রতিক আন্দোলন সংগ্রামে অনেক সিনিয়র ছাত্রনেতার অবদান থাকলেও তাদের মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে ভবিষ্যতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে।

অপরদিকে পদবঞ্চিতদের দাবি বর্তমান কমিটি ‘ড্রইং রুম’ কমিটি। বিগত সরকার বিরোধী আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন না বর্তমান কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। বরং তারা ছিলেন দূরে দূরে। ক্ষেত্রবিশেষে সরকারের সঙ্গে আতাঁত করে। তাদের নামে নেই তেমন কোনো মামলাও। এমনকি পদবঞ্চিতদের অনেক নেতাই দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও জেল খাটেননি বর্তমান নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। অপরদিকে সরকারের নির্যাতন, জেল-জুলুম পোহাতে হয়েছে পদবঞ্চিতদের। অথচ বিনিময়ে নতুন কমিটিতে তাদের কোনো মূল্যায়ন করা হয়।

একই সঙ্গে সরকারের দমন পীড়নের মুখে রাজপথে নতুন কমিটির সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। তাদের দাবি বিএনপির এক শ্রেণীর নেতা সরকারের সঙ্গে আঁতাতের অংশ হিসেবে এই কমিটি গঠন করিয়েছে যেন ভবিষ্যতের সরকার বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলকে খুঁজে না পাওয়া যায়।

অপরদিকে পদবঞ্চিতদের বিরুদ্ধেও সরকারের সঙ্গে আঁতাতের একই অভিযোগ তুললেন ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির নেতারা। পুলিশি পাহারায় পদবঞ্চিতদের ব্যানারে অছাত্ররা নয়াপল্টনে বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে তাদের দাবি পদবঞ্চিতদের এসব আন্দোলনে রয়েছে সরকারের মদত। বিএনপির কিছু শীর্ষ নেতা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থসিদ্ধি কায়েমের জন্য সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে পদবঞ্চিতদের লেলিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছেন। সামনের সরকার বিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়া যেন ছাত্রদলকে কাজে লাগাতে না পারেন সেটাই তাদের উদ্দেশ্য।

‌চলছে গ্রুপিং-অ্যান্টি গ্রুপিংয়ের খেলা

ছাত্রদলের এই নতুন কমিটি নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে খেলা করছে গ্রুপিং-অ্যান্টি গ্রুপিংয়ের জটিল ও বিপরীতমুখী খেলা। যেমন সভাপতি রাজিব এবং সাধারণ সম্পাদক আকরামের এই নতুন কমিটিকে অনেকেই ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে বিএনপির সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর পকেট কমিটি বললেও বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির হিসেবে ঘেঁটে দেখা যায় তারা দুইজন কখনই টুকু গ্রুপে ছিলেন না। রাজিব মূলত ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং বহু কারণে বিতর্কিত ও সমালোচিত শাহাবুদ্দিন লাল্টুর অনুসারী হিসেবে ঢাবি ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন। অপরদিকে আকরাম ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবুর গ্রুপের হয়ে রাজনীতি শুরু করলেও তিনি বর্তমানে ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের অনুগত।

অপরদিকে ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের ব্যানারে যাদের দেখা যাচ্ছে তাদের মধ্যে আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমানের লোক হিসেবে পরিচিত।

এছাড়া ফেরদৌস আহমেদ মুন্না, নুরুজ্জামান মুকিত লিংকন, মাহুবুবুল আজম ছাত্রদলের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক যিনি একাধিক বহিষ্কৃতও হয়েছিলেন সেই সাইদ ইকবাল টিটু ওরফে ‘বস টিটু’র অনুসারী হিসেবে। সাইদ ইকবাল টিটু গত ওয়ান ইলেভেনের সময় বিএনপির সংস্কারপন্থিদের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছিলেন।

জানা গেছে, সাইদ ইকবাল টিটু ছাত্রদলে কখনই গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে না থাকলেও ছাত্রদলের রাজনীতিতে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতিতের তার একটা প্রভাব সব সময়ই অনুভূত হতো।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের অনুগত নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী ধারার নেতৃত্ব দেন। যে ধারা গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ঢাবি ক্যাম্পাসে চরম প্রতাপশালী টুকু গ্রুপ ও বাবু গ্রুপের বিপরীতে এক শক্তিশালী অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলো। তবে ওয়ান ইলেভেনের ভূমিকার কারণে ইদানীং রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে অনেকটাই দূরে ছিলেন সাইদ ইকবাল টিটু। এ পরিস্থিতিতে পদবঞ্চিতদের মিছিলে সাইদ ইকবাল টিটুর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর উপস্থিতির বিষয়টিতে নতুন সমীকরণে আভাস দিচ্ছে বলে মনে করছেন ছাত্রদল সংশ্লিষ্টরা।

ছাত্রদল নয় নেপথ্যে যুবদলের কমিটি!

এদিকে টুকু ও অ্যানীর কুশপুতুল দাহ এবং তাদের বিরুদ্ধে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের এই বিক্ষোভকে ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করছেন তাদের ঘনিষ্ঠরা। তাদের দাবি বর্তমান ছাত্রদল কমিটিকে লক্ষ্য করে নয় বরং যুবদলের আগামী কমিটিকে সামনে রেখেই জল ঘোলা করছেন বিএনপির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। যুবদলের নেতৃত্বে টুকু ও অ্যানীকে যে কোনো মূল্যে ঠেকানোর জন্যই তারা তাদের অনুগত নেতাকর্মীদের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ ও আন্দোলনে রোপণ করেছেন। যেন এর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার কাছে টুকু-অ্যানির গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করা যায়। এক্ষেত্রে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পর্যায়ের এক নেতার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

অপরদিকে টুকু ও অ্যানি ছাত্রদলে কায়েমি স্বার্থবাদী হিসেবে পরিচিত বলে দাবি করেছেন তাদের বিরোধীরা। বিরোধী পক্ষের দাবি এই দুইজন সবসময়ই রাজনীতিতে ‘ইজম’ভিত্তিক বিভাজন করেছেন। সর্বশেষ নিজেদের স্বার্থেই তারা অনুগত ব্যক্তিদের দিয়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করেছেন। এক্ষেত্রে তারা খালেদা জিয়াকে ভুলভাল বুঝিয়েছেন। কারণ ছাত্রদলের ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও সহসম্পাদক হিসেবে তারাই সবচেয়ে বেশি সময় খালেদা জিয়ার কাছে সময় পেয়েছেন।খালেদা জিয়াকে উল্টো সিধা বুঝিয়ে তরুণ নেতৃত্বের দোহাই দিয়ে নিজেদের মনমতো লোকজন নিয়ে কমিটি করেছেন।

যদিও উভয় পক্ষই উভয় পক্ষের এসব অভিযোগ নাকচ করে দেন।

এসব অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ এবং ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে বর্তমান দোলাচলের ব্যাপারে কথা হয় বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান এবং পদবঞ্চিত ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বদান কারী সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনের সঙ্গে।

কমিটি গঠনের অন্যতম প্রধান কারিগর ও বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি বাংলানিউজকে বলেন, ‘ম্যাডাম নিজেই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন এবার তারুণ্যনির্ভর কমিটি হবে। আমরা শুধু সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নিজেদের অবস্থানে থেকে আন্তরিকভাবে কাজ করে গেছি।

ছাত্রদলের বিগত কমিটির কিছু কিছু ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ছাত্রদল হয়তো বিগত সরকার বিরোধী আন্দোলনে সব সময যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারে নি। বয়স্ক নেতৃত্ব ছিলো। এবার আমরা কমিয়ে একটা লেবেলে এনেছি। এতে হয়তো সিনিয়র অনেকেই জায়গা পাননি। তাদের তাদের বিএনপির অন্যান্য সংগঠনে মূল্যায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যারা ছাত্রদল করেছেন কিন্তু এই কমিটিতে পদ পাননি তাদেরকে অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে ‍অধিষ্ঠিত করা হবে।

নয়াপল্টনে শনিবার দিনভর পদবঞ্চিতদের শো ডাউন ও নিজের কুশপুতুল দাহ সম্পর্কে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে গুলশানে রাতের অন্ধকারে যখন বোমা ফুটলো। রাতের অন্ধকারে যারা খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে গুলশান অফিসের আশেপাশে বোমা ফোটায় তারা আসলে সরকারের এজেন্ট। ছাত্রদলের যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তার সুযোগ গ্রহণ করেছে সরকার। ছাত্রদল যদি সংগঠিত হয় তবে সরকার বিপদে পড়বে। তাই যেন ছাত্রদল সংগঠিত না হতে পারে সে জন্য সরকার পদবঞ্চিত নামধারী কাউকে কাউকে লেলিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

ভবিষ্যতের সরকার বিরোধী আন্দোলনে এই কমিটির নেতৃত্বেই ছাত্রদল রাজপথে সম্মুখ সারিতে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অ্যানি।


পকেট কমিটি করার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রদলের এই কমিটি বয়স দেখে করা হয়েছে। আগের চেয়ে অনেক জুনিয়র কমিটি করা হয়েছে। তাই সিনিয়র অনেকেই বাদ পড়েছে। প্রতিযোগিতায় যারা পিছিয়ে ছিলো তারা বাদ পড়েছেন। সবাইতো একই পদ পায় না। পরীক্ষায় কেউ ফার্স্ট হয়, কেউ সেকেন্ড হয়।

পকেট কমিটির বিষয়ে টুকু আরও বলেন, যদি এই কমিটি যদি অ্যানালাইসিস করে দেখেন তবে দেখবেন ছাত্রদলের সুপার ফাইভে আমার অনুসারী বলে পরিচিত কেউ নেই। তবে কমিটি দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু ভুল ত্রুটি থাকতেই পারে। তবে সংশ্লিষ্ট সবার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ও সমন্বয়ের মাধ্যমেই এই কমিটি করা হয়েছে।

নয়াপল্টনের আজকের অপ্রীতিকর ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, এ ঘটনায় সরকারের ইন্ধন থাকতে পারে।নির্দিষ্ট করে কোনো নাম বলতে চাই না। তবে এ ঘটনার যারা নাটের গুরু তাদের অনেকের সঙ্গেই সরকারের গোপন আঁতাত রয়েছে। এছাড়া যেসব নেতাকর্মী বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে পদবঞ্চিত হয়েছেন সামনে যুবদল,ছাত্রদল,স্বেচ্ছাসেবক দল এমনকি মূল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও তাদের জায়গা দিয়ে তাদের মূল্যায়ন করা হবে বলেও আশ্বাস দেন টুকু।


ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আকরামুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, নতুন কমিটিতে নতুনদের প্রাধান্য দিতে গিয়ে হয়তো পুরনোদের মনঃক্ষুন্ন হয়েছে।

অনভিজ্ঞ হিসেবে সমালোচিত এই কমিটি নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সফল হতে পারবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যদি সবাই সহযোগিতা করে তবে এই তরুণরাই রাজপথে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

এ সময় নিজেকে মেধাবী ছাত্র হিসেবে উল্লেখ করেন আকরাম। তিনি জানান ১৯৯৭ সালে ঢাকা কমার্স কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে তিনি ১৫তম স্ট্যান্ড করেছিলেন। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিংয়ে এমফিল করছেন। বিবিএতে তার পয়েন্ট ছিলো চারের মধ্যে তিন দশমিক আট যা ফার্স্ট ক্লাস সমতুল্য।

নয়াপল্টনে পদবঞ্চিত ঝাড়ু দেখানো বিষয় সম্পর্কে তিনি বলেন, কাউকে ঝাড়ু দেখানো কাম্য নয়। এ ধরনের কাজ যারা করেছে তাদের নিন্দা জানাই। তবে যাদের অবদান আছে তাদের যেন মূল্যায়ন করা হয়।

পদবঞ্চিতদের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন বাংলানিউজকে বলেন, মহাসচিবকে তাড়া করা হয়নি। দাবি দাওয়া সম্পর্কে তাকে জানানো হচ্ছিলো। তাছাড়া এ সময় আমি সেখানে ছিলাম না।

এই কমিটিকে টুকু-অ্যানির পকেট কমিটি উল্লেখ খোকন বলেন, এই দুইজনের ইচ্ছাতেই বর্তমান কমিটি হয়েছে।কমিটি নিয়ে তারাই ম্যাডামের সঙ্গে বেশি কথা বলেছেন। তারাই ম্যাডামকে বুঝিয়ে এই কমিটি করেছেন। এই কমিটির ১শ‘ জনই বিবাহিত।
জুনিয়রদের দিয়ে কমিটি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি তো ৯৫ এর ব্যাচ। যারা হয়েছে তারা ৯৬ এর ব্যাচ। তাহলে আমি কেন হবো না।

তিনি বলেন, বর্তমান কমিটিতে ৮৯, ৮৮ সালে মেট্রিক পাশ করা ব্যক্তিও ঠাঁই পেয়েছেন। যেমন জয়দেব জয় ১৯৮৮ সালে এসএসসি পাশ।

তিনি আরও বলেন, টুকু-অ্যানীকে গুলশানে অবরুদ্ধ করা হয়েছিলো। বর্তমান কমিটিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, কমিটি বুঝে নিতে যারা ম্যাডামের অফিসেই যেতে পারে না তারা এত বড় সংগঠন পরিচালনা করবে কী ভাবে।

তিনি বলেন, এই কমিটির ভবিষ্যত ভালো না। সাত মাস জেল খাটলাম। ৫২ মামলা খেলাম। রাজিব তো মামলাও খায় নাই জেলেও যায়নি।

তিনি এ সময় নতুন কমিটির পাশপাশি টুকু ও অ্যানীকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে বলেন, যারা অযোগ্য নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করেছেন তাদের প্রতিহত করা হবে।

এ সময় পদবঞ্চিতদের আন্দোলনে সাইদ ইকবাল টিটুর ভূমিকা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজম ভাইসহ টিটু গ্রুপের অনেকেই আমাদের পাশে আছে।এ লোকগুলো রাজপথে থাকলে সরকার কিছু করতে পারতো না। সাইদ ইকবাল টিটুর দলে অবদান আছে।

তবে শেষ পর্যন্ত পদবঞ্চিতরা খালেদা জিয়ার দিকেই তাকিয়ে থাকবেন বলে উল্লেখ করেন খোকন।

এদিকে কোনো কোনো পত্রিকায় পদবঞ্চিত ছাত্র নেতাদের নেতৃত্বে ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কামাল আনোয়ার আহমেদের নাম আসায় এর তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.